ঘৃণার মেরিন

ঘৃণার মেরিন Season 3 !! Part- 11

নীড় : what is all this???
মেরিন : নীড় এখন প্লিজ 3rd class মানুষদের মতো cheap drama করবেন না ।
নীড় : ত…
মেরিন : আমি লেট হতে dislike করি। fast please …
নীড় ভালোমতোই জানে যে মেরিন বলেছে যখন তখন ওকে পরতে হবেই । দুনিয়া ঘুরে গেলেও এখন নীড়কে এই কালো ধুতি-পাঞ্জাবি পরতে হবে । তাই ভুরি ভুরি বিরক্তি নিয়ে নীড় washroomএ গেলো । পরে বেরিয়ে এলো । মেরিন নিজের চোখ থেকে কাজল নিয়ে নীড়ের চুলের পিছে দিয়ে দিলো ।
নীড় : আমি কোনো বাচ্চা নই…
মেরিন : তো??? 😒।
নীড় : কিছুনা।
২জন বের হলো। সারাদিন অনেক ঘুরলো। জার্মানে এমন dress upএ ২জনকে দেখে ভীষন অবাক হলো । কিন্তু ২জনকে ভীষন সুন্দর লেগে আছে ।

রাতে…
মাথার ওপর খোলা আকাশ … চারদিকে অথৈ সমুদ্র … নীড়ের বুকে হেলান দিয়ে বসে আছে মেরিন…
নীড় মনে মনে : ঠিক ধরেছি যে ঘাপলা আছে … আজই আমার জীবনের শেষ দিন …
মেরিন : নীড় …
নীড় : হামম…
মেরিন : আপনি সেদিন বলেছিলেন না যে
“ভালোবাসা মানে হাতের মুঠোয় বন্দী করে রাখা নয়…
ভালোবাসা মানে খোলা আকাশে উরতে দেয়া …”
নীড় : হামম । তো ?
মেরিন :আপনি আরো বলেছিলেন না যে আমি ভালোবাসতেই পারিনা… আমি আপনাকে ভালোবাসিনা … ভালোবাসা কি জানিনা…
নীড় : ….
মেরিন : ঠিকই বলেছেন। আমি জানিনা ভালোবাসতে। হয়তো আপনাকেও ভালোবাসিনা …
আমি জানিনা ভালোবাসা মানে হাতের মুঠোয় বন্দী করে রাখা না খোলা আকাশে উরতে দেয়া…
জানেন আমার কাছে ভালোবাসা মানে কি ?
নীড় : …
মেরিন : আমার কাছে ভালোবাসা মানে আপনি … হামম। শুধুই আপনি …
নীড় : ….
মেরিন : আমি কখনোই আপনাকে হাতের মুঠোয় বন্দি রাখতে চাইনি …. আমি কেবল আপনাকে চোখের আড়াল করতে চাইনি … হারাতে চাইনি …আপনার গায়ে ছোট্ট ১টা আঘাত যে আমার গায়ে বহুগুন এসে লাগে সেটা বোঝার ক্ষমতা আপনার নেই…
কারন আপনি আপনার জীবনে কাউকে এমন করে আপন করে নেননি…
নীরাকেও না…
নীড় : ….
মেরিন : নীরা কখনোই আপনার ভালোবাসা ছিলোনা … কেবলমাত্র ভালোলাগা ছিলো ।। যদি আপনি সত্যি নীরাকে ভালোবাসতেন আমি কখনোই আপনাদের মাঝে আসতামনা… আপনি নীরাকে ভালোইবাসেননি…
নীড় মেরিনকে নিজের থেকে সরিয়ে দিলো।
বলল : you r wrong … আমি নীরাকে ভালোবাসি… অনেকবেশিই ভালোবাসি…
মেরিন হাহাহা করে হাসতে লাগলো । হাসতে হাসতে নীড়ের দিকে ঘুরলো । নীড়ের বুকের বা পাশে হাত রাখলো । এরপর বাটন খুলে ১টানে সেই duplicate skinটা খুলে ফেলল। তবে হ্যা “বনপাখি” লেখাটা আজও দেখলোনা …
কিন্তু নীড় মনে করলো যে মেরিন বনপাখি লেখাটা দেখেছে ।
.
নীড় তো অবাক। কারন মেরিন জানতো এটা যে নকল। তাই সেদিন react করেনি…
মেরিন : আপনার প্রেমে অন্ধ হতে পারি…কিন্তু এতোটুকু বোঝার ক্ষমতা আমার আছে । জান…
নীড় : ….
মেরিন : আপনি নীরাকে ভালোবাসেননা… আর এটাই সত্যি…
নীড় : বাসি বাসি বাসি… আমি নীরাকে ভালোবাসি… কিন্তু আমি নীরকে ততোটা ভালোবাসিনা যতোটা তোমাকে ঘৃণা করি…
মেরিন : …
নীড় : তোমাকে ঘৃণা করি… তোমার নামটাকে ঘৃণা করি… তোমার চেহারাকে ঘৃণা করি…
মেরিন কোনো কথা না বলে ১টা গান বের করলো ।
মেরিন : take the gun & shoot me…
নীড় : ….
মেরিন : কি হলো ?
নীড় : …
মেরিন : shoot me or i will shoot …
নীড় : ….
নীড় মেরিনের হাত থেকে গানটা নিয়ে ফেলে দিলো সাগরে।
নীড় : captain … turn it…
মেরিন : …
নীড় : আমি তোমার মতো খুনী নই যে খুন করবো । নিজের বাবাকেও খুন করতে যে সন্তানের হাত কাপেনা … তার মতো হতে পারবোনা…
মেরিন নীড়ের চোখের দিকে তাকিয়ে আছে … নীড়ের চোখে আজও ঘৃণা ছারা কিছুই খুজে পাচ্ছেনা …
মেরিন : thank u… আমাকে change না হতে দেয়ার জন্য …

৩দিনপর …
রাত ৯টা…
মেরিনের অত্যাচারে আরো ৩দিন কেটে গেছে । আজকে ২জন নীড়ের ১বন্ধুর party তে এসেছে । নীড় পরিচয় টরিচয় করাচ্ছে তখন মেরিনের ১টা ফোন এলো ।
জন : ম্যাম … কবির স্যারকে পেয়েছি ।
কথাটা শুনে মেরিনের সময় থমকে গেলো ।
রাতুল (নীড়ের বন্ধু) : ভাবি কোনো সমস্যা?
নীড় : কি হলো?
মেরিন : নননীড় ব… দেশে চলুন…
নীড় : দেশে মানে?
মেরিন : দেশে মানে বাংলাদেশে । এখনই চলুন …
নীড় : এখন কিভাবে সম্ভব?
মেরিন : জানিনা । এখন মানে এখনই … চলুন না প্লিজ…
নীড় : no… তোমার মন চাইলে তুমি যাও ।
মেরিন আর ১মিনিটও দেরি করলোনা বেরিয়ে এলো । কিছুক্ষনপর নীড়ও ফিরে এলো । হোটেলে এসে মেরিনকে না পেয়ে বুঝতে পারলো যে মেরিন সত্যিই দেশে ফিরে এসেছে ।

১৫ঘন্টাপর…
in Bangladesh…
মেরিন নিজের সেই নিজস্ব জায়গায় গেলো । দেখলো কবিরকে ঘুম পারিয়ে রাখানো। মেরিন চুপচাপ কবিরের বেডের সামনে বসে গিয়ে হাটু গেরে বসলো । কবিরের মুখে হাত বুলিয়ে দিলো । কবিরের হাত নিজের হাতের মুঠোয় নিয়ে কপালে ঠেকিয়ে কান্না করতে লাগলো । জন দারিয়ে দারিয়ে দেখছে ।
মেরিন : বাবাহ… আমার বাবা… ।
মেরিন উঠে দারালো ।
মেরিন : জন…
জন : জী ম্যাম…
মেরিন : দাদুভাইকে আর বাবাকে … লন্ডন পাঠানোর ব্যাবস্থা করো… আর ১জন ভরসামান লোককে ২জনের সাথে পাঠাও । বাবার full treatment করানোর ব্যাবস্থা করাও । আমি আমার বাবাকে সুস্থ চাই । যেকোনো মূল্যে।
জন : জী ম্যাম…
মেরিন : তুমি সব ঠিকঠাক করো আমি দাদুভাইকে নিয়ে আসছি …
জন : sure mam…
.
খানবাড়িতে…
কনিকা বাসায় নেই । সেতু ওরা দাদুভাইকে torture করছে। মনির , নিলয় দাদুভাইকে ধরে রেখেছে । সেতু কেবলই দাদুভাইকে থাপ্পর মারবে ওই মুহুর্তে মেরিন হাজির । situation দেখে মেরিনের রক্তের বেগে কতো কিলোমিটার বেগে যে দৌড়াতে লাগলো তা কেউ জানেনা । মেরিনকে দেখে তো সেতুর আত্মা কেপে উঠলো । মেরিন এগিয়ে আসছে । আর মেরিনকে দেখে সেতু আর মনিরের যমদূত মনে হচ্ছে। চোখ অসম্ভব লাল হয়ে । ভয়নাক লাল হয়ে আছে । সিংহের মূর্তিটা থেকে মেরিন ওর চাবুকটা হাতে নিলো। যেটা খান বাড়ির বহু পুরানো চাবুক । চাবুক হাতে নিয়ে ৩জনকে দে দানা দান পিটাতে লাগলো। চাপকে আধমরা করে দিলো ।
মেরিন : এতোবড় সাহস তোদের… ? এতোবড় কলিজা … আজকে তোদের কলিজা আমি কুকুরদের খাওয়াবো। ভেবেছিলাম পরে মারবো। কিন্তু তোরা সেই উপায় রাখলিনা।
বলেই মেরিন সেতুর বুকে ছুরি চালাতে নিলো ।
দাদুভাই : থেমে যাও দিদিভাই…
মেরিন : না দাদুভাই আজকে এদের আমি শেষ করে দিবো । সব কাহিনীর অবসান ঘটাবো …
দিদিভাই : এদের কি এতো সহজ মৃত্যু দিবে…???
মেরিন : …
দাদুভাই : এদেরযে অনেক শাস্তি পাওনা আছে…
মেরিন : …
দিদিভাই : আমি কথা দিচ্ছি… আমি নিজে বলবো ওদেরকে মেরে ফেলতে । এখন মেরো না…
মেরিন বাকা হেসে
বলল : right you r দাদুভাই… কিন্তু এদেরকে শাস্তি তো পেতে হবে।
মেরিন ৩জনের ১টা করে আঙ্গুল কেটে দিলো । ৩জন ব্যাথায় কাতরাতে লাগলো ।
মেরিন : চলো দাদুভাই…

দাদুভাই : কোথায় নিয়ে এলে দিদিভাই আমাকে?
মেরিন : চোখ বন্ধ করো…
দাদুভাই : কেন ?
মেরিন : করোনা। & no cheating…
দাদুভাই : ok ok…
দাদুভাই চোখ বন্ধ করলো । মেরিন দাদুভাইকে ধরে নিয়ে আগে বারছে ।
মেরিন : চোখ খোলো …
দাদুভাই : কি এমন surprise দি… কককবির…
দাদুভাই দৌড়ে গিয়ে কবিরকে জরিয়ে ধরলো। কিন্তু কবিরতো কোনো react করলোনা । কারন কবিরের তো মস্তিষ্ক এখন ১টা ৫-৭বছরের বাচ্চার মস্তিষ্কের সমান। তাই ও কিছুই বুঝলোনা । দাদুভাই এতো বছরপর ছেলেকে ফিরে পেয়ে আনন্দে আত্মহারা হয়ে গেলো । আবার মেলোড্রামা হলো ।
দাদুভাই : কোথায় কিভাবে পেলে খোকাকে দিদিভাই? আর খোকার এই অবস্থা কেন ? কি হয়েছে ওর ? 😢
জন : কবির স্যারকে অনেক mental pressure আর ভুলভাল মেডিসিন দেয়া হয়েছে। যা স্যারের মস্তিষ্কের ওপর অনেক বাজে effect ফেলেছে । তাই জন্যে স্যারের এই অবস্থা…
মেরিন : হবে… হতেই হবে । আমার বাবাকে ঠিক হতেই হবে ।
দাদুভাই : কিভাবে?
মেরিন : proper treatment করিয়ে। ৩দিনপরই তোমাকে আর বাবাকে লন্ডন পাঠাবো। সবার নাগালের বাইরে । সেখানে বাবার treatment হবে ।
দাদুভাই : লন্ডন কেন?
মেরিন : দেশে আমার শত্রুর অভাব নেই । তাই লন্ডন পাঠাবো। আর সেখানে treatment better হবে। আর লন্ডন আমার কম যাওয়া হয়। তাই কেউ doubt ও করবেনা । তোমাদের ওপর যেকোনো দিন attack হতে পারে । কারন তোমরা ২জন আমার দুর্বলতা।
দাদুভাই : আর নীড় ? ও কি তোমার দুর্বলতা নয়…
মেরিন : …
দাদুভাই : আমি তোমাদের সম্পর্ক নিয়ে বেশ চিন্তিত … এর ভবিষ্যত কি ?
মেরিন : ভবিষ্যত কি জানি না …তবে আপাদত আমি যেটা চাই সেটাই হবে … যেদিন নীড় আমাকে ভালোবাসবে সেদিন নীড়কে ছেরে অনেকদুরে চলে যাবো … সেটাই হবে নীড়ের শাস্তি …
জন : ম্যাম নীলিমা ম্যামকে জানাবেননা কবির স্যারের কথা ?
মেরিন : না। শাশুড়িফুপ্পিকে পুরোপুরি বিশ্বাস করা ঠিক হবেনা। নীরার সাথে ওর অনেক খাতির। বেশ দুর্বল নীরার ওপর…
জন : হামম।
৩দিনপর দাদুভাইকে আর কবিরকে লন্ডন পাঠালো। রকি নামের ১জনের সাথে। মেরিন কিছুদিনের জন্য জনকে পাঠালো । যেন আড়াল থেকে রকির ওপর নজর রাখতে পারে । কয়েকদিন পরই আবার ফিরে আসবে ।

চৌধুরীবাড়িতে…
নীড় : তোমার আসকারা পেয়েই এমন হয়েছে বাবা। দেখো তোমার “মামনি” কে… আমার ১দিন আগে germany থেকে দেশে ফিরেছে । অথচ বাসায় আসেনি । ৩দিন হয়ে গেলো। জানিওনা কোথায় আছে ? কোন অবস্থায় আছে?
মেরিন : আমার জন্য এতো চিন্তা আপনার কবে থেকে হলো?
সবাই দরজার দিকে তাকালো । দেখলো মেরিন দারিয়ে ।
নীলিমা : বন্যা …. কোথায় ছিলি মা তুই ?
মেরিন : ছিলাম কোথাও না কোথাও … কারোনা কারো সাথে…
নীড় : তোমার লজ্জা করেনা এভাবে নিজের কুকৃতির কথা বলতে ?
মেরিন : না। মোটেও না … মেরিন বন্যা কোনো typical মেয়ে না যে কথা লুকিয়ে রাখবে। মুখের ওপর সত্যি কথা বলার সাহস আমার আছে । কারন আমি মেরিন বন্যা নীড় খান চৌধুরী… শাশুড়িফুপ্পি fresh হয়ে এসে তোমার help করছি ।
নীলিমা : হামমম ।

পরদিন…
সকালে…
সবাই ঘুমিয়ে আছে । কনিকার চিল্লানোতে সবার ঘুম ভাঙলো ।
কনিকা : মেরিন… মেরিন… এই মেরিন…
নীলিমা নেমে এলো ।
নীলিমা : আরে ভাবি তুমি? এতো সকালে?
কনিকা : হ্যা… তোমার আদরের বউমা কোথায়? মেরিন… মেরিন…
মেরিন : ভিখিরিদের মতো চিল্লাচ্ছেন কেন? ভিক্ষা চাই বুঝি? security guard দের কাছে চাইতেন দিয়ে দিতো।
নীড় : মেরিন… এটা কেমন ব্যাবহার ? খবরদার আমার মামিমনির সাথে এমন ব্যাবহার করবেনা ।
নীড় কনিকার কাছে গেলো ।
নীড় : বসো মামিমনি…
কনিকা : বসতে আসিনি তোমাদের বাসায়। জানতে এসেছি। বাবা কোথায়?
মেরিন : শুনেছি আপনার বাবা অনেক বছর আগেই পরলোক গমন করেছেন? তার address আপনাদের পারিবারিক কবরস্থানেই হবে…
কনিকা : ভালোমতোই জানো আমি আমার ওই বাবা না শমসের বাবার কথা বলছি…..
মেরিন : ওওও… তাই বুঝি। sorry বুঝতে পারিনি…
কনিকা : এখন ভালোমতো বাবা কোথায়?
.
চলবে….