অন্ধপ্রেম

অন্ধপ্রেম !! Part- 43

ভোরের আলো সবে ফুটেছে।
রাজের বুক ভার ভার লাগছে।
রাজের মাথা ব্যাথা করছে।
রাজ চোখ মেলে তাকিয়ে একটা মেয়েকে নিজের বুকের উপর দেখলো…
রাজ বড় ধাক্কা খেলো…
রাজ সমানে তাকিয়ে শীতলকে দেখতে পেলো ।
শীতল বুকে হাত দিয়ে দাড়িয়ে আছে ।
শীতলকে বেশ দূর্বল দেখাচ্ছে মনে হয় এখনি ফ্লোরে পড়ে যাবে….
.
.
.
.
রাজ রোদকেও দেখতে পেলো।
কেমন করে যেনো তাচ্ছিল্যের হাসি হাসছে সে ।
রাজের পুরো বিষয়টা বুঝতে এক সেকেন্ড সময় লাগলো…
রাজ মেয়েটাকে উপর থেকে সরিয়ে দিয়ে বেড থেকে এক লাফে নিচে নামলো….
.
.
.
রাজ নিজের দিকে তাকিয়ে দেখলো শুধু একটা প্যান্ট পড়া সে…
গা পুরো খালি…গায়ে প্রচুর লিপস্টিকের দাগ….
রাজ শীতলকে কিছু বলবে তার আগে শীতল রাজের সামনে গেলো….
শীতল শুধু একটা কথায় ভাবছে….
রাজ যত সাধু হোক সে একটা মেয়ের সম্মান হানি করেছিলো…
আর এখন যা করছে তা তার কাছে আশা করা যেতে পারে এটা কোনো অবিশ্বাস্য ঘটনা নয়….
শীতলের কথা হচ্ছে এতোদিন তাহলে রাজ তার সাথে অভিনয় করছিলো….
এখনো রাজ প্রতিশোধের কথা ভুলেনি….
শীতলের বুক ফেটে কান্না আসছে….
.
.
.
শীতল রাজের সামনে গিয়ে
রাজকে কষে দুটো থাপ্পর মারলো….
রাজ গালে হাত দিয়ে বললো..
_যত খুশি মারো বাট আমাকে অবিশ্বাস করোনা ।
তুমি তো আমাকে চেনো..
তুমি ছাড়া আমি কোনো দিনও কোনো মেয়ের দিকে তাকিয়েও দেখিনি।
শীতল হাত দিয়ে রাজের কথা থামালো….
শীতল রাজের কলার ধরে বললো…
_আপনি বলতে ঘৃনা লাগছদ আমার তোকে….
ঠিক বলেছিস তুই…তোকে আমার থেকে ভালো কেউ চেনেনা….
গত একবছর তুই শুধু আমাকে প্রসটিটিউটের মতো ব্যাবহার করেছিস…
আমার চেয়ে সুন্দরি কখনো দেখিসনি লাইফে তাই তো অন্য মেয়ের দিকে তাকানোর রুচি তোর ছিলোনা…
আজকে তুই প্রমাণ করলি তুই আসলেই একটা অমানুষ ধর্ষক জানোয়ার….
তোর মতো একটা ধর্ষককে জাস্ট ঘূনা করা যায় ভালবাসা যায়না।
.
.
.
রাজের চোখ দিয়ে টপ টপ পানি পড়ছে…
সে নিজের কান আর চোখকে বিশ্বাস করতে পাচ্ছেনা।
.
.
.
রাজের মনে হলো সে সপ্ন দেখছে…
সপ্ন যে এতো ভয়ংকর হয় সেটা রাজের জানা ছিলোনা…
_শীতল আমাকে একটা চিমটি কাটতো…
মনে হয় সপ্ন দেখছি…রোদ এসে রাজকে একটা ধাক্কা মেরে ফেলে দিলো…
রাজের কপাল কেটে গিয়েছে….
রাজ কপালে হাত দিয়ে বুঝতে পারলো এটা সপ্ন নয়…
রাজের কপাল কেটে রক্ত পড়ছে…
সেদিকে তার খেয়াল নেই…
শীতলের রাজের দিকে খেয়াল নেই…
কাদো কাদো চোখ নিয়ে সে বেডের মেয়েটার দিকে তাকিয়ে আছে
..
মেয়েটার শাড়ি ঠিক নেই..
মেয়েটার গায়ে তার নিজের পরনের একটা শাড়ি….
শীতলের প্রচন্ড রাগ উঠলো…
মেয়েটার গায়ে কিছু নখের আচরের দাগ ছিলো…
শীতল নিজে নিজে বুঝে নিলো এগুলো রাজের দেওয়া আচর…
যেভাবে শীতলের গায়ে এমন অসংখ্য গাদ বানিয়ে দিয়েছিলো রাজ…
.
.
.
রাজ ফ্লোর থেকে উঠে শীতলের কাছে যাবে তখনি মেয়েটা বেড থেকেই একটানে রাজের হাত ধরে নিজের উপর ফেলে দিলো..

শীতলের মাথায় রক্ত উঠে গেলো এই সিচুয়েশনে রাজের সাথে শন্য মেয়েকে দেখে…
শীতল রাগ সামলাতে পারলো না সে সোজা বেডে গিয়ে মেয়েটাকে রাজের কাছ থেকে সরিয়ে ইচ্ছেমতো আঘাত করতে শুরু করলো…
শীতলের হুশ নেই সে নিজেত সমস্ত শক্তি দিয়ে মেয়েটাকে আঘাত করছে….
শীতল নখ দিয়ে হাত দিয়ে মেয়েটাকে ছিন্নবিছিন্ন করে ফেলছে রাগে….
আকস্মিক এমন হওয়াতে রাজ চমকে যায়…
রাজ শীতলকে বাধা দিতে গেলে শীতল তাকেও আঘায় করলো বেশ…
মেয়েটা বাচাএ বাচাও করে চিৎকার করছে…কয়েক মিনিটে শীতল মেয়েটার অবস্থা বাজে করে ফেলে…
মেয়েটার শরীর থেকে ব্লিডিং বের হচ্ছে…
শীতল জোরে জোরে কান্না করছে আর আঘাত করছে….
রাজ শীতলকে আটকাতে পাচ্ছেনা…
শীতল পুরো পাগল হয়ে গেছে…
.
.
.
রোদ মেয়েটার অবস্থা দেখে ভয় পেয়ে গেলো…
রোদ মেয়েটাকে ভাড়া করে এনেছিলো….
বেশি কিছু হলে শীতলের ক্ষতি হতে পারে…
রোদ লেট না করে মেয়েটাকে শীতলের কাছ থেকে নিয়ে গেলো…
রাজ শীতলকে ঝাপটে ধরেছিলো …
রোদ মেয়েটাকে সোজা ময়মনসিংহের ক্লিনিকে নিয়ে যাওয়ার উদ্দেশ্য রওনা হলো…
.
.
.
রাজ শীতলকে জরিয়র ধরে শান্ত করার চেষ্টা করছে…
শীতল শান্ত হলোনা উল্টো বিশ্বাস ঘাতক বলে বলে চিৎকার করতে শুরু করলো….
.
.
.
.
শীতল পুরো পাগলের মতো আচরেন করতে লাগলো….
রাজ বার বার বলছে ঠান্ডা মাথায় আমার কথা শোনো প্লিজজজ…
আমি কিছু করিনি ।
তোমার বিশ্বাস আমি ভাঙিনি…
ঐ মেয়ের সাথে আমি সজ্ঞনে কিছু করিনি ।
ওকে আমি চিনিনা ।
সব তোমার ভাইয়ের প্ল্যান ।
শীতল চিৎকার দিয়ে বিশ্বাস ঘাতক বলে বলে রাজকে আঘাত করতে লাগলো…
নখ দিয়ে খামছিয়ে রাজের মুখ লাল করেছে শীতল…
রাজের বুকে ইচ্ছে মতো কামরাচ্ছে শীতল…
রাজকে আঘাত করতে করতে ক্ষতবিক্ষত করছে শীতল…
ব্লিডিং বের হতে শুরু করেছে রাজের শরীত থেকে…
রাজ আটকালো না…
রাজকে আঘাত করে যদি শীতলের মনে শান্তি আসে তাহলে আসুক…
রাজ শীতলকে এরকম আরো আঘাত করেছিলো একসময় না বুঝে…
.
.
.
শীতলের সম্মান টুকু নষ্ট করছিলো সে…
সজ্ঞনে হোক আর জ্ঞানই হোক শীতলেত সবচেয়ে বড় অপরাধি সে….
রাজের চোখ থেকে শুধু অনুতাপের পানি পড়ছে…
রাজ ভাবছে শীতল শান্ত হলেই পুরো ঘটনা বুঝিয়র বলবে তাহলে শীতলের ভুল ভাঙবে…

রাজকে আঘাত করতে করতে শীতল ক্লান্ত হয়ে গেলো….
তবুও শীতল থামছেনা…
যত চাপা ব্যথা কষ্ট ছিলো সে সব আজকে ফিরিয়ে দিচ্ছে শীতল রাজকে…
শীতল এক সময় রাজের উপর থেকে উঠে গিয়ে রাজকে অবাক করে দিয়ে পাশে থাকা ফুলদানি দিয়ে নিজের মাথায় মারলো…
রাজ এমনটা হবে কল্পনাও করেনি…
শীতল রাজকে আঘাত করছিলো হঠাৎ যে নিজের উপর আঘাত করে বসবে শীতল সেটা রাজ ভাবেনি…
.
.
.
রাজ দৌড়ে বেড থেকে গিয়ে শীতলকে ধরলো নিচে পড়ে যাওয়ার আগে…
রসজ শীতলকে বেডে শুয়ালো….
রাজের হাতে শীতলের রক্ত…
রাজের কথা বলা বন্ধ হয়ে গেলো…
তার দুনিয়া যেনো স্তব্ধ হয়ে গেলো…
শীতলের কপাল থেকে রক্ত বের হচ্ছে…
শীতলের জ্ঞান নেই….
রাজ শীতলের নাম ধরে কাপা কাপা গলায় বললো…
_শীততততততল….এই শীতল কথা বলো…কি হয়েছে তোমার??
তুমি আমাকে যত খুশি আঘাত করো তবুও কথা বলো…
উঠে দাড়াও প্লিজজজ ।
বিশ্বাদ করো আমার জিবনে শুধু তুমি…
তুমি ছাড়া কারো অস্তিস্ত্ব নেই আমার জিবনে…
তুমিই তো আমার পৃথিবী…
তুমি তো একমাত্র তোমার রাজকে বোঝ…
আমাকে যত খুশি শাস্তি দাও তবুও চোখ খোলো তোমার…
.
.
.
.
রোদ হঠাৎ এসে শীতলের এই পরিস্থিতি দেখতে পায়..
রোদ ভাবেনি শীতল এমন কান্ড ঘটাবে…
রোদ শীতলকে স্পর্ষ করে নিয়ে যেতে চাইলেই রাজ রোদের হাত ধরে ফেলে…
রাজের চোখ থেকে আগুন বের হচ্ছে…
রোদ বেশ ভয় পেয়ে গেলো….
রাজ চিৎকার করে বললো….
_একমাত্র আমার শীতলের দিকে চেয়ে তোকে কিছু বলিনি এতোদিন ।
আজ তুই আমার শীতলের এই অবস্থার জন্য দ্বায়ি…
খোদার কসম আমার শীতলের কিছু হলে তোকে জ্যান্ত কবর দেবো…
রাজ রোদকে রাগে গায়ের জোরে একটা লাথি দেয়…
রোদ দূরে ছিটকে পড়ে….
.
.
.
রাজ শীতলকে কোলে তোলে সোজা ক্লিনিকে যায়…
শীলতের মাথায় ব্যান্ডেজ করা হয়েছে…
রক্তক্ষরণ হওয়াতে রাজকে রক্ত দিতে হলো শীতলকে…
.
.
.
শীতল বিপদ মুক্ত খবর শুনে রাজ আল্লাহর নিকট শুকরিয়া জানালো…

রাজ হঠাৎ করে সেন্সলেস হয়ে পড়লো…
সেন্স ফিরতেই রাজ নিজেকে ঢাকার বাড়িতে রুমে আবিষ্কার করলো…
সামনে চাচা খালা আর কাজলে দেখতে পেলো…
সবাই রাজের অবস্থা দেখে কাদছে…
সবচেয়ে বেশি কাদছে কাজল…
কাজল বললো…
_দাদা ভাই বৌরানিকে ভুলে যাও…
রাজ কাজলের দিকে তাকিয়ে ওর কথা শুনেই শীতলের কথা মনে পড়লো…
রাজ চিৎকার দিয়ে শীতলের নাম বললো…
রাজের কাছে শীতলকে ছাড়া জীবিত থাকা অসম্ভব…
কখনোই শীতলকে ছাড়া রাজ তাকে কল্পনা করতে পারেনা…
শীতলের গায়ের সুভাস সব সময় রাজকে শীতলের কথা মনে করিয়ে দেয়…
রাজ সব সময় শীতলকে অনুভব করে…
.
.
.
.
রাজ বেড থেকে উঠেই একটা শার্ট পড়ে বাইরে যাওয়ার জন্য প্রস্তুত হলো…
রাজের এখন ময়মনসিংহে যাওয়া দরকার….
শীতল কেমন আছে সেটা জানার জন্য রাজের প্রান চলে যাচ্ছে…
সবাই আটকানোর চেষ্টা করলেও রাজকে আটকাতে পারেনি ।
রাজ সবাইকে ধমক দিয়ে চুপ করিয়ে দেয়…
রাজকে বাধা দিলে রাজ সবাইকে খুন করতেও ভাববে না দুবার…
.
.
.
রাজ নিজে নিজে ড্রাইভ করছে দূর্বল শরীর নিয়ে…
রাজের দূর্বলতা তার কাছে তেমন দূর্বলতা মনে হচ্ছেনা…
রাতের মধ্যে রাজ ময়মনসিংহে পৌছালো…
পুরো ক্লিনিক সে উল্টো পাল্টা করে খুজলো শীতলকে….
ক্লিনিকে শীতলকে পাওয়া গেলোনা…
রাজ জানতে পারলো শীতলকে বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়েছে….
.
.
.
রাজ পাগলের মতো গেলো শীতলেত বাড়িতে…
.
.
.
রাজ শীতলের কাছে যাওয়া দূরের কথা বাড়িতেই ঢুকতে দেওয়া হলোনা তাকে…

রাজ শীতলের বাবাকে জোর করে বলেছে শীতলকে একবার শুধু দেখতে চায় সে ….
শীতল কয়েকটা কথা বলতে চায় সে…
রসজ শীতলের নাম ধরে ডাকতেই শীতল উপর থেকে দাড়িয়ে বললো…
আপনার মতো ধর্ষক জানোয়ারের মুখ দেখতে চায়না আমি…
আমাকে পাওয়ার আসা ছেড়ে দিন আপনি…
ডিবোর্স পেপারে সাইন দিয়ে মুক্তি দিন আমায়…
আমি সজল কে বিয়ে করবো….এটা হবে আপনার সবচেয়ে বড় শাস্তি….
রাজ প্রথমে খুশি হলো শীতল ঠিক আছে বলে…
কিন্তু রাজের বুক ফেটে যাচ্ছে শীতলের কথা শুনে…
রাজের সামনে শীতল বলছে অন্য কাউকে বিয়ে করবে ।
এর থেকে রাজের মৃত্যুও ভালো ছিলো….
.
.
.
রাজ চিৎকার দিয়ে বললো…
আমি বেচে থাকতে কখনোই হতে দেবোনা…
পুরো শহড়ে আগুন লাগিয়ে দেবো….
.
.
.
চলবে….