আমার ক্রাশ বর সিজন- 2 !! Part- 37
দিশা আর মৌ দুজনে বসে একে অন্যের চুল ধরে টানাটানি শুরু করে দিছে।
বেপার টা কেউ বুঝতে পারছে না ঠিক ওদের সামনে বসে আরিয়ান মজা নিচ্ছে।
রিদি আর রিমি দুজনে আরিয়ান দুই পাশে বসে বলে,”আচ্ছা এরা এভাবে ঝগড়া করছে কেনো?”
আরিয়ান বলে,”আমাকে বিয়ে করার জন্য।”
এই কথাটা শোনার সাথে সাথে রিদি রিমি দুজনে আরিয়ানের চুল ধরে টানাটানি শুরু করে দেয়।
এদিকে আরিয়ানের এমন অবস্থা দেখে দিশা আর মৌ অবাক হয়ে সেদিকে তাকিয়ে থাকে।
মৌ বলে,”আপনারা মারামারি করছেন কেনো?”
দিশা বলে,”মৌ তুই সত্যি বোকা বুঝিস না ওরা হয়তো আমাদের মতো ঝগড়া করছে।”
পেছন থেকে রাজ এসে ঐ দুইটার মাথায় পেছন থেকে গাট্টা মেরে বলে,”বেয়াদব ওরা তোদের জন্য আরিয়ান কে মারছে আর তোরা কি সব ফালতু চিন্তা ভাবনা করছিস? ”
আয়াত বলে,”কথায় আছে না যার জন্য করলাম চুরি সেই বলে চোর।রিমি আর রিদি হয়েছে সেই দশা।”
রিদি আর রিমি আরিয়ান কে ধরে নিয়ে সোজা ছাদে চলে যায়।
ছাদে যাবার পর রিদি বলে,”অনুর কি হবে? ”
আরিয়ান বলে,”অনুর তো বিয়ে হবে আবার কি হবে? ”
রিমি বলে,”মানে কি? ভালবাসা জানলা দিয়ে পালিয়ে গেছে? ”
আরিয়ান বলে,”ভালবাসা ছিলো কবে যে জানলা দিয়ে পালিয়ে যাবে।যাক আমার জন্য ভাল হয়েছে না আছে ডির্ভোসের ভেজাল না আছে লোক জানাজানির ভয়।”
রিদি বলে,”এই কথা আপনি বলছেন? ”
আরিয়ান বলে,”হ্যা আমি বলছি! কারণ অনু যদি আমাকে ভুলে গিয়ে অন্য কাউকে বিয়ে করতে পারে তাহলে আমি কেনো ওর জন্য কষ্ট পাবো?
অনু কি একাই এই পাঁচ বছর কষ্ট পেয়েছে?
আমি কি একটু কষ্ট পায়নি?
সবাই শুধু মেয়েদের দিকটা দেখে।
কই কেউ তো একবারও আমার কথা ভাবে না।
তাই অনু যখন আমার কথা না ভেবে সামনে এগিয়ে গিয়েছে আমিও সামনে এগিয়ে যেতে চাই।
আশা করি এতে আপনাদের সমস্যা নেই।
এখন আপনারা এ বাড়ির বউ।
বউয়ের দায়িত্ব পালন করলে খুশি হবো।”
আরিয়ান এই কথা গুলো বলে চলে যায়।
রিদি আর রিমি ভাবছে এদের কি সত্যি কোনো ভবিষ্যৎ নেই?
রাজ আরিয়ানের পেছনে পেছনে ওর রুমে গিয়ে প্রশ্ন করে,আচ্ছা সত্যি তুই তোর ভালবাসার মানুষ কে মুক্ত করে দিবি? ”
আরিয়ান বলে,”আমার কথা শুনে কি কোথাও তোর সন্দেহ লাগছে? ”
রাজ বলে,”তুই যে ছেলে সহজে নিজের পছন্দের কোনো জিনিশ কাউকে নিয়ে যেতে দিস না।
সেই তুই কি না নিজের বিয়ে করা বউকে অন্যের হাতে তুলে দিতে দ্বিধা বোধ করবি না।”
আরিয়ান বলে, ”তা না হয় আমি বুঝবো।
এইসব নিয়ে তোকে চিন্তা করতে হবে না।”
রাজ বলে,”তাহলে তোকে নিয়ে চিন্তা কে করবে ঐ ন্যাকামির কুইন দিশা? ”
আরিয়ান বলে, হ্যাঁ অবশ্যই আমার সাথে ওর বিয়ে বলে কথা।
রাজ আর কথা না বাড়িয়ে নিজের ঘরে চলে আসে।
নিজের ঘরে আসতেই রিদি এসে ওকে জড়িয়ে ধরে কান্না করতে থাকে।
রাজ রিদিকে নিয়ে বিছানাতে বসিয়ে নিজের বুকের উপর ওর মাথা রেখে তাতে হাত বুলিয়ে দিতে থাকে।
এদিকে দিন ফুরিয়ে যাচ্ছে ওদের বিয়ের দিন এগিয়ে আসছে।
আরিয়ান এদিকে নিজের বিয়ের দিন ঠিক করেছে অনুর বিয়ের দিন।
আর অনুর বিয়ের জন্য যে কমিউনিটি সেন্টার বুকিং করা হয়েছে।
সেই সেন্টারের অপর পাশে আরিয়ান নিজের বিয়ের জন্য বুকিং দিয়েছে সে খবর অনু জানে না।
অয়নের সাথে যোগাযোগ করে আরিয়ান।
চার জন একসাথে বিয়ের শপিং করতে যাচ্ছে আজ।
শপিং মলে এসে আরিয়ানোর পাশে দিশাকে দেখে তো অনু তেলেবেগুনে জ্বলে ওঠে।আর উঠবে না কেনো।
দিশা একদম জোঁকের মতো গেঁথে আছে আরিয়ানেন সাথে তাই।
আরিয়ান অনুর বেপার টা বুঝতে পেরে দিশার আরো ক্লোজ হয়ে ওর হাত ধরে এদিক সেদিক ঘুরছিলো।
অয়ন অনুর হাত ধরতে গেলে অনু অয়নের হাত ছাড়িয়ে নিয়ে বলে,”বিয়ের আগে স্পর্শ করার চিন্তা স্বপ্নেও করবেন না।”
অয়ন বলে,”দু দিন পর বিয়ে এখন হাত ধরলে সমস্যা কোথায়? ”
অনু বলে,”হবু বর হিসাবে না। ভাই হিসাবে যদি হাত ধরতে চান তাহলে সমস্যা নেই।”
অয়ন বলে,”তোমার মাথা খারাপ! দু দিন পর যাকে বিয়ে করবো তাকে এখন বোন ভাবতে যাবো।”
আরিয়ান অয়নকে উদ্দেশ্য করে বলে,”আপনার মান-সম্মান সব তো শেষ করে দিবে। এখন যদি আপনি ওর হাত ধরতে না পারেন তাহলে কোনোদিন পারবেন না।”
অয়ন আরিয়ানের কথা শুনে অনুর হাত ধরার জন্য এগিয়ে যায় আর অনু পিছিয়ে যায়।
দিশা বলে,”অনু আপু দেখেন তো দু দিন পর আমাদের বিয়ে।তারপর ও আমাদের দেখলে মানুষ বর বউ ভাবতে পারে।আর আপনাদের দু জন কে দেখে তো মানুষ বর বউ দূরের কথা ভাই বোন ভাবতে পারে।”
অনু এবার রেগে তেড়েমেরে গিয়ে বলে,”এই বেয়াদব মেয়ে তুই বিয়ের আগেই ওরে বর বর শুরু করে দিয়েছিস কেনো? আগে বিয়ে কর তারপর বর বর করে তসবি পাঠ করবি।”
এরপর দিশার হাতের উপর থাপ্পড় দিয়ে চিমটি কেটে আরিয়ানের কাছে থেকে সরিয়ে নিয়ে বলে,”বিয়ের আগে যদি আরিয়ানকে স্পর্শ করিশ তাহলে তোর মাথার সব চুল ছিঁড়ে কোলবালিশ বানিয়ে দিবো বেয়াদব মেয়ে বলে সেখান থেকে হনহন করে চলে যায়।”
অয়ন পুরা অবাক হয়ে দাঁড়িয়ে থাকে কি হলো বোঝার জন্য।
আরিয়ান তো সেই রকমের খুশি অনুকে এমন রুপে দেখে।
তাড়াতাড়ি সে বাহিরে এসে অনুকে বলে,”কোথাও কোনো কিছু পোঁড়ার গন্ধ পাচ্ছো তুমি?”
অনু বলে,”হ্যাঁ আপনার বউয়ের কলিজা ভুনার গন্ধ।”
আরিয়ান বলে,”এখনো আমার বউ কিন্তু তুমি সেই হিসাবে তোমার কলিজা পুড়ে ছাই হয়ে যাচ্ছে।”
এদিকে অনু বাড়িতে এসে নিজের রুমের সব কিছু এলোমেলো করে ফেলে।নিজের বিছানো জ্বালে আজ নিজে সে এমন ভাবে জড়িয়ে গেছে তা সে বুঝতে পারছে হাড়ে হাড়ে।
এখন মুক্তির কোনো উপায় নেই।
অামি কি সত্যিই হারিয়ে ফেলবে আমার ক্রাশ বর কে? আমি নিজেকে হারিয়ে ফেলতে রাজি তবে আরিয়ানকে না।
এদিকে দেখতে দেখতে অনুর সর্বনাশের দিন এসে হাজির হয়।
রিদি আর রিমি আসে নাই।কারণ তারা নিজের শ্বশুর বাড়িতে বউয়ের দায়িত্ব পালন করবে তাই।
অনু বউ সেজে পরিবারের সবার সাথে কমিউনিটি সেন্টারের সামনে চলে যায়।
(আমি খুব ব্যস্ত এজন্য আজকে পর্ব টা ছোট হয়েছে)
‘
‘
‘
চলবে….