অন্ধপ্রেম

অন্ধপ্রেম !! Part- 40

39 এর বাকিটুকু….
.
শীতলেে বেশ রাগ হলো রাজের উপর ।
কাজের মেয়ে এভাবে তাদের দেখে ফেললো…
এবার সে বাবা মা আর রোদকে বলে দেবে।
রোদ ভাইয়া ঝামেলা করবে প্রচন্ড…
রাজও এবার ভাইয়াকে ছেড়ে দেবেনা…
রাজ শীতলের জন্য তার পরিবারের কোনো ক্ষতি করেনা বাট ধৈর্যের বাধ ভেঙে গেলে খুব বাজে হবে সিচুয়েশন…
.
.
.
কাজের মেয়ে ললিপপ নিচে ফেলে দিয়ে দৌড় শুরু করলো নিচে যাওয়ার জন্য…
ঠিক তখনি রাজ বললো…
_ম্যাডাম ফুলি ।
জাস্ট 1মিনিট প্লিজজজ
ফুলি পেছনে তাকিয়ে বললো….
_এক সেকেন্ডও দাড়ানোর সময় নেই…
আমি নুন খেয়ে নোনা হাড়ামি করবোনা….
আমি এখন সবাইকে বলে দেবো এখানে এখন কি ঘটলো….
_ঠিক আছে ম্যাডাম বলুন বাট তার আগে আপনার ফোনে একটা এম এমেস পাঠিয়েছি সেটা দেখুন …

শীতল কিছুই বুঝতে পাচ্ছেনা রাজের কান্ড…
ফুলি নিজের ফোনের এম এমেস দেখে রাজের দিকে তাকালো….
ফুলি কথা বলছেনা কারণ ফুলির বুলি বন্ধ হয়ে গিয়েছে এম এমেসের ভিডিও দেখে….
.
.
.
রাজ ফুলির কাছে গিয়ে পকেট থেকে ললিপপ বের করে সেটা ফুলির মুখে পুরে দিলো…
ফুলি চোখ বড় বড় করে স্টেচু হয়ে দাড়িয়ে আছে….
শীতল ভাবছে রাজ কি এমন দেখালো যে ফুলি চুপ হয়ে আছে…
.
.
.
শীতলের মনে পড়লো ফুলি যে ঘুমিয়ে থাকে যে অবস্থায় সেটা আবার ভিডিও করলো নাকি রাজ যেনো সময়ে কাজে লাগানো যায়….
.
.
.
শীতলের বেজায় রাগ উঠলো…
নিজের কার্য সিদ্ধির জন্য কেউ এমন করে নাকি…
রাজ বললো…
_তো ফুলি ম্যাডাম আপনি এখনকার ঘটনা যদি কাউকে বলেন তাহলে ফোনের ঘটনা টা আমিও কাউকে না কাউকে বলবো…
.
..
ফুলি শুধু বললো…
_ধর্মের কল বাতাসে নড়ে …আমাকে এভাবে মেইল করলেন তো দেখবেন ধর্মে সইবেনা…
ফুলি নীরিহ মেয়ের মতো ছাদ থেকে চলে গেলো…
.
.
.
রাজ পকেট থেকে একটা ললিপপ বের করে শীতলের সামনে গেলো…
শীতল বড় বড় চোখ করে তাকিয়ে আছে রাজের দিকে….
_আপনি ভালো করে বলুন তো …ফুলির কি ভিডিও করলেন ???
ওর যে ঘুমালে কিছু ঠিক থাকেনা সেটা ভিডিও করেছেন আপনি …
এতো নিচ কবে থেকে হলেন আপনি ???
আমার সাথে যা করেছেন তাতেও মন ভরলোনা এখন আবার কাজের মেয়ে…
ছিঃ ছিঃ ছিঃ

রাজ শীতলের চুল ধরে নিজের খুব কাছে এনে বললো…
_প্রথিবীতে তোমাকে ছাড়া আর সবাইকে আমি মা বোনের চোখে দেখি…
আমি শুধু তোমার সাথেই….
যাইহোক একটা কথা শুনে রাখ …
আমি আর যায় করি তোমাকে ধোকা দেবোনা কখনোই…
আমি শুধু তোমাকেই ভালোবাসি এন্ড ভালোবাসি…
তোমাদের ফুলির প্রেমিক হলল তোমাদের দাড়োয়ান…
সন্ধ্যার সময়ে তোমাদের দাড়োয়ান আর কাজের মেয়ে রোমান্স করছিলো সেটাই আমি ভিডিও করেছি …
এখন আমি সেটা দিয়েই ফুলিকে ভয় দেখালাম…
.
.
.
.
রাজ শীতলকে ছেড়ে দিয়ে ললিপপটা শীতলের মুখে পুরে দিলো…
.
.
.
শীতল বাধা দিলোনা সে অপরাধির মতো চুপচাপ মাথা নিচু করে আছে…
রাজ হঠাৎ করেই শীতলের মুখের ললিপপটা নিয়ে নিজের মুখে দিলো….
_আহহ…এবার খুব মিষ্টি লাগছে ললিপপ …
এই ললিপপে আমার ভালোবাসার ঠোটের ছোয়া আছে….

শীতল হাসবে না কাদবে সেটা বুঝতে পাচ্ছেনা…
শীতল নিচে নেমে চলে এলো….
.
.
.
কাজের মেয়ে তার দিকে কেমন করে যেনো তাকালো…
ফুলি বললো…
_আপাজান …
লোকটা সুবিধার না…
মানুষের ব্যাক্তিগত জিনিস নিয়া মেইল করে…
শীতল রাগী গলায় বললো…
_গর্ধব ওটা মেইল হবেনা …
ব্ল্যাকমেইল হবে রে…
আর শোন নিজের চরকায় তেল দে…
দাড়োয়ানের সাথে তোর লটর কটর আছে সেটা জানি আমি…
উনি আমায় বলেছেন…
.
.
.
.
#40
দুপুরে শীতল না খেয়ে ঘুমুচ্ছে ঠিক তখনি একটা ফুলি এসে তার ফোন দিয়ে গেলো…
শীতল কিছুই বুঝতে পারলোনা…
হঠাৎ ফুলির ফোনে রাজের নাম্বার থেকে কল এলো…
শীতল এবার বুঝতে পেরেছে বিষয়টা…
সব রাজের কান্ড…
_হ্যালো..
_হ্যালো ডার্লিং কেমন আছো???
_আমার নাম ডার্লিং না …
দয়া করে এসব থার্ডক্লাস নাম ধরে আমায় ডাকবেন না…
_ডার্লিং আমি তো থার্ড ক্লাস …তোমারাই তো এটা বলো…
এজন্য আমার সাথে এমন জানোয়ার থার্ড ক্লাসের মতো ভিহেব করো…
তাহলে আমি তো এসব থার্রডক্লাস কথা বলবোই…
শীতলের চোখ দিয়ে পানি পড়ছে…
ঠিক বলেছে রাজ …
শীতল আর তার পরিবার তো রাজকে থার্ড ক্লাস ভাবে…
রাজকে সব সময় জানোয়ার বলে রোদ…
তখন শীতলের বুক ফেটে কান্না আসে…
.
.
.
_হ্যালো ডার্লিং তুমি যদি আমার কাছে চলে এসো তাহলে কথা দিলাম নিজেকে পাল্টাবো….
তুমি তো আমাকে পাল্টে দেবে তাইনা….
তোমার জন্য আমি পাল্টে গিয়ে পুরোপুরি তোমার মতো ফাস্ট ক্লাস হবো….
শীতল কিছু বলতে পাচ্ছেনা কান্নার জন্য….
.
.
.
_ডার্লিং কান্না অফ করো প্লিজজজজ…
আর কিছুদিন কষ্ট করো …
তারপর তোমার চোখের পানি পড়তে দেবোনা আর….

রাজ কিভাবে বুঝতে পারলো শীতল কান্না করছে এটা শীতল বুঝতে পারলোনা….
শীতল কাদো কাদো গলায় বললো….
আপনি কিভাবে বুঝতে পারলেন আমি কান্না করছি…..
_আশ্চর্য কথা বলছো তুমি…
আমার কান্না আমি বুঝতে পারবোনা ???
_মানে ???
_মানে আবার কি ???
তুমি আর আমি তো এক …
তাই তো তোমার কান্না আমি বুঝতে পারলাম…
_আপনি একটা পাগল
_ঠিক তবে তোমার প্রেমে পাগল….
আচ্ছা শোনো আমার কথা…
_তুমি না খেয়ে আছো কেনো বলোতো…???
তোমার ফিগার নষ্ট হবে শুধু শুধু…
দেখতে ভালো লাগবেনা তোমাকে….
প্লিজজজ আমার জন্য না হলেও নিজের কথা না ভেবে অন্তত নিজের ফিগারের জন্য খাও
রাজের কথা শোনে শীতল হেসে দিলো….
_আপনি আসলেই থার্ড ক্লাস পাগল…..
_এতোক্ষনে তোমার মুখে হাসি ফোটাতে পারলাম থ্যাংক গড…
এখন যাও কিছু খাও…
তোমার খাওয়া হলে ফুলি আমাকে বলবে তারপর আমি খাবো…
আমার ক্ষিধের জ্বালায় মাথা হ্যাং হয়ে আছে….
আমার শ্যালক রোদকে হাড়িয়ে কিভাবে তোমাকে আমার কাছে নিয়ে আসবো সেটার প্ল্যান বানাতে পাচ্ছিনা….
.
.
.
রাজ ফোন রাখার সময় বললো….
_I love you ❤❤❤❤Darling
_I love you too❤❤❤❤(মনে মনে বললো শীতল)
_মনের কথা জোরে বলতে পারো তুমি…
_জি কি বললেন আপনি ???
রাজ ততক্ষনে ফোন কেটে দিলো….
.
.
.
শীতল ডাইনিংয়ে বসে খাচ্ছে…
ফুলি খাবার বেড়ে দিচ্ছে….
শীতল বুঝতে পারলো এগুলোও রাজের কান্ড…
শীতল খাওয়ার সময় ভাবলো….
রাজ তো বাহিরের খাবার তেমন খেতে পারেনা….
এখন তো তাকে বাহিরের খাবার খেতে হয়…
না জানি কিভাবে কি খাচ্ছে সে….
বিকালে শীতলের অনিচ্ছা সত্বেও সজল তাকে ময়মনসিংহের একটা ক্লাবে নিয়ে গেলো…
শীতল লং স্কার্ট আর স্কার্ফ মাথায় দিয়ে হালকা সুগার লিপস্টিক মেখে,হালকা কাজল দিয়ে সেজেছে…
শীতল এমনিতেই স্লিম ফিট আর ফিট বডির মাখনের মতো ধবধবে সুন্দরি…
রাজ ছাদ থেকে শীতল কে দেখতে পেলো….
রাজের চোখে শীতলকে মারাত্মক সুন্দরি লাগছে….
ইচ্ছে করছে ছাদ থেকে লাফিয়ে শীতলকে টাচ করে বুকের মাঝখানে জরিয়ে রাখতে…..
.
.
.
.
ক্লাবে সবাই শীতলকে কেমন করে যেনো দেখছে…
যেনো কখনো মেয়ে দেখেনি তারা…শীতল বেশ আন ইজি ফিল করলো…
সজলকে বললো সে বসায় যাবে বাট সজল বললো আর কিছুক্ষন থেকে তারপর যাবে….
.
.
.
সজল বেশ ড্রিংক করে ফেলেছে জোরাজোরিতে ফ্রেন্ডসদের…
শীতল কেও অনেক জোরা জোরি করা হয়েছে বাট শীতল ড্রিংক করলোনা…
.
.
.
শীতল একটা সুইমিং পুলের পাশে গিয়ে দাড়ালো….
সেখানে একটা ছেলে শীতলকে ড্রিংকের জন্য জোর করলো…
শীতল কিছুটা খেয়ে ভমি করে দিলো….
ছেলেটা হেসে হেসে আরেকটা ড্রিংকের জন্য গেলো…
তখনি কেউ ছেলেটাকে ধরে ক্লাবের কোনায় নিয়ে গিয়ে চোখে কাপড় বেধে মারতে শুরু করলো….
ছেলেটা কিছু বুঝতে পাচ্ছেনা কে এমন করলো….
শীতল আনমনে পুলের দিকে তাকিয়ে আছে…
.
.
.
এদিকে কাজলের মনে ভালোবাসার রং খেলা করছে পেপারে বিজ্ঞাপন দেওয়া হিমালয় নামের লোকের জন্য….
লোকের শেষ চিঠি ছিলো এরকম……ডিয়ার পত্রমিতা আমি আপনার সাথে দেখা করতে চাই…
আমি বর্তমানে তিনটা জিনিস চায় লাইফে….
তার মধ্যে আপনাকে দেখা তারমধ্যে একটি…
আপনাকে ঠিকানা দিয়ে দিচ্ছি দয়া করে আসবেন…
আমার প্রতি এতোদিনে আপনার বিন্দু মাত্র বিশ্বাস জন্মেছে কিন্তু আমার আপনার প্রতি অগাত বিশ্বাস জন্মেছে…
সেই বিশ্বাস নিয়েই বলছি আপনি আসবেন…
সবুজ শাড়ি পড়ে একা আসবেন…
সাথে কাউকে নিবেন না …
আমিও সবুজ শার্ট পড়ে আসবো….
ইতি আপনার পত্রমিতক
#হিমালয়….
.
.
.
কাজল ভাবছে দেখা করতে যাবে লোকটার সাথে বাট কাউকে জানাবেনা …
.
.
..
.
শীতল পারে দাড়িয়ে রাজের সাথে থাকা অবস্থায় একটা দিনের কথা ভাবছিলো …
সেই দিনটা শীতলের সবচেয়ে বেস্ট দিন ছিলো রাজের সাথে সময় কাটানোর । ..
রাজ শীতলকে নিয়ে একটা পার্টিতে গিয়েছিলো….
তখন সেখানে এরকম একটা সুইমিং পুল ছিলো…
শীতলকে রেখে রাজ পুলে নামলো সাতার কাটতে…
রাজ শুধু একটা থ্রিকর্টার পড়েছে….
রাজের স্টিল বডিটা দেখছিলো নির্লজ্জের মতো শীতল…
কেনো যেনো শীতলকে খুব টান ছিলো রাজের বডি…
শীতলের বান্ধবিরা সবাই বলতো ….দেখবি শীতল তুই যেমন ফিট বডির হরিণি সুন্দরি তোরও ঠিক তেমনই একটা স্টিল বডির বাঘের সাথে বিয়ে হবে….
তুই বাঘের বউ হবি….
বান্ধবিরা ঠিক বলেছিলো…
আসলেই তো রাজ একটা বাঘ আর শীতল একটা বাঘের বউ….
.
.
.
হঠাৎ শীতলকে কেউ সুইমিং পুলে ফেলে দিলো…
শীতল পানিতে হাবুডুবু খাবে সে সময় রাজ শীতলকে কোলে তোলে নিলো….
শীতলের শাড়ি অলরেডি খুলে গিয়েছে রাজের পায়ের সাথে বেজে….
_আমাকে ছাড়ন প্লিজজজজ..
আমার খুব ভয় করছে…
আমার পানি দেখলে ভয় করে….
রাজ টেডি হাসি দিয়ে বললো….
_আমি তো আছি ডার্লিং …
আমি থাকতে কিসের ভয়???
_আপনি আছেন বলেই আমার সবচেয়ে ভয়…
_কি এতো বড় কথা …
ঠিক আছে নাও ছেড়ে দিলাম তোমায়…
রাজ শীতলকে ছেড়ে দিতেই শীতল রাজকে জরিয়ে ধরলো….
_না না ছাড়বেন না প্লিজজজ আমি তাহলে মরে যাবো…
_রাজ শীতলকে নিজের কোলের মধ্যে নিয়ে জরিয়ে ধরে বললো….
_এই বুক থেকে মরে যাওয়া সহজ না…
রাজ শীতলকে পিঠে নিয়ে অনেক ক্ষন সাতার কাটলো তখন…
শীতলের ভয় করছিলো আর বেশ মজাও লাগছিলো…
ছোটবেলায় রোদ শীতলকে নিয়ে এভাবে সাতার কাটতো….
.
.
.
.
শীতলের ভেজা ঠোট নড়ছিলো রাজ সেই সুযোগ পেয়েই….
শীতলের ধ্যান ভাঙলো সে বাস্তবে ফিরে এলো….
.
.
.
কিছুক্ষন পর শীতলকে কে যেনো একটা ধাক্কা দিয়ে পানিতে ফেলে দিলো…
পুলে বেশ পানি ছিলো…
শীতল সাতার জানেনা…
তাই সে পানিতে হাবুডুবু খাচ্ছে….
শীতলের পানিতে খুব ভয়…
শীতল কি করবে বুঝতে পাচ্ছেনা….
কেউ তাকে পানি থেকে তুলছেও না…
সজল ড্রাংক অবস্থায় কোথায় যেনো পড়ে আছে কে জানে….
.
.
.
শীতল পানি খেয়ে কাশছে…
সবাই পারে দাড়িয়ে মজা দেখছিলো আর হাসছিল …
শীতল যেনো হাড়িয়ে যাচ্ছে অতলে….
রাজের কথা তার মনে পড়ছে বেশ….
রাজ থাকলে তো তাকে জিবন দিয়ে হলেও বাচাতো ।
আল্লাহ শীতলকে শাস্তি দিচ্ছে বোধয় ….
রাজের সাথে সে যা করেছে তাতে এটা তার প্রাপ্য ছিলো…
রাজকে জিবীত অবস্থায় পাবেনা কখনোই শীতল …
অন্তত রাজের হয়ে মরতে পারবেতো শীতল….
শীতল চোখ বন্ধ করে রাজের স্মৃতিতে হাড়িয়ে গেলো…..
.
.
.
.
চলবে………