ও আমায় ভালোবাসেনি

ও আমায় ভালোবাসেনি- সিজন ২ – Part- 14

__
তিন দিন কেটে গেছে । ঐ দিনের স্বীকারোক্তির পর রাইদ আর মিথিলার প্রয়োজন ছাড়া তেমন একটা কথা হয়নি । রাইদ ভাবছে ও অর্ধেক সত্য বলেছে তাতেই এই অবস্থা না জানি এরপর কি হবে!
এদিকে আবার মিথিলা চিন্তা করছে এই অদ্ভুত সংসারের ভবিষ্যত কি?
আর সে কোনো ফেলনা বস্তু নয়, যে যখন পাচ্ছে নিজ স্বার্থে ব্যবহার করছে । ভালোবাসার দাবী নিয়ে যাচ্ছে তো কেউ নিষেধ করছে ।
কেউ নিজে থেকে প্রতিজ্ঞা করে জীবন থেকে হারিয়ে যাচ্ছে আর একজন ভুল বুঝে ছলনা করে বিয়ে করলো , সম্পর্কের মান হারিয়ে এখন সুযোগ চাচ্ছে ।
পুরুষতান্ত্রিক সমাজে একতরফা অন্যায় কি মেয়েদের ওপরেই হবে?
মাঝেমধ্যে মনে হয় সবছেড়ে একদিকে চলে যাক সে যেখানে বেঁচে থাকার জন্য কারো ওপর নির্ভরশীল হতে হবে না , ভালোবাসার দরকার পড়বে না ।
কিন্তু এমন জায়গা পৃথিবীর কোথাও নেই । নির্ভরশীল হওয়া গেলেও ভালোবাসা , মায়া ত্যাগ করা সম্ভব নয় ।
— ম্যাম আসবো?
নক করার শব্দে চিন্তা ভঙ্গ হয় মিথিলার । দরজায় রফিক কে দেখে একটু নড়েচড়ে বসে ।
— আসুন রফিক ভাই বসুন?
— ম্যাম আমি কিছু কথা বলতে এসেছিলাম । বেশি সময় নেবো না আপনার ।
— হ্যাঁ বলুন । সমস্যা নেই ।
— ম্যাম জানি এটা আপনাদের পারসোনাল ব্যাপার । আমার কথা বলার কোনো রাইট নেই কিন্তু তবুও আজ বলতে এসেছি । দেখুন ম্যাম সংসার একটা ছোট্ট শব্দ হলেও এর ভার অনেক । সংসার একটা দায়িত্বের নাম । বিবাহ বন্ধনে বাঁধা পড়ার পর স্বামী স্ত্রী একে অপরকে ভালোবেসে , শ্রদ্ধা করে খুব যত্নে এই সংসার গড়ে তোলে । একটা সংসার কিন্তু হুট করেই ভেঙে যেতে পারেনা । এই জীবনে আমাদের অনেক কিছু মেনে নিতে হয় , আপনজন দের অনেক অন্যায় ক্ষমা করতে হয় । যদি আমরা সব রকম অন্যায়ের শাস্তি দিতে যেতাম তা’হলে এই পৃথিবীতে সমাজ গড়ে উঠতো না । এই যে বাবা মা আমাদের এত কষ্ট করে পৃথিবীতে আনেন তারপর যত্নে মানুষ করেন, আমাদের সুখের জন্য হাড় ভাঙা পরিশ্রম করেন অথচ তাদের সাথেও আমরা নিজ অজান্তেই কত রকমের বেয়াদবী করে ফেলি ।
আমরা যখন বুঝতে শিখি , আশপাশের মানুষের সাথে মিশতে শুরু করি নিজস্ব মতামত নামক শব্দটা চিনে ফেলি তখন কিন্তু আমাদের জীবন চলার পথে বাবা মায়ের কিছু সিদ্ধান্ত ভালো লাগে না । যেটা ভালো লাগেনা সেটা করতেও চাইনা । তখন বাবা-মা আমাদের ওপর রেগে যান । তাদের রাগ আমাদের কাছে অযৌক্তিক মনে হয় আর আমরাও পাল্টা জবাব দিয়ে ফেলি যেটা মূলত বেয়াদবী ।
আমাদের মুখে মুখে জবাব দেয়া বাবা মায়ের মনে খুব কষ্ট দেয় কিন্তু তারা এটা প্রকাশ করেন না বরং ঐ মুহুর্তে আমাদের বুঝতে চেষ্টা করেন , আমাদের সমস্যা গুলো দেখার চেষ্টা করেন ।

তারা যদি ঐ মুহুর্তে আরো ভায়োলেন্ট হতেন তা’হলে আমরা আরো কষ্ট পেতাম । আর এভাবে দু দিকে কষ্টের পাল্লা ভারী হতে হতে সম্পর্কের মূল্য কমে যেত । এই পৃথিবী এখনো টিকে আছে এই ধৈর্য্য, ছাড় দেয়ার মনোভাবের কারণে । আমি মূলত এটা বোঝাতে চাইলাম স্যার আপনার সাথে অন্যায় করেছেন শাস্তি তার প্রাপ্য কিন্তু তাই বলে আপনি তার সাথে কথা বলা বন্ধ করবেন?
সে তিনদিন যাবৎ মদের নেশায় ডুবে আছে । একটা তো সুযোগই চাইছে ম্যাম । মহান আল্লাহ তাঅা’লাও পাপীদের ক্ষমা চাওয়ার সুযোগ দেন ।
— আপনি কি তার বাদী হয়ে কথা বলতে এসেছেন?
— আমি কারো বাদী হয়ে কথা বলতে আসিনি ম্যাম আমি শুধু বোঝাতে এসেছি । ক্ষমা মহৎ গুণ । একজন ব্যক্তি জীবনে ভুল করতে পারে সর্বোচ্চ তিনবার । তিনবারের অধিক ভুল করা মানে সে জেনেবুঝে এটা করছে আর জেনে বুঝে ভুল করা চরম অপরাধ ।
ম্যাম , স্যার একবার ভুল করে সুযোগ চাইছে । আপনি দিয়ে দেখুন সে ঠিক হয় কি না?
দ্বিতীয় বার একই ভুল করলে আপনি যা সিদ্ধান্ত নেবেন তাই হবে ।
আমার এতটুকুই বলার ছিলো ম্যাম । ভুল কিছু বললে মাফ করবেন , আসছি ।
— দাঁড়ান রফিক ভাই ।
দরজার কাছে গিয়ে ফিরে তাকালো রফিক ।
মিথি একটু ইতস্তত করে জিজ্ঞেস করলো_
— আপনার স্যার কোথায়?
— স্যার নিচ তলায় সর্ব বামের রুমে ।
হেসে জবাব দিলো রফিক । মিথি মাথা নেড়ে উত্তরে একটা হাসি দিলো ।
__
রাইদ বিষণ্ন মনে সিগারেট ফুঁকছে । আজ আবার কান্না পাচ্ছে তার । ভীষণ ভয় হচ্ছে মিথিলা যদি তাকে সুযোগ না দেয় তখন কি হবে?
আজীবন ভালোবাসা পাওয়ার আকাঙ্ক্ষা নিয়েই কি তাকে বাঁচতে হবে?
— তিনদিন আগেই না সুযোগ চাইলেন আজ তা’হলে এমন মদ , গাঁজার নেশায় ডুবে আছেন কেনো?
মিথিলার গলা পেয়ে চেয়ার ছেড়ে উঠে দাঁড়ালো ।
— তিনদিনেই দেবদাস?
— আরেহ্ না আসলে..
— আসল নকল সব পরে এখন সিগারেট টা ফেলে আসুন তো একটু কথা বলি আপনার সাথে ।
— হ্যাঁ এখুনি ফেলছি ।

সিগারেট টা আ্যাশ ট্রে তে চেপে নিভিয়ে জানালা দিয়ে ফেলে দিলো রাইদ ।
— হ্যাঁ এখন বলো?
— আপনি আইডিয়া করতে পারছেন আমি কি বলতে এসেছি?
— তুমি কি আমাদের সম্পর্ক ভাঙার কথা বলবে?
— নাহ্ সম্পর্ক ভাঙা এত সহজ নয় । যে পরিস্থিতি তেই বিয়ে হোক না কেনো আপনি আমার হাজবেন্ড । বৈবাহিক সম্পর্ক এত সহজ ভাবে ভাঙা যায় না তবে আপনাকে বলে রাখি এটা এত সহজে মজবুত করাও যায় না । একে অপরের প্রতি বিশ্বাস , মর্যাদা আর ভরসার মাধ্যমে সম্পর্ক মজবুত হয় ।
— তা’হলে তুমি আমায় সুযোগ দিতে চাইছো?
— হ্যাঁ ।
— থ্যাংক্স মিথি । তুমি আমার বন্ধু হবে?
— হবো কিন্তু এমন নেশায় ডুবে থাকা রাইদের না । যান গোসল করে ফ্রেশ হয়ে আসুন আমি কিছু রান্না করি ।
— নীরা তো আছে তুমি ঘরে বসো ?
— নাহ্ সংসার আমার , সব কাজ অন্যের হাতে দেবো কেনো! আপনি যান এক্ষুণি ।
— হ্যাঁ যাচ্ছি ।
একটা গাঢ় আলিঙ্গনের ইচ্ছে থাকলেও নিজেকে ধমকে বাইরের দিকে পা বাড়ালো রাইদ ।
দরজার মুখে যেতে ই মিথি আবার ডেকে উঠলো_
— আপনি কি নিয়মিত সিগারেট খান?
— নাহ্ মাঝেমধ্যে । এখন থেকে কি অভ্যেস চেঞ্জ করতে হবে?
— নাহ্ দরকার নেই৷
উত্তরটা শুনে খুশি লাগলো রাইদের । ঠোঁটের কোণে আপনাআপনিই হাসি ফুটে উঠলো ।
আচ্ছা বলে চলে গেলো ও ।
ওদিকে তাকিয়ে মিথিলা আস্তে করে বললো,”হাসলে কিন্তু সুন্দর লাগে”

ঘরদোর গুছিয়ে রান্নাঘরে এসে দেখে নীরা নেই । আশেপাশে চোখ বুলিয়ে ওকে খোঁজার চেষ্টা করে কিন্তু ও এই এরিয়াতেই নেই । হয়তো নিজের ঘরে আছে এই ভেবে আর মাথা ঘামায় না।
ফ্রিজ থেকে মাংস বের করে ভিজিয়ে রেখে সবজি কাটতে শুরু করে ।
আধঘন্টা পর কোথা থেকে একগাদা আমড়া নিয়ে আসে রফিক ।
কিচেনে নীরার বদলে মিথিলা কে দেখে ভ্রু কোঁচকায় ।
— ম্যাম আপনি কেনো নীরা কোথায়?
— ওকে তো খুঁজে পেলাম না রফিক ভাই ।
— কেমন কেয়ারলেস মেয়ে । ইশশ আপনার কষ্ট হয়ে যাচ্ছে ম্যাম।
— আরে না কষ্ট হবে কেনো? আমি নিজে এসেছি রান্না করতে আর আমার অভ্যেস আছে ।
— তবুও ম্যাম । আমাকে দিন আমি হেল্প করি ।
— আপনি পারেন রান্না করতে?
— হ্যাঁ আরে মাঝেমধ্যে তো আমি স্যারকে রেঁধে খাইয়েছি ।
— কেনো নীরা ছিলো না?
— না ও তো মাত্র চারমাস হলো আছে ।
— ওহ্ হো । আগে কোনো কাজের লোক ছিলো না?
— ছিলো তো । নীরা আসার পর ও নিজেই ছুটি দিয়েছে ।
— ওহ্ । আচ্ছা রফিক ভাই নীরা নাকি আপনার বোন হয়?
— হ্যাঁ ম্যাম ।
— কেমন বোন হয়? মেয়েটা তো বেশ সুন্দর ওর বেশভূষার সাথে হাউজকিপার ব্যাপারটা যায় না ।
— হ্যাঁ ম্যাম আসলে আমি ওকে পড়াশোনা করাতে চেয়েছিলাম কিন্তু ও রাজি হয় না । পড়ালেখায় নাকি ওর মন বসে না । আমি বুঝি ও ইতস্তত বোধ করে । আমি তো আসলে ওর ফ্যামিলির কেউ না । এই ধর্ম ভাই আরকি! এজন্য এত ইতস্ততা ওর ।
— ধর্ম ভাই?
— হ্যাঁ গতবছর স্যারের একটা টিভিসি শ্যুটিং শেষে আমরা বেরুচ্ছিলাম । উত্তরার কাছাকাছি আসতেই ড্রাইভার ব্যাটা এক রিকশায় গাড়ি ঠুকে দিলো । লেগে গেলো ঝামেলা । রিকশায় যেই মেয়েটা বসা ছিলো সে পড়ে গিয়ে ফেইন্ট হয়ে গেছিলো । পরে ডাক্তারের কাছে নিয়ে গেলাম আমরা , চিকিৎসা করালাম । হাত পা ছুলে গিয়েছিলো আর রাস্তায় পড়ে ভয়ে ফেইন্ট ।
স্যার তো ট্রিটমেন্টের টাকা দিয়ে চলে গিয়েছিলেন কিন্তু কিসের টানে আমি যাই না ।
পরে জ্ঞান ফেরার পর মেয়েটা কে অনেক স্যরি বলি , তারপর তাকে বাসায় নামিয়ে দিতে চাই ।
তখন বলে তার বাসা তো ব্রাহ্মণ বাড়িয়া সে ঢাকাতে এসেছিল কাজ আর থাকার জায়গার সন্ধানে । আ্যাক্সিডেন্টের কারণে তো খোঁজা হলো না ।
ও কাঁদছিল ম্যাম । আমার খুব খারাপ লাগলো । পরে আমি আমার এক কলিগের বাসায় ওকে নিয়ে গেলাম । রেন্টে পেয়েছিল একটা বাসা, কাজও পেয়েছিল কিন্তু এই চারমাস আগে ওর বাবা মারা যায় তাই আবার চলে আসে এখানে ।
আমি ভাবি আর অন্য চাকরি না করে স্যারের বাসায় কাজে লাগিয়ে দিই । ভালো করেছি না ম্যাম?
— হ্যাঁ ভালো করেছেন । রফিক ভাই আমি ভাবছিলাম কি আমরা তো এখানে এসেই গেছি তা’হলে নীরার বাসাটাও দেখে আসি কি বলেন?
— কিন্তু ম্যাম কাল তো আপনারা ব্যাক করবেন ।
— না কাল আমরা নীরার বাসায় যাবো । আপনার স্যারের সাথে আমি কথা বলে নেবো আপনি নীরা কে জানিয়ে দিন ।
— জ্বী আচ্ছা ম্যাম ।

বেশ কিছুক্ষণ থেকে ফোনটা বাজছে কিন্তু পিক করছে না রাইদ । একটা আননোউন নাম্বার দেখেই মূলত রিসিভ করছে না । ওপাশের মানুষটারই বা আক্কেল-জ্ঞান কি? দেখছে রিসিভ করছে না তবুও কল করেই যাচ্ছে করেই যাচ্ছে ।
একবার বিরক্ত হয়ে ফোনটা কেটে দিলো রাইদ
কয়েক সেকেন্ডের মধ্যেই মেসেজ আসলো_
” বস প্লিজ কলটা রিসিভ করেন”
স্ক্রিনে মেসেজ টা ভেসে উঠতেই রাইদ একটু চিন্তা করে নিজেই কল দেয় ।
সাথেসাথেই রিসিভ হলো , ওপাশ থেকে প্রচন্ড ভীতু তটস্থ একটা কন্ঠস্বর ভেসে আসলো_
— বস আমি কামাল ।
— কামাল! তুই এতদিন পর? কোথায় তুই আর তোর গলা এরকম কেনো?
— বস এত কথার সময় নেই। আমার কথা মন দিয়ে শুনুন আপনি ওদেরকে বিশ্বাস করে ভুল করেছেন । আপনি যাদের বন্ধু ভাবছেন তারা আপনার বন্ধু নয় তারা আসলে নিজের মায়ের মৃত্যুর প্রতিশোধ নেয়ার জন্য আপনার সাথে হাত মিলিয়েছে । বস আমি জানতে পেরে গেছি ঐ মেয়েটা কে!
— নাম কি ওর?
— স্যার ওর নাম লিন্ডা ও আপনার আশেপাশেই আছে স্যার আমি ওদের লোকদের কথা বলতে দেখেছি আর বস ওই মেয়েটা একা নয় । ওর ভাই আছে একটা বস । ওরা আমাদের লোকদের কিনে নিয়েছে । আমাকেও মারার চেষ্টা করছে । আমি মনে হয় বাঁচতে পারবো না বস । আপনি একটু সতর্ক থাকবেন ।
— ঐ ছেলেটা কে? তার চেহারা দেখেছিস? নাম জানিস?
— না বস আমি কিচ্ছু জানিনা ওর সম্পর্কে শুধু এটা জানি ওরা আপনার আর ম্যাডামের ক্ষতি করবে ।
— কামাল তুই এখন কোথায় আছিস? আমাকে ঠিকানা বল আমি এক্ষুণি আসছি ।
— আপনি আসতে পারবেন না বস । ওরা আমাকে রাজশাহী তে নিয়ে এসেছে । আমি খুব কষ্টে পালিয়েছি ওদের আস্তানা থেকে কিন্তু ওরা আমার পিছু নিয়েছে বস ।
— শিট! কামাল তুই লুকিয়ে থাক , ফোনে কানেক্টেড থাক ফোন কাটিস না । আর কোনো সেফ জায়গা দেখে লুকিয়ে থাক ।
আজ রাতটা কোনো রকমে পার হতে দে কাল সকালের আমি রওয়ানা হবো ।
— বস আমি মনে হয় বাঁচতে পারবো না । আপনার জন্য কিছুই করতে পারলাম না বস আমাকে মাফ করবেন ।
— কামাল চুপ । এখন এসব বলার সময় নয় । আশেপাশে দেখ তো কোনো বাসা,দোকান কিংবা গ্যারাজ পাস কি না ভয় না পেয়ে খুঁজে দেখ ।
— হ্যাঁ বস কিছুদূরে একটা বন্ধ দোকান পাওয়া যায় ।
ওখানে গিয়ে দেখ লুকাতে পারিস কি না!
— কিন্তু বস ওরা এসে গেলে?
— ভয় পাস না , নিঃশব্দে হাঁটার চেষ্টা কর ।
— আ..আচ্ছা বস ।
কামাল খুব সাবধানে হাঁটে । আশেপাশে বারবার তাকায় আর যায় । দোকানটার কাছাকাছি আসা মাত্র পেছন থেকে চারজন ব্যক্তির হাসির শব্দ ভেসে আসে ।
— কি রে চোর পুলিশ খেলা শেষ?
কামাল চমকে পেছনে তাকায় , হাত থেকে ফোনটা পড়ে যায় ।
একরাশ বিস্ময় নিয়ে সে বলে_
— আপনি? আপনি তো…
— হ্যাঁ আমি ।

ওপাশের মানুষটা অট্টহাসি হাসে । কামাল আর কিছু বলার সুযোগ পায় না । তার আগেই মানুষটা বলে_
— তোর বস কে জানানো শেষ? তা’হলে এখন তাকে গুড বাই বলে দে কেমন?
এক সেকেন্ড অপেক্ষা না করে গুলি চালিয়ে দেয় ।
এদিকে রাইদ ফোনে কামালের নাম ধরে চিৎকার করে ডাকে , কে এসেছে জানতে চায় । কামালের কন্ঠস্বর আর শোনা যায় না বরং এক যোগে গুলির শব্দ শোনে ।
ফোনটাও ডিস্কানেক্ট হয়ে যায় । “ওহ্ শিট” বলে ফোনটা সজোরে আছাড় দেয় মেঝেতে ।
ওর প্রথমেই মনে হয়েছিল এদের বিশ্বাস করা ঠিক হবে না । কেনো যে ওদের কথা শুনতে যায় নি!
তবে ধোকাবাজির শাস্তি ওরা পাবে । এই মুখোশধারী মেয়েটার সময় এবার শেষ ।
রাগে হাত মুষ্টিবদ্ধ করে নেয় রাইদ , ওর রক্তিম চোখজোড়া দিয়ে যেন আগুন বেরোতে চায় ।
চলবে?