অন্ধপ্রেম

অন্ধপ্রেম !! Part- 47

রোদকে আজ আইজি সাহেব থ্রেড দিয়েছে….তিনি জানিয়েছে রাজ নামের এক ব্যাবস্যায়িক কে অবৈধ আইন ব্যাবহার করে অযথা হেনস্তা করা হয়েছে এই অভিযোগ সয়ং ভিক্টিম করছেন তার কাছে…
পুরো ডিপার্ট ম্যান্টের সামনে তাকে লাস্ট চান্স দেওয়া হয়েছে…
রোদের সম্মানের পুরো ফালুদা বানিয়ে ফেলেছে রাজ…
রোদ এই জব করে শখ বসত এবং নিজের ভরণ পোষনের জন্য…
তার বাবার থেকে এক কানা কুড়িও রোদ নিজের জন্য ব্যায় করেনা….
রোদ তার বাবাকে এখনো ক্ষমা করেনি..
.
.
.
শীতল ডাইনিংয়ে চুপচাপ বসে আছে…
রাজ তার ঠিক পাশে বসেছে…
_তুমি ভাবছো এই বাংলোতে আমারা দুজন তাহলে তাহলে এই খাবার গুলো কিভাবে এখানে এলো….
আসলে আমি এখানে শুধু তোমার সাথে একান্তে সময় কাটাতে চাই তাই আমাদের যেনো বিরক্ত না করে কেউ এজন্য কোনো সার্ভেন্ট সার্ভিসে রাখিনি…
আমার একজন পরিচিত লোক আছে যে প্রতিদিন তিন বার করে খাবার সার্ভিস দিবে…
.
.
.
শীতল কিছু বললো না …
সে চেয়ার থেকে উঠে দাড়ালো…
শীতল এক পা বাড়াতেই রাজ শীতলের হাত ধরে নিজের কোলে বসিয়ে নিলো….
_খেয়ে দেয়ে তারপর এখান থেকে যেতে পারবে …
এর আগে না…
_আমাকে ছাড়ুন…আমি আপনার হাত থেকে খাবো না…
আমার ঘৃনা লাগে আপনাকে…
কেনো বুঝতে পাচ্ছেন না আমি আপনাকে সহ্য করতে পারিনা…
.
.
.
_শীতল আমারো এক কথা…তুমি কেনো বুঝতে পাচ্ছোনা আমি তোমাকে ভালবাসি…আমি তোমার সাথে থাকতে চাই সারা জিবন…
_আমি সারা জিবন দূরে থাক এক মিনিটও আপনার সাথে থাকতর চাইনা …
ছাড়ুন আমাকে আর যেতে দিন আমার নিজের বাড়িতে…
.
.
.
রাজ শীতলের গলায় নাক ঘষে বললো…
_এখান থেকে যাওয়ার কথা ভুলে যাও…
এখন চুপচাপ খেয়ে নাও প্লিজজজ.
.
.
.
_আমি খাবোনা কিছুই…
আমাকে এখন বাসায় দিয়ে আসুন…
ভাইয়া আমাকে খুজে বের করলে আপনার কি অবস্থা করবে সেটা ভেবেছেন ???
রাজের চোখ দিয়ে আগুন বের হচ্ছে রোদের নাম শুনে…
রাজ শীতলকে শক্ত করে ধরে বললো…
_তুমি ওদের কাছে ছিলে বলে আর তোমার কথা ভেবে ওদের কিছু বলিনি…
তা না হলে দুনিয়ায় এমন কারো বুকের পাঠা নেই যে রাজের গায়ে হাত তোলে…
কলিজা টা ছিড়ে ফেলতাম রোদের বাট তোমার মুখের দিকে তাকিয়ে কিছু বলিনি আমি…
.
.
.
আমি এখন বিন্দু মাত্র সহ্য করবোনা কোনো কিছু…
_আপনি কি সহ্য করবেন আর না করবেন তাতে আমার কিছু যায় আসেনা…
আমাকে ছাড়ুন…
শীতল অনেক চেষ্টা করেও রাজের কাছ থেকে নিজেকে ছাড়াতে পারলোনা…
শীতল এবার পায়ের হিল দিয়ে খুব শক্ত করে জোরে চাপ দিলো….
শীতলের মনে হলো সে চাপ টা খুব জোরে দিয়েছে…
রাজ ব্যথা পেয়ে ছেড়ে দেবে…

রাজ এমন একটা ভাব করলো যে কিছুই হয়নি…
উল্টো সে শীতলকে আরো শক্ত করে জরিয়ে ধরলো…
শীতল কি করবে ভেবে পাচ্ছেনা….
_আচ্ছা তুমি তো আমাকে ভালবাসো তাহলে এমন কেনো করছো…
_ভালবাসি মানে ???
কখন বললাম আমি আপনাকে ভালবাসি ???
_তার মানে আমাকে ভালবাসোনা আর…
_জি হ্যাঁ
_আমার চোখের দিকে তাকিয়ে বলো এই কথা…
শীতল চোখের দিকে তাকালো না…
_আমি আপনাকে ঘৃনা করি….
এবার তো ছাড়ুন আমাকে…
রাজ শীতলকে ছেড়ে দিলো…
শীতল উঠে দাড়াতেই রাজ বললো…
_তাহলে গত এক বছর কি ছিলো ???
আমাকে এতো কেয়ারিং কেনো করেছিলে…???
আমি যেভাবে তোমাকে চাইতাম সেভাবে কেনো নিজেকে প্রেজেন্ট করতে ???
শীতল কিছু ক্ষন চুপ থেকে বললো …
_তখন আমার পাশে কেউ ছিলো না …
তাই ভাগ্যকে মেনে নিয়ে ছিলাম…
আপনার কথায় উঠতাম আর বসতাম…
সারক্ষন আপনার মন জয় করার চেষ্টা করতাম…
এখন আমার পাশে সবাই আছে ???
তাই দূর্ভাগ্য মেনে নেবো না…
আমি কোনো অবলা অসহায় মেয়ে নয়…
রাজ এমন কথা আশা করেনি শীতলের থেকে…
রাজের মনে হলো …শীতলের কথায় যুক্তি আছে…
রাজের মনে খুব কষ্ট লাগলো….
এরকম সত্যিটা এতোদিন তার অজানা ছিলো…
শীতল এতোদিন তাহলে ভাগ্যকে মেনে নিয়ে স্ত্রির দায়িত্ব পালন করেছে ….
.
.
.
রাজ বললো…
_আমাকে সত্যি ভালবাসোনি কোনোদিন ??
_না … আপনার মতো মানুষকে কখনো ভালবাসা যায়না…
আপনি জঘন্য মানুষ আর জঘন্যই থাকবেন…
আপনার মতো মানুষকে করুনা করে ছিলাম এতোদিন…ভেবেছিলাম আপনাকে মানুষ বানাবো কিন্তু আমি ব্যর্থ…
আপনার আসল রুপ ভাইয়া আমাকে দেখিয়েছে…
সেদিন থেকে আপনার জন্য আমার মিনিমাম মানবিকতাও মরে গেছে…
.
.
.
শীতল সহজ ভাবে এই কথা গুলো বলে উপরে চলে গেলো….
রাজ চেয়ার থেকে দাড়িয়ে পড়লো…
বুকে হাত দিয়ে মনে মনে ভাবলো সে কি কোনো খেলনা নাকি…????
আগেই তো সে ভালো ছিলো…
শীতল তাকে মায়া মমতা ভালবাসা কি সেটা বুঝিয়ে দিয়ে এখন নিজেই সরে গেলো…
শীতল এটা করতে পারেনা…রাজের মনে জায়গা করে নিয়ে এখন জায়গা থেকে সরে যাবে সেটা কখনো হতে পারেনা…
রাজ শীতলের সাথে জঘন্য কাজ করেছে কিন্তু শীতল তো আরো বেশি জঘন্য কাজ করছে রাজের সাথে…
.
.
.
রাজ হাতে থাকা প্ল্যাটটা ফ্লোরে ছূরে মারলো…
.
.
.
রাগে তার গা জ্বলছে…
রাজ নিজের মাথা ঠান্ডা করে চোখ বন্ধ করে রিলেক্স হওয়ার চেষ্টা করছে…..
রাজ কল্পনাও করতে পাচ্ছেনা শীতলকে ছাড়া কিছু..
শীতলের ভালবাসা সে কি করে ভুলবে…ভোলা সম্ভব না…
রাজের প্রথিবীতে শুধু একমাত্র শীতল আর শীতল…
রাজ হাল ছাড়লো না…সে একবার যেটা ভাবে সেটা করেই ছাড়ে….
শীতল রাজের লাইফ রাজের ভালবাসা নিয়ে এমন করতে পারেনা…
.
.
.
রাজ আর কিছু ভাবতে পাচ্ছেনা…
সে দুই হাত নিজের কানে দিয়ে হাটু ঘেরে ফ্লোরে বসে পড়লো…
চিৎকার দিয়ে কান্না করতে ইচ্ছে খুব রাজের…

চিৎকার দিয়ে শুধু বলতে ইচ্ছে করছে ….শীতল আমাকে একটু ভালবাসো প্লিজজজ…
আমার তুমি ছাড়া আপন বলতে কেউ নেই যে…
কেনো আমার মনে ভালবাসা জাগিয়ে এভাবে দূরে সরে যাচ্ছো….
আমাকে ক্ষমা করো আর একটু ভরসা করে বিশ্বাস করো….
.
.
.
কাজ হিমালয়ের কথা অনুযায়ি ময়মনসিংহের সার্কিট হাউসের উদ্দেশ্যে রওনা হলো…
হলুদ শাড়ির সাথ কালো চুরি …কালো টিপ আর চোখে মোটা করে কাজল দিয়েছে…
কাজল এমনিতেও সেরা সুন্দরি তার মধ্যে এমন সাজ সেজেছে….
কাজল ভাবছে চিঠির হিমালয় এই সাজে কাজলকে দেখলে স্নেস হাড়িয়ে ফেলবে…
কাজল নিজের মাথায় নিজেই টোকা দিয়ে ভাবলো…ধ্যাত কি সব ভাবছে ও…মাথাটা পুরোপুরি গেছে ওর…
আচ্ছা ওর কি অচেনা লোকের কথায় এখানে আসা ঠিক হয়েছে…
সামান্য চিঠির পরিচয়ে এখানে আসা ঠিক হয়েছে কি …
এখন ফিরে গেলে কেমন হয়….
না ফিরা সম্ভব না…
কথা দিয়ে কথা না রাখার মেয়ে কাজল না…
.
.
.
যা হবে তা দেখা যাবে…
এখন আপাতত ওয়েট করা যাক…
.
.
.
শীতল বেডে আধশোয়া অবস্থায় উপর হয়ে শুয়ে আছদ…
মনে হয় কাদছেঁ…
রাজ খাবারের প্ল্যাট হাতে নিয়ে শীতলের গায়ে হাত দিয়ে বললো…
_অনেক বেলা হয়েছে…কিছু খেয়ে নাও…তোমার শরীর দূর্বল খুব…
_আমি খাবো না…আপনার হাত থেকে তো কখনোই না…
_প্লিজজজ রাগ করোনা…খেয়ে নাও…
তোমার কষ্ট আমার সহ্য হচ্ছেনা…
_সত্যি সহ্য হচ্ছেনা ???
তাহলে আমাকে আমার বাড়ি দিয়ে আসুন…
আমার কষ্ট চলে যাবে…
_এটা সম্ভব না…
তোমাকে আমার সাথে থাকতেই হবে…
_তাহলে আমি খাবোনা…
রাজ শীতলের কথা না শোনে জোর করে কিছুটা সুপ শীতলের মুখে পুরে দিলো…
সাথে সাথে শীতল পুরো খাবারের প্ল্যাট রাজের উপর ছূরে মারলো…

রাজ এমনটা আশা করেনি…
শীতলের এমন ব্যাবহারে রাজ প্রচন্ড রেগে গেলো…
সে আচমকা শীতলকে বেডের উপর চেপে ধরে শীতলের ঠোটে ঠোট বসিয়র দিলো…
এমন জোরে ধরেছে যে শীতলের নিঃশ্বাস বন্ধ হয়ে যাচ্ছে…
শীতল হাত দিয়ে রাজকে ছাড়ানোর চেষ্টা করলো…
কিছুতেই কিছু হলোনা…
রাজ শীতলকে 15 মিনিট পর ছাড়লো…
রাজ বললো..
_এটা এখন আমার সিমানা…যা করবে ভেবে চিন্তে করবে….তোমার প্রতিটি ভিহেবের দিগুন ফিরিয়ে দেওয়া হবে…
.
.
.
শীতলের প্রচন্ড রাগ হলো
সে চিৎকার দিয়ে বললো…
_You bloody buster …How dare you touch me …
আমাকে টাট করে কিস করার অধিকার কে দিয়েছে আপনাকে ???
এই অধিকার আপনার নেই….
রাজের এবার মাথায় আগুন ধরে গেলো …
সে কি করবে বুঝতে পাচ্ছেনা….
রাজ রেগে ফায়ার হয়ে শীতলকে কোলে তোলে বেডের মাঝখানে ছূরে ফেলে দিলো…
রাজ কি করছে নিজেও জানেনা….
সে নিজের শার্টের বোতাম একটা একটা করে খোলছে…
আর শীতলের এটা দেখে প্রান যায় যায় অবস্থা…
সে ভাবছে এতোটা না করলেও হতো…
রাজের রাগ সম্পর্কে সে ভালো ভাবেই জানে…
রাজ নিজের শার্ট খোলে ফ্লোরে ছূরে মারলো…
তারপর সোজা শীতলের উপর উঠে পড়লো…
দুই হাত দিয়ে শীতলের দুই হাত চেপে ধরলো রাজ…
রাজ শীতলের কানে কানে বললো…
_অনেক হয়েছে ডার্লিং আর না…
আমাকে অনেক কষ্ট দিয়েছো…কিন্তু আর না…
নিজের জিনিস কিভাবে নিজের করতে হয় সেটা আমার জানা আছে…
ভালো হতে চাইলাম হতে দিলেনা…
এখন থেকে রোজ আমার জঘন্য রুপ দেখবে তুমি…
প্রতিদিন আমার জঘন্য রুপ দেখবে তুমি…
এগুলোর জন্য দায়ি তুমি…
আমাকে অপমান করার শোধ আমি নেবো…তোমার পুরো পরিবারকে রাস্তায় নামাবো আর রোদকে তো আমি আমার পায়ের নিচে ফেলবো…
রাজের চোখ দিয়ে আগুন ঝরছে…

রাজ শীতলের শাড়ির আচল টা টেনে ফেলে দিলো….
.
.
.
এবার তোমাকে দেখাবো ব্লাডি বাস্টার কাকে বলে….আর আমার টাচ কিভাবে তোমার ভালো না লাগে…
শীতলের প্রায় হার্ট অ্যাটাক হওয়ার অবস্থা হলো ভয়ে…
.
.
.
চলবে…..