আমার ক্রাশ বর সিজন- 2 !! Part- 35
এদিকে রাজ আর আয়াতের জন্য অনু বাঁশের বাগানের সু ব্যবস্থা করেছে।
ওদের তিন ভাইয়ের ঘুমানোর জন্য একটা রুম ঠিক করে দিয়েছে।
অনু রিমি রিদি মৌ চার জন এক রুমে এক সাথে ঘুমাবে।
আয়াত আরিয়ানকে জড়িয়ে ধরে বলে,”ভাইরে বিয়ে করে বউকে আদর সোহাগ না করতে পারি সমস্যা নাই।কিন্তু বউ ছাড়া থাকা আর মাছের পানি ছাড়া বেঁচে থাকা বেপার টা যেমন কল্পনার বাহিরে আমাদের অবস্থাও ঠিক তেমন।”
আরিয়ান বলে,”এখানে আমার কি করার অাছে।”
রাজ বলে,”আয়াত ভাই তুমি কার সামনে নিজের কষ্টের কথা বলছো? ও নিজে তো ইবলিশ শয়তানের চাচাতো ভাই।”
আরিয়ান বলে,”রাজ এই সব কেমন ধরণের কথা বলছিস তুই? ”
রাজ বলে,”ভুল কথা তো বলি নাই।
তুই নিজে বিয়ে করে বউ কে পাঁচ বছর ধরে বনবাসে রেখে দিয়েছিস।সে কি করে বুঝবে আমাদের বউ ছাড়া থাকার কষ্টটা।”
আরিয়ান বলে, “আহারে এতো বছর একা থাকতে পারছো আজ দুই দিন বউ পেয়ে এমন ভাব করছিস তোরা তোদের বিয়ে দুই দিন না হাজার বছর হয়েছে।”
আয়াত বলে,”তোর দাঁত আছে না কি? যে তুই দাঁতের মর্ম বুঝবি? ”
আরিয়ান বলে,”আল্লাহর দুনিয়ায় আর তো মানুষ বিয়ে করে না।বিয়ে তোরা একাই করেছিস? ”
রাজ বলে,”থাক ভাই দুধের স্বাদ না হয় বেস্বাদ থাক।”
আয়াত আর রাজ ঘুমিয়ে যায়।
আরিয়ানের চোখে আর ঘুম নেই।
নির্ঘুম রাত কাটছে তার।
সারারাত দু চোখের পাতা সে এক করতে পারে নাই।
এদিকে ভোরে ফজরের আজান কানে আসতেই তাড়াতাড়ি অযু করে মসজিদে নামাজ পড়ার জন্য আরিয়ান বাড়ি থেকে বেড়িয়ে চলে যায়।
আরিয়ান নামাজ পড়ে এসে দেখে অনু অয়নের একদম ক্লোজ হয়ে বসে ওর কাধে মাথা রেখে মোবাইলে কার্টুন দেখছে আর চিপস খাচ্ছে।
অনুর সাত সকালে কার্টুন দেখা বা চিপস খাওয়াতে আরিয়ানের কোনো সমস্যা নেই।
সমস্যা হচ্ছে অয়নের কাধে মাথা রাখা সে সহ্য করতে পারছে না।
তাই আরিয়ান ওদের সামনে বসে বলে,”আচ্ছা অয়ন ভাই বিয়ের আগে কি ছেলে মেয়েদের ক্লোজ হওয়া উচিৎ? ”
অয়ন বলে,”বিয়ের আগে বিবাহের সম্পর্ক করা হারাম।বিয়ে করে না হয় বিবাহিতদের মতো সম্পর্ক করা উচিৎ। ”
আরিয়ান বলে,”অনুর সাথে তো আপনার বিয়ে ঠিক হয়েছে।বিয়েটা তো এখনো হয়নি তাই বলে এতো ক্লোজ হয়ে থাকা কি উচিৎ আপনাদের? ”
অয়ন বলে,”বিয়ে ঠিক হয়েছে তাই বলে তো আমাদের মাঝে খারাপ কোনো সম্পর্ক এখনো তৈরি হয় নি।”
আরিয়ান বলে,”তাহলে কি আপনি খারাপ সম্পর্ক তৈরি হবার অপেক্ষায় আছেন?”
অনু উঠে গিয়ে আরিয়ানের গলা টিপে ধরে বলে,”এই খচ্চর বিয়াই আমাদের বিয়ে দুই দিন ঠিক হয়েছে তার আগে আমরা ভাই বোন।
সেই সম্পর্ক কে তো সম্মান করেন।
না কি সেই সম্মান করাটা শেখা হয়নি আপনার? ”
অারিয়ান বলে,”তাহলে ভাইকে বর বানানোর কি দরকার অনু ম্যাডাম? ”
অনু আরিয়ানের গলা ছেড়ে দিয়ে ওর চুলের মুঠি ধরে মনের শুখে কিছু সময় ঝাঁকিয়ে ছেড়ে দিয়ে বলে,”টেবিলে নাস্তা দিচ্ছি খেয়ে যান।”
আরিয়ান বলে,”জুতা মেরে গরু দান করছো? আমার এমন সহানুভূতির দরকার নেই অনু।”
অয়ন বলে,”এমন কাজ করো কেনো যাতে করে অন্য কেউ অপমান করার সাহস পায়।”
আরিয়ান বলে,”ভাই আপনি মাঝে কই থেকে টপকে পরছেন আমি তো তাই বুঝি না।
যতো ঝামেলার মূল আপনি।
এ কথা বলে চলে যায়।”
একটু পর সবাই টেবিলে বসে খাবার খাচ্ছিল এমন সময় অনু সবাই কে খাবার বেড়ে দিচ্ছে।
অয়ন অনুর হাত ধরে টেনে নিজের পাশে বসিয়ে নিজের হাতে খাবার খাওয়ায় দিতে শুরু করে দেয়।
তা দেখে আরিয়ান তো তেলেবেগুনে জ্বলতে শুরু করে দেয়।
রাজ আরিয়ানের এই অবস্থা দেখে গান শুরু করে দেয়।
“বন্ধু তোমার এতো জ্বলে কেনো গো ”
রাজের কাক ডাকা কন্ঠে এমন গান আরিয়ানের কাছে কাটা ঘায়ে নুনেরছিটের মতো লাগছিল।
আয়াত বলে,”যতো জ্বালা পোড়ার গান আছে সব গান আজ আরিয়ান কে ডেডিকেটেড করা হলো যার যে গান ইচ্ছা হয় আরিয়ানের জন্য গাইতে পারো।”
আরিয়ান বলে,”তোরা আমার ভাই না শত্রু তাই তো বুঝতে পারি না।”
রিমা এসে আরিয়ানের কাধে হাত রেখে বলে,”ভাইয়া মানুষ পরের মাথায় কাঁঠাল ভেঙ্গে খেতে খুব ভালো পারে।এতো মাত্র কাটা ঘায়ে নুনেরছিটে দিচ্ছে। ”
অয়ন বলে,”আচ্ছা আরিয়ান তোমার সমস্যা কি একটু বলবে? ”
রাজ বলে,”আসলে হয়েছি কি আরিয়ান প্রেম করে বিয়ে করেছিল। তা ওদের একটু রাগারাগি হয়েছে।আর ওর বউ বাপের বাড়ি চলে গেছে।তো বউ বাপের বাড়ি ভালোই ছিলো তবে সমস্যা হলো বউয়ের আবার বিয়ে ঠিক হয়েছে।
নিজের বউয়ের দ্বিতীয় বিয়ে বেচারা সহ্য করতে পারছে না।”
আরিয়ান এমন ফালতু কথা শুনে রাগ করে সেখান থেকে চলে যায়।
অয়ন বলে,”আহারে বেচারা আরিয়ান!
ওর বউটা বা কেমন খচ্চর মার্কা নিজের বর থাকতে আবারো বিয়ের পিঁড়িতে বসতে যাচ্ছে। শিউর ঐ মেয়ে নাক কাটা বেহায়া মেয়ে তাই এতো ভালো বর কে ছেড়ে দিচ্ছে।
রাগ অভিমান কোন সম্পর্ক্যে হয় না।
সব সম্পর্কে হয় তাই বলে এমন কাজ করা মোটেই উচিৎ না।”
এমন কথা শুনে অনু বিষম খায়।
অয়ন বলে,”আহারে তোকে আবার এমন অসময় কে গালি দিচ্ছে যে তুই বিষম খেয়েছিস।”
রিমি বলে,”কাছের কেউ হয়তো দিচ্ছে তাই না রে অনু? ”
রিদি বলে,”আরে নাহ অনু হয়তো ঐ বর বউয়ের কাহিনীটা নিজের মনে করেছে তাই গালি গুলো ওর নিজের গায়ে লেগেছে।”
অনু বলে,”আজারে তোমাদের মুখ আছে তাই বলে তোমরা যা ইচ্ছা তাই বলবে আমাকে এটা কেমন ধরণের কথা?”
অয়ন বলে,”আচ্ছা এসব কথা বাদ দাও চলো সবাই বেড়াতে যাবো তাড়াতাড়ি সবাই রেডি হয়ে আসো।”
রিমি বলে,”আমাকে হসপিটালে যেতে হবে ভাইয়া দরকার আছে।”
আয়াত বলে,”আমাকেও হসপিটালে যেতে হবে।”
রাজ বলে,”আমি আর আরিয়ান অফিসে যাবো। আমাদের দরকারি মিটিং আছে তা আজ এটেন্ড না করলে খুব সমস্যা হবে।”
অয়ন বলে,”কাজ তো সারাবছর করো একদিন না করলে কি হবে?”
রাজ বলে,”আচ্ছা বিকালে সবাই মিলে বেড়াতে যাবঁ তাহলে হবে তো? ”
অয়ন বলে,”আচ্ছা তাহলেও হবে সমস্যা নেই।”
সবাই যে যার মতো কাজে বেড়িয়ে পড়ে।
আরিয়ান যাবার আগে অনুকে বলে,”মিসেস অনু আপনি হয়তো নিজের কাজের কথা ভুলে গেছেন। বিয়ের আগে যে অফিস থেকে ছুটি নিতে হয় তা বুঝি আপনার জানা নেই? ”
অনু একটা মুখ ভেঞ্চি দিয়ে বলে,”আমি আমার দায়িত্ব সম্পর্কে জানি আপনাকে এতো বেশি জ্ঞান দিতে হবে না।ফ্রি তে আর কিছু না পাওয়া গেলেও জ্ঞান অনেক পাওয়া যায়।”
আরিয়ান বলে,”তোমার সাথে কথা বলা আর পাথরের সাথে নিজের মাথা বারি দেওয়া এক কথা।”
অনু বলে,”আমি ডেকেছি আসো আমার সাথে খোশ গল্প করতে আসো?কে বলছে নিজের মূল্যবান সময় নষ্ট করতে আমার মতো মেয়ের পেছনে? ”
আরিয়ান নিজের মাথার চুল চেপে ধরে অফিসের উদ্দেশ্যে রওনা দেয়।
এদিকে রিমা এসে অনুকে বলে,”কি রে বিয়ের জন্য অফিস থেকে ছুটি নিতে যাবি? ”
অনু বলে,”বিয়ে আমার ছুটি তো নিতেই হবে।
তার জন্য অফিসে যাওয়ার এতো দরকার কিসের? ”
রিমা বলে, “তোর যা খুশি তুই তাই কর।”
মিষ্টি এসে বলে,”ফুপি তুমি আমাকে ঘুরাঘুরি করতে নিয়ে যাবে? ”
অনু বলে,”আমি আমার মিষ্টি মামুনি কে ঘুরাঘুরি করতে নিয়ে যাবো না তা কখনো হয়?
চলো তোমাকে নিয়ে ঘুড়ে আসি।”।
অনু আর মিষ্টি দু জনে এক সাথে রেডি হয়ে বাহিরে বেড়াতে চলে যায়।
এদিকে আরিয়ান অফিসে এসে বুঝতেছে না তার কি করা উচিৎ! অনু বেশি বাড়াবাড়ি শুরু করেছে।
আমার সামনে ঐ অয়নের সাথে প্রেম করে।
কি খারাপ মেয়ে ভাবা যায়।বরের সামনে পরোকিয়া প্রেম করে
(আমি অনেক ব্যস্ত কাল হয়তো গল্প দিতে পারবো না।তারপর ও চেষ্টা করবো।
সম্ভব হলে পর্ব দিবো নয়তো না।)
‘