The Cobra King Mafia Boss- Season 4

The Cobra King Mafia Boss- Season 4 !! Part- 62

→রুহী কলেজে যেতে শুরু করেছে।ওর নির্বাচনী পরীক্ষা শুরু হবে সামনের মাসে।তাই রুহীর পড়াশুনা ও চলছে কোমড় বেঁধে।এদিকে রোয়েন ও নিজেকে কাজে ব্যাস্ত রেখেছে।রেজোয়ান মাহবুব ঘরে ফিরার কিছুদিন পর থেকেই কাজে আসতে শুরু করে।মাঝে মধ্যে নাস্তা না করে ও চলে আসতেন।ওনি নাস্তা না করলে সেদিন আনিলা শোহরাব নাস্তা নিয়ে আসতেন ওনার জন্য।রেজোয়ান মাহবুবের সব কিছু বুঝতে পারতেন আনিলা।কিছু বলার আগেই তা সামনে হাজির করতেন।রেজোয়ান মাহবুব কিছুটা বিরক্ত হলে ও বেশ ভাল লাগতো ওনার।এসব কিছুই খেয়াল করছিলো রোয়েন।ওর নিজের ও বেশ ভাল লাগতো আনিলা শোহরাবের রেজোয়ান মাহবুবের দিকে খেয়াল রাখা।তাকে নতুন নতুন খাবার রান্না করে খাওয়ানো।রোয়েন ঠিক বুঝতে পারছিলো রেজোয়ান মাহবুবের জীবনে একজন সঙ্গী দরকার যার সাথে সে বাকিটা জীবন কাঁটাতে পারবে।বার্ধক্যে একজন সঙ্গীকে খুব দরকার হয় সবার সেটা শারীরিক নয় মানসিক চাহিদা মেটাতে।রোয়েন একটু হাসে।এদিকে রুহী কলেজ থেকে প্রায়শই বাবার কাছে চলে যেতো।ঘরে না পেলে অফিসে চলে আসতো।ঠিক সেরকমই রুহী সেদিন অফিসে চলে আসে কলেজ থেকে।রেজোয়ান মাহবুবের কেবিনে ঢুকে দেখলো তারপাশে কিছু এঁটো টিফিন বক্স রাখা।রুহীকে দেখে রেজোয়ন মাহবুব বলল,
.
.
-”মা তুই?”
-”জি বাবা ভালো আছো?”
-”আয় বোস মা।”
-”বাবা তুমি খেয়েছো?”
-”হ্যারে মা আনিলা নিয়ে এসেছিলো।”
.
.
রুহীর মনটা একদমই খারাপ হয়ে যায়।চোখের কোনে পানি চলে আসে।রেজোয়ান মাহবুব খেয়াল করলো রুহী ও একটা প্যাকেটে কিছু খাবার এনেছে।রেজোয়ান মাহবুব বললেন,
.
.
-”তুই ও এনেছিস?এগুলো পরে খেয়ে নেব।”
-”আচ্ছা বাবা ঠিক আছে।”
.
.
রুহী আর কিছু বলতে পারেনা।কোন মতে বাবার সাথে কিছুসময় গল্প করেই বেরিয়ে আসে।আজ রোয়েনের জন্যও কিছু খাবার এনেছিলো রুহী।রোয়েনের কেবিনের পথে পা বাড়ায় রুহী।রোয়েন একমনে কাজ করছিলো।রুহীকে আসতে দেখে রামীন বলল,
.
.
-”আজ তো আর কাজ কি হবে?”
.
.
রামীনের কথায় রোয়েনের বেশ রাগ হয়।ও খেয়াল করেনি রুহীকে।রোয়েন বলল,
.
.
-”এসব আজেবাজে কথা বাদ দিয়ে কাজ কর।কি বলিস এসব?”
-”সামনে তো দেখ।বেহুশ হয়ে যাবি।”
.
.
বলেই হো হো করে হাসতে শুরু করে রামীন।রোয়েনের প্রায় বিরক্ত লাগে রামীনের এই হাসি টাকে।সবসময় এমন ফাজলামোর মানেই হয়না।রোয়েন এসব কথা গুলো ভেবে সামনে তাকিয়ে দেখে রুহী দাঁড়িয়ে আছে।তবে ওর মুখে কোন হাসি নেই।সুন্দর মুখখানা মলিন লাগছে।রোয়েন বলল,
.
.
-”রামীন তুই একটু বের হ।আমি পরে ডাকবো তোকে।”
-”আচ্ছা ঠিক আছে।”
.
.
রামীন বেরিয়ে গেলো।রোয়েন রুহীর দিকে তাকায়।রুহী এসে রোয়েনের রুমের ছোট টেবিলে ব্যাগ রাখে খাবারের।তারপর সোফায় গিয়ে বসে।রোয়েন ও এসে রুহীর পাশে বসে।রোয়েন রুহীর গালের চুল সরিয়ে বলল,
.
.
-”কি হয়েছে?”
-”কিছুনা।ভালো লাগছেনা।এখানে পায়েস আছে আপনার জন্য।”
-”ওহ ওয়াও।আজ তো দিনটাই ভালো যাবে।”
.
.
রুহী মুচকি হেসে টিফিন বক্সের ঢাকনা খুলে রোয়েনের সামনে এগিয়ে দেয় একটা চামুচ দিয়ে।রোয়েন একচামচ খেয়ে রুহী কে ও একটু খাইয়ে দিলো।রুহী খেয়াল করে রোয়েন শুধু ওকেই খাওয়াচ্ছে।রুহী রোয়েনের চামচ সরিয়ে বলল,
.
.
-”কি করছেন?আপনি খাচ্ছেননা কেন?”
-”তুমি চুপচাপ খাও।আমি আমারটা খেয়ে নিবো।”
.
.
রুহী আবার ও কিছু বলতে নিলে রোয়েন ধমক দিয়ে ওকে খাওয়াতে থাকে।পায়েস খাওয়ার শেষে রুহী পানি খেতে নিলে রোয়েন ওকে থামিয়ে বলল,
.
.
-”আমার ভাগের টুকু খেতে দিবেনা?”
-”আমাকেই তো খাইয়ে দিলেন।”
-”আমার ডেজার্ট এখন খাবো আমি।”
-”কেও চলে আসবে।”
-”সো হোয়াট।আমার বৌ কার কি যায় আসে।আর এখানে আমার পারমিশন ছাড়া কেউ ঢুকতে পারেনা।”
.
.
বলেই রুহীর ঠোঁটে ঠোঁট ডুবায় রোয়েন।রুহী রোয়েন কে একটু সরিয়ে বলল,
.
.
-”আমি যে এলাম।”
.
.
রোয়েনের বেশ রাগ হলো।এভাবে বিরক্ত করতে কি মজা পায় মেয়েটা?বিরক্ত হয়ে বলল,
.
.
-”তুমি আর সবাই এক না রুহী।এবার চুপ করো।”
.
.
রুহীকে আর কোন কথা বলতে দেয়না রোয়েন।ওর ঠোঁটজোড়া শুষে নিতে শুরু করে।আরো কয়েকটা দিন পার হয়ে যায়।অানিলা শোহরাব রেজোয়ান মাহবুবের খুব খেয়াল রাখতেন।সেটা রোয়েনের নজর কাড়ছিলো।রুহীকে বুকে নিয়ে শুয়ে কথা গুলো ভাবছিলো রোয়েন।হঠাৎ ফোন বেজে উঠায় ভাবনায় ছেদ পড়ে ওর।ফোন হাতে নিয়ে দেখে আনিলা শোহরাবের বাবা কল করছে।রোয়েন রুহীকে সরিয়ে ফোন নিয়ে বারান্দায় চলে যায়।
.
.
-”জি বলেন।”
-”ভালো আছো রোয়েন?”
-”এই তো আছি।আজ হঠাৎ কল দিলেন?”
-”আসলে অনেকদিন যাবৎ খেয়াল করছিলাম আনিলা রেজোয়ানের সাথে অনেক কথা বলছে।অনেক খেয়াল ও রাখছে আমার মেয়ে।তোমার শ্বশুড়ের কারনেই আমার মেয়ে বিয়ে বসেনি।আমার মেয়েটা তোমার শ্বশুড় কে অনেকটা পছন্দ করে।তোমার আপত্তি না থাকলে ওদের বিয়ের কথা চালাবো।”
-”আমি বুঝতে পারছি।ইনফ্যাক্ট ব্যাপারটা আমি ও খেয়াল করেছি।আমার এখানে আপত্তি থাকতে পারেনা কারন যেখানে আমার শ্বশুর খুশি থাকবে। এখন আমার ওয়াইফ আর শ্বশুরের সাথে কথা বলতে হবে।কারন আমার ওয়াইফ হঠাৎ তার মায়ের জায়গায় অন্য কাউকে মেনে নাও নিতে পারে।আর বাবার সামনে বিয়ের কথা বললে ওনার অন্য রকম লাগতে পারে।আমার মনে হয় আপনি বুঝতে পারছেন।”
-”হ্যা বুঝতে পারছি।কিন্তু এটা ও সত্যি মানুষ একা কতো বাঁচতে পারে?সবার সঙ্গী দরকার হয়।আর তোমরা ওনি কে কয়দিন দেখবা বলো।তোমাদের সংসার হয়েছে।সামনে বাচ্চা হলে ব্যাস্ত হয়ে যাবা।”
-”হুম।আচ্ছা তাহলে কথা বলে আপনাকে জানাই।”
-”আচ্ছা।তাহলে জানাই ও ঠিক আছে?”
.
.
রোয়েন ফোন কেঁটে রুমে এসে দেখে রুহী ঘুমিয়ে আছে।রুহীর পাশে এসে বসে রোয়েন।তারপর ওর গালে কপালে চুমু খেয়ে বুকে টেনে নিয়ে শুয়ে পড়ে।ভোর রাতে রুহীর ঘুম ভেঙ্গে যায়।চোখ খুলে দেখে রোয়েন ওকে দেখছে।রুহী বলল,
.
.
-”কি হলো ঘুমোচ্ছেননা কেন?”
-”তোমাকে দেখছি।তা তুমি উঠলে কেন?”
-”হঠাৎ ঘুম ভেঙ্গে গেলো।”
.
.
রুহী এসে রোয়েনের বুকে নাক ঘেঁষে শুতে যাবে তখনই রোয়েন রুহীকে থামিয়ে ওর ঠোঁটে ঠোঁট ডুবিয়ে রুহীর গায়ের নাইট গাউনটাকে রুহীর কাঁধ থেকে নামাতে থাকে।দুজনে ভালবাসার সাগরে পা ভাসায়।পরদিন সকালে রুহীকে কলেজে দিয়ে কাজে চলে আসে রোয়েন।সেদিন সন্ধ্যায় রোয়েন ফিরে এলে রুহী দুজনের জন্য কফি বানিয়ে আনে।রোয়েন কফির মগে চুমুক দিতে দিতে বলল,
.
.
-”রুহী ঐদিন মিস আনিলার বাবা আমাকে কল করেছিলেন।”
-”কেন?”
-”দেখ রুহী আনিলা তোমার বাবাকে পছন্দ করেন।সেটা আমি ও খেয়াল করেছি।ওনি তোমার বাবার যথেষ্ঠ খেয়াল রাখেন।তুমি যদি চাও তাহলে ওনাদের বিয়েটা,,,,,,,,,”
-”কি বলছেন আপনি এসব?এটা কখনোই সম্ভব না।মায়ের জায়গায় ঐ মহিলাকে কখনোই মানতে পারবোনা রোয়েন।”
-”রুহী দেখো তোমার বাবার,,,,,,,,”
-”প্লিজ আমি কিছু শুনতে চাইনা।আমি এ বিয়ে চাইনা রোয়েন।”
.
.
রোয়েন কিছু বলতে গেলে রুহী উঠে চলে যায়।ওর এসব ভালো লাগছেনা আর।রোয়েন অনেক কথা বলতে চেষ্টা করে কিন্তু কিছুতেই পারেনা।রুহী এমনিই ভালো থাকে কিন্তু আনিলা শোহরাবের নাম শুনলেই ও রেগে যায়।এদিকে রুহী সেদিন কলেজ থেকে ফেরার সময় রুহী দেখতে পায় একটা বাইক এ্যাক্সিডেন্ট ।সেদিন শামীম গিয়েছিলো ওকে আনতে।রুহী শামীম কে নিয়ে এগিয়ে গেলো লোকটার কাছে।লোকটার মাঢা হাত পা কেঁটে গেছে।আশেপাশে কেউ নেই।রুহী শামীমের সাহায্যে লোকটাকে হাসপাতালে নিয়ে আসে।তাকে ওটিতে ঢুকানো হয়।রুহী শামীমকে নিয়ে সেখানে কিছুক্ষন অপেক্ষা করে। লোকটার পরিবারে কল করা হয়েছে।এদিকে রুহীর ফোন আসছে বারবার।ফোন উঠিয়ে দেখলো রোয়েন কল করছে।এরই মাঝে একটা মেয়ে আসে।মেয়েটা রুহীকে দেখে ওর কাছে চলে আসে।তারপর বলল,
.
.
-”আপনি আমার ভাইকে বাঁচিয়েছেন তাই ধন্যবাদ।”
-ওয়েলকাম।তাহলে আমরা যাই।আপনি ওনার দিকে খেয়াল রাখবেন।”
.
.
রুহী শামীমকে নিয়ে চলে আসে।এদিকে ঘরে ফিরে দেখলো রোয়েন সোফায় বসে আছে।তখন সন্ধ্যা ছয়টা বাজে।রুহী রোয়েনকে দেখে অনেকটা ভয় পেয়ে যায়।
চলবে