ঘর জামাই

ঘর জামাই——-পর্ব-০৫

তোমার এত বড় সাহুস, তুমি এই ছোট লোকের
বাচ্ছা শাওনের সাথে আবার দেখা করছো?
তোমাকে আজ আমি কি করবো? তখনি,, ঠাসসস
করে আমার গালে একটা থাপ্পড় বসিয়ে দিল। আর
বলছে,,
জুই:- তোমার এত বড় সাহুস তুমি শাওনকে ছোট
লোকের বাচ্ছা বল? তুমি যানো শাওনের বাবা কত
বড় লোক। আর তুমি হলে একটা ছোট লোক,
বিয়ের জন্য একটা শেরওয়ানি কিনতে পারোনি।
অন্যের শেরওয়ানি দাঁড় এনে বিয়ে করেছ। আবার
আরেক জনকে ছোট লোক বলো?
আমি:- হ্যা দাঁড় এনেছি তাতে কি হইছে? আর আমি
ছোট লোক বলে তোমাকে বিয়ে করে
# ঘর_জামাই থাকতেছি। যদি বড় লোক হতাম তাহলে
তোমাকে জীবনে বিয়ে করতাম না।
জুই:- তোমার ভাগ্যটা অনেক ভালো আমাকে
বিয়ে করেছো। তানা হলে তোমার কপালে বউ
জোটতনা। বলে জুই চলে গেল বাসার দিকে।
আমি:- আমি একটা তুরি মারলে হাজারটা বউ এসে
পড়বে, তবে একটু টাকার ধরকার। আগে
আব্বাজানকে আরও ভাল করে পটাতে হবে। তারপর
এক এক করে সব গুলো থাপ্পড়ের জবাব
দেবো। যাই এখন রুমে যাই, রুমে গিয়ে দেখি
জুই বসে আছে। আমি কোনো কথা বলিনি,
সোজা বারান্দায় গিয়ে শুয়ে পড়লাম। তখনি,,
শ্বশুড়:- বাবা সৌরভ রুমে আছোকি? বাবা একটু
শোনবে?
আমি:- হ্যা আব্বাজান আসতেছি। তারপর বারান্দায়
থেকে বেড় হয়ে গিয়ে দরজটা খোলে, বলি
আব্বাজান বলেন কিসের জন্য ডাকছেন?
শ্বশুড়:- বলছিকি একটু আমার সাথে অফিসে যেতে
যদি, তাহলে আমার কাজের একটু সহ জগিতা হত এই
আরকি?
আমি:- আরে আব্বাজান আপনি বলেন কি? আমি এখনি
রেডি হয়ে আসতেছি। আপনি নিছে যান, আমি দুই
মিনিটের মধ্যে রেডি হয়ে আসতেছি। বলে আমি
রেডি হয়ে তারা তারি করে নিছে যেতেছি তখনি।
জুই:- এই তুমি এত তারা তারি করে কোথাও যাচ্ছো।
আরে আবার সাজ গুজ করেছে দেখি। এত
সেজে গুজে কোথায় যাচ্ছো একটু শুনি?
আমি:- আব্বাজান বলছে আব্বাজানের সাথে অফিসে
যেতে। তাই একটু মান্জা দিলাম, তবে তুমি চিন্তা
করোনা। আমি তোমার সতিনের সাথে দেখা
করতে যাচ্ছিনা।
জুই:- কি তুমি আব্বুর সাথে অফিসে যাইতেছো?
দাড়াও যাওয়াচ্ছি তোমাকে অফিসে। বলে আমার
সাথে সাথে নিছে এসে আব্বাজানকে বলছে।
আব্বু, তুমি তোমার ঘর জামাইকে সাথে নিয়ে
অফিসে যাচ্ছো কেন?
শ্বশুড়:- দেখ মা জুই তুই সৌরভের সাথে এমন করে
পেছনে লেগে থাকিসনা। সৌরভ যখন আমাকে
আব্বাজান বলে ডাকে তখন প্রানটা জুরাইয়া যায়। আমার
নিজের ছেলে থাকলে মনে হয় আব্বাজান বলে
ডাকতনা।
জুই:- আম্মা তুমি আব্বুকে কিছু বল? সৌরভকে আব্বু
অফিসে নিয়ে যাচ্ছে।
শ্বাশুড়ি:- তাহলে তো ভালোই, সৌরভকে দিয়ে
আমার অনেক কাজ করাতে পারবো।
জুই:- আম্মু তুমি এই #ঘর_জামাই এর দলে আছো?
আমি:- আম্মাজান আপনি শুধু বলবেন আপনার কি কাজ
করতে হবে? আমি আপনার সব কাজ করে দেব।
তারপর জুইকে একটা চোখ টিপ মেরে সোজা
আব্বাজানের সাথে অফিসে জন্য বেড়িয়ে পড়লাম।
কিছুক্ষন পর অফিসে এলাম। তারপর আমাকে শ্বশুড়
মানে আব্বাজান, দাড় করিয়ে, তারপর।
শ্বশুড়:- সবাই একটু শোনবেন। তারপর সবাইকে
ডেকে আমার সাথে পরিচয় করিয়ে দিল, আমি
জুইয়ের হাজবেন্ট আর তার মেয়ের জামাই। তারপর
শ্বশুড় আমাকে নিয়ে একটা চেয়ারে বসিয়ে দিল।
আর বলল, শোনো সৌরভ এই চেয়ারটা তোমার,
তুমি নিজের মনে করে কাজ করবে। আমি চাই আমার
অবর্তমানে তুমি সব কাজ দেখা শোনা করবে।
আমি:- আব্বাজান আপনি এই নিয়ে কোন চিন্তা
করবেন না। আমি আপনার সব কাজ নিজের মনে
করে করবো। তারপর শ্বশুড় চলে গেল।
অনেক্ষন ধরে বসে আছি, জুইয়ের জন্য মনটা
কেমন কেমন করছে। জুইকে একটা ফোন
করলাম, দুই বার মিসকল দিলাম।তারপর নিজে ফোন
ব্যাক করছে।
জুই:- এই ফকির মিসকল দিয়ে ছিস কেন?
আমি:- মিসকল দিবনা তো কি করব? আমার মোবাইলে
টাকা নেই। তাহলে কি করবো?
জুই:- ফের যদি মিসকল দিস ফকির কোথাকার তাহলে
তোর পান্জাবির বারোটা বাজাবো। বলে ফোন
কেটে দিল।
আমি:- আবার একটা মিসকল দিলাম। আবার,, ফোন করে
বলে।
জুই:- আবার ফকির বাচ্ছা তুই মিসকল দিয়েছিস।
আমি:- তোমার আল্লাহ দুহায় তুমি পান্জাবিটার
কোনো ক্ষতি করোনা। আমারনা তোমার লাইগা
পরান পরতাছে তাই দুইটা মিসকল দিছি এতে এত রাগ
করার কি আছে?
জুই:- কি পরতাছে পরান পরছে। দাড়াও আজ বাসায় আয়
ফকির কোথাকার। তোর পরান কোন দিক দিয়ে
পরে আমি একটু দেখমু। বলে ফোনটা কেটে
দিল।
আমি:- বউকে মিসকল দিলেও জালা এই কথা আগে
জানতামনা। আজ ভালোই কাটছে দিনটা, বিকালে অফিস
থেকে বেড়িয়ে এলাম, এসে শ্বশুড়ের বাসার
সামনে একটা চা দোকানে বসে চা খেতেছি তখনি,,
জুয়েল:- কিরে সৌরভ কেমন আছিস? আমার পান্জাবির
খবর বল আগে? পান্জাবিটা কেমন আছে?
আমি:- শালা তোর এই পান্জাবির জন্য কি রাতে ঘুম
আসনা নাকি? তবে এখনি তোর পান্জাবিটা এনে দিতে
পারি যদি একশ টাকা কম নেছ।
জুয়েল:- অকে দোস্ত আমি রাজি আছি।
আমি:- ঠিক আছে এখুনি তোর পান্জাবিটা এনে
দিতেছি। বলে বাসায় এলাম, দেখি জুই নিছে বসে
স্টার জলসা দেখছে। এই সিরিয়াল দেখে তুমি আমার
সাথে ঝগড়া করো দাঁড়াও আজকে ডিস বন্ধ করে
দেবো।
জুই:- যখন তোমার টাকা দিয়ে সংসার চালাবে তখন
এমনিতে বন্ধ করে দিবো। তোমার মত ফকিরের
টাকা দিয়ে এসব আমি দেখবনা।
আমি:- ফকির বলে তোমাকে আমি বিয়ে করেছি।
তানা হলে তোমাকে বিয়ে কর তো কে?
জুই:- কি এত বড় কথা। আজ আব্বু আসুক বাসায় তখন
বুজবে কয় দিনে বছর যায়।
আমি:- বছর তো তিনশত পয়ঁষট্রি (৩৬৫) দিনে যায়।
আমার আর নতুন করে কিছু দেখতে হবেনা।
তোমার সাথে তর্ক করে অযথা সময় নষ্ট করার
কোন মানে হইনা। বলে আমি রুমের দিকে
যাইতেছি। তখনি,,
জুই:- আজ কার কপালে কি আছে আল্লাহ ভাল যানে।
আমি:- আমার কপালে ভাল কিছু আছে। সব খারাপি
তোমার কপালে আছে। বলে আমি রুমে চলে
এলাম। এসে আমি জুয়েলের পান্জাবিটা দেখছি। ঠিক
আছে কিনা, হায় হায় এইটার এই অবস্থা করলো কে?
এখন আমি কি করবো? আর জুয়েলকে কি বা
বলবো?

চলবে,,,,,