তারে আমি চোখে দেখিনি

তারে আমি চোখে দেখিনি ! সিজনঃ-2 !! Part- 05

অন্ধকার স্টোর রুমে আয়াত বাঁচাও বাঁচাও করে চিৎকার জুড়ে দেয়। চিৎকার করে পেছনে ঘুরে তাকাতেই আয়াত মেঘকে দেখতে পাই। মেঘ তার ফোনের ফ্লাস লাইটের আলো জ্বালিয়ে নিজের মুখের উপর ধরে।আর ইশারায় আয়াতকে বোঝায়।এখানে আমি আছি।প্লিজ ভয় পেয়ও না।আমি তোমার কোনো ক্ষতি করবো না।আয়াত আর চিৎকার করে না।ভয় পাই কিন্তু চুপ করে থাকে।মেঘ ধীরে ধীরে আয়াতের দিকে আগায়। আয়াত এতোটা ভয় আগে কখনো পাই নি।এরকম আটকা জায়গায় আর অন্ধকার রুমে মেঘের সাথে বন্দী এটা ভাবতেই আয়াত নার্ভাস হয়ে ঢুলে পরে।মেঘ তখন আয়াতের সামনে এসে দাড়িয়েছে।আয়াত পরতে লাগলেই মেঘ আয়াতকে ধরে বসে আর নিজের বুকের সাথে মিশিয়ে নেয়। আয়াতকে ডাকে মেঘ,

মেঘঃ আয়াত ওঠো! আয়াত তুমি সুস্থ আছো?

আয়াতের কোনো সাড়া শব্দ না পেয়ে। মেঘ আয়াতকে নিয়ে স্টোর রুমের একটা বেঞ্চের উপরে শুইয়ে দেয়। আর আয়াতের জ্ঞান ফিরাবার জন্য আসেপাশে তাকিয়ে পানি খুঁজতে থাকে।দেখে বেঞ্চের নিচে একটা বোতলের তলায় কিছুটা পানি আছে।মেঘ বোতলটা উঠিয়ে আয়াতের চোখ থেকে চশমাটা খুলে আয়াতকে পানির ছিটা দেয়।

চোখে পানির ছিটায় আয়াতের জ্ঞান ফেরে।আর আয়াত লাফিয়ে উঠে বসে।মেঘ আয়াতের সামনে ঝুঁকে পানির ছিটা দিতে থাকায় আয়াত উঠে বসতেই মেঘের বুকে হুমড়ি খেয়ে পরে।আর মেঘ তাল সামলাতে না পেরে আয়াতের পিট জোড়িয়ে আয়াতকে নিজের বুকের সাথে মিশিয়ে নেয়।

আয়াত জোড়ে এক ধাক্কা দিয়ে মেঘকে কিছুটা দূরে সরিয়ে দিয়ে বসা ছেড়ে উঠে দাড়ায়। আর বলে,

আয়াতঃ প্লিজ স্যার! আমার কোনো ক্ষতি করবেন না! আমি অতো জীবনের প্যাচক্যাচ বুঝি না।আমার গতকালকের ব্যবহারে যদি কোনো ভুল হয়ে থাকে তাহলে আপনারা আমাকে ক্ষমা করে দিবেন।দয়া করে এখান থেকে আমাকে যেতে দিন।

মেঘ তো আয়াতের কথা শুনে অবাক।তাহলে কি আয়াত মেঘকে ভুল বুঝছে? কিন্তু মেঘতো কিছু করে নি।

মির্জা প্যালেসে,,
মাহির মায়ার পিছনে এসে দাড়ায় আর মায়াকে ডাকে।অনেকভাবে মায়ার রাগ ভাঙানোর চেস্টা করে মাহির কিন্তু পারে না।মায়া মাহিরকে বলে,

মায়াঃ ২০ বছর আমাকে আপনার থেকে দূরে রেখেছিলেন তাই না? দেখা করেন নি পর্যন্ত আমার সাথে।আর তাই, আজ এখন থেকে ৪০ বছর আপনি আমার থেকে দূরে থাকবেন।তারপর ক্ষমা করবো আপনাকে।

মাহিরঃ মানে কি বলছো মায়া?

মায়াঃ শোধ তুলবো! ভুলে গেলেন ঠিক এইভাবে আমি আপনার উপর শোধ তুলতাম ২০ বছর আগে?

মাহিরঃ তাই বলে ৪০ বছর?

মায়াঃ হ্যাঁ ৪০ বছর। কম হয়ে গেছে আরও টাইম বাড়াবো?

মাহিরঃ এই এতোদিনপর তোমার কাছে আমি আসলাম।আর তুমি আমার সাথে এমন করতে পারলে? তুমি জানো মায়া তোমার থেকে আমি আর ৪০ সেকেন্ডও দূরে থাকতে পারবো না।তবুও আমি ২০ টা বছর তোমার থেকে দূরে থেকেছি।তোমার কি মনে হয়? আমার কস্ট হয় না? ঠিক আছে তুমি যখন চাও ৪০ না ৫০ বছর পর আমি তোমার কাছে আসবো।আর এই ৫০ বছরে তুমিও আমাকে দেখা দিও না।নিজের মুখটা সবসময় ঢেকে রেখও কারণ আমি আর আমার বাড়ি থেকে কোথাও যাবো না।

মাহিরের এমন কথা শুনে মায়া এবার সত্যি সত্যি রেগে যায়। রাগে মাহিরের পিঠে দুই চারটা কিলও বসিয়ে দেয়। তারপর শাড়ির আঁচল কোমড়ে গুজে। রাগি ভঙ্গিতে মাহিরের দিকে তাকায়। আর বলে,

মায়াঃ ইয়ারকি করছেন? আমার অনুভুতিকে আপনার কাছে ইয়ারকি মনে হয়?

মাহির মায়ার কোমড়টা জড়িয়ে ধরে আর বলে,

মাহিরঃ আমি ইয়ারকি করছিলাম না মায়া।যা বলছিলাম সত্যি বলছিলাম।

ভার্সিটিতে,,
মেঘ আয়াতের কোনো কথার উত্তর না দিয়েই লাবন্যকে ফোন দেয় আর বলে,

মেঘঃ তোমার সান্ডপান্ডরা তো সব আমাকে আর আয়াতকে একই রুমের মধ্যে বন্ধ করে রেখে গেছে। আমরা কি এভাবেই থাকবো নাকি বাইরে বের করবা।

মেঘের কথা শুনে লাবন্য বিশাল আকারে রেগে যায়।

চলবে,,,,

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *