ঘৃণার মেরিন

ঘৃণার মেরিন Season 3 !! Part- 21

নীড় যতোই মেরিনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে ততোই নীড়ের heartbeat fast হচ্ছে । নীড় এর কারন বুঝতে পারছেনা । মেরিন মিষ্টি ১টা হাসি দিয়ে তাকিয়ে আছে নীড়ের দিকে । ২চোখ ভরে নীড়কে দেখছে। নীড় যতোই চেষ্টা করছে যে মেরিনের দিকে না তাকানোর চেষ্টা করছে ততোই অবাধ্য চোখ ওর দিকে তাকাচ্ছে । মেরিনের ঠোটের কোনের হাসিটা সব গুলিয়ে দিচ্ছে। ভেবে পাচ্ছেনা চেহারাটা কার সাথে যেন মিলে ? অবশেষে নীড় মেরিনকে ক্রস করে just ২-৩কদম গেলো। তখন মেরিন ডাক দিলো ।
মেরিন : নীড়…
না চাইতেও থেমে গেলো। ঘুরলো ।
.
মেরিন এসে ঠিক নীড়ের সামনে এসে দারালো ।
নীড় : who r u? তুম… sorry আপনি আমার নাম কি করে জানলেন ?
মেরিন : তোমার নাম আমি না জানলে কে জানবে হামমম?
নীড় : sorry i have to…
নীড় চলে যেতে নিলো ।
মেরিন : যদি বলি আমি বনপাখি …
নীড় তৎক্ষনাক পিছে ঘুরলো ।
নীড় : বনপাখি …?
মেরিন : আমি মেরিন বন্যা । তোমার বনপাখি …
না চাইতেও নীড়ের মনটা খুশিতে ভরে উঠলো । আবার তখনই কবিরের মৃত দেহের কথাটা মনে পরলো।
মেরিন : কি এতো ভাবছো?
নীড় : ভাবছি খুনী মেরিন বন্যা আমার সামনে দারিয়ে আছে । কখন যেন আমার খুন করে ফেলে ।
বলেই নীড় চলে গেলো । মেরিন হা করে নীড়ের চলে যাওয়া দেখলো । মেরিন জেলে থেকে অন্যদের বিরুদ্ধে লড়তে শিখেছে ঠিকই । কিন্তু আপনজনদের বিরুদ্ধে তো লড়তে শিখেনি …
মেরিন : নীড়ও এগুলো বলল। নীড়কে তো বলতে হবে ।

নীড় : মেরিন কোথায় থেকে এলো ? জেল থেকে বের হয়েছে … জেল থেকে বের হয়ে এখানে এলো কেন ? যার স্মৃতি থেকে পালিয়ে বাংলাদেশ থেকে ছুটে এখানে এলাম । ৬বছর ধরে এখানে পরে আছি । আজকে সেইই চোখের সামনে এলো । why ?
তখন নীরা জান বলে নীড়কে পেছন থেকে জরিয়ে ধরলো ।
নীড় : কে …
নীরা : আমি ছারা কার সাহস আছে তোমাকে এভাবে জরিয়ে ধরার?
নীড় : নীরা…
নীরা : তো কে??
নীড় নীরাক ছারালো ।
নীড় : তুমি ভালোমতোই জানো আমার এগুলো ভালো লাগেনা …
নীরা : তোমাকে আমি ভালোবাসি … তুমি আমাকে ভালোবাসো … তো problem টা কোথায় ?
নীড় : problem টা জানোনা কি?
নীরা : don’t say যে সেই ছোট্টবেলার বিয়েটা problem … ওটা ভিত্তিহীন …
নীড় : বিয়ে বিয়েই হয়… আর যতোদিন সেই বিয়ের তালাক না হবে ততোদিন distance maintain করতে হবে ।
নীরা : 😒। whatever … সবাই যে wait করছে আমাদের জন্য সে খেয়াল কি আছে ?
নীড় : হামম। আছে । বসো রেডি হয়ে আসছি ।
নীরা : ok জান।
নীড় রেডি হয়ে এলো ।
নীড় : তুমি এতো short dress কেন পরো?
নীরা : its stylish babes… চলো।
এরপর ২জন bmw নিয়ে ড্যাং ড্যাং করতে করতে চলে গেলো ।
ওরাও বের হলো আর মেরিনও এলো। মেরিন পেছন থেকে দেখলো ।
মেরিন : যাহ… চলে গেলো । সাথে কে ছিলো মেয়েটা? মনে হয় কোনো friend । আরেকটু আগে এলে …
মেরিন wait করতে লাগলোম। নীড় সারা রাত বন্ধুদের সাথে পার্টি করলো । আর মেরিন wait করতে লাগলো । security guard দের চোখের আরাল হয়ে wait করলো । ১সময় ঘুমিয়ে গেলো । রাত ৩-৪টার দিকে নীড় এলো । নিজের ফ্ল্যাটে গেলো । মাথা মুছতে মুছতে বারান্দায় গেলো । মেরিনকে দেখতে পেলো । ঘুমিয়ে আছে …
নীড় অবাক হলো ।
নীড় : ঠান্ডার মধ্যে মেয়েটা ওখানে বসে আছে কেন? যা মন চায় করুক…
নীড় রুমে গেলো। কিন্তু কিছুতেই শান্তি পেলোনা । ৫মিনিটের মাথাতেই ১টা blanket এনে মেরিনের গায়ে জরিয়ে দিলো।
নীড় : তুই অমানুষ হলেও আমি তো মানুষ । huh…
নীড় রুমে গিয়ে light off করে শুয়ে পরলো ।
কিছুক্ষন পর থেকে বাইরে snowfall হতে লাগলো ।

সকালে …
১০টা..
নীড়ের ঘুম ভাঙলো । বাইরে তাকিয়ে দেখে snowfall হচ্ছে ।
নীড় : wow snow..
নীড় ছুটে নিচে গেলো নীড়ের snowfall ভীষন পছন্দ । চলতে চলতে কিছুর সা়থে বেজে ধিরিম করে হোচট খেয়ে পরে গেলো ।
নীড় : what the hell is this…
নীড় খেয়াল করে দেখে যেটার সাথে বেজে নীড় পরেছে সেটা হলো মেরিন …
নীড় : মেরিন …
নীড় মেরিনের কপালে-গালে হাত দিয়ে দেখলো সমানে ঠান্ডা হয়ে আছে ।
নীড় : oh no…. ও তো জমে বরফ হয়ে গিয়েছে । এখন ?
.
বেশকিছুক্ষনপর…
মেরিনের জ্ঞান ফিরলো । চোখ মেলে দেখে ১জন মাঝবয়সী মহিলা বসে আছে । বাঙালিই মনে হচ্ছে মেরিনের ।
মেরিন : আমি এখানে? আপনি কে ?
মহিলা : আমার নাম মিমি। ছোটবড় সবাই আমাকে মিমি বলেই ডাকে ।
মেরিন : আমি এখানে ?
মিমি : বাহিরে পরেছিলে । বরফে ঢেকে গিয়েছিলে । দেখে নিয়ে এলাম ।
মেরিন : oh… thank u…
মিমি : এই শীতের মধ্যে ওখানে বসে ছিলে কেন ?
মেরিন : কারো জন্য অপেক্ষা করছিলাম । কখন চোখ লেগে গিয়েছি বুঝতেই পারিনি। আর যখন আবার চোখ মেললাম তখন ওঠার শক্তি ছিলোনা ।
মিমি : কার জন্য অপেক্ষা করছিলে ?
মেরিন : করছিলাম কারো জন্য । আসছি মিমি।
মিমি : এই শরীর নিয়ে কোথায় যাবে? চুপচাপ বসো ।
মেরিন : নানা মিমি বাসায় ফিরতে হবে । কাল-পরশু থেকে class start হবে। আসি ।
মিমি : আরে কিন্তু…
মেরিন বেরিয়ে গেলো । যাওয়ার সময় দেখলো নীড়ে ফ্ল্যাটে তালা দেয়া । নীড় হাফ ছেরে বাচলো ।
মিমি : ওর সেবাযত্ন করলে তুমি আর credit দেওয়ালে আমাকে … তুমি কি ওকে চিনো ?
নীড় : না …
মেরিন আরো ২দিন এসে নীড়ের ফ্ল্যাটে তালা দেখে ফেরত গেলো ।

আরো ২দিনপর …
আজকে ভার্সিটিতে মেরিনের ১ম class । মেরিন দারিয়ে আছে । কখন নীড় আসবে । অবশেষে নীড় এলো । bike এ.. কিন্তু পিছনে সেদিনের সেই মেয়েটা। ছোট পোশাক পরা ।
মেরিন : কি মেয়েরে বাবা । huh… আমার জামাইর সাথে ঘুরে বেরায় । আচ্ছা মেয়েটাকে চেনা চেনা লাগছে । নীরা আপুর মতো। আচ্ছা এটা নীরা আপু নয়তো …
মেরিনকে দেখে আবারও নীড়ের চোখ আটকে গেলো । bike accident করতে করতে বেচে গেলো । কোনোরকমে break মারলো । মেরিন দৌড়ে গেলো । নীরা সামান্য একটু ব্যাথা পেলো । তাই নিয়ে ভ্যা ভ্যা করতে লাগলো ।
নীড় : r u ok জান?
নীরা : no i am not ok…
নীড় : ইশ রক্ত পরছে । দারাও …
নীড় তারাতারি রুমাল বের করলো। মেরিন দেখছে। নীড় মেরিনকে দেখানোর জন্য আরো বেশি caring দেখাচ্ছে । এখনকার মেরিন হলে হয়তো তুলকালাম বাধাতো । কিন্তু এই মেরিন ৭বছর জেলে থেকে অন্যদের সাথে লড়াই করতে শিখেছে ঠিকই। কিন্তু আপনজনদের সাথে লড়াই করতে শিখেনি । কিন্তু এই দৃশ্য কেন যেন মেনে নিতে কষ্ট হচ্ছে । তারওপর আশেপাশের সবাই love birds love birds বলছে ।
নীরা : আমার ব্যাথা এখনই যেতে পারে … যদি?
নীড় : যদি?
নীরা : তুমি এই ব্যাথার মধ্যে ১টি sweet sweet kiss দাও। 😉।
নীরা জানে নীড় কখনোই দিবেনা । তাই মজা করেই বলেছে । কিন্তু মেরিন উপস্থিত বলে নীড় নীরার আঘাতপ্রাপ্ত জায়গায় কিস করলো । নীরা তো অবাক ।
নীড় : চলো। আজকে আর class করতে হবে না ।
মেরিন সব দেখছে ।

রাতে …
নীড় dinner বানাচ্ছে । তখন ডোরবেল বাজলো । নীড় গিয়ে দরজা খুলল। দেখলো মেরিন ।
নীড় : তুমি?
মেরিন : হামম আমি । তোমার সামনে তো আমিই থাকবো ।
নীড় : কেন?
মেরিন : কারন আমি তোমার বউ লাগি । আর…
নীড় : আর?
মেরিন : আর তোমাকে ভালোবাসি।
নীড় : কিন্তু আমি তোমাকে ঘৃণা করি । get lost….
.
দেখতে ২৫দিন চলে গেলো । মেরিন নীড়ের পিছে লেগেই আছে। আর নীড়… ও মেরিনকে পাত্তাই দেয়না । তবুও মেরিন ওর পিছে লেগেই ছিলো ।অতীষ্ট হয়ে নীড় বলল যদি মেরিন ওকে সত্যিই ভালোবাসে তাহলে যেন ভার্সিটিতে সবার সামনে ওকে propose করে । মেরিন পরদিনই তাই করলো । কিন্তু নীড় মেরিনকে অপমান করলো সবার সামনে। এরপর নীরার হাত ধরে চলে গেলো ।
কনিকার শাস্তি মেরিনকে কঠোর বানিয়েছে। কিন্তু নীড়ের ঘৃণা-অবহেলা আর অপমান মেরিনকে বেলাগাম বানিয়ে দিয়েছে । রাগী-পাজি-হিংস্র করে তুলেছে । #ঘৃণার_মেরিন বানিয়েছে ।
সেদিনের অপমানের পর মেরিন শেষবার অসহায়ের মতো নিঃস্বঙ্গতায় কেদেছিলো । এরপর আর কাদেনি। বুঝতে পারে দাদুভাই কেন লন্ডন আসতে নিষেধ করেছিলো । সোজা দেশে ফিরে আসে । দাদুভাইকে সব বলে । দাদুভাই মেরিনকে নিয়ে usa চলে যায়। মেরিনের security এর জন্য জনকে রাখে ।
মেরিন প্রায় ৩বছরের মধ্যে কোর্স কমপ্লিট করে । দেশে ফিরে মাস্টার্স কমপ্লিট করে। কারন ও টাকার পেছনে ছুটতে চায়নি চেয়েছে টাকা যেন ওর পিছে ছুটে। আর তাইই হয়েছে।
]]]
.
বর্তমান …
সবশুনে কবিরের মাথায় আকাশ ভেঙে পরলো। ধপ করে বসে পরলো ।
কবির : আহমার অতোটুকু মেয়ে কি কি সহ্য করেছে …ওর জীবনটা এতো কষ্টের…
দাদুভাই : হ্যা কবির। মেরিনকে সবাই কষ্ট দিয়েছে …
কবির : আজকে আমিও দিলাম …
দাদুভাই : কান্না করিসনা । তুই যা করেছিস তা না জেনে …
কবির : জেনে করি আর না জেনে কষ্ট তো আমার বাবুইপাখিটাই পেয়েছে ।এতো বড় পাপ কোথায় রাখবো ?
কনিকা : তুমি তো তোমারটা বলছো । আমারটা কি হবে? আমি আমার মে…
কবির : don’t…don’t you dare to call her your daughter … কোনো মা নেই যে তার সন্তানকে অবিশ্বাস করে। তাই কেবল নীড় কেন তুমিও ১টা আবর্জনা । জন …
জন : জী স্যার …
কবির : এই আবর্জনাটাকেও ফেলে দিও আসো…
কনিকা : কবির …
কবির : জন ১০সেকেন্ড সময় দিলাম। আমার সামনে থেকে এই আবর্জনাটাকে দূর করো…

৭২ ঘন্টা পর…
মেরিনের জ্ঞান ফিরলো । বাবা বলে চিৎকার করে উঠলো । নার্স তপুকে ডেকে আনলো। তপু দৌড়ে এলো । মেরিনের জ্ঞান ফিরেছে বলে তপু অনেক খুশি হলো। মেরিনের চেক আপ করতে লাগলো। মেরিন অবাক চোখে তপুকে দেখছে। সেটা তপু লক্ষ করেছে।
তপু : কিছু বলবে?
মেরিন মাথা নেরে হ্যা বলল ।
তপু : বলো।
তপু মনে করলো মেরিন নীড়ের কথাই বলবে। কিন্তু তপুকে অবাক করে
মেরিন বলল : আমার বাবাটা কোথায় …?
তপু অবাক হলো।
তপু : বাবা ?
মেরিন : হামম বাবা । কককোথায় আমার বাবা?
তপু : ডেকে আনবো বাবাকে? দেখবে?
মেরিন : হামম।
তপু : ok…
তপু check up করে কবিরকে নিয়ে এলো । কিন্তু কবিরকে দেখে মেরিন কোনো react করলোনা ।
মেরিন : আআআমার বববাবা কোথায়? আপনি না বললেন যে আমার বাবাকে নিয়ে আসবেন ।
মেরিনের কথায় কবির আর তপু ২জনই অবাক হলো ।
তপু : এই তো তোমার বাবা।
মেরিন : এএএটাই আমার বববাবা।
তপু : হ্যা।
মেরিন :সত্যি ?
তপু : হামম।
তপু কবিরকে ইশার দিয়ে react করতে না করলো। কবির মেয়ের কাছে গিয়ে মেয়েকে বুকে জরিয়ে নিলো । কাদতে লাগলো।
মেরিন : আআপনি ককাদছেন কেন? আপনি কি সসত্যিই আহমার বাবা?
কবির : হ্যা গো বাবুই পাখি… আমিই তোমার বাবা ।
মেরিন : বববাবুই পাখি… বববাবুই পাখি… ববা… আহ…
বলেই বলেই মেরিন মাথায় হাত দিলো।
কবির : কি হলো মামনি?
মেরিন : মাথায় ভভীষন ব্যাথা করছে।
তপু : দেখি দেখি…. তুমি আরাম করো। uncle বাহিরে চলুন।
মেরিন : এই যে শশশুনুন.. আমার বাবা আহমার কাছে থথথাকুক প্লিজ…
তপু : হামম। কেন নয়… তাহলে তুমি শুয়ে পরো ।
মেরিন : হামম।
মেরিন শুয়ে পরলো। কবির মেরিনের মাথায় হাত বুলাতে লাগলো । মেডিসিনের প্রভাবে মেরিন কিছুক্ষনের মধ্যেই আবার ঘুমিয়ে পরলো।
কবির বাইরে এলো ।

কবির : ডক্টর তপু… আমার মেয়ে আমাকে চিনতে পাচ্ছেনা কেন ?কি হয়েছে?
দাদুভাই : চিনতে পাচ্ছেনা মানে? কি হয়েছে আমার দিদিভাইয়ের?
তপু : আপনারা শান্ত হন প্লিজ । আসলে যেটার ভয় পেয়েছিলাম সেটাই হয়েছে । মেরিনের স্মৃতিশক্তি হারিয়ে গিয়েছে । তবে “বাবা” নামটা ওর মাথায় আটকে আছে । সে কারনে। এখন তোমাদের কে দেখার পর কিভাবে react করে সেটাই জানার বিষয়…. specially নীড়কে দেখে….
.
চলবে …