উপন্যাস- রাত

উপন্যাস- রাত ! পর্ব- ১৮

প্রহর – ওকে কোলে তুলে নিলাম।

রাত্রি- ‘তুমি! ??? কি করছ? ? কোথায় নিয়ে যাচ্ছ! ?
নামাও।

প্রহর – চুপ একদম চুপ।

রাত্রি- আমি নামাতে বলছিনা।

প্রহর – চুপ থাকতে বললাম না???

রাত্রি- ( হুহ ঢং। রাগ দেখানো হচ্ছে এখন।সারাদিন কই
ছিল।এখন আসছে।)
ছাদে নিয়ে আসলে কেন।??

প্রহর – তুমি কাব্য কে পছন্দ করো! ?

রাত্রি- এটা আবার কেমন কথা!?

প্রহর – তাহলে ওর সাথে এত কিসের কথা!? আর সব
সময় ওর সাথে লেগে থাকার কি আছে!?

রাত্রি- আমি ওর সাথে লেগে থাকি! ? না ও থাকে।
আর থাকলেও তোমার কি হ্যা।

প্রহর – আমার কি! ? তাই না!? আমার কি! ?? দেখাচ্ছি
আমার কি! ?

রাত্রি- ধাক্কা দিয়ে সরে যেতে নিতেই এত শক্ত
করে হাত ধরেছে যে মনে হল কেটে ই
গেলো।

প্রহর – আমি বুঝতেই পারিনি ওর হাতে আঁচড় লেগে
কেটে যাবে।
সরি সরি।

রাত্রি- এটাই ত তোমার কাজ।
আমাকে ব্যথা দেওয়া।
এ ছাড়া কি পারো তুমি!?

প্রহর – ব্যথা যখন আমি দিয়েছি ব্যথা সারার ব্যবস্থা ও
আমি করব।
কাছে টেনে নিলাম একেবারে।
হাত দুই টা লাল হয়ে আছে।চেপে ধরার ফলে ছাপ
বসে গেছে।
কাটা জায়গায় আস্তে করে ঠোটের ছোয়া দিলাম।
কাটা মিলিয়ে গেলো।

রাত্রি- চোখ শক্ত করে বন্ধ করে আছি।

প্রহর – হাতে যেখানে যেখানে লাল লাল ছাপ
বসে গেছে সব জায়গায় চুমু দিলাম।রাত্রি কেঁপে
কেঁপে উঠছে।
আস্তে আস্তে সব দাগ মিলিয়ে গেলো।

রাত্রি- ও কমোড়ে হাত দিয়ে আরও কাছে টেনে
নিল।আমি আস্তে আস্তে চোখ খুললাম।ও তাকিয়ে
আছে আমার দিকে।
আমি ত লজ্জাতে মিশে যাচ্ছি মাটি তে।
নিচের দিকে তাকালাম।নিজের জামা শক্ত করে মুঠ
করে ধরে আছি।

প্রহর – থুতনি তে আংগুল রেখে মুখ টা উঁচু করলাম।
লাল হয়ে আছে মুখ টা।

রাত্রি- ওর চুল শক্ত করে ধরে আছি।ওর ঠোটের
উষ্ণতায় এক অজানা ভুবনে হারিয়ে যাচ্ছি আমি।
কতক্ষন ওইভাবে দাড়িয়ে ছিলাম জানিনা।কিন্তু মনে
হচ্ছিল সময় টা জেনো এইখানেই থেমে যায়।

প্রহর – ওকে ছেড়ে পকেট থেকে একটা
চেইন বের করলাম।রাত্রিকে পরিয়ে দিয়ে ঘাড়ে
চুমু দিলাম।কিছুক্ষন পর রাত্রিকে কোলে তুলে
নিলাম।

রাত্রি- আমি ত ওর দিকে তাকাতেই পারছিনা।
সব রাগ ত পানি হয়ে গেলো।
এখন রাগ ত দুরে থাক, কথাও বলতে পারব না ভাল মত।

প্রহর – কি হল চুপ হয়ে আছো কেন! ?

রাত্রি- নামাও কেউ দেখে ফেলবে।

প্রহর – হুম।
নামাতেই দোড় দিয়ে নিচে নেমে গেলো।

ইমা- কিরে তুই কই ছিলি।
সবাই খুঁজছে তোকে।

রাত্রি- এইখানেই ত ছিলাম।

ইমা- তাড়াতাড়ি চল বাবা ডাকছে।

রাত্রি- পার্টি শেষ হয়ে গেলো।
ইমা আমার রুমেই বসে বসে বক বক করছে।
কিন্তু আমি প্রহরের ভাবনায় মগ্ন।
সে সসময় এর পর থেকে ত ওকে দেখতেই
পাচ্ছিনা।

ইমা- আপি এত সুন্দর চেইন।
ও এম জি।

কে দিল? ?

রাত্রি- প্রহর।

ইমা- ও তাই বল।
এর জন্য ই গায়েব ছিলা!?

রাত্রি- না না .. এমন কিছুনা।

ইমা- হাহ বললেই হল।তোলে তোলে ত অনেক
কিছু হয়ে যাচ্ছে।

রাত্রি- কই? কি হল? ( এই মেয়ে আবার কি দেখল)

ইমা- বেশি কিছু দেখিনি জংগল এ ওই আর কি একটু।

রাত্রি- (আল্লাহ দড়ি ফালাও। আমি কই যাই এখন।
)
চুপ থাক তুই।
আমি ঘুমাব।
যা ত।
ইমা- হ্যা হ্যা এখন ত তাই ই বলবি। আচ্ছা যাচ্ছি।

রাত্রি- ঘুম ত আসছিল না। কখন যে ঘুমের মধ্যে
হারিয়ে গেলাম।

প্রহর – ঘুমান্ত রাত্রিকে দেখছিলাম।
মনে হল কেউ আসছে।
আমি আধারে মিশে গেলামম।
কেউ জানালা দিয়ে ঢুকলো।
রাত্রির দিকে হাত বাড়ালো।
আমি হাত ধরলাম।
আমাকে ধাক্কা দিয়েই বের হয়ে গেলো।
বুঝার আর বাকি থাকল না ও কে

শুধু মুখ টা দেখতে হবে।
কিং নাইট কে দেখলেও আমি চিনিনা।
আমি পিছু নিলাম।
সামনে বড় পাথর ছিল। ছুড়ে মারলাম।
ও পরে গেলো।
আমি সামনে যেয়ে দাড়ালাম।
ও ও দাড়ালো।
মুখ হুড দিয়ে ঢাকা।
মুখ থেকে হুড টা সরালো।
আমি বিশ্বাস করতে পারছিনা আমি কাকে দেখছি।
“কাব্য”
নাকি “নাইট “বলব???

কাব্য – যেটা খুশি বল হান্টার।
আমি ত তোমাকে প্রথম দিন দেখেই চিনে
ফেলেছিলাম।
কিন্তু তুমি আমাকে চিনোনি
স্যাড।
ভেরি স্যাড। প্রহর – তুমি তোমার পরিচয় আমার কাছে
প্রকাশ
করে ভুল করেছ।আমি থাকতে তুমি রাত্রির ক্ষতি করা
ত দুরের কথা ভাবতেও পারবেনা।

কাব্য – আরে কে বলল আমি ওর ক্ষতি করব।
ওকে ত আমি আমার কুইন বানাবো।
আমার রানি হবে ও।
আমার রাজ্যের সবচেয়ে ভয়ংকর হিংস্র ভ্যাম্পায়ার
রানি।

প্রহর – স্বপ্ন দেখতে থাকো।
সেটা আমি হতে দিচ্ছিনা।
পিস্তল টা বের করে সামনে তাকাতেই দেখি কাব্য
নেই।
পিছন থেকে আমাকে আঘাত করল।হাতের পিস্তল
আধারে মিলিয়ে গেলো।
অনেক ধস্তাধস্তি র পর ভোরের আলো ফুটতে
লাগল আর কাব্য হাওয়ায় মিলিয়ে গেলো।
আমি পিস্তল টা খুজে বাড়ি ফিরে এলাম।
নিজের রুমে ঢুকতেই দেখি রাত্রি।

রাত্রি- ওকে দেখেই জরিয়ে ধরলাম।
“কোথায় ছিলে তুমি?? জানো কি ভয় পেয়েছিলাম।
ভাবলাম আমাকে রেখে চলে গেছো।
ভাবলাম কাল কে যা হয়েছিল সব স্বপ্ন।


প্রহর – বোকা মেয়ে একটা।
অবশ্য দোষ তোমারি।

রাত্রি- আমার কি করে!?

প্রহর – তুমি ত কখনও আমাকে বলনি তুমি আমাকে….

রাত্রি- তুমি বলেছ! ?
কাল ও ত বলনি।
আর আমি বলব কি করে তার আগেই ত তুমি রোজ
এর কথা বলেছিলে।
মিথ্যুক একটা।

প্রহর – ও তাই নাকি! ? আর নিজে কি করেছ? ?
অন্যের সাথে …

রাত্রি- আমি কিছুই করিনি।যা করার ও ই করেছে।
আমার দোষ নেই।

প্রহর – আমার ত তখন মনে হচ্ছিল দু জনকেই
চিবিয়ে খাই।

রাত্রি- তাই নাকি!??
চিবিয়ে খাবা তাইনা।
দারাও খাওয়াচ্ছি।

প্রহর – ও মা!! এত জোরে কেউ বুকে কামোড়
দেয়? ?

রাত্রি- হ্যা এত জোরেই দেয়।
এহ আসছে আমাকে খেতে।

প্রহর – কথাটা এমনি বলেছিলাম।
এখন ত দেখছি সত্যি ই …….

রাত্রি- এই একদম কাছে আসবেনা বলে দিচ্ছি।
একটু ও কাছে আসবেনা।

প্রহর – ও দরজার সামনে যেতেই দরজার সামনে
যেয়ে দাড়ালাম।

রাত্রি- তুমি ত ওইদিকে ছিলে এত তাড়াতাড়ি
এইখানে! ???একটু একটু করে পিছাতে লাগলাম।

প্রহর – দরজা লাগিয়ে ওর দিকে এগুতে লাগলাম।
রাত্রি- এই সামনে আসবেনা বলে দিচ্ছি।
বলতে বলতেই ও একদম কাছে এসে দাড়ালো।
পালানোর জায়গা খুজছি।

প্রহর – লাভ নেই।
পালাতে দিচ্ছিনা।

রাত্রি- এই সরি সরি ভুল হয়ে গেছে।প্লিজ যেতে
দেও।

প্রহর – আমিত শুনছিনা।ভুল করেছ এখন শাস্তি
পেতে হবে
( কানের কাছে মুখ নিয়ে বললাম।)

রাত্রি- ওকে সরিয়ে দিতেই ও দেওয়ালের সাথে
হেলান দিয়ে আমাকে টান দিয়ে নিজের সাথে
মিশালো।

প্রহর – ওকে দেখে মনে হচ্ছে লজ্জাতে ও
এখনি গলে যাবে।
গাল গুলা লাল হয়ে গেছে।
নাকের সাথে নাক লাগালাম।
তারপর কপালে ভালবাসার স্পর্শ দিলাম।
বুকের মাঝে জরিয়ে ধরে রাখলাম।

রাত্রি- এই!!!

প্রহর – হুম।

রাত্রি- তোমার ফোন বাজছে

প্রহর – ফোন ধরে দেখি কিং ফোন করেছে।
রাত্রি তুমি যাও এখন।আমি আসছি।

রাত্রি- ওর গালে একটা চুমু দিয়ে দোড় দিলাম।

প্রহর – খবর পেয়ে গেছি নাইট এর।

কিং- রাত্রি কে নিয়ে চলে এসো।

প্রহর – জি।
আমি স্যার মানে রাত্রির কাকুর কাছে গেলাম। আর
বললাম আমার আপনার সাথে কথা বলার আছে।
কাকু- বল।

প্রহর – নাইট এর খবর পেয়ে গিয়েছি।

কাকু- কিভাবে।?

প্রহর – সব খুলে বললাম।

কাকু- এখন?
প্রহর – আমি ওকে নিয়ে ফিরে যাবো।কিং এর
অর্ডার।

রাত্রি – এই এতক্ষন কোথায় ছিলে!? কখন থেকে
খুজছি।

প্রহর – কিছু হয়েছে! ?

রাত্রি- না কিছু হয়নি।
কিন্তু তোমাকে বেশিক্ষন না দেখলে অস্থির
লাগে।

প্রহর – প্যাকিং করে নেও।আমরা ফিরে যাচ্ছি।

রাত্রি- কেনো?
প্রহর – তুমি কি যেতে চাও না!?

রাত্রি- তুমি যেখানে নিয়ে যাবে সেখানেই যাবো।
দাড়াও রেডি হচ্ছি।

প্রহর – ( বুঝতে পারছিনা ওর থেকে আর কতদিন
সত্যি টা লুকিয়ে রাখতে পারব।)
 


বিঃ দ্রঃ নিচে Next >> ক্লিক করলে পরবর্তী পর্ব পাবেন..!

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *