আমার ক্রাশ বর !! Part- 12
অনু রাস্তা দিয়ে যাচ্ছে আর বলছে,” বিয়ে হয়ে গেছে তো কি হয়েছে,
মানি না জোর জবরদস্তির বিয়ে,
আমি ডিভোর্স দিয়ে দিবো।
যাবো না ঐ খচ্চর মহিলার বাড়িতে।
করবো না ঐ বজ্জাত বসের সাথে সংসার।
মরে গেলেও না”।
এসব ভাবছে আর রাস্তা দিয়ে যাচ্ছে ।
‘
‘
এদিকে বিদায়ের প্রস্তুতি শেষে কেউ আর অনুকে খুঁজে পায় না।এদিকে সেদিকে খুঁজেও অনুকে পাওয়া যাচ্ছে না।
এই খবর আরিয়ান আয়াতের কানে যেতে বেশী সময় লাগে না।এ কথা শুনে তখন,
আয়াত বলে, “ভাইয়া রে শেষে কি না বিয়ের পর ভাবী পালিয়ে গেছে।আগে জানতাম মানুষ বিয়ের আগে মেয়ে পালায়। এখন দেখি বিয়ের পর বউ পালায় যায়”।
আরিয়ান বলে,”আরে ছোট ভাই, চিন্তা করিস না তোর ভাবী পালিয়ে আর কতো দূর যাবে”।
“মোল্লার দৌড় মসজিদ পর্যন্ত “পেছন থেকে আবির এ কথা বলে ওঠে।
আরিয়ান বলে,”কি বোঝাতে চাইছেন আপনি”??
আবির বলে,”এই যে আমার বোন সোজা বাড়িতে গেছে।বাড়ি ছাড়া আর কোথাও যাবার জায়গা নেই।যতো রাগ করুক সে ঠিক বাড়িতে যাবে”।
আরিয়ান :ওহ তাহলে বউ নিজের বাবার বাড়ি থেকে শ্বশুরবাড়ি যাবে, এতো খুব ভাল কথা।
আয়াত বলে,”কি ভাবী পেলাম ভাবা যায়।
বর কে একা রেখে বাবার বাড়িতে চলে গেছে”।
আরিয়ান বলে,”তোর ভাবী বলে কথা আলাদা তো হতেই হবে তাকে”।
আয়াত :হুম আরিয়ান চৌধুরীর বউ ঠিক তার মতো ঘাড় ত্যাড়া। তা বিয়ের দিন বোঝা যাচ্ছে আল্লাহ জানে আগে আগে আরো কতো কি দেখবো।
আরিয়ান বলে,,,”আগে আগে দেখার জন্য আরো কতো কিছু বাকী আছে”।
‘
‘
‘
এদিকে অনু বাড়িতে এসে সোজা নিজের রুমে গিয়ে আলমারি থেকে চকলেটের বক্স বাহির করে বসে বসে চকলেট খেতে শুরু করে।
অনু বলে,,”কি শখ বিয়ে করলেই বউ পাওয়া যায় না,,তাও জোর করে বিয়ে।।আমি কখনো ঐ বজ্জাত বসের বাড়ি যাবো না।তাহলে আমাকে বজ্জাত স্যার আর ওনার ঐ খচ্চর ফুপি মিলে শুটকি মাছ বানিয়ে রোদে শুকিয়ে ফ্রিজে রেখে দিবে”।
একমাত্র চকলেট গুলা আমার সুখের দুঃখের সাথী। এরা সব সময় আমার সাথে থাকে।
এদের ভাগ আমি অন্য কাউকে কখনো দিবো না।
রহিমা এসে বলে,”আম্মাজান আপনি কিছু নিয়া চিন্তা করতেছেন বুঝি “?
অনু :আর চিন্তা আমার জীবন টা ইটের ভাটা হয়েগেছে গো খালা !!
রহিমা :আম্মাজান আপনি কান্দেন কেনো,, আপনার কান্দন দেখলে আমার কলিজায় ছেঁকা লাগে।
অনু :ঐ সব ছেঁকা টেকা বাদ দিয়ে বাড়ির মেইন দরজা আটকাই দিবা যাতে কেউ না আসতে পারে।
রহিমা :কেনো আম্মাজান,, আবির বাবা,আর আফা আর ভাইজান তো আসবে।
অনু রেগে গিয়ে বলে, “ওদের কাউকে এ বাড়িতে ঢুকতে দিবা না।
যাও এখন এখানে থেকে চলে যাও
চিৎকার করে বলে “।
রহিমা অনুর চিৎকার করা দেখেই বুঝে গেছে, অনু আজ রেগে আছে, এখন তাকে কিছু বলা যাবে না।
রহিমা নিচে এসে দেখে অনুর বাবা,মা,আবির
এবং তাদের সাথে আরো কিছু মানুষ নিচে ড্রয়িংরুমে বসা।
আবির :খালা অনুর মেজাজ কেমন দেখলেন ?
রহিমা বলে,”আম্মাজান খুব রেগে আছে এখন সামনে গেলে কাচ্চা মানুষ কে লবন দিয়ে খেয়ে নিবে “।
আবির :তাহলে তো খুব বিপদ,,এখন দেখি কি করা যায়।
তখন আরিয়ান বলে,”বউ যখন আমার, তখন তাকে শ্বশুরবাড়ি নিয়ে যাবার দায়িত্ব আমার “।
রহিমা বলে,”কি আবোলতাবোল কইতাছেন,
অনু মা আপনার বউ কেমনে হয়?
ওর তো এখনো বিয়ে হয় নাই “?
অনুর মা :রহিমা পরে সব তোমাকে বলছি এখন একটু চুপ করে থাকো তুমি।
আরিয়ান বলে,”আচ্ছা অনুর রুম কোনটা “?
আবির :উপরে গিয়ে দেখো বাম পাশে সুন্দর করে দরজা সাজানো আছে, সেই রুমটা আমাদের অনু মনুর।
আরিয়ান সোজা উপরে গিয়ে বাম পাশে সাজানো দরজা দিয়ে ভেতরে প্রবেশ করে দেখে অবাক আল্লাহ এ তো দেখি কোনো রুপকথাররাজকন্যার রুম। এতো সুন্দর করে সাজিয়ে রাখা,,
কল্পনার বাহিরে।
এর পর দেখে রুমের ফ্লোরের মাঝে অনু বসে চকলেট খাচ্ছে।
আরিয়ান কোনো কথা না বলে সোজা অনুর কাছে গিয়ে ওকে কোলে তুলে নেয়।
এভাবে হঠাৎ করে কোলে উঠাই নেওয়াতে অনু ভয় পেয়ে চিৎকার করে ওঠে।
আরিয়ান বলে,”আরে ফাঁটা বাঁশির মতো চিৎকার করবা না কানে লাগে, তোমার যে কাকের মতো কণ্ঠ “।
অনু আরিয়ানের কথা শুনে বলে, “আপনি কোন সাহসে আমার রুমে আসছেন,,,আর এসে আমাকে কাক বলে অপমান করছেন”?
আরিয়ান :একদম চুপ,,এখন তুমি আমার বউ,তাই বেশি পটরপটর করবা না।না হলে পুলিশ এনে ধরিয়ে দিবো।তখন বুঝবা কেমন মজা।
অনু :আমি কোনো চোর, ডাকাত না যে পুলিশ এসে ধরে নিয়ে যাবে।তাছাড়া বাবা, মা, ভাই আছে আমাকে বাঁচাতে।
আরিয়ান বলে,”মেডাম আপনার আগের দিন বাঘে খাইছে, এখন আপনি আমার বউ,তাই আমি ছাড়া আর কেউ আসবে না আপনাকে সাহায্য করতে “!!
অনু :তারমানে বিয়ে হয়ে গেছে বলে আমি পর হয়ে গেলাম।এ কখনো হতে পারে না আমি মানি নাহহহ।
আরিয়ান :আপনার মানতে হবে না তাই বলে,”অনু কে কোলে করে নিচে নিয়ে এসে,,
শ্বশুর শ্বাশুড়ি কে বলে,,
আচ্ছা আমি আমার বউ পেয়েছি নিয়ে চলে গেলাম।
এখন এতো কান্নাকাটি করার জন্য আপনাদের এক্সট্রা সময় দিতে পারলাম না মাফ করবেন। বলে অনুকে গাড়িতে বসিয়ে দরজা লক করে দেয়।””
অনুর পরিবার বাহিরে এসে বিদায় দেয়।
আরিয়ান এসে গাড়ির পেছনে অনুর পাশে বসে ড্রাইভার কে বলে গাড়ি ড্রাইভ করতে।
অনু বলে, ” প্লিজ আমাকে ছেড়ে দিন আমি আম্মু আব্বুর কাছে যাবো “।
আরিয়ান বলে,”থাক বাবু এতো কান্না করতে নাই,,শ্বশুরবাড়ি চলো অনেক চকলেট দিবো”।
অনু :আমাকে জোড় করে বিয়ে করা, তার উপর
জোড় করে শ্বশুরবাড়ি নিয়ে যাচ্ছেন এর ফল কিন্তু ভাল হবে না।
আরিয়ান :যে মেঘ যতোটা গর্জন করে,,সে মেঘে ততোটা বৃষ্টি হয় না।তা আমি খুব ভাল করেই জানি।
অনু বলে,”তাই বুঝি,আচ্ছা চলেন আপনাদের বাড়িতে, দেখাবো অনু কি জিনিষ”।
‘
‘
‘
এদিকে চৌধুরী ভিলার সামনে এসে আরিয়ানের গাড়ি থামে।
আরিয়ান অনুর আগে গাড়ি থেকে নেমে,
অনুর মাথাতে সুন্দর করে ঘোমটা পড়িয়ে দেয়।
এরপর কোলে করে এনে দরজার সামনে নামিয়ে দেয়।
সবাই বউ দেখে দরজার কাছে ছুটে আসে।
ফুপু আম্মা আর আরিয়ানের মা অনুর সামনে আসে।
ফুপু আম্মা মুখ ভার করে বলে, “এই আরিয়ানের মা তোমার ছেলের বউ বরণ করে বাড়ির ভেতরে আনো”।
আরিয়ানের মা :আপা আপনার পছন্দের বউ আপনি বরণ করেন,,আমি এসবের মাঝে নাই।
ফুপু আম্মা :এ মেয়ে আমার পছন্দ করা বউ না।বিপদের হাত থেকে সম্মান বাঁচাতে তোমার ছেলে বিয়ে করেছে।
অনু তাদের দু জনের বরণ করা নিয়ে ঠেলা ঠেলি দেখে খুব মজা পাচ্ছে।
আরিয়ান বলে,”প্লিজ কেউ তো তাড়াতাড়ি বরণ করো”।
অনু :ও ফুপু মা,,আপনি ভালবেসে বরণ করুণ না আমার দাঁড়িয়ে থাকতে থাকতে পা ব্যাথা করছে তো।
আরিয়ান :অনু প্লিজ চুপ করো নতুন বউ এতো কথা বলে না।
অনু :আপনার মা অথবা ফুপি তো বরণ করছে না।আমি কিন্তু ভেতরে চলে গেলাম বলে ভেতরে যাবে তখন আরিয়ান অনুর হাত ধরে রাখে।
আরিয়ানের মা অনুকে মিষ্টি মুখ করিয়ে বাড়ির ভেতরে নিয়ে আসে।।
আরিয়ান আর অনুকে পাশে বসিয়ে সবাই মিষ্টি খাওয়াতে শুরু করে।
অনু, আরিয়ান কে বলে,”আমি মিষ্টি খেতে পাড়ি না,, প্লিজ আমাকে বাঁচান”।
আরিয়ান :আয়াত কে ডেকে কানে কানে কি জানি একটা বলে।
তারপর আয়াত একটা বাটিতে করে লবণ নিয়ে এসে বলে ভাবী আপনার সলিউশন।
অনু বাটিতে লবণ দেখে বলে,,”এর শোধ আমি পড়ে নিবো Don’t worry guy’s “।
সব নিয়ম কানুন শেষে অনুকে বাসর ঘরে রেখে আসে….
(বাকিটা কালকে,,জানিনা আজ পর্ব টা কেমন লাগছে সবার 😒)
‘
‘
‘
চলবে….