এলাকার বড় ভাই

এলাকার বড় ভাই !! Part- 11

ঢাকাইয়া কুট্টি…. তোরে বুঝাতে পারব না জাস্ট কি মজা হচ্ছে এখানে… আমি… আলিশা…. রাফিয়া..তাঞ্জুম ফাটায়া দিতেসি!!
-তোরা মিলে ফাটা.. এইদিকে আমার ফাটতেসে!! (সায়মা)
– জ্বর কমেনি??
-কমসে…. বাট একটু weak…আম্মুই আসতে দিল না..anyways. have fun দোস্ত!!
-কিসের ফান.. কোন মজাই নেই তোকে ছাড়া… মিসিং ইউ!! (আহ্লাদী tone)
– me too babu!! (kisssssiiii)
-আস্তে আন্টি শুনলে অন্যকিছু ভাব্বে…. আচ্ছা তুই রেস্ট কর… আমি পরে কথা বলি!!
আমি কল রেখে দিলাম…. আজ আমাদের কলেজে নবীন বরনের অনুষ্ঠান… ১ম বর্ষের ছাত্রীদের…আর সব দায়িত্ব এসেছে আমাদের কাধে…!!
আমাদের সবাইকে লাল শাড়ী পরতে বলেছে.. আমি এই শাড়ী পরেছি….!!
গতকাল আব্বু আয়াতদের বাসায় যেয়ে না করে দিয়ে এসেছে….. আমি শান্তির নিশ্বাস ফেলতে নিয়েও পারলাম না..কারন এর তিনি আমাকে কোন টেক্সট দেননি!!
গত তিন মাসে তিনি আমাকে কলেজ থেকে আসার পরএকটা টেক্সট দিতেন যে আমি বাসায় এসেছি কিনা??খেয়েছি কিনা.. কিন্তু সারাটাদিন তিনি আমাকে কোন টেক্সট দেননি..এমনকি রাতেও না!!
বিয়ের জন্য না বলার পর কি..?? না না.. সব ঠিকই আছে। কিন্তু তিনি যা রাগী… এতেই তো ভীষণ ভয় করে….!!
– এই ইরা.. ম্যাডাম ডাকছে..বরন করতে হবে চল!! (তাঞ্জুম)
-হ্যা আসছি!!
**
অনুষ্ঠান শেষ হলে..আমি বের হয়ে ঘড়িতে দেখলাম…৪:১০ বাজে।আম্মু কে একটা কল দেই..নাহলে চিন্তা করবে… ফোন বের করলাম!!
great…just great Ira….পিক তুলতে আর গান বাজাতে সব চার্জ শেষ ..যেভাবে হোক তাড়াতাড়ি বাসায় যেতে হবে….. নাহলে আম্মু চিন্তা করবে!
আমি রিকশা নিতে যাব তখন দেখি….একটা জিপগাড়ি রাস্তায় ওপারে থামল.. জিপে মামুন ভাইয়া আর শহীদ ভাইয়া নিচে নামলেন..আমার কাছে আসলেন!!
-আসসালামু আলাইকুম আপুমনি ভাল আছ?? (শহীদ ভাইয়া)
-ওয়ালাইকুম আসসালাম.. জি ভাইয়া!! (একটু ভয় পেলাম.. সেটাই স্বাভাবিক)
– আপু আপনার সাথে কিছু কথা আছে…!! (মামুন ভাইয়া)
-কি ভাইয়া??
মামুন ভাইয়া আমামার সমবয়সী… তবুও আমি তাকে ভাঈয়া বলেই ডাকি!!
-আসলে আমার বোনের শরীর টা ভীষন খারাপ….আপনি যদি প্লিজ আমার সাথে আসতেন!! (শহীদ)
-শরীর খারাপ তো ডাক্টার দেখান.. আমি তো ডাক্টার না!!
-ডাক্টার দেখেছে…কিন্ত খুব বমি হচ্ছে…. চোখ উলটে জাচ্ছে”!!
– আপনার মা কোথায়…??
-মা মামার বাড়ি…. গেছে আজ সকালেই..রাতে চলে আসবে.. একটা ছেলে মানুষ হয়ে আমি তো আর সব বুঝব না… তুমি যদি আসতে ভাল হত.. প্লিজ আপু হেল্প টা কর!!
আয়েশ.. মানে শহীদ ভাইয়ার বোনের সাথে আমাদের দেখা হয়েছিল….. রানা ভাইয়ের বিয়েতে… খুব রোগা পাতলা মেয়েটা… কি হয়েছে কে জানে.. নাহ যাওয়া উচিৎ)
আমি গাড়িতে উঠলাম… ভাইয়া গাড়ি স্টার্ট দিলেন
**
বাসা বেশি দূরে না ১৫ মিনিট এর মধ্যেই চলে এসেছি!!
এলাকাটা খুব নির্জন।…. কেন যেন মনের ভিতরটা ভয় ভয় করছে..আল্লাহ সব যেন ঠিকঠাক থাকে!!
বসার রুমে যেয়ে ভাইয়া আমাকে বসতে বলল!!
-ভাইয়া আয়েশা কোথায়?? (আমি)
-আয়েশা!!
ভাইয়া ডাক দিলে আয়েশা অন্যরুম থেকে চলে আসে। কিন্ত। ওকে দেখে তো অসুস্থ মনে হচ্ছে না!
-ভাইয়া.. ওকে তো সুস্থই দেখাচ্ছে!!
-কেন..আমার আবার কি হল..আমি তো ভালই আছি!!
তাহলে এরা আমাকে মিথ্যে কথা বলেছে!!
-সরি আপু। এটা ছাড়া তোমাকে আনার কোন উপায় ছিলনা!!
-আপনারা আমাকে কেন এনেছেন এখানে??
-আপু আমাদের সন্দেহ কোরো না..আমরা তোমার ভাইয়ের মত!!(মামুন)
-একটু অপেক্ষা কর..সব জানতে পারবে.. আয়েশা.. আপুকে পানি দাও!!(শহীদ)
আয়েশা রান্নাঘরে পানি আনতে গেল….ভাইয়ারা কল করাতে busy। এই সুযোগ… আমি সোফা থেকে উঠে এক দৌড়ে বাড়ির বাইরে চলে আসলাম… তারা আমার পেছন পেছন আসছে…. ভয়ে আরো জোরে দৌড়াতে যেয়ে কিছু একটার সাথে ধাক্কা লাগল…সামনে তাকিয়ে দেখি.. সেই চেনা রাগী চোখ দুটো!!
-এভাবে শাড়ি পরে কেঊ দৌড়ায়..এস!! (অভদ্র)
কিছু বলার আগেই ভাইয়া আমাকে ধরে ভিতরে নিয়ে যায়..ভাইয়া আজকে নেভী ব্লু পাঞ্জাবি পরেছে.. রাশেদ ভাইয়াও তার সাথে এসেছে!!
একরুমের সোফায় নিয়ে বসায়… আর সবাই পেছনে আসে!!
আয়েশা আমার দিকে পানি এগিয়ে দেয় তা আমি এক নিশ্বাসে শেষ করে ফেলি!!
– এরা আমাকে মিথ্যে কথা বলে এখানে নিয়ে এসেছে!!
-কারন আমিই তাদের বলেছি!!
কি… ইনি আমাকে আনতে বলেছে??
-কে-কেন??
-বলছি….তোরা একটু বাইরে যা… আপু -বলছি….তোরা একটু বাইরে যা… আপু তুমিও যাও!!
তারা সবাই বাইরে চলে গেলে…..উনি উঠি দরজা ভিড়িয়ে দেয়!!
-দরজা কেন লাগাচ্ছেন??
-শুধু ভিড়াচ্ছি… লাগাই নি।তুমি যদি এখানে চুপ করে না বস.. তাহলে লাগিয়ে দিব!!
আমি কিছু না বলে চুপ করে বসলাম.. তিনি টেবিল থেকে টিস্যু নিয়ে.. আমার দিকে এগিয়ে দিলেন!!
-ঘাম মুছো!!
আমি টিস্যু নিলাম। তিনি আমার সামনে একটা চেয়ার নিয়ে বসলেন!!
-আমি এখন যা জিগ্যেস করব…সব সত্যি করে উত্তর দিবে..ঠিক আছে !.
-হুম
-তুমি আমার প্রস্তাব এ না বলেছ কেন??
-আমি তো না আব্বু আম্মু..
.
-ইরা.. তুমি কি আমাকে চেনো না… না আমার রাগকে আজ অবধি চেনো নি…. আমার আব্বু আম্মু ওখানেই ছিলেন…তোমার আব্বু আম্মু আমাকে পছন্দ করেছে.. তুমি তাদের না বলেছ..কেন করেছ বল?!!
(আমার কথা শেষ হতে না হতেই তিনি আমাকে ধমক দিয়ে উঠল)
-আমি এখন শুধু পড়ার দিকে মনযোগী হতে চেয়েছিলাম!!(barely audible voice)
-জোরে বল??
-আমি এখন শুধু পড়ার দিকে মনযোগী হতে চেয়েছিলাম!!
-আমি কি তোমাকে বলিনি…. যে এখন এনগেজমেন্ট টা করি.. তারপর তুমি যখন চাইবে আমরা তারপর সব ভাববো..তুমি কি ভাব তোমার পড়াশুনা নিয়ে আমার কোন চিন্তা নেই !!
কি করব আমি…কি বলব এখন….??
-আমাকে যেতে দিন প্লিজ….আম্মু টেনশন করছে!!
-আমি এখানে তোমাকে কিছু বলছি.. আর তুমি??
আমি তার চোখে রাগ আর তার সাথে কস্ট দুটোই দেখতে পাচ্ছি!!
-কোথাও যাবে না তুমি…চিন্তা করে করুক!!
-প্লিজ আমাকে যেতে দিন…. আমার মা আমার জন্য চিন্তা করবে.. আপনার ও ত একটা বোন আছে.. সে বাড়িতে না আসলেও তো আপনার চিন্তা হবে!!
সে আমার দিকে কিছুক্ষন তাকাল.. তারপর বলল
-ঠিক আছে.. যেতে পার.. তবে একটা শর্ত আছে!!
-কি শর্ত??
-বাড়িতে যেয়ে তুমি বলবে… তুমি এই সম্বন্ধে রাজী!!
আমি কি ভাবে?? না আমি ওনাকে বিয়ে করতে পারব না…আমি কিভাবে??
ইরা ভেবে দেখ… এখান থেকে বের হওয়া কোনমতেই সম্ভব না!!..আপাতত হ্যা বল.. পরের টা পরে দেখবি!!
-ঠিক আছে…..!!
আমি যেতে নিতে চাইলে তিনি আমার হাত ধরে…..!!
তার ফোন আসে.. আমার দিকে তাকিয়ে সে কল রিসিভ করল??
-হ্যা রাশেদ..কাজী এসেছে..বাইরে বসা.. আমি আসছি!!
কাজী??????????
-কা-কাজী কেন??
-কারন আজ আমাদের বিয়ে!!
(চলবে)