অন্তরালে তুমি আমি !! Part- 15
“যত্নণায় ছটফট করছে জলি।দাপাচ্ছে আর চিৎকার করে আদিকে ডাকছে।আদি চাইলেও জলির কাছে আসতে পারছে না কারণ জলিকে আবির নিজের কোলের সাথে মিশিয়ে রেখেছে।জলির অবস্থা দেখে আবিরের চোখেও পানি চলে এসেছে।আদি ভাবছে জলির গর্ভের সন্তানটা আবিরের আর জলি এখন আবিরের স্ত্রী। যতো কস্টই হোক জলির কাছে যাওয়া চলবে না।নিজের হাতদুটো শক্ত করে মুট করে রেখেছে তবুও জলির কাছে আসছে না আদি।জলির থেকে দূরে সরে এসে অন্যদিকে নিজের মুখটা ঘুরিয়ে নিয়ে চোখের পানি ফেলছে আর জলির যত্নণাটা অনুভব করছে।”
“জলি চিৎকার করতে করতে ক্লান্ত খুব।প্রচুর রক্তক্ষরণ হচ্ছে।আর বিরবির করে এখনো বলছে, আদি আমি ছলনাময়ী নই, ঠকায়নি তোকে আমি।জলি আস্তে করে নিজের হাতটা পেটে রেখে বলে, সোনা আমি হয়তো আর বাঁচবো না।আমি মরে গেলে তুই তোর বাবাইয়ের মতো হবি না।ক্ষমা করে দিবি বাবাইকে।আবির ঝাড়ি দিয়ে জলিকে থামায় আর বলে এসব কি বলছিস তুই জলি? তোর কিছু হবে না হসপিটালে চল।জলি আবিরের হাত ধরে থামিয়ে দেয়।আর বলে সে বাঁচতে চাই না।যার জন্য এতোগুলো দিন অপেক্ষা করেছে। এতোটা কস্ট সহ্য করেছে। আজ সেই তাকে ভুল বুঝছে।এতোগুলা মানুষের সামনে অস্বীকার করেছে। অপমান করেছে জলির ভালোবাসাকে সে বোঝে নি।কথাটা বলার পর জলি চোখ দুটো বন্ধ করে নেয়।আবির জলিকে ডাকে কিন্তু জলি আর ওঠে না।আবির বুঝতে পারে জলির হুস নেয়।”
“ফাংশনে উপস্থিত সকলের চোখে জলির অবস্থা দেখে পানি চলে আসে।কিন্তু কেউ আদির ভয়ে জলির কাছে আসতে পারছে না।আর আদি দূর থেকে জলি আর আবিরের মধ্যে কথা হতে দেখে ফাংশন থেকে চলে যেতে লাগে।আদি গাড়ির কাছে চলে এসেছে।গাড়িতে উঠতে যাবে আবির জলিকে ছেড়ে দিয়ে চিৎকার করে আদিকে ডাকে।আদি ঘুরে তাকালে আবির আদির কাছে আসে তারপর আদিকে মারতে থাকে।মারতে মারতে আদি বলে, বেঈমান, নিলজ্জ, এতোটা পাষাণ কিভাবে হলি তুই? যেই মেয়েটা তোর জন্য এতোটা কস্ট আর অপমান সহ্য করেছে।নিজের মা-বাবা পরিবার সব কিছু হারিয়েছে আজ তাকে এই ভাবে তুই অস্বীকার করছিস?”
“আবিরের কথাটা শুনে আদি থমকে যায়।আদি কিছু জিজ্ঞাসা করবে আবিরের কাছে তার আগেই আদির গার্ডগুলো আবিরকে ধরে আদির কাছে থেকে দূরে নিয়ে আসে।আবিরকে গার্ডগুলো মারতে যাবে এমন সময় জলির বাবা-মা এসে গার্ডগুলোর কাছ থেকে আবিরকে ছাড়িয়ে নেয়। তারপর জলির বাবা আদির কাছে আসে আর ঠাসসসস! করে আদির গালে একটা কষিয়ে থাপ্পড় মারে।সেটা দেখে আদির গার্ডগুলো জলির বাবার কাছে আসতে যায় আদি হাত উঁচু করে তাদেরকে ইশারায় থামিয়ে দেয়। তারপর জলির বাবা কাঁদতে কাঁদতে আদির দিকে আঙুল তুলে বলে,”
—তোর জন্য আমি আমার মেয়েকে অনেক মেরেছি।এমনকি মান-সম্মানের ভয়ে ঘাঢ় ধাক্কা দিয়ে বাড়ি থেকে তারিয়ে পর্যন্ত দিয়েছি।আমার মেয়েটা বোকা।তাই তোকে ভালোবেসেছে।আর তোর সন্তানকে এতোগুলা মাস ধরে গর্ভে ধারণ করেছে।আজ আমার কোনো মান-সম্মানের ভয় নেয়।হয়তো টিভিতে আমার মতোন আমার আত্নীয়-স্বজন, সমাজ সবাই দেখেছে আমার মেয়ের কস্টটা।সবাই বুঝবে ওর পরিস্থিতি।
“জলির বাবা আবিরকে ডাকে,”
—আবির?
—হ্যাঁ, আঙ্কেল।
—মেয়েটাকে নিয়ে হসপিটালে যেতে হবে।ওকে যে বাঁচাতে হবে।আমি আমার মেয়ের কাছে ক্ষমা না চাইলে যে আমাকে ওই সৃষ্টিকর্তাও ক্ষমা করবে না।
“জলির বাবার কথা শুনে আদি এখনো সেখানেই নিস্তব্ধ হয়ে দাড়িয়ে আদি।আর আদির সামনে থেকে জলিকে ধরে নিয়ে আবির আর জলির বাবা-মা হসপিটালে চলে যায়।ওরা চলে গেলে আদি চিৎকার দিয়ে ওঠে ভাবে জলির সাথে আবিরের বিয়ে হয় নি।ওই সন্তানটা আমার?সত্যিটা জেনে আদির এখন আরও বেশি কস্ট হচ্ছে।”
চলবে,,,