তুই যে শুধুই আমার ! সিজন- ২ !! Part- 03
সায়রা উপরে গিয়ে নিশি ম্যামকে ফাইল দেয়,, পরে গিয়ে নিজের সিটে গিয়ে বসে,, বসে একটা ফাইল দেখতে থাকে,, কাজ করতে করতে দুপুর হয়ে যায়,, এইদিকে সকলেই তাদের বসকে ওয়েলকাম করার জন্য অধীর আগ্রহে বসে আছে,, কিন্তু তার কোন খোঁজ খবরই নেই,,
কিছুক্ষণ পরেই নিশির ফোনে একটি কল আসে,, ফোন রিসিভ করে নিশি জানতে পারে আজ তাদের বস আসছে না,, তিনি কাল আসবে,, আর কাল যেন সকলেই উপস্থিত থাকে,, আর আজ তেমন কাজ নেই বলে সকলকে ছুটি দেওয়া হলো,,
সায়রার কানে কথাটা যেতে দেরি কিন্তু বের হতে দেরি নেই,, সায়রা ওর ব্যাগ নিয়ে এক দৌড়ে অফিসের বাইরে চলে যায়,,
।
সায়রাঃ ঢিংকা চিকা ঢিংকা চিকা,, এ এ এ এ,, আজ আর কাজ করতে হবে না,, কি মজা,, আজ তহ বাসায় গিয়ে লম্বা একটা ঘুম দিব,,
।
তখনই জান্নাতের ফোন আসে,, জান্নাত হচ্ছে সায়রার বেস্টি,,
।
জান্নাতঃ কিরে কই তুই,,
সায়রাঃ আমার যেখানে থাকার কথা আমি সেখানে,,
।
জান্নাতঃ আরেহ গাধী কোথায় তুই,, আজ না তোর ভারসিটি আসার কথা নোটস নেওয়ার জন্য,, ভারসিটিতে তহ আসলি না,,
।
সায়রাঃ আমি কি সাদে আসে নি,, আজকে অফিসে বসের আশার কথা ছিল যার জন্য আমাদের সবাইকে থাকতে বলসিল,, বাট ওই বেটা এলিজেবাথের নাতি আসেই নাই,,
।
জান্নাতঃ হইসে,, তুই বাসায় আয়,, তোর জন্য আমি নোটস রেডি রাখসি,, সামনের সেমিস্টারের জন্য এইটা অনেক বেশি জরুরি,,
।
সায়রাঃ লাভ ইউ জানু,, আমার কথা কত ভাবস তুই,, তুই না থাকলে আমার মত নিরিহ অসহায় আলসি পাগলি মেয়ের যে কি হতো,,, কত ভালো তুই জানিস,, তোর মন তহ মাদার তেরাসা থেকেও অনেক উদয়,,
।
জান্নাতঃ ওরে আমার নিরিহ অসহায় মাইয়ারে,, আমারে এত পাম দেওয়া লাগবো না,,
।
সায়রাঃ বুঝলি কেমনে,,,
।
জান্নাতঃ সায়রায়ায়ায়া,,,
।
সায়রাঃ আরেহ বাবা মজা করতাসি,, ১০ মিনিটে আসতাসি,, ওয়েট,,
তারপর সায়রা জান্নাতের বাসার দিকে রওনা হয়,, জান্নাতের কাছ থেকে সব নোটস নিয়ে সেগুলো বুঝতে বুঝতে সন্ধ্যা হয়ে যায়,, এই অফিসের জন্য সে বেশি ক্লাস করতে পারে না,, যার ফলে অনেকটা পিছিয়ে যায়,, তখন জান্নাতই ওকে হেল্প করে,, সব টাইপের নোটস আর পড়া বুঝিয়ে দেয়,, দুইজন দুইজনের প্রাণ,, ছোট থেকে সাথেই বড় হয়েছে এবং একই সাথে একই ভারসিটিতে একই সাবজেক্ট নিয়ে পড়ছে,,
সায়রা সব কিছু বুঝে সন্ধ্যার দিকে বের হয়ে যায়,, রাস্তা দিয়ে যাচ্ছিল তখন ওর চোখ গেল ফুসকার স্টোলের দিকে,, ফুসকা দেখে সায়রাকে আর ধরে কে,, সায়রা চট জলদি স্কুটিটা থামিয়ে একদম ঝাল দিয়ে ফুসকা অর্ডার দিল,,
ফুসকা আসার সাথে সাথে সায়রা খাওয়া শুরু করলো,, ফুসকা খাওয়া প্রায় শেষের দিকেই এমন সময় এক বিকট শব্দ ওর কানে আসে,, সে পাশে তাকিয়ে দেখে তার স্কুটির সাথে এক গাড়ির ধাক্কা লেগেছে,, যার ফলে স্কুটিটি নিচে পড়ে গিয়েছে,, সায়রা দৌড়ে স্কুটির কাছে যায়,, গিয়ে টেনে সেটাকে দাড় করায়,, দাড় করিয়ে দেখতে থাকে,, তেমন ক্ষতি হয় নি,,পিছনে হাল্কা টেন্ট পরে গিয়েছে আর এক সাইডের লুকিং মিরোর ভেংগে গিয়েছে,, সায়রা তহ এইটা দেখে রেগে বোম,,, এইই স্কুটিটা তার অনেক প্রিয়,, কেন না ওর বাবা ওকে এইটা গিফট করেছিল,, সায়রা গিয়ে ওই গাড়ির সামনে দাড়ায়,, আর চেঁচিয়ে বলে,,
।
সায়রাঃ গাড়ির ভিতরে কে আছেন বের হন বলছি,, বের হোন,,
।
তখন গাড়ির দরজা খুলে একটি ছেলে বেরিয়ে আসে,, সায়রা একবার উপর থেকে নিচ পর্যন্ত ওকে স্ক্যান করে নেয়,,পড়নে ব্ল্যাক গেঞ্জি আর ব্ল্যাক প্যান্ট,, গায়ের রং উজ্জ্বল শ্যামলা,, হাইট ৫” ১০ ইঞ্চি হবে,, দেখতে বেশ হ্যান্ডস্যাম,, বাট তাতে সায়রার কি,, সায়রার মাথা তহ এখন শুধু স্কুটির ট্যান্ট আর ভাঙ্গা মিরোরই ঘুরপাক খাচ্ছে,, সায়রা সামনে গিয়ে বলে,,
।
সায়রাঃ আপনি কানা নাকি হ্যাঁ,, দেখে গাড়ি চালাতে পারেন না,, নাকি গাড়ি চালাতে পারেন না,,
।
ছেলেটি সায়রাকে দেখে কেন জানি চোখ গরম করে ফেলে,, চোখে মুখে রাগি ভাব ফুটে উঠেছে,, সে বেশ রাগি সুরেই বলে,,
।
ছেলেটিঃ হোয়াট ডু ইউ মিন বায় দ্যাট,, আর আমাকে কোন দিয়ে কানা মনে হয় আপনার,,
।
সায়রাঃ হাত মুখ চোখ কান পা ঠোঁট গলা কলিজা লিভার সব দিক দিয়ে,,, কানা না হলে কি এমন করতেন,,
।
ছেলেটিঃ কি করেছি আমি,,
।
সায়রাঃ দেখেন আপনি আমার স্কুটির হাল নাজেহাল করে ফেলেছেন আপনি,, ঠোঁট উল্টিয়ে,,
।
ছেলেটি সেইদিকে তাকিয়ে দেখে সেই স্কুটিটি যেটির সাথে কিছুক্ষণ আগে গাড়ি পার্ক করার সময় ধাক্কা লেগেছিল,, স্কুটির পিছনে হাল্কা টেন্ট পড়েছে আর সাইড মিরোরটা ভেঙ্গে গেছে,, তা দেখে ছেলেটি একটা ভাব নিয়ে বলে,,
।
ছেলেটিঃ এতে এমন কি হয়েছে,, হাল্কা ট্যান্টই পড়েছে,,অহহ বুঝেছি এখন এর রিপিয়ার এর খরচ লাগবে তাই তহ,, ওয়েট,,
ছেলেটি গাড়ির ভিতর থেকে ওয়ালেট এনে ১০ হাজার টাকা সায়রার হাতে ধরিয়ে দেয়,, আর বলে,,
।
ছেলেটিঃ যা দরকার তার চেয়ে বেশি আছে,, নিজের এই স্কুটি ঠিক করে নিয়েন এন্ড বাকি টাকা নিজে রেখে দিয়েন,, আর নেক্সট টাইম কোন গাড়ির আগে এইভাবে স্কুটি পার্ক করবেন না,,
এই বলে ছেলেটি চলে যেতে নেয়,, তখন সায়রা পিছন থেকে ডেকে বলে,,
।
সায়রাঃএইযে মি. উগান্ডার প্রেসিডেন্ট,, একটু দাড়ান,,
ছেলেটি ঘুরে দাড়ায় সায়রা সামনে এসে সেই ছেলের হাতে টাকাটা ধরিয়ে দিয়ে বলে,,
।
সায়রাঃ এই টাকাটা আপনিই রাখেন এইটা আপনার দরকার পড়বে,,
।
ছেলেটিঃ মানে,,
।
সায়রাঃ ওয়েট,,
এই বলে সায়রা নিচে পড়ে থাকা পাথরটি উঠিয়ে গাড়ির ইঞ্জিনের উপর মারে,, যার ফলে গাড়িটির উপর ট্যান্ট পড়ে যায়,, তারপর ফুসকার দোকানের সামনে গিয়ে নিচে রাখা ফুসকার ময়লা পানির বালতি নিয়ে সেই গাড়ির উপর ঢেলে দেয়,, তা দেখে সেই ছেলেটি হা হয়ে সায়রার দিকে তাকিয়ে থাকে,,, তারপর রেগে গিয়ে বলে,,
।
ছেলেটিঃ এ কি করলেন,,
।
সায়রাঃ আপনি সত্যি কানা নাকি,,কি করেছি দেখলেনই তহ,,আবার জিজ্ঞাস করেন কেন,, আর এমনেও এতে এমন কি হয়েছে,, শুধু একটু ট্যান্ট পড়েছে,, আর বাকি এর ভিতরে নাড়ি ভুড়ির কি হয়েছে সে পড়ে চেক করে নিয়েন,,
।
ছেলেটিঃ ইউউউউউ,,,
।
সায়রাঃ ইউ কি হ্যাঁ,, নিজের গাড়ির এই অবস্থা দেখে কষ্ট লাগছে তাই তহ,, আমারও লেগেছিল যখন আমার স্কুটির আমি এই অবস্থা দেখি,, যেখানে আপনার আমায় সরি বলা উচিৎ ছিল সেখানে আপনি আপনার টাকার গরম দেখালেন,, তাই বাধ্য হয়ে এমন করলাম যাতে বুঝেন নিজের জিনিস নষ্ট হলে কেমন লাগে,, আর হ্যাঁ নিজের টাকার গরম অন্য কোথাও দেখাবেন আমার সামনে না,, টাকা দিয়ে জিনিস ঠিক করা গেলেও ফিলিংস ঠিক করা যায় না,, মাইন্ড ইট,,
।
এই বলে সায়রা স্কুটিতে বসে চলে যায়,, আর ছেলেটি ওর যাওয়ার দিকে তাকিয়ে রাগে ফুসতে থাকে,,
।
ছেলেটিঃ ইউ হ্যাভ টু পে ফোর দিস মিস,, আমার সাথে লাগার ফল তুমি পাবে,, কিন্তু তা আমার স্টাইলে,,
এই বলে ছেলেটি কাউকে ফোন করে গাড়ি রিপেয়ার করতে নিয়ে যেতে বলে,, কেন না গাড়িতে পানি ইঞ্জিনি চলে গিয়েছে যার ফলে ইঞ্জিন নষ্ট হয়ে গিয়েছে,, তার উপর গাড়ি থেকে কেমন উটকো গন্ধ আসছে,,
ছেলেটি একটা উবার বুক করে সেটাতে করে চলে যায়,,
।
🌼এইদিকে🌼
।
।
।
#চলবে