শুধু তুই !! Part- 03
রাতের বেলা বেল্টের আঘাতে ক্ষতবিক্ষত করে দিয়েছে ফারহার শরীর। দোষ হেসে হেসে কথা বলছে ইত্তেহাদের ফুফাতো ভাইয়ের সাথে।
ফারহা কোন কথা না বলে নীরবে সহ্য করেছে। কাউকে বশে আনতে হলে যে তার বশ হতে হয়।
ব্যালকনি তে দাঁড়িয়ে আছে ইত্তেহাদ। ভাবছে খুব ভুল করে ফেলল ও। কয়েক দিন পর তো ছেড়ে দিবে তাহলে। এত রিয়াক্ট কেন করল ।
ফারহা : এবার পেয়েছি চান্দু, তোমাকে বশ করার উপায়। আগে আগে দেখো হতা হ্যাঁ কিয়া।
ফারহা উঠে ফ্রেশ হয়ে নিল। তারপর চা বানিয়ে নিয়ে এল। ইত্তেহাদ কে চা দেওয়ার সাথে সাথেই বলল
ইত্তেহাদ : তোর কি লজ্জা বলতে কিছু নেই। একটু আগে বেধরক পেটালাম আবার এসেছিস।
ফারহা : চুপ বেশি কথা বলবেন না। বয়সে বড় সেটা ভুলে যাব বুঝতে পেরেছেন। কি মনে করেছেন, সামনে পরীক্ষা নেহায়েৎ ছেড়ে দিলাম।
ইত্তেহাদ : ফারহা বাড়াবাড়ি হয়ে যাচ্ছে। এবার কিন্তু,
ফারহা : কি করবেন শুনি, তার আগে চা শেষ করুন। আমি চা খাওয়ার সময় বেশি কথা বলা পছন্দ করি না।
ফারহা চা পান শেষে ঘরে চলে গেল। বিছানায় শোয়া মাত্র ঘুমিয়ে পড়ল। ইত্তেহাদ রুমে এসে দেখে, ফারহা জড়সড় হয়ে ঘুমিয়ে আছে। প্রচুর পরিমাণে কাঁপছে। ইত্তেহাদ কিছু না ভেবে ফারহার শরীরে হাত দিয়ে দেখল ফারহার শরীরে প্রচুর পরিমাণে জ্বর এসেছে।
ইত্তেহাদ কোন উপায় না পেয়ে। জলপট্টি দিয়ে দিল। তাতে কিছু কমে যায়। পরে ফারহা ইত্তেহাদ কে জড়িয়ে ধরে। ইত্তেহাদ কোন উপায় না পেয়ে ফারহাকে জড়িয়ে ধরে ঘুমিয়ে পড়ে।
সকাল বেলা ফারহার ঘুম ভেঙে দেখে সে ইত্তেহাদকে জড়িয়ে রয়েছে। ইত্তেহাদ জড়িয়ে ধরে রয়েছে ফারহাকে। এমন ভাবে ধরেছে যেন ছাড়লেই হারিয়ে যাবে।
ফারহা নিচে তাকিয়ে দেখে একটা বাটি ও রুমাল ভেজানো। বুঝতে বাকি নেই রাতে জ্বর এসেছিল ।
ফারহা নিচে নেমে গেল। সবার জন্য নাস্তা বানিয়ে উপরে চলে গেল। ইত্তেহাদ কে ডেকে, সবাইকে ডেকে দিয়ে। নিচে টেবিলে নাস্তা সাজিয়ে পরিবেশন করেছে।
নাস্তা শেষে ফারহা উপরে চলে গেল। ইত্তেহাদ ভেবে পাচ্ছে না এই মেয়ে কোন ধাতু দিয়ে গড়া।
অফিসের জরুরী কাজে ইত্তেহাদ অফিসে চলে গেল। ফারহা ও কলি যেন আকাশের চাঁদ হাতে পেয়ে গেল।
ফারহা : কলি তোর ভাইয়া কখন আসবে তা তো বলে গেল না।
কলি : ভাবীপু এই মুখ গোমড়া কথা আর বলিস না তো।
ফারহা : এই যে ম্যাডাম আমি আছি এখানে। তাই বুঝে শুনে কথা বলবেন।
কলি : ইস আসছে গোমড়া মুখোর বৌ।
দ্বারা তবে তোকে শুধু ধরতে পারি। বলেই কলি কে দৌড়ানো শুরু করলো। কলি চুপচাপ বসে পড়ল । ফারহা হাঁপাতে হাঁপাতে বললো এই একটা কবিতা কবিতা লাগছে মনে।
কলি: তাহলে বলে ফেলুন মহারানী।
তাহলে শোন।
হঠাৎ এসেছিলে চোখের আলোতে…..
হারিয়ে ফেলেছি এক ঝলকে…..
তবুও তুমি ছিলে চোখের কোণে…..
আগলে রেখেছি বড় যতনে…..
ভালোবেসেছি তোমাকে প্রথম…..
চোখের আলোতে এসেছ যখন…..
ছিলে হৃদয় জুড়ে প্রতিক্ষণে…..
ভালবাসা তো হয়না মনের বিপরীতে…..।
এটাই কি প্রণয়ের অনুভূতি…..??
তাই কতটা পথ খুঁজে ফিরে এসেছি…..।
হঠাৎ তোমার ছায়ায় আহ্বান…..
তাই ভুলে গেছি যা পিছুটান…..
ভালোবেসেছি তোমাকে প্রথম…..
চোখের আলোতে এসেছ যখন…..
ছিলে হৃদয় জুড়ে প্রতিক্ষণে…..
ভালবাসা তো হয়না মনের বিপরীতে…..।
মাঝে মাঝে তোমাকে বুঝিনা কেন…..?
তোমায় ঘিরে যে কত বেদনা…..
এসো না তুমি আঁধার ভুলে আলোতে…..
জড়িয়ে নিবো মায়ার চাদরে…..
ভালোবেসেছি তোমাকে প্রথম…..
চোখের আলোতে এসেছ যখন…..
ছিলে হৃদয় জুড়ে প্রতিক্ষণে…..।
ভালবাসা তো হয়না মনের বিপরীতে!
কলি : কবিতা আবৃত্তি করলে অসাধারণ কবির নাম কি।
ফারহা : তো মনে পড়ে না। শুনেছি একবার কুহুল আপির কাছে। তখন থেকেই গাঁথা হয়েছে মনের মানসপটে।
বলতে বলতে উঠে দাড়াতেই অজ্ঞান হয়ে গেল ফারহা।
কলি চিল্লিয়ে পুরো বাড়ি এক করে ফেলল।
চলবে,,,,,,,,,,