আমার ক্রাশ বর !! Part- 20
হঠাৎ একদিন সকালে আরিয়ানদের বাড়িতে চিৎকার চেঁচামেচি শুরু হয়ে যায়।
কে চিৎকার চেঁচামেচি করছে তা দেখতে আরিয়ান নিচে চলে আসে এসে দেখে মৌ এসেছে।
আরিয়ান বলে,”সাত সকালে এসে এমন ষাঁড়ের মতো চেঁচামেচি করার কি আছে তা তো বুঝতেছি না “?
মৌ তার মামির কাছে গিয়ে বলে,”আচ্ছা মামি আমি যদি বিয়ের পর প্রথমে বর কে রেখে তোমাদের বাড়ি এসে অনেকদিন থাকি তখন তোমরা আমাকে কি বলবে “?
আরিয়ানের মা :কেনো এতোদিন বাবার বাড়ি আছো তা জানতে চাইবো।
আর বর ছাড়া কেনো আসবে।
বিয়ের পর বর কে সাথে করে বাবার বাড়ি আসতে হয় তাহলে সে বাড়ির সবাই অনেক খুশি হয়।
মৌ বলে,”মামি এ কথাটা তোমার এই গোবরগণেশ ছেলেকে বোঝাও।
একে তো বউ বাবার বাড়ি একা গেছে তার উপর তার সাথে না করে যোগাযোগ না তাকে আনতে যায়”।
এবার আরিয়ান বলে,”যে একা গেছে যে একা আসতে পারবে।
এ বাড়ির রাস্তা সে ভালোমতো চেনে।
তাই তোকে চিন্তা করতে হবে না “।
মৌ :বাহ কি গর্বের কথা। আমার তো পরান জুড়িয়ে গেছে। মামি তোমার পরান জুড়িয়ে যায়নি তোমার বড় ছেলের মুখে এমন কথা শুনে?
আরিয়ানের মা বলে, “আমার তো লজ্জায় মাথা নিচু হয়ে যাচ্ছে। এমন ছেলে আমার!!
কি কপাল করে এ ছেলেকে পেয়েছি ভাবা যায়”।
মৌ বলে,”ভাইয়া ইগো থাকা ভালো তাই বলে এতো বেশি ইগো ভালো না “।
আরিয়ান বলে,”এখানে ইগোর কি দেখেছিস তুই, যে একথা বলছিস “?
মৌ বলে,”ভাইয়া তোমার প্রতিটা কথার মাঝে বোঝা যাচ্ছে কি পরিমাণ ইগো।
জানো তো ভাইয়া এই ইগো থাকা ভালো কিন্তু কোনো সম্পর্কের মাঝে ইগো রাখতে নেই।তাহলে সে সম্পর্ক টা নষ্ট হয়ে যায় তাড়াতাড়ি”।
আরিয়ান :ইগোর কিছু নাই যে একা গেছে সে একা চলে আসবে।
মৌ বলে, “বিয়ের পর ভাবীকে তোমার সাথে করে বাবার বাড়ি নিয়ে যাবার কথা ছিলো!! কিন্তু তুমি আমার মায়ের কথা শুনে সে কাজ করো নাই।
তারপর ও ভাবী বাবার বাড়ি একা গিয়েছে। তোমার তো উচিৎ ছিলো তাকে বাবার বাড়ি থেকে সাথে করে নিয়ে আসা।
কিন্তু তুমি সে কাজ না করে উল্টা তাকে দোষ দিচ্ছো??
আরিয়ান চুপ করে শুনছে,,,,
মৌ বলে,”জানো তো ভাইয়া সেখানে কিন্তু ভাবী হয়তো তোমার অপেক্ষায় আছে যে তুমি তাকে সাথে করে আনতে যাবে।
কিন্তু আফসোস তার সে আশায় তুমি জল ঢেলে দিচ্ছো।
তারপর ভাবী কেমন আছে একবার ও তার খবর তুমি রাখো নাই “?
আরিয়ান বলে,”বাবার বাড়িতে যখন আছে ভাল ছাড়া খারাপ কেনো থাকতে যাবে “?
মৌ :ভাইয়া তোমার মাঝে এতো ইগো আগে জানতাম এখন দেখছি।
ভাবী যে অসুস্থ ছিলো সে খবর তুমি রাখো?? উঁহু সে খবর তোমার জানার তো কোনো প্রয়োজন নেই।
(আরিয়ান অনু অসুস্থ সে কথা শুনে একটু কষ্ট পায়।আহারে এখন কি করবো আমি।মনে মনে)
আরিয়ানের বাবা :বউমা অসুস্থতা সে খবর পর্যন্ত আমার ছেলে জানে নাহ।
বাহ কি দারুণ কথা।আচ্ছা মেয়েটা তোর কোন পাকা ধানে মই দিয়েছে যে বিয়ে করে এভাবে কষ্ট দিচ্ছিস তাকে।
আরিয়ান আজ মাথা নিচু করে দাড়িয়ে আছে।
আয়াত এসে বলে,”বাবা মনে আছে সেদিন ভাবী যাবার পরে ভাইয়ের কে জিজ্ঞেস করেছিলাম,
যে ভাবি কি অফিসে এসেছে?
ভাই তো সেদিন ডাহা মিথ্যা কথা বলে দিছে হ্যাঁ তোর ভাবি তো অফিসে প্রতিদিন আশে।
সেদিন যদি ভাইয়া মিথ্যাটা না বলতো তাহলে হয়তো সেদিনই জানতে পারত যে ভাবী অসুস্থ। কিন্তু ওই যে মৌ বলল ভাইয়ের প্রচুর পরিমাণে ইগো যা একটা সম্পর্ক ভাঙার জন্যই যথেষ্ট।
এবার আরিয়ান আয়াতকে বলে, “তাহলে তুই কেন আমাকে বলিস নাই যে তোর ভাবী অসুস্থ “?
আয়াত বলে,” ভাবি আমাকে বলতে নিষেধ করেছিল তাই বলিনি আর তাছাড়া তোর বউ তোর তো জানা উচিত ছিল।
যে সে কেমন আছে কি করছে এটা তো আমার তোকে বলার কর্তব্য নয়!!
আরিয়ান : তাই বলে অসুস্থ হবার খবরটা আমাকে বলবি না?
আয়াত :উঁহু!!সেদিন তোমার বলা মিথ্যে কথার জন্য আমি আমার কাছে থাকা তথ্য বলি নাই।
আরিয়ান আর কিছু বলে নাই,,কি বা সে বলবে তার কোনো মুখ নেই।
আরিয়ানের বাবা বলে,,”আমি কিছু জানি না।তুই বউমাকে আজ বাড়িতে সাথে করে আনবি।তা না হলে আর এ বাড়িতে তোর আসতে হবে না।
আরিয়ান বলে,”বাবা এমন কথা বলো না “।
আরিয়ানের বাবা :তুমি তো বউমার বাড়িতে আমাদের সম্মান শেষ করে দিয়েছ।
তারপর
কোন মুখে বাবা ডাকতে আসো আমাকে?
যাও নিজের ভুল সংশোধন করো আগে তারপর কথা বলতে আসবে।
আরিয়ান সোজা নিজের রুমে গিয়ে রেডি হয়ে অফিসে চলে যায়।
অফিসে সারাদিন অনুর কথা চিন্তা করে কেটে যায়।
‘
‘
‘
বিকালে তাড়াতাড়ি কাজ শেষ করে এক বুক সাহস নিয়ে অারিয়ান চৌধুরী তার শ্বশুরবাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দেয়।
শ্বশুরবাড়ি তো খালি হাতে যাওয়া যায় না।
তাই সবার জন্য গিফট আর ফল মিষ্টি ও কিনেছে।
এদিকে অনুদের বাড়িতে আরিয়ান কে দেখে তো আবিরের মা বাবা দুজনে সেই খুশি জামাই আসছে তাদের।
আরিয়ানের হাত থেকে সব কিছু অনুর বাবা রহিমার হাতে দেয় ভেতরে রাখার জন্য।
অনুর মা রহিমাকে বল,এটা আমাদেন অনুর বর।
রহিমা বলে,”মাশাআল্লাহ আমাগো অনু আম্মাজানের বর টা তো সেই সুন্দর গো “।
আবির অারিয়ান কে সাথে করে এনে ড্রয়িংরুমে বসে।
তারপর অনুর মা কি করবে কি খাওয়াবে সেই চিন্তায় ব্যস্ত হয়ে যায় রান্না ঘরে।
আরিয়ান আবির আর শ্বশুর তিন জন বসে গল্প করছে।
আরিয়ান অনেক সময় ধরে খেয়াল করছে অনুকে দেখা যাচ্ছে না বেপার টা কি?
আবির বুঝতে পারছে,,আরিয়ান অনুকে খুঁজছে।
তাই সে বলে অনু একটু বাহিরে গেছে আসতে রাত হবে।
আরিয়ান তা শুনে বলে,”তাহলে আমি আজ আসি কাল এসে অনুকে সাথে করে নিয়ে যাবো “।
অনুর বাবা বলে,” জামাই কি কথা বলো যে তুমি।আজ তোমাকে আমাদের বাড়িতে থাকতে হবে”।
আবির ও তার বাবার কথার সাথে তাল মিলিয়ে বলে,,”হুম আসছো যখন আজ থেকে যেতে হবে”।
আরিয়ান আর তাদের না করতে পারে না।
আবির আরিয়ান কে নিজের সাথে ওর রুমে নিয়ে গিয়ে কিছু ড্রেস দেয়। তা পড়ে আরিয়ান ফ্রেশ হয়ে নিচে আসে।
রাতে তো আবিরের মা জোর করে আরিয়ান কে বেশী বেশী খাবার খাওয়ায় জামাই বলে কথা।
আরিয়ানের তো অবস্থা খারাপ জামাই আদর এতো বার বার খেতে নাই।।পেটে সমস্যা হবে।মনে মনে বলে।
তারপর আবির আরিয়ান কে বলে,,
তুমি এখন অনুর ঘরে বিশ্রাম করো এইতো অনু রাস্তায় আছে চলে আসবে।
আসলে ও বান্ধবীর বাড়িতে গেলে আমাদের কথা ভুলে যায়।
আরিয়ান অনুর বিছানাতে শুয়ে শুয়ে ভাবছে। আল্লাহ ঐ জলহস্তিনী এসে যদি আমাকে তার রুমে দেখে তাহলে আমার কি অবস্থা করবে তা কল্পনাতীত। এখন তো খুব টেনশন হচ্ছে এখানে থেকে বিপদে পড়ে গেছি।আল্লাহ বাঁচাও আমাকে।
(অনু বাড়িতে আশার পর আরিয়ানের কি হাল হবে তা আপনারা ভাবেতে থাকেন আমি এসবের মাঝে একদম নাই😁😁😁
রাতে হয়তো আপনাদের জন্য সারপ্রাইজ থাকবে,, শিউর না কিন্তু 😇😇)
‘
‘
‘
চলবে ….