অপ্রিয় হলেও সত্যি

অপ্রিয় হলেও সত্যি !! সিজেন- ২ !! Part- 02 ( Last-Part )

তার পর যেটা ঘটলো এটার জন্য মটেও প্রস্তুত ছিলাম না। আসফি আমাকে শক্ত করে ধরে বললো,
-তুই আমার বৌ।
-জ…জী৷
-বৌ হলে বৌ আর বরের মধ্যে কেমন সম্পর্ক হয় তা কি জানিস৷
-….
-কি হলো বল (ধমক দিয়ে)
-জ…জী৷
-তাহলে কি শুরু করা জাক৷
-আ…আমাকে একটু সময়।
-আমার মুখের উপর কথা বলার সাহস কে দিছে তোকে৷
-না না আমি শুধু একটু।
আর কিছু বলতে পারি নি তিনি ঠাস করে আমার গালে চড় বসিয়ে দিলেন৷
আমি অসহায় দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছি৷

তার কোন কথা নাই আমার সারি টেনে খুলে ফেললেন৷ আমাকে পুরো অলগা করে কেমন করে কামড়াচ্ছে আর আচর দিচ্ছে৷ আমি কিছু যে বলবো তারও উপায় নাই আমি যে নতুন বৌ৷ সে কিছুই করছেন না সুধুই আচর আর কামড় একটা সময় রক্ত বার হলো সব জায়গা থেকে তখনি তিনি সরে আসলেন৷
আমি ওভাবেই আছি নরবার শক্তি নাই৷ কাদাছি শুধু৷ এটাই হয়তো এখন থেকে আমার সঙ্গী।
কিছু সময় পর। আসফি আবার আমার উপর উঠে বসে এবার কামড় আর আচর দেয় না৷ নিজের স্বামীর অধিকার ফলান আমার উপর৷ কিযে কষ্ট হচ্ছে আমার জীবনে এতো কষ্ট কখনো পায় নি৷ একটা সময় সেন্স হারায়৷
মাঝ রাতে আসফি মেঘকে ছেড়ে সুয়ে পরে৷
এভাবে কাটতে থাকে দিন৷ মেঘকে একটা দিনও আসফি শান্তি দেয় নি৷ কিন্তু সব কিছুর মাঝে আসফিকে মেঘ ঠিক মতো ঔষধ খাইয়ে দেয়৷ খেয়াল রাখে তার সব অত্যাচার মুখ বুঁজে সইতে থাকে৷ কোন প্রশ্ন করে নি৷ কোন কোন রাতে আসফি মিটিং এ ঝামেলা করে এসে মেঘকে আগে বেত দিয়ে মারতো৷ মারতে মারতে রাগ কমলে তাকে নিয়ে বিছনায় যেয়ে নিজের স্বামীর অধিকার খাটাতো৷
মেঘের শাশুড়ী মা এটা খুব ভালো করে বুঝতেন কিসের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে মেঘ৷
আসফির রাগ উঠলে সে নিজের মধ্যে থাকে না। মানুষ থেকে পশুতে পরিনত হয়। আগে এই সব রাগ সে কারাতো আসবার পত্রের উপর ভাংচুর করে এখন কাটায় মেঘের উপর অত্যাচার করে৷
৩ মাস কেটে গেল এভাবে,
এই তিন মাসের একটা এমন দিন নাই যে দিন মেঘ কাদে নি৷ ।
আজ একটা বড়ো ডিল হাত ছাড়া হয়েছে আসফির। রোঝ দুটো রক্ত বর্ণ ধরন করেছে৷ বাসায় এসে রুমে গিয়ে দেখে মেঘ বিছনার এক কোনে সুয়ে আছে৷ আসলে তার জ্বর এসেছে খুব প্রায় ১০৫° এর কাছাকাছি৷ শাশুড়ী মা তাকে ঔষধ দিয়ে ঘুম পারিয়ে দিয়ে গেছে৷
আসফির কেব জানি না আজ মেঘের ঘুমন্ত মুখটা দেখে ইচ্ছে হলো ছুয়ে দিতে। সমস্ত রাগ সেই মায়াবি মুখটা দেখে ভুলে গেল৷ এই রকম ২ দিন আগে হলে হয়তো এখনি মেঘকে টেনে বিছনা থেকে ফেলে মারতে লাগতো।
কিন্তু আজ এই মায়াবি মুখটা দেখে ইচ্ছে হচ্ছে না তাকে কিছু বলতে৷ আসফি ওয়াসরুমে চলে যায়৷ গোসল করে বাইরে এসে পানি খেয়ে আরো কিছুটা শান্ত হয়ে নেয়। তার পর বিছনায় মেঘের পাশে শুয়ে পরে৷
ঘুমিয়ে যায় কিছুক্ষণ এর মধ্যে ।

সাকালে,
মেঘ আসফির বুকের মধ্যে কুচুমুচু হয়ে ঘুমিয়ে আছে।
আজানের ধ্বনিতে ঘুম ভাঙলো আসফির আজ একটু আগেই ভাঙলো ঘুমটা উঠে সে মেঘকে দেখতে পায়৷ ইচ্ছে হচ্ছে তাকে আপন করে নিতে৷
রাগটা কই যেন হারিয়ে যাচ্ছে দিন দিন। আসফি মেঘের ঠোঁটে ডিপলি কিস করতে মেঘের ঘুম ভেঙে যায়। এই রকম সময়ে এই কাজটার জন্য প্রস্তুত ছিলো না। কিন্তু আসফিকে সরানোর ক্ষমতা তার নাই৷ আসফি আস্তে করে মেঘের বুকে এসে কিস করতে থাকে। এভাবে তলিয়ে যায় দুজন। কিন্তু আজ মেঘ কোন খারাপ স্পর্শ অনুভব করে নি। সব গুলো যেন ভালেবাসার স্পর্শ ছিলো। সকাল ৮ টা মেঘ গোসল করে নিচে নামে। নাসতা বানিয়ে ঔষধ খাওয়াতে হবে আসফিকে। এসে দেখে শাশুড়ী মা তার আগে থেকেই সবটা রান্না করে রাখছে।
-আপনি এতো কষ্ট কেন করলেন মা৷
-তুমি অসুস্থ সোনা এই অবস্থায় তোমাকে আমি কি করে রান্না করতে দি বলো।
-কিন্তু ।
-আর কোন কিন্তু না। এই নেও আসফিকে খাইয়ে দিয়ে অফিস পাঠাও।
মেঘ খাবার নিয়ে আসফিকে খাইয়ে ঔষধ খাইয়ে দেয়। ।
আরো ৩ মাস পর৷
মেঘের পাশে বসে আছে আসফি হাতটা শক্ত করে ধরে,
আসফি আস্তে আস্তে নিজের মধ্যে ফিরে আসছে এখন আর আগের মতো রাগে না৷ রুডলি বিহেব করে না মেঘের সাথে। কিন্তু এখন মেঘ কেমন একটু অসুস্থ থাকে৷ মাথা ঝিম ঝিম বমি বমি ভাব। আজ তো মাথা ঘুরে পরেই গেছে। তাই ডক্টর ডাকা হইছে৷ ডক্টর দেখছে আর আসফি মেঘকে ধরে বসে আসে৷ ।
কিছু সময় পর,

congratulations মি.চৌধুরী আপনি বাবা হবেন।
এ কথা শুনে আসফির আম্মু আকাশের চাঁদ পেয়ে গেছেন। ডক্টর কে সঙ্গে সঙ্গে অনেক গুলো টাকা দিয়ে দিলেন।
সারা পারায় মিষ্টি খাওয়ালেন।
আসফি ও অনেক খুশি এখন বেশি বেশি খেয়াল রাখে মেঘের আসফির আচরনে এটা বুঝতে পারা যায় সে এখন পুরো পুরি সুস্থ৷ আসফির ডক্টর এর সাথে মেঘ আর আসফির আব্বু কথা বললেন৷ আর জানতে পারলেন আসফি এখন পুরোপুরি সুস্থ৷
এখন খুব ভালো কাটছে ওদের দিন৷
কিন্তু মেঘ এ অবস্থায় খুব একটা ভালে নাই। না খেতে পেরে এক দম সুক্ন হয়ে গেছে মেঘের চেহারায় উজ্জ্বলতা টা আর নাই। কেমন ফ্যাকাশে হয়ে যাচ্ছে দিন দিন৷ হাড় গুলো যাগে গেছে। আসলে প্রথামে এতো শারীরিক টর্চার এ চলেছে তার উপর এখন কেমন যেন ভেতর থেকে দূর্বল। কিছু নিতে পারাছে না।
আজ মেঘের ডেলিভারি ডেট পেইন এখনে উঠে নাই,
-আসফি একটু এদিকে আসবেন।
-হুম বলো৷। –
-আমি মারা গেলে আমার ছেলে হলে নাম রাখবেন, আদনান, মেয়ে হলে রাখবেন, আরু।
আসফি আমার কথা শুনে আমাকে ধরে কেঁদে দিলেন।
-কোথায় যাবা তুমি এমন কেন বলছো। এভাবে বলবা না। ভালেবাসি তোমাকে। ।
-আপনি আমাকে এই কই মাস যে শুখ দিয়েছেন এতেই আমি সন্তুষ্ট৷
আসফি আমার ব্যাথা আর বলতে পারছে না মেয়েটা৷ চোখ গুলো তার উল্টে আসছে।
আসফি জলদি করে মেঘকে হসপিটালে নিয়ে যায়।
সবাই অপারেশন থিয়েটারের সামনে পায় চারি করছে, এর মধ্যে ডক্টর বের হয়ে আসে মলিন মুখ নিয়ে৷
-মি.চৌধুরী আপনার স্ত্রী কে বাঁচাতে পারি নাই৷ ওনার রক্ত শুন্যতা ছিলো। আপনার ২ টা জমজ সন্তান হইছে। একটা ছেলে একটা মেয়ে। ওরা সুস্থ আছে৷
আসফি এ কথা শুনে নিচে বসে পরে৷ কান্না করতে লাগে।
আসফির মা এসে আসফিকে খুব বুঝায়৷ তুই এমন করলে বাচ্চা দুটোর কি হবে৷ এসব নানা কথা বুঝায়৷ তাকে সাভাবিক করার চেষ্টা করে। কিন্তু সে যে ভুল করেছে বাচ্চা মেয়েটাকে এভাবে দিনের পর দিন বিনা দোষে কষ্ট দিয়ে তা বুঝতে বাকি নাই আসফির৷
৪ বছর পর,
আজ মেঘের মৃত্যু দিন আবার আদনান আরুর জন্মদিন। আসফি আূনান আরুকে নিয়ে মেঘের কবরের কাছে যায়। দেখ তেমাদের মা এখানে আছে৷
-আচ্ছা বাবা মা এখানে কেন আমাদের সাথে বাসায় নিলে কি হয়৷ । (আরু৷)
-হ্যা বাবা মাকে শুধু ছবিতে দেখেছি সমনে দেখলে কি হয়৷ (আদনানা)
-বাবা মা এখন আছে না ফেরার দেশে৷ তবে সে জেখানে আছে আজ তোমাদের দেখে অবশ্যই অনেক খুশি হচ্ছে।
আদনান আরুর মনটা ছোট হয়ে যায়।
মেঘ আর নাই এটা সত্যি৷ কিনুমেয়েটা মরে গিয়েও আসফিকে দিয়ে গেছে নতুন একটা সুন্দর জীবন। আর বেঁচে থাকার দুইটা ফুটফুটে কারন। আসফি আজও কাদে মেঘের জন্য৷ হয়তো তার মরারা জন্য আসফি দায়ি৷ কিন্তু এখন সে কাদে রাতে সকাল হলে নিহেকে তৈরি করে এক জন ভালে বাবা হিসাবে, ছেলে হিসাবে আর এক হন বিজনেসম্যান হিসাবে৷
ভালোবাসা এমনি হয়৷ তার না উপস্থিতিও তাকে ভালেবাসতে বাদ্ধ করে৷
মেঘ আর নেই কিন্তু মেঘের ভালে কাজের সাক্ষী হয়ে আছে আজ সয়ং আসফি৷
মেঘের জীনের #অপ্রিয়-হলেও-সত্যি টা বোধ হয় এভাবেই শেষ হলো।
৷৷৷৷৷৷৷৷ ৷ সমাপ্ত ৷৷৷৷৷৷ ৷৷