উপন্যাস- রাত

উপন্যাস- রাত ! পর্ব- ১৭

রাত্রি- প্রহরের হাত খামচে ধরে দিলাম চিতকার।

ইমা- আরে বাবা থাম।কান গেলো।

প্রহর – দেখো এখন পা ঠিক আছে।

রাত্রি- হ্যা। এখন ঠিক আছে।আমি এইখানে বসি।
তোমরা সামনে থেকে ঘুড়ে আসো।

ইমা-( কাব্য থাকলে এদের মধ্যে কথা হবেনা।
আসল প্যাঁচচ টা বুঝতে হলে কাব্য ভাইকে সরাতে
হবে।হুম)
ভাইয়া চল ওইদিক থেকে ঘুড়ে আসি।

কাব্য – কিন্তু রাত্রি!?

ইমা- আরে প্রহর আছে ত সমস্যা নাই।
চল ত।কাব্য ভাইয়া কে নিয়ে অন্য জায়গায় সরে
গেলাম।

রাত্রি- (এখন বসে বসে এর মুখ দেখব! ? হাহ .আমার
আর খেয়ে দেয়ে কাজ নেই।)

প্রহর – কোথায় যাচ্ছ!?

রাত্রি- তোমার কি! ? আমি যেখানে খুশি যাবো।
হাহ আসছে প্রশ্ন করতে।
বলতে না বলতে হঠাত খুব জোরে একটা গাছের
সাথে প্রহর আমাকে আটকে ধরল।

প্রহর – সোজা কথার সোজা উত্তর দিতে কস্ট
হয়! ?

রাত্রি- তাহলে প্রশ্ন করই কেন? ? ছাড়ো আমাকে
ছাড়ো বলছি।
আমি কিন্তু ইমা কে ডাকব।

প্রহর – হ্যা ডাকো।

রাত্রি- ডাকতে যাবো তখনি দেখলাম ও আমার দিকে
মুখ বাড়ালো। আমি সাথে সাথে মুখ হাত দিয়ে
ঢাকলাম।
আস্তে আস্তে হাত নামিয়ে ওর দিকে তাকালাম।
চোখ দেখে মনে হচ্ছে এখনি গিলে খাবে।
কি হয়েছে এইভাবে তাকিয়ে আছো কেন? ?

প্রহর – হাত ২ টা ধরে ওর পিঠে লাগালাম।
খুব মজা তাইনা।অন্য জনের সাথে হাসছ, কথা বলছ,
অন্য জন কোলে নিয়ে বেড়াচ্ছে।

রাত্রি- তাতে তোমার কোন ক্ষতি হয়েছে! ??
তুমি আমাকে স্পর্শ করবেনা।

প্রহর – ত কে স্পর্শ করবে!? কাব্য!?

রাত্রি – হ্যা ও ই করবে।
তুমি আমাকে ছেড়ে রোজ এর কাছে যাও।

প্রহর – ওর চুল খুব শক্ত করে ধরলাম। আর মুখ টা
উঁচু করলাম।

রাত্রি- কি ভাবছ তোমাকে আমি ভয় পাই? ?

প্রহর -( আমি তোমার এই রাগ, টা কে খুব ভয় পাই।
তোমাকে হারাতে ভয় পাই।
আমি ভুল করে ফেলেছি বুঝতে পারছি।
কারন তোমাকে অন্য কারো সাথে আমি দেখতে
পারব না।আমি নিজেকে খুব বুঝিয়েছি।কিন্তু বার বার
হেরে গেছি।)
রাত্রি- ও অন্যমনষ্ক তাই ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দিলাম।

প্রহর – কিন্তু আমি ওকে ধরে ওর পিছনে দাড়া
হলাম।

রাত্রি- (ওকে ছাড়াতে চাচ্ছি।খুব শক্ত করে ধরে
আছে।
এ কি চায় বুঝিনা। )
কাধ থেকে আস্তে করে চুল গুলা সরাতেই আমি
কেঁপে উঠলাম। কারন ওর স্পর্শ খুব ঠান্ডা।

প্রহর – ওর কানের সামনে মুখ নিয়ে আস্তে
করে বললাম”” তোমাকে আমি ছাড়ছি না। যেখানেই
যাবে আমাকে পাবে””

রাত্রি- চোখ বন্ধ করে ওর হাত শক্ত করে ধরলাম।
ঘাড়ে ওর ঠোটের স্পর্শ পেতেই ওর হাত
খামচে ধরলাম।
নিজেকে খুব শক্ত করে রেখেছি।

প্রহর – ঘাড়ে আরেক টু আদর করতেই রাত্রি সরে
গেলো কাছ থেকে।

ইমা- খুব সুন্দর ওই জায়গা টা তাই না ভাইয়া।

কাব্য – হুম।
আরে তোমরা এইখানেই দাড়িয়ে আছো?
আমি ভাবলাম তোমরাও
আসবে।
কিন্তু এলেনা দেখে চলে আসলাম।

রাত্রি- আমার ভাল লাগছেনা আমি বাসায় যাবো।

কাব্য – ওকে।
এখন হাটতে পারবে ত না আবার কোলে নিব।

রাত্রি- না না হাটতে পারব।
আড় চোখে প্রহরের দিকে তাকালাম।
ও আমার দিকেই তাকিয়ে আছে।আমি তাড়াতাড়ি চোখ
সরালাম।
গাড়ি তে আমি আর ইমা পাশাপাশি বসলাম।

প্রহর – রাত্রিকে কাব্যের পাশে বসতে দেইনি।
এতে কাব্য অনেক টাই অসন্তোষ আমি বুঝতে
পারছি।
তাতে কি? ?

ইমা – আপি ঘুমিয়ে পরেছ?

রাত্রি- না কিছু বলবি?

ইমা- তোমার আর প্রহরের কি কাহিনি? ?

রাত্রি- মা,,,,মা,,,,মানে???( তখন কিছু দেখে নেয়নি ত)

ইমা- আরে তুমি ওর উপর রেগে থাকো তাই বলছি
আরকি।( আপি আমি ত সব ই দেখেছি কিন্তু
তোমাকে এখন বলব না।সময় আসুক।)

রাত্রি- না এমন কিছু না।
তুই যা ত আমি ঘুমাব।

আমি হালকা ঘুমে ছিলাম।মনে হল কেউ আমার গালে
স্পর্শ করল।
আমি ভয়ে নড়ছিনা।
হালকা করে চোখ খুললাম।
কেউ চলে যাচ্ছে আধারের মাঝে মিশে
গেলো।
আমি উঠে লাইট জ্বালালাম।
এক ঢকে এক বোতল পানি খেয়ে নিলাম।
কে এসেছিল? ? প্রহর না ত ??

প্রহর – সকালে রাত্রির ঘরে গেলাম।
বেহুশের মত ঘুমাচ্ছে।আমি ওর মুখের উপর থাকা
চুল গুলা সরিয়ে দিলাম।

রাত্রি- আমি চমকে উঠে বসে পড়লাম।
তুমি! ?? এখন আবার এসেছ? ?

প্রহর – আবার এসেছি মানে?

রাত্রি- রাতেওও ত এসেছিলে!

প্রহর – রাতে আমি এসেছিলাম? ? তুমি আমাকে
দেখেছ? ?

রাত্রি- না দেখলেও আমি জানি তুমি ই এসেছিলে।আর
কে আসবে তুমি ছাড়া।

প্রহর -( আমি ত আসিনি তাহলে নাইট না ত ………।ও
তাহলে জেনে গেছে রাত্রি এখানে আছে?
আমাকে আরও সাবধানে থাকতে হবে।এখন ওকে
কিছু বুঝতে দেওয়া যাবেনা।)
এসেছিলাম তাতে কি? ?

রাত্রি- তোমার ত সাহস কম না।

প্রহর – সাহসের ত কিছুই দেখোনি।

রাত্রি- দেখতেও চাইনা।
যাও এখন।
।( হুহ আমি যখন পাত্তা দিয়েছিলাম তখন ত
…… আর এখন!!!!)

রোজ- ( ফোনে) কি বলছ এইসব। তাহলে ও
নিশ্চয় ই নাইট হবে।এখন কি করবে??

প্রহর – নজরে রাখতে হবে। রাতে আমি ওর ঘরে
নজর রাখব।
যেই হোক না কেনো রাতে আবার আসবে।
আচ্ছা রোজ রাখছি।

রাত্রি- রোজের নাম টা শুনে সামান্য ধাক্কা দিলাম
প্রহর কে এতে করে ওর হাত থেকে ফোন টা
পরে গেলো।

মুখ ভেংগিয়ে চলে এলাম।

প্রহর – নিশ্চয় ই আবার রোজের নাম টা শুনেছে।
আমিও ওর পিছু পিছু গেলাম।

ইমা- হ্যাপি বার্থডে আপিইইইইইইই।

প্রহর – আজ ওর জন্মদিন।
ডেম। কি করে ভুলে গেলাম।
দুরর।

রাত্রি- থ্যক্স।

কাকু&কাব্য – হ্যাপি বার্থডে।

রাত্রি- সবাই উইশ করল।আর এ!? বুঝলামম জানেনা।তা
সবাই বলার পর ত জেনেছে।
তখন ত উইশ করতে পারত।
উল্লুক, ভাল্লুক একটা।
( আমি তোমাকে ছাড়ছিনা।যেখানে যাবে আমাকে
পাবে।আহারে কি ডায়লগ দিল কালকে আর এখন! ?)
সারাদিন হয়ে গেল চোখেও দেখলাম না।

ইমা- আপি চল শপিং করে আসি।সন্ধায় বাবা পার্টি দিচ্ছে।
উফফ কি মজা।

রাত্রি- না রে আমার ভাল লাগছেনা।

ইমা- আমি কিছু শুনছিনা ।চচচল।

রাত্রি- বিকালের দিকে বের হলাম।সন্ধ্যায় আসতে
আসতে দেখি সারা বাড়ি সাজানো হয়ে গেছে।
অনেকেই চলে এসেছে।

কাকু- রাত্রি ইমা তাড়াতাড়ি রেডি হয়ে আয়।

প্রহর – সারাদিন আজ রাত্রিকে দেখিনি।
পার্টি তেও দেখছিনা।
তারপর দেখলাম ও আর ইমা সিড়ি দিয়ে নামছে।
রাত্রি কালো একটা গাউন পরেছে।চুল গুলা কাধের
এক পাশে।
এত সুন্দর লাগছে। বলার মত না।
আমি সামনে যাওয়ার আগেই কাব্য গেলো তাই আমি
আর গেলাম না।

রাত্রি- প্রহর কে ত দেখতেই পাচ্ছিনা।

ইমা- কিরে কাকে খুঁজছিস?
রাত্রি- না কাউকে না।

ইমা- আপি ওই দেখ প্রহর।

রাত্রি- কই কই?

ইমা- হিহিহি।

রাত্রি- তোকে না।

ইমা- আপি দেখনা সব কাপল ডান্স করছে চল না
আমরাও যাই।
রাত্রি- না না। আর অন্ধকারে আমি ভাল দেখতে পাব
না।লাইট ডিম করে রাখার যে কি দরকার ছিল।
কাব্য – রাত্রি চল ডান্স ফ্লোরে।
রাত্রি- না না।
আমি যাবোনা।

কাব্য – তুমি না বললে আমি শুনব নাকি।
হাত ধরে টেনে নিয়ে গেলাম।

প্রহর – হাতে গ্লাস ছিল।জোরে করে চাপ দিতেই
ভেংগে গেলো।
হাত সামান্য একটু কাটল।
অন্য হাত দিয়ে কাটা টা মিলিয়ে দিলাম।

ইমা- গ্লাস ভেংগে আর কি হবে।
কিছু না করলে কাব্য হয় ত আপি কে তুলেই নিয়ে
যাবে।

প্রহর – সেটা হতে দিলে ত।

রাত্রি- কাব্য একটু দাড়াও আমি পানি খেয়ে আসি।

কাব্য – ওকে।
রাত্রি- আল্লাহ বাচায়ছে।
পানি খাওয়ার নাম করে ইমা কে খুঁজতে লাগলাম।
হঠাত কেউ হাতে টান দিল।
আরে কে!?

প্রহর – ওকে কোলে তুলে নিলাম।

রাত্রি- ‘তুমি! ??? কি করছ? ? কোথায় নিয়ে যাচ্ছ! ?
নামাও।

প্রহর – চুপ একদম চুপ।
চলবে
 


বিঃ দ্রঃ নিচে Next >> ক্লিক করলে পরবর্তী পর্ব পাবেন..!

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *