তুই যে শুধুই আমার

তুই যে শুধুই আমার ! সিজন- ২ !! Part- 15

একটা পার্কের মধ্যে বসে আছে আরুশ আর সায়রা। দুইজনের মধ্যে কোন কথা নেই। পিন পিন নিরবতা। যা সায়রার মোটেও ভালো লাগছে না। পরিবেশটা ভুতরে লাগছে আর নিজেকে হোরোর মুভির নায়কা মনে হচ্ছে।

সায়রাঃ এইখানে কি খাম্বার মত বসিয়ে রাখতে আসছেন নাকি?? কিছু কি বলবেন নাকি চলে যাব??

আরুশ এক দীর্ঘ শ্বাস নিয়ে বলে।
আরুশঃ I want to marry you.. Will you marry me??

সায়রা চোখ পিটি পিটি করে তাকিয়ে বলে।

সায়রাঃ অভার ডেট চকলেট খাইয়া আসছেন নাকি?? কি আবোল তাবোল বকছেন।

আরুশঃ হোয়াট দ্যা হ্যাল!! এইখানে আমি কত বড় একটা ইম্পর্ট্যান্ট কথা বলছি আর তুমি কি বলছো। তোমার কাছে কি এইসব মজা মনে হচ্ছে??

সায়রাঃ তা নয়তো কি?? যে আপনি আমায় সহ্য করতে পারেন না সে আপনি আমায় বিয়ে করতে চাচ্ছেন!! সম্পর্কটা বেশ বেমানান হয়ে গেল না?? আর কেন আমায় বিয়ে করতে চান শুনি??

আরুশঃ ভালবাসি বলে। অনেক বেশি ভালবাসি তোমায়। আমি আর এক মূহুর্তও তোমার থেকে দূরে থাকতে পারছি না। এই কয়েকদিনে তোমার এই দূরত্ব আমায় কুড়ে কুড়ে খেয়েছে। আমি আর পারছি না। যত তারাতারি সম্ভব তোমায় নিজের করে নিতে চাচ্ছি যাতে তুমি চাইলেও আমার থেকে দূরে যেতে না পারো।

সায়রাঃ তা হঠাৎ এত ভালবাসার কারণটা কি আমি জানতে পারি??

আরুশঃ হঠাৎ করে না। আমি তোমায় আরও অনেক আগে থেকে ভালবাসি। যেদিন তোমায় প্রথম দেখি সেইদিনই তুমি আমার হৃদয়ে স্থান দখল করে নিয়েছে। এই হৃদয়ের পুরোটা জুড়েই নিজের স্থান দখল করে নিয়েছ তুমি। তাই এখন এই হৃদয় যে এখন শুধু তোমাকেই চায়। হবে কি তুমি আমার?? হবে কি আমার এই হৃদয়ের রানী??

সায়রাঃ অহহ প্লিজ স্টোপ দিস রাবিস। এইটা কোন সিনেমা বা মুভির শুটিং হচ্ছে না যে আপনি নায়কের মত এমন মিষ্টি মিষ্টি কথা বলবেন আর আমি নায়কার মত নাচতে নাচতে হ্যাঁ বলে দিব। ইটস রিয়ালিটি। এইখানে এইসব চকলেট মাখানো কথায় কেউ চকলেটের মত গলে না। হুহ!!! লাইফটারে সিনেমেটিক বানাইয়া দিল।

আরুশ এখন নিজের কানের থেকে ব্লুতুথ স্পিকার বের করে জোরে মাটিতে আছাড় মেরে বলে।

আরুশঃ হুহ! আয়ানের বাচ্চা। আগেই জানতাম এইসব থার্ড ক্লাস মেলোড্রামা কাজ করবে না। তার উপর কথা যখন এই চকলেট পাগল সায়রার কথা হোক। কোন দুঃখে যে এইসব বাকওয়াস আইডিয়া মানতে গেলাম। রাগে ফুসতে ফুসতে।

সায়রা অবাক হয়ে একবার আরুশের দিকে তাকাচ্ছে আরেক বার ব্লুতুথ স্পিকারের দিকে।

সায়রাঃ তার মানে এতক্ষণ যা যা বললেন তা আপনার কথা ছিল না?? আপনাকে কেউ এইসব শিখিয়ে দিচ্ছিল??

আরুশঃ তোমার কি মনে হয় আমি এমন আবেগ ময় কথা বলবো?? সেক ইট অফ!! আমার দ্বারা এইসব প্রেমময় সাহিত্যিক কবি হয়ে কথা বলা জাস্ট ইম্পসিবল। এইসব আমার দ্বারা হয় না। বাট আমার ওই স্টুপিড ফ্রেন্ড বললো এমনে না বললে নাকি মেয়ে পটে না তাই ওর হ্যাল্প নিয়ে এই কথাটি বলা। বাট হলো টা। Such a time waste.

সায়রা বিয়ের প্রস্তাবেও এত শোকড হয়নি যতটা না এখন হচ্ছে। কেউ নাকি এইসব বলার জন্য অন্যের হ্যাল্প নেয়। হায়রে মাবুদ। সায়রা এইসব দেখে এক বস্তা দুঃখ নিয়ে ব্যাগ থেকে একটা চকলেট বের করে খেতে খেতে বলে।

সায়রাঃ তহ এতক্ষন কি এইসব নাটক ছিল??

আরুশঃ নো মাই সায়ুপাখি। সব সত্যিই ছিল জাস্ট মুখের ভাষাটি অন্যের শিখানো ছিল। বাকি সব আবেগ, অনুভূতি সত্যি ছিল। আই রেইলি লাভ ইউ এন্ড ওয়ান্ট টু ম্যেরি ইউ।

সায়রাঃ এই প্রথম বিয়ের প্রস্তাব এমন দেখলাম যে বিয়ের প্রস্তাবের কথা বলতে অন্যের হ্যাল্প নিতে হয়।😒

আরুশঃ ওকে আমি তোমায় আমার নিজের মত করেই বলছি। দেখ আমি এত পেঁচিয়ে কথা পারি না তাই ডাইরেক্টলি বলছি।

সায়রাঃ দেখাই গেছে কত পেঁচিয়ে বলেন আর কত না।😕

আরুশঃ আ’ম সিরিয়াস!

সায়রাঃ কানটিনিউ

আরুশঃ আই লাভ ইউ। তাই তোমায় একদম নিজের করে নিতে চাই। তোমায় সারাজীবনের জন্য নিজের কাছে রাখতে চাই। আরুশের সায়রা করতে চাই তোমায়। এখন সেটা তুমি চাও আর না চাও। তোমায় আমার হতেই হবে তা যে কোন মূল্যেই হোক। Because #You_are_only_mine.

সায়রাঃ বাবা গো এতনা বাড়া থ্রেড ওয়ালা প্রাপসার!!😱 আমি তহ শোকে কেঁদেই ফেললাম। তা আমি একা কেন শোক খাব ওয়েট আপনাকেও শোক দেই।
তা আপনি যাকে মাত্র এই থ্রেড ওয়ালা প্রাপস করলেন সে অন্যের বাগদত্তা মানে অন্যের হবু বউ।

আরুশঃ তাতে কি?? হবু বউ তহ বউ তহ আর না। সো চিল।😎 কেন না তুমি তার হবু থেকে খুব জলদি হবু এক্স হচ্ছো আর আমার বউ হচ্ছো।

সায়রাঃ শোকে কি মাথার তার সব ছিড়ে গেছে নাকি!! কি সব আবোল তাবোল বলছেন??

আরুশঃ আবোল তাবোল বলছি না সায়ুপাখি। যা বলছি তা ১০১% সত্যি বলছি। বউ তুমি আমারই হবে।

সায়রাঃ আপনার বউ হতে আমার বয়ে গেছে হুহ।😕 আপনি আমার সাথে যা যা করেছেন তা আমি ভুলি নি। সব মনে আছে। এইসব এর পর আপনি ভাবলেনও কি করে যে আপনাকে আমি বিয়ে করবো?? আমি জবে আসছি কারন এইটা আমার আপুর ড্রিম ছিল আর আমার দায়বদ্ধতা। নাইলে আমি কোনদিনও ওই অফিসে পাও রাখতাম না।

আরুশঃ আই নো সায়ুপাখি। তাই তহ শুধু তোমার জন্যই আমি ওই পেপারটা বানিয়েছিলাম।

সায়রাঃ মানে??

আরুশঃ মানে তুমি বাদে সবাই যেকোনো টাইমে জব ছাড়তে পারবে বাট তুমি না। আমি জানতাম তুমি আমার অত্যাচারে অতিষ্ট হয়ে জব ছাড়তে চাইবে তাই তহ আমি এই পেপারটা বানাই। বাট ওইদিন তোমায় ওয়ার্ন করার জন্য সবার সামনে বলি যে কেউ নিজ ইচ্ছায় জব ছাড়তে পারবে না।

সায়রাঃ হোয়াট দ্যা চকলেট!!!! আপনার সাহস কি হলো এইসব করার??

আরুশঃ আমার সাহসের এখনো কিছুই দেখো নি। তোমায় আমি নিজের কাছে রাখার জন্য খুন করতেও পিছ পা হবো না। তোমার আর আমার মাঝে যে আসবে তাকে আমি শেষ করে দিব। কেন না #তুই_যে_শুধুই_আমার। তোমার উপর শুধু আমার অধিকার শুধু আমার।

সায়রাঃ ইউ আর জাস্ট আ সাইকো। যেখানে আমি বলছি আমি অন্যের বাগদত্তা, অন্যের হবু বউ সেখানে এইসব কিভাবে বলছেন আপনি?? লজ্জা করছে না। কোন অধিকারে এইসব বলছেন আপনি হ্যাঁ কোন অধিকারে??

আরুশঃ অধিকার জানতে চাও তাই তহ। ঠিক আছে একটু পরই জেনে যাবে।

সায়রাঃ মানে??

আরুশ কিছু না বলে পকেট থেকে একটা স্প্রের বোতল বের করে সায়রা মুখে স্প্রে করে। আর সায়রা আস্তে আস্তে ঢলে পরে আরুশের বুকে।

আরুশঃ আমি ভাল মতই জানতাম যে তুমি এইরকম এই করবে। তাই তহ আগে থেকেই প্রস্তুতি নিয়ে এসেছি। তুমি শুধু এই আরুশের আর কাউরো না। হয়তো তুমি আমার রানী হয়ে থাকবে তা না বলে বন্দিনী। কিন্তু থাকতে তহ হবে তোমায় আমারই কাছে।এখন শুধু অপেক্ষার পালা। এর পর___ ডেভিল হাসি দিয়ে।।



#চলবে