অন্ধপ্রেম

অন্ধপ্রেম !! Part- 46

রাতের নীল আকাশে নীল চাদনিঁ তে প্রিয় মানুষের সাথে থাকার ফিলিংটা জাস্ট অমায়িক হয়…
রাজ ড্রাইভ করছে …
আর মিট মিট করে হাসছে শীতলের দিকে তাকিয়ে…
এক হাত দিয়ে রাজ স্টেয়ারিং ধরেছে অন্য হাত দিয়ে শীতলকে শক্ত করে নিজের বুকের মাঝে জরিয়ে রেখেছে…
.
.
.
কাজল এখন ময়মনসিংহে আছে…
তার ভার্সিটি অফ তাই সে নিজেদের পুরাতন বাড়িতে এসেছে বেড়াতে….
রাজের বাবার সাথে কাজলের বাবা পাটনার শীপের একটা বিজনেস শুরু করেছিলো…
এই বিষয়ের একটা কাজে কাজলের বাবা লন্ডনে আছেন…
কাজল ঠিক করেছে চিঠির লোক হিমালয়ের সাথে দেখা করবে ময়মনসিংহে বিকোজ হিমালয়ের বাড়ি ময়মনসিংহে…
.
.
.
হিমালয় এখন ময়মনসিংহে আছেন…
.
.
.
শীতলের এখনো জ্ঞান ফিরেনি…
রাজ শীতলকে তার অন্য একটা বাংলো বাড়িতে নিয়ে গেলো…
ময়মনসিংহে রাজের বেশ কয়েকটা বাড়ি আছে…
রাজ আজকে থেকে এখানেই শীতলকে নিয়ে থাকবে বলে ঠিক করেছে…
শীতলকে দূরে রাখলে ঝামেলা বাড়বে বৈকি কমবেনা…

শীতল রাজের কাজে কষ্ট পেলেও রাজের করার কিছু নেই…
রাজ শীতলকে কোলে করে নিয়ে গিয়ে সোজা বাড়িতে ঢুকে গেলো…
রাজ ছাড়া এই বাড়িতে আর কেউ নেই…
রাজ ঠিক করেছে এখানে শীতলের সাথে একা বেশ কয়েকদিন হানিমুনের মতো কাটাবে…
সে শীতল রাজি থাকুক আর না থাকুক…
প্রথিবীতে বউ হলো নিজের প্রোপার্টি…
আর সবচেয়ে আপন হলো বউ বাবা মা ভাই বোন ছেলে মেয়েদের পরে…
রাজের তো কেউ নেই তাই এখন থেকে শীতল হলো সব…
.
.
.
এখানে থেকে রোদকেও উচিৎ শিক্ষা দেবে রাজ সেই সাথে ঐ কুকরের বাচ্চা রাজনকেও..
রাজ শীতলকে নিয়ে বেড রুমে ঢুকে পড়লো…
শীতলকে বেডে শুইয়ে দিয়ে ফোন থেকে রোদকে একটা ম্যাসেজ করলো রাজ…
…শালা বাবু আপনার বোনকে নিয়ে হানিমুনে গেলাম…আপনার জন্য একটা মামা আর আপনার বাবা মার জন্য একটা নানা ভাই নিয়েই ফিরবো…By the way আমার সাথে অন্যায় করার শাস্তির জন্য ওয়েট করুন…
গুনে গুনে সব শুধে আসলে ফেরত দেবো…
.
.
.
রাজ ম্যাসেজ দিয়েই ফোন অফ করে দিলো…
রাজ নিজের কোর্ট শার্ট খুলে চেন্জ করে নিলো..
হালকা নরমাল পোষাক পড়েছে রাজ…

রাজ শীতলের কাছে এসেই কিছু ক্ষন তাকিয়ে থাকলো…
আজ কতদিন পর রাজ শীতলকে মন ভরে দেখবে…
নিজের বিয়ে করা বউকে এতো দিন শান্তিতে দেখতেও পারেনি রাজ…
.
.
.
রাজের ভাবতেও রাগ লাগছে … রাজ নিজেকে শান্ত করে শীতলের খুব কাছে গেলো…
জানালার ধার থেকে ফুরফুরে বাতাস আসছে…
সে বাতাসে শীতলের শাড়ি উড়ছে…
শীতলের নাভি দেখা যাচ্ছে…
শীতলের পায়ের উপর পর্যন্ত শাড়ি উড়ছে…
রাজের নিজেকে কনট্রোল করতে খুব কষ্ট লাগছে…
রাজ ভাবলো নিজের বিয়ে করা বউ শীতল…শীতলের অনুমতির কি আছে এতে …শীতল অনুমতি ছাড়া ঘুমের মধ্যে কি যে করতো রাজের সাথে সেটা রাজ জানে…
.
.
.
চাদের আলোতে শীতলের মুখটা অসম্ভব সুন্দর লাগছে….
রাজ শীতলের খুব কাছে থেকে তার গায়ের পারফিউমের সুভাস নিলো…
রাজ শীতলের নাভিতে কত গুলো চুমো দিয়ে বললো…এখানেই আছে ছোট শীতল অথবা রাজ…
.
.
.
রাজ শীতলের পায়েও অনেক গুলো চুমো দিলো…
তারপর মুখেও দিলো…
রাজ শীতলকে হঠাৎ জরিয়ে ধরলো খুব শক্ত করে…
রাজের ভয় করছে খুব শীতলকে হাড়ানোর…
রাজ খুব শক্ত করে শীতলকে জরিয়ে ধরলো…
শীতল যখন জেগে যাবে তখন সহজে রাজকে কাছে আসতে দেবেনা …
রাজ তাই এখনই সুযোগে সৎ ব্যাবহার করছে…
রাজের চোখ থেকে পানি পড়ছে…
রাজ শীতলের গলায় মুখ গুজে বললো… প্রথিবীতে একমাত্র নিজের আপন বলতে শীতল ছাড়া আর কেউ নেই তার… শীতল সেটা জেনেও এভাবে পর করে দিচ্ছে…
তবে রাজ শীতলের গা ছয়ে প্রতিজ্ঞা করলো…এতো সহজে সে হার মানবেনা… শীতলকে সত্যিটা বুঝিয়ে শুনিয়ে ভুল ভাঙাবে ওর…

ভোরের আলো ফুটছে …
সৃর্যের আলো শীতলের মুখে পড়ছে…
শীতল ঘুম জরানো চোখ মেলে নিজেকে আবিষ্কার করলো…
এটা যে নিজের বাড়ি না সেটা শীতল বুঝতে পারলো…
শীতল বেড থেকে আধশোয়া অবস্থায় উঠে বসলো…
মাথা টা খুব ব্যাথা করছে…হাত পা খুব ব্যাথা করছে…শাড়িটাও ঠিক নেই…
শীতল ভালো করে তাকাতেই সামনে একটা সোফায় রাজকে দেখতে পেলো…
.
.
.
রাজ টি টেবিলে পায়ের উপর পা দিয়ে কোলে একটা ল্যাপটপ নিয়ে কাজ করছে…
পরনে নরমাল ট্রাউজার আর টিশার্ট রাজের…
রাজ হঠাৎ ল্যাপটপের দিকে তাকিয়েই বললো…
_Good morning Darling.
সকালের আলোতে তোমাকে খুব সুন্দর লাগছে…
শীতলের প্রচন্ড রাগ শুরু হলো…
বেড থেকে উঠেই দিলো কয়েক টা চিৎকার…
তারপর রাজের কাছে গেলো…
শীতলের চিৎকারে রাজ একটুও বিরক্ত বলে মনে হলো না… সে আপন মনে কাজ করছে …
শীতল কোমরে হাত গুজে বললো…
_এতো বড় স্পর্ধা আপনার হলো কি করে আমাকে এখানে নিয়ে আসার ???
আমি এখনি বাড়ি যাবো আমার…
রাজ ল্যাপটপের দিকে তাকিয়েই বললো…
_তুমি তো তোমার নিজের বাড়ির মধ্যে একটা বাড়ির মধ্যেই আছো …
_মোটেও এটা আমার বাড়ি না…
আপনি আমাকে এখানে কেনো নিয়ে এসেছেন ???
_খুব সিম্পল হানিমুন করতে…যদিও কক্সবাজারে ছোটখাট একটা হানিমুন সেরে ছিলাম…
_আপনার যাকে খুশি তাকে নিয়ে করুন হানিমুন…
আমার শখ নেই…
আমি যাচ্ছি…
শীতল সরাসরি রুম থেকে বের হয়ে গেলো…
বের হয়ে সামনে কয়েকটা সিড়ি দেখতে পেলো শীতল…
এখন সমস্যা হলো সে কোনটা দিয়ে নিচে যাবে…
শীতল বুঝতে পারলো এই বাড়িটা একটা প্রকান্ড রকমের বাড়ি…
.
.
.
বাড়িটা তে অনেক গুলো দরজা… একটাতে ঢুকলে আরেকটা দিয়ে বের হতে হয়…
শীতল কিছুতেই কিছু করে মেইন ডোর পর্যন্ত যেতে পারলোনা…
বাড়িটাতে প্রচুর আসবাব পত্র…
নানা ধরনের বিদেশি শপিজ…
শীতল একটা একটা করে দরজায় লক করছে …
একটাও‌ খুলছেনা…

শীতল এক পর্যায়ে একটা ফুল দানি ফ্লোরে ছুরে মেরে জোরে চিৎকার দিলো…
রাজ শীতলকে পেছন থেকে জরিয়ে ধরে শয়তানি হাসি দিয়ে বললো…
পুরো বাড়ি একটা গোলক ধাধা…
এই বাড়ির ডিজাইন বই না দেখলে কিছুই বুঝতে পারবেনা…
.
.
.
আর এই বাড়িতে আমি ছাড়া কেউ নেই….
এই বাড়ির বিষেশ্ত্ব হলো পুরো বাড়ি সাউন্ডপ্রফ…বাড়ির ভেতরের আওয়াজ বাহিরে যাবেনা আর বাহিরের আওয়াজ ভেতরে আসবেনা…..
একটা প্রকান্ড জঙগলের ভেতরে এই বাড়ি অবস্থান করেছে…
.
.
.
শীতল ঝটকা দিয়ে রাজকে সড়ালো…
_আপনি আস্তো একটা শয়তান …
আপনি কোনো মানুষের পর্যায়ে পরেননা…
_সেটা জানি আমি…
_আমি থাকবোনা আপনার সাথে …কেনো এই সহজ কথা বুঝতে পাচ্ছেন না…
আমাকে যেতে দিন…
থাকবোনা আপনার মতো ধোকাবাজ বাজে ক্যারেক্টারলেস রেপিষ্টের সাথে…
রাজ শীতলের কথা শোনা মাত্রই দেয়ালের সাথে শীতলকে চেপে ধরলো…
_তুমিও‌ একটা কথা শুনে রাখো…
তোমাকে আমার সাথেই থাকতে হবে…
আমি তোমাকে কোনো ধোকা দিইনি সেটা আমার জানা আছে…এবার তোমার জানা থাকলেই হলো….
আমার সাথেই তোমাকে সারা জিবন থাকতে হবে…
তুমি চাইলেও আর না চাইলেও…
.
.
.
কথা গুলো মাথায় ঢুকিয়ে নাও ভালো করে….
এতো দিন অনেক সহ্য করেছি আর না…
আমার ভালো রুপ তোমার ভালো লাগেনা তাই বাজে রুপ দেখবে….
.
.
.
শীতল আহহ করে বললো…
_আমার লাগছে খুব..আমায় ছাড়ুন অমানুষ জানোয়ার…
রাজ দেখলো শীতলের হাত লাল হয়ে গেছে…
রাজ হালকা ভাবে ছেড়ে দিলো শীতলকে…
তবে পুরোপুরি ছাড়লোনা…
_আজকে প্রমান করে দিলেন আপনি আসলেই অমানুষ…
সবকিছু জোর করে পেতে চান আপনি তাইনা???
আজ পর্যন্ত লাইফে কত কত জঘন্য কাজ করেছেন তার কোনো হিসেব নেই….
আমি ভুল করেছি আপনাকে স্বামি হিসেবে একদিন ভালবেসে….
লেট হলেও এখন সবটা পরিষ্কার বুঝতে পেরেছি আমি….
আমার সামনে থেকে যান আপনি….
শীতল এই বলে রাজের কাছ থেকে সোজা রুমে গেলো….
.
.
.
শীতলের রাগে গা জ্বলে যাচ্ছে…
রাজের সাথে এখানে সে কিছুতেই থাকবেনা…
রাজ যা ওর সাথে করেছে তার পরে ওকে স্বামি হিসেবে মানা অসম্ভব….
হঠাাৎ রাজ শীতলের সামনে এলো…
শীতল বিরক্ত হয়ে বললো…
_কি হয়েছে ???
একটু একাও থাকতে পারবো না…
রাজ কিছু বলছেনা শুধু হাসছে…
শীতল রেগে রাজের দিকে তাকালো…..
_রাজ বললো তোমাকে এভাবে হেব্বি জোস লাগছে…
শীতল তক্ষণাক নিজের দিকে তাকালো…
শীতলের শাড়ি শাড়ির মধ্যে ছিলোনা…
ওখান দিয়ে খোলা ওখান দিয়ে খোলা…
আচলটা একেবারে নেই বললেই চলে….
শীতল রাজের থেকে পেছনে ঘুরে গেলো…
রাজ শীতলকে আচমকা কোলে তোলে নিয়ে ওয়াস রুমের দিকে যেতে লাগলো….
শীতল রাজের গলায় খামছি দিচ্ছে যেনো নিচে নামিয়ে দেয়….
রাজ ওয়াসরুমে শীতলকে নিয়ে গিয়ে সোজা ঝরনার নিচে দাড় করিয়ে দেয়…
উপর থেকে টপ টপ পানি পড়ছে…
_তুমি ভালো করে শাওয়ার নাও তাহলে মাথা ঠান্ডা হবে…
এখন এখান থেকে চলে যাচ্ছি বাট এর পর থেকে একসাথে শাওয়ার করবো…
শীতল কিছু বলার আগেই রাজ চলে গেলো…
শীতল শাওয়ার করছে আর কাদছে…
কেনো তার জিবন এমন হলো…
.
.
.
শীতল শাওয়ার শেষে রুমে ভেজা শাড়িতে এলো…রাজকে কোথাও দেখতে পেলোনা শীতল…
বেডে অনেক গুলো শাড়ি…আর প্রচুর গহনা রাখা আছে…
শীতল কোনো মতে শাড়ি জড়ালো গায়ে…
হঠাৎ রাজ কোথা থেকে এসে শীতলকে শাড়ি পড়াতে শুরু করলো…
শীতল রাজকে যথেষ্ট বাধা দিলো….
শীতল বললো সে রাজের হেল্প নেবেনা…দরকার পড়লে সে এলোমেলো শাড়ি পরেই থাকবে…
রাজ বললো….তার সামনে এলোমেলো জিনিস পত্র ভালো লাগেনা… তার সামনে সবকিছু সাজানো গোছানো থাকতেই হবে…
.
.
.
শীতল শাড়ি পড়ানো হলেই আবার কুচি খুলে ফেললো…
এভাবে প্রায় দু ঘন্টা ধরে অনেক কষ্টে অনেক বার রাজ শাড়ি পড়ালো শীতলকে…
রাজ এবার রেগে বললো…
_এখন কুচি খুললেই আমি পুরো শাড়ি খুলে ফেলবো…
তারপর সব সময় শাড়ি ছাড়াই থাকতে হবে….
.
.
.
শীতল জব্দ হলো.এ.সে ভয়ে আরকিছু করলোনা…
.
.
.
রাজ শীতলকে নিয়ে সোজা ডাইনিংয়ে গেলো নাস্তা করতে….
শীতল বেশ অবাক হলো ডাইনিংয়ে গিয়ে….
.
.
.
রোদ আর রাজনের অবস্থা দেখার মতো ছিলো ….রাত থেকে ময়মনসিংহ শহড় তন্য তন্য করে ফেলেছে শীতলকে খুজতেঁ…
তাদের দুজনেরই দুটো ডিল ক্যানসেল হয়েছে রাজের জন্য….
রোদ আরেকটা বাজে খবর পেলো ফোনে…
রোদের রাজের উপর এমন রাগ উঠলো….
.
.
.
চলবে…….