অনাকাঙ্ক্ষিত সে

অনাকাঙ্ক্ষিত সে !! Part- 11 ( অন্তিম-পর্ব )

মিশ্মির কথা শুনে নুয়াজ ভ্রু জোড়া কিঞ্চিৎ বাঁকা করল। মিশ্মি আবারও প্রশ্ন করল।
“আপনি আগে বিয়ে করেছিলেন কি না?”
“হঠাৎ এই প্রশ্ন কেন মিশ্মি?”
“প্রশ্নের পিঠে প্রশ্ন করাটা আমার পছন্দ নয়। আমি আমার উত্তর চাই।”
নুয়াজ এবার উঠে বসল। মিশ্মি পেছন থেকে শার্ট খামচে ধরে টান দিতেই নুয়াজ কিছুটা ঝুঁকে পড়ে মিশ্মির ওপর। মিশ্মি অগ্নিরূপ ধারণ করে বলে,
“আমার চোখে চোখ রেখে উত্তরটা দিন।”
“এমন জেদ করছো কেন?”
“আমি বলেছি না প্রশ্নের পৃষ্ঠে প্রশ্ন করবেন না।”
কথাটা চেঁচিয়েই বলল মিশ্মি। নুয়াজ এবার মিশ্মিকে নিয়েই বসল। মাথা নিচু করে আছে। মিশ্মি তাকিয়ে আছে উত্তরের আশায়। অনেকক্ষণ চুপ থেকে নুয়াজ বলল,
“হ্যাঁ বিয়ে করেছিলাম।”
মিশ্মি নিশ্চুপ। নুয়াজ মিশ্মির মুখটা দু হাতের মধ্যে নিয়ে বলল,
“প্লিজ আমায় ভুল বুঝো না।”
মিশ্মি এক ঝটকায় হাত সরিয়ে দিল। নুয়াজের শার্টের কলার চেপে ধরে বলল,
“আমার থেকে এটা কেন লুকালেন? আপনার হাজারটা মেয়ের সাথে ফিজিক্যাল রিলেশন ছিল সেটা জেনেও আমি আপনাকে ভালোবেসেছিলাম। তাহলে এই বিয়ের বিষয়টা কেন লুকালেন বলেন।”
“মিশ্মি রিলাক্স।”
“কিসের রিলাক্স হ্যাঁ? কিসের রিলাক্স? আমি যদি বিবাহিত হতাম? ছেলেদের সাথে ফিজিক্যাল রিলেশন করতাম তাহলে আপনি আমায় মেনে নিতেন? বলেন মেনে নিতেন?”
“আজেবাজে কথা বলবে না মিশ্মি।”
“আপনি করলে সেগুলো আজেবাজে না অথচ আমি বললেই আজেবাজে?”
নুয়াজ মিশ্মিকে বুকের মাঝে জড়িয়ে নিলো।
“প্লিজ ঠান্ডা মাথায় আমার কথা শোনো।”
মিশ্মি ধাক্কা দিয়ে নুয়াজকে সরিয়ে দিল। চেঁচিয়ে চেঁচিয়ে বলল,
“আমাকে ছুবেনও না আপনি। আপনি বিয়ের কথা আগে জানালে কি হতো? অন্তত আজকের মত কষ্ট তো পেতে হতো না।”
“দেখো মিশ্মি, ঠিক এই ভয়েই আমি সেদিন রাতে রেজিস্ট্রি পেপারে সাইন করিয়ে নিয়েছিলাম।”
“মানে?”
“দ্বিতীয় রাতে যে তুমি আমার বাংলোতে এসেছিলে সেইরাতে রেজিস্ট্রি পেপারে সাইন করিয়ে নিয়েছিলাম। যাতে বিয়ের আগে জানতে পারলেও আমায় ছেড়ে যেতে না পারো।”
“আপনি কি এগুলো রিভেঞ্জ নিলেন?”
“সত্যি বলতে তোমার উপর আমার আলাদা রাগ ছিল। আমার ইচ্ছে ছিল তোমায় বিয়ে করে কষ্ট দেওয়া। তোমার সামনে হাজারও মেয়ের সাথে কথা বলা। সারা রাত অন্য মেয়েদের সাথে কাটিয়ে সকালে বাড়ি ফেরা। মেয়েরা সবকিছুর ভাগ দিতে পারলেও তার স্বামীর বা তার ভালোবাসার মানুষটির ভাগ কাউকে দিতে পারেনা। তুমিও এটা সহ্য করতে পারতে না। তোমার প্রতিটা বার করা রিজেক্ট আমার ইগোতে লেগেছিল। চাপা রাগ জন্ম নিয়েছিল। তাই রাতে সুযোগ পেয়েও তোমার সাথে ফিজিক্যাল কোনো রিলেশনে জড়াইনি। তোমার বিশ্বাস অর্জন করেছি। তোমার বাড়িতে যখন বিয়ের প্রস্তাব নিয়ে যাই তারা তখন যা তা ব্যবহার করে আমার সাথে। আমার রাগ তখন আরো বেড়ে যায়। তোমাকে বিভিন্নভাবে বোঝাতে থাকি প্রতিবাদ করার বিষয়টি। সব প্লান ঠিকভাবে চললেও এলোমেলো হয়ে যায় মাত্র তিনদিনেই। সেই তিনদিন, যেই তিনদিন তোমার সাথে কোনো যোগাযোগ ছিল না। তোমাকে দেখতে পারিনি একটা বারের জন্যও। বুকের ভেতর চাপা একটা কষ্ট বুঝতে পারি। তোমার ওপর চেপে রাখা রাগ, জেদ যে কখন ভালোবাসায় পরিণত হয়েছে আমি বুঝতেও পারিনি। সত্যি বলছি মিশ্মি ঐ তিনটা দিনই যথেষ্ট ছিল তোমার গুরুত্ব আমাকে বোঝানোর জন্য। তিনদিন যোগাযোগ না হওয়ায় আমি ভেবেছিলাম তুমি অন্য কারো সাথে হয়ত পালিয়ে গিয়েছ। কিন্তু ভুল ধারণা ভাঙ্গালো আলভী। আলভীর মুখে সব শুনে নিজের ওপর খুব রাগ আর ঘৃণা হলো। সেই সাথে অনেক গুণ বেড়ে যায় তোমার প্রতি আমার ভালোবাসা। আমি তোমাকে হারাতে চাইনা মিশ্মি। অনেক ভালোবাসি তোমায়।”
মিশ্মি এতক্ষণ যাবৎ চুপচাপ নুয়াজের কথাগুলো শুনছিল। বিশ্বাসই হচ্ছিল না নুয়াজ এতসব পরিকল্পনা করে রেখেছিল। মানুষ এত নিঁখুত অভিনয় কি করে করতে পারে? চোখ দিয়ে টপটপ করে পানি পড়ছে। মিশ্মি ভাবতেই পারছেনা, যদি নুয়াজ মিশ্মিকে ভালো না বেসে ফেলত তাহলে মিশ্মিকে কত কি’ই না সহ্য করতে হত।
মিশ্মিকে চুপ থাকতে দেখে নুয়াজ ওর দুটি হাত নিজের হাতের মুঠোয় পুরে নিলো। অসহায় দৃষ্টিতে মিশ্মির দিকে তাকিয়ে বলল,
“আমাকে ক্ষমা করে দাও প্লিজ।”
মিশ্মি ভাঙ্গা ভাঙ্গা গলায় উত্তর দিল।
“কি নিঁখুত অভিনয় করতে পারেন আপনারা। বড়লোক মানুষগুলো কি এমনই হয়? টাকার দাপটে কি তাদের ইগো সর্বোচ্চ চূড়ায় থাকে। তারা কি ভাবে যাকে প্রপোজ করবে তাকেই রাজি হতে হবে? যখন বলবে তখনই বিছানায় যেতে হবে? আর তা না করলেই নিতে হবে চরম প্রতিশোধ। আপনি এখন বলছেন আপনি আমায় ভালোবাসেন। যদি ভালো না বাসতেন? তাহলে হয়তো আপনার পরিকল্পনা মতই সব চলতো তাই না?”

নুয়াজ অপরাধীর মত মাথা নিচু করে রইল। মিশ্মির দিকে তাকানোর মুখও নেই তার। তবে মিশ্মির থেকে কিছু লুকিয়েও রাখতে চায়না। যা ঝামেলা হওয়ার একদিনে হোক। যত কষ্ট পাওয়ার একদিনেই পাক। যেই সত্যিগুলো পরে জানলে আরো কষ্ট পাবে সেগুলো না হয় আগে জেনেই কষ্ট পাক। মিশ্মি এবার শান্তস্বরে জিজ্ঞেস করল,
“আগের বিয়েটা কিভাবে হয়েছিল? আর সে কোথায়?”
“আগের বিয়েটা বাবা-মায়ের ইচ্ছেতে করেছিলাম। বিরাট বড়লোকের মেয়ের সাথে বিয়ে ঠিক করে আমার। তার নাম জারা। জারার বাবার ছিল খুব বড় বড় বিজনেস। আমার আব্বু নিজের বিজনেসের ডেভেলপের জন্য জারার সাথে আমার বিয়ে ঠিক করে। আমি তখন বিয়ে করার জন্য একদমই রাজি ছিলাম না। কিন্তু যখন আমাদের বাসায় আসে তখন প্রথম দেখি জারাকে। এক পলকেই দৃষ্টি স্থির গিয়েছিল ওর ওপর। একটা মেয়ে এত সুন্দর হতে পারে যেটা ওকে না দেখলে হয়ত জানতামই না। তারপর থেকে আমাদের টুকটাক কথাবার্তা শুরু হয়। দেখা হয়। ওর প্রতি আলাদা একটা টান অনুভব করতে শুরু করি। এরপর আর আমি বিয়েতে অমত করিনি। খুব ধুমধাম ভাবে আমাদের বিয়েটা হয়ে যায়। ভালোবাসার মানুষটাকে নিজের করে পাওয়ার এক অনুভূতি তখন আমি অনুভব করি। জারা ছিল আমার জীবনে প্রথম নারী যাকে সম্পূর্ণ নিজের করে নিয়েছিলাম। নিজের সব চাওয়া, ভালোবাসা জারাকেই প্রথম দিয়েছিলাম। এক সপ্তাহ আমাদের সংসার ভালোই চলতে থাকে। সারাদিন মিষ্টি মিষ্টি ঝগরা, রাগ, খুনসুটি, আদর-ভালোবাসা সবই ছিল। এরমধ্যে একদিন জারার বাবা অসুস্থ হয়ে পড়ে। তখন জারাকে নিয়ে আমরা ওর বাবাকে দেখতে যাই। জারা সেদিন ঐ বাড়িতে থেকে যায় কিন্তু অফিসের জন্য চলে আসতে হয়। রাতে আমি বেশ কয়েকবার ওকে ফোন করি। কিন্তু ও ফোন তোলেনি। ভেবেছিলাম হয়ত ওর বাবার পাশে রয়েছে। পরেরদিন অফিসে যাওয়ার আগে ওর সাথে দেখা করে অফিসে যাই। চারদিন হয়ে যায় জারা ওর বাবার বাড়ি। অফিসের ফাঁকে ফাঁকে ওকে ফোন দিয়ে আমি খোঁজখবর নিতাম। একদিন রাতে জারাকে খুব কাছে পেতে ইচ্ছে করছিল। ঐদিকে জারা ফোনও তুলছিল না। আর আমি ওকে ছাড়া থাকতেও পারছিলাম না। তাই ভাবলাম ওর বাসায় চলে যাই। গাড়ি নিয়ে ওর বাসার কাছে যেতেই দাঁড়োয়ান দরজা খুলে দিল। আমি ভেতরে গিয়ে দেখলাম দরজা আনলক করা। তাই আর কলিংবেল বাজাইনি। জারাকে চমকে দিব ভেবে চুপিচুপি ভেতরে যাই। গিয়ে দেখি বাসায় ওর বাবা-মা কেউই নেই। জারার রুমের সামনে যেতেই চমকে গেলাম আমি। ডিম লাইটের আলোতে স্পষ্ট দেখতে পেয়েছিলাম জারাকে অর্ধ উলঙ্গ অবস্থায় একটা ছেলের সাথে অন্তরঙ্গ মুহুর্তে। আমার পায়ের নিচ থেকে মাটি সরে যাচ্ছিল। আমার মনে হচ্ছিল আমি শূন্যে ভাসছি। জারা তখন এতটাই ব্যস্ত ছিল সুখ নিতে যে, আমায় খেয়ালই করেনি। আমি তখনই আমার বাসায় চলে আসি। হারানোর কষ্টে জর্জরিত হতে থাকি। দুইদিন আর আমি ওকে কোনো ফোন না টেক্সট করিনি। ছয় দিন পর জারা বাসায় ফিরে আসে। বিশ্বাস করো মিশ্মি, ওর মুখটা যখন দেখি তখন কত স্নিগ্ধ আর পবিত্র লাগছিল। কিন্তু নিজের চোখেই দেখেছিলাম ওকে অন্তরঙ্গ অবস্থায়। আমি সরাসরিই ওকে এই বিষয়ে জিজ্ঞেস করলে ও একটু ইতস্তত বোধ করে। এরপর আমি জোড়াজুড়ি করে যেটা শুনলাম তাতে মাথায় আকাশ ভেঙ্গে পড়ার উপক্রম।”
এতটুকু বলে নুয়াজ থামল। চোখের কোণে পানি চিকচিক করছে। মিশ্মি খুব মনোযোগ সহকারে শুনছে নুয়াজের প্রতিটা কথা। দৃঢ় কণ্ঠে মিশ্মি জিজ্ঞেস করল,
“কি বলেছিল?”
“বলেছিল অনেক আগে থেকেই ওর ছেলেদের সাথে ফিজিক্যাল রিলেশন ছিল।”
“তারপর?”
“আমি ওকে বিভিন্নভাবে বুঝাতে থাকি। ওকে এত বেশি ভালোবেসে ফেলেছিলাম যে ওকে ছাড়া থাকব এটা ভাবতেই পারছিলাম না। বলেছিলাম, ‘বিয়ের আগে যা করার করেছো। এখন আর কারো সাথে কিছু করো না প্লিজ।’ অনেক কান্নাকাটি করে ওর পায়েও ধরি। জারাও আমায় কথা দেয়। কিছুদিন জারা ভালো থাকলেও আবারও শুরু হয় তার এসব খারাপ কাজ। মানুষের যেমন মদ, সিগারেটের নেশা হয় জারারও তেমনি ছেলেদের নেশা হয়ে গিয়েছিল।
তবুও আমি চুপ থেকে সবটা বুঝাতে চেষ্টা করি। কিন্তু জারা নারাজ ছিল বুঝতে। এক কথায় দুই কথায় খুব ঝগরা হয়ে যায় আমাদের মধ্যে। রাগের বশে ওকে একটা থাপ্পড়ও দেই। সেদিনই ও বাবার বাড়ি চলে যায়। এবং স্পষ্ট জানিয়ে দেয় ও আমার সংসার করবে না। কত হাতে-পায়ে ধরে কান্নাকাটি করেছি কিন্তু ফিরে আসেনি। মেয়েদের মত নিজেকে দিনের পর দিন ঘরে বন্দি করে রেখেছিলাম। তারপর এল সেই অনাকাঙ্ক্ষিত একটি দিন। যেদিন জারা আমায় ডিভোর্স লেটার পাঠায়। তারপর ঐ ডিভোর্স লেটারই যথেষ্ট ছিল আমাকে বদলে দেওয়ার জন্য। তখন থেকে আমিও হয়ে গেলাম প্লে বয়। রিলেশন করেছি আর মেয়েদের বিছানায় নিয়েছি। আমি কখনো ভাবিনি আমি আবারও কোনো মেয়েকে ভালোবাসতে পারবো। কিন্তু আমি পেরেছি। আমি তোমায় ভালোবেসে ফেলেছি। যদি তুমিও আমায় ছেড়ে যাও তাহলে মেয়ে জাতির ওপর ঘৃণাটা সারাজীবনের জন্য আমায় ঘিরে ধরবে। আমি কখনো আর কোনো মেয়েকে বিশ্বাস করতে পারব না।”

মিশ্মি নিষ্পলকভাবে তাকিয়ে আছে। একটা মেয়ে যেমন একটা ছেলেকে খারাপ বানাতে পারে তেমনি একটা মেয়ে আবার একটা ছেলেকে ভালোও করতে পারে। প্রতিটা মানুষের জীবনেই কত অন্ধকার অতীত লুকিয়ে থাকে। যেটা দিনের চাকচিক্যের মত আলোয় আমরা ধরতে পারিনা। মানুষ কতটা কষ্ট পেলে বদলে যায় এত জঘন্যভাবে সেই খবরও আমরা নিই না। কেউ আঘাত পেয়ে ভালোর পথে যায় আবার কেউ আঘাত সহ্য করতে না পেরে খারাপ পথে যায়। মিশ্মি ভেবে নিয়েছে নুয়াজের অতীত নুয়াজকে খারাপ বানালেও মিশ্মি ওর বর্তমান, ওর ভবিষ্যৎ। ভালোবাসা দিয়েই আগলে রাখবে সে নুয়াজকে।
নুয়াজ হাউমাউ করে কাঁদতে কাঁদতে মিশ্মিকে জড়িয়ে ধরে।
“প্লিজ মিশ্মি আমায় ছেড়ে যেয়ো না প্লিজ। তাহলে যে আমার বেঁচে থাকাই অসম্ভব হয়ে যাবে।”
মিশ্মি আরেকটু শক্ত করে জড়িয়ে ধরে নুয়াজকে।
“যাবো না আপনাকে ছেড়ে। ভালোবেসেছি কি ছেড়ে চলে যাওয়ার জন্য?”
.
ব্যালকোনিতে দেয়ালের সাথে হেলান দিয়ে বসে আছে মিশ্মি। নুয়াজ মিশ্মির কোলের ওপর মাথা রেখে পেটে মুখ গুঁজে কোমড় জড়িয়ে শুয়ে আছে। মিশ্মি খুব সুন্দর করে নুয়াজের চুলে হাত বুলিয়ে দিচ্ছে। আজ আকাশটা একদম স্বচ্ছ। অর্ধবৃত্ত একটি চাঁদ আর তারপাশে রয়েছে অসংখ্য তারা। যেগুলে মিটমিটি হয়ে জ্বলছে। নুয়াজ মাথা তুলে মিশ্মির দিকে তাকায়। মিশ্মি ভ্রু নাচিয়ে জিজ্ঞেস করে,
“কি?”
“একটা কথা বলি”
“বারণ করল কে?”
“আমার বাবা-মা অন্যধরণের একদম। তারা খুব একটা ইজিভাবে আমাদের বিয়ে মেনে নিবে না। অফিসের জন্য বেশিরভাগ সময়টাই আমায় বাহিরে কাঁটাতে হবে। বলা যায় না তারা কখন কি ক্ষতি করে বসে তোমার। আর তোমার কিছু হলে আমি নিজেও বাঁচতে পারব না। চলো না মিশ্মি আমরা অন্য কোথাও চলে যাই?”
“অন্য কোথাও মানে?”
“দেশের বাহিরে।”
“পাগল আপনি? আমার পরিবার আছে এখানে। বিশেষ করে বাবা আর মোহনা। ওদের ছাড়া আমি থাকতে পারব না।”
“আমরা নিজেরা পুরোপুরি সেটেল্ হয়ে তারপর ওদের নিয়ে যাব। এখন তো আলভীর কাছেই থাকে। আর আলভী ছেলেটাকে চোখ বন্ধ করে বিশ্বাস করা যায়।”
“তবুও। আর আমার বিষয়টা বাদ দিলেও আপনার বিষয়টা আলাদা। শুধুমাত্র আমার জন্য আপনি আপনার পরিবারকে ছাড়বেন।”
“কিসের পরিবার? জন্ম দিয়ে শুধু কর্তব্যটুকুই পালন করেছে। তাও শুধু নিজেদের স্বার্থে। নিজেদের কতটুকু সময় দিয়েছে আমায়? আমার থাকা না থাকায় কিছুই যায় আসেনা তাদের।”
“আপনি এখন রাগের বশে এসব বলছেন। রাগ কমে গেলেই সব ঠিক হয়ে যাবে।”
“এখন আমি একটুও রেগে নেই। যা বলছি সব ঠান্ডা মাথায় বলছি। আর কালই আমরা আলভীর বাসায় গিয়ে এই বিষয়ে কথা বলব।”
.
.
ড্রয়িংরুমে বসে আছে নুয়াজ, মিশ্মি, আলভী, আলভীর বাবা-মা, মিশ্মির বাবা-মা আর মোহনা। সকলের সামনেই প্রসঙ্গ তুলে নুয়াজ। বাহিরে যাওয়ার কথা শুনে সকলের মুখটাই মলিন হয়ে যায়। মিশ্মির বাবার খুব কষ্ট হয়। কিন্তু সব বাবা-মা’ই তো চায় তাদের ছেলেমেয়েরা ভালো থাকুক। মিশ্মি ছোট থেকেই কষ্টে কষ্টে বড় হয়েছে। স্বামীর সংসারে যদি সুখ মিলেই তাহলে হোক না তার মেয়েটা সুখী। আলোচনায় সবার মতামতের ভিত্তিতে যাওয়ার পারমিশন মিলে। হুট করেই আলভী বলে,
“তবে এক শর্তে?”
নুয়াজ অবাক হয়ে বলে,
“কী শর্ত?”
“যতদিন না পাসপোর্ট, ভিসা তৈরি হচ্ছে ততদিন তোমাকে আর মিশ্মিকে আমাদের বাসায় থাকতে হবে।”
মিশ্মি লাফিয়ে উঠে বলল,
“আমি রাজি।”
এরপর আবার নুয়াজের দিকে তাকিয়ে বলল,
“আসলে কবে আবার ওদেরকে দেখব তার তো ঠিক নেই। তাই কয়টা দিন সবার সাথে কাটাতে চেয়েছিলাম।”
নুয়াজ হেসে বলল,
“আমার কোনো সমস্যা নেই।”

এরপর সবাই একসাথে খাওয়া-দাওয়া করল। সময় যেতে লাগল তাদের আপন গতিতে। ঐদিকে নুয়াজ সব ব্যবস্থা করছে। অতঃপর এক সপ্তাহের মধ্য সবকিছু কমপ্লিট হয়ে যায়। ফ্লাইটের আগেরদিন রাতে নুয়াজ মিশ্মিকে নিয়ে ওর বাবা-মায়ের সাথে দেখা করতে যায়। তারা ওদের দিকে তাকিয়েও দেখেনি। আর একবারের জন্য বলেওনি যাস না। কিছু সময় দাঁড়িয়ে মিশ্মিকে নিয়ে আবার চলে আসে আলভীর বাসায়।
মোহনাকে মনমরা হয়ে বসে আছে। এভাবে বসে থাকতে দেখে মিশ্মি ওর দিকে এগিয়ে যায়।
“কিরে এভাবে মনমরা হয়ে বসে আছিস কেন?”
“আমার খুব কষ্ট হচ্ছে রে আপু।”
“কেন?”
“তুই আমাদের ছেড়ে একেবারের জন্য চলে যাবি।”
মোহনার টলমল করা চোখ দেখে মিশ্মি ওকে বুকে জড়িয়ে নেয়।
“একদম কাঁদবিনা। সবকিছু ঠিকঠাক করে তোদেরও নিয়ে যাব। তুই এভাবে কাঁদলে বাবাকে সামলাবে কে বলতো? তুই না স্ট্রং গার্ল?”
“তোকে ছাড়া থাকতে আমার কষ্ট হবে।”
“চুপ। প্রতিদিন আমি ভিডিও কল দিব। ঘণ্টার পর ঘণ্টা জমিয়ে আড্ডা দিব কেমন?”
মোহনা তখনও কেঁদেই চলেছে। মিশ্মি ওর চোখের পানি মুছে দিয়ে বলল,
“ছাদে যাবি?”
মোহনা কাঁদতে কাঁদতে উত্তর দিল,
“তুই গেলে যাব।”
মিশ্মি হাসল। বলল,
“চল।”
দুজনে ছাদের পথে পা এগোতেই পেছন থেকে রেহেনুমা বেগম মিশ্মিকে ডাক দেন। ডাক শুনে মিশ্মি পিছনে ঘুরে দাঁড়ায়। রেহেনুমা বেগম মুখটা কাচুমুচু করে বলেন,
“মাফ চাওয়ার মত মুখ আমার নাই আমি জানি। ছোট থেকেই তোর প্রতি অনেক অন্যায় অবিচার করছি আমি। খাঁটি রত্ন চিনতে পারি নাই। কালই তো তুই চলে যাবি আমায় ক্ষমা করে দিস মা?”
মিশ্মি শান্ত কণ্ঠে বলে,
“তুমি যে তোমার ভুল বুঝতে পেরে অনুতপ্ত হয়েছ এটাই তো অনেক। তোমার ওপর আমার কোনো রাগ নেই মা। শুধু একটাই অনুরোধ করব, আমার বাবা আর মোহনাকে দেখে রেখো প্লিজ। তোমার ভাই-বোনদের সাথে হাত মিলিয়ে ওদের কোনো ক্ষতি করো না।”
“ওদের সাথে আর আমার কোনো সম্পর্ক নেই।”
“কেন?”
“বড় আপায় তো প্যারালাইজড হয়ে পড়ে আছে। ছোটডার জামাই শ্বশুরবাড়ি থেকে তাড়াই দিছে। আর ভাইর বউ, ছেলে-মেয়ে কেউই এখন ওরে দেখতে পারেনা। অশান্তি চলছে সংসারে।”
মিশ্মি বড় একটা শ্বাস নিয়ে বলল,
“সবাই সবার পাপের ফল ভোগ করছে।”

মোহনাকে নিয়ে ছাদে যায় মিশ্মি। গিয়ে দেখে আলভী আকাশের দিকে তাকিয়ে আছে। মিশ্মি পেছন থেকে ডাক দেয়,
“আলভী ভাই।”
মিশ্মির ডাকে স্মিত হেসে আলভী বলে,
“এত রাতে ছাদে তুমি?”
“হুম। বোনকে নিয়ে একটু সময় কাটাতে এলাম। ভালেই হলো আপনিও আছেন।”
“নুয়াজ কোথায়?”
“ও একটু ক্লান্ত। তাই ঘুমিয়ে পড়েছে।”
“তারপর বলো কেমন অনুভূতি হচ্ছে?”
“কিসের অনুভূতি?”
“বিদেশের মাটিতে পা রাখবে সেটার অনুভূতি।”
“খুব কষ্ট হচ্ছে আলভী ভাই। সবাইকে ছেড়ে চলে যাব ভাবতেই বুকের ভেতর মোচর দিচ্ছে।”
“পাগলী কিসমিস। আমি আছি তো? তুমি নিশ্চিন্তে যেতে পারো। তোমার পরিবারের কোনো অযত্ন বা ক্ষতি আমি হতে দিব না। আর মোহনার পড়াশোনা নিয়েও টেনশন করতে হবেনা। মোহনা যেমন তোমার বোন ঠিক তেমনি আমারও বোন।”
“আপনি এত ভালো কেন বলুন তো? আমার সবসময় মনে হয় আপনি অদৃশ্যভাবে আমার পাশে থাকেন।”
“তোমার ভাবনা এমন তাই। আমি কিন্তু এতটাও ভালো মানুষ নই কিসমিস।”
“আমি যতটা ভাবি আপনি তারচেয়ে অনেক বেশিই ভালো আলভী ভাই। আপনার জীবনসঙ্গিনী যে হবে সে সত্যিই খুব ভাগ্যবতী হবে।”
মিশ্মির কথার উত্তর দিল না আলভী। শুধু মুচকি হাসলো।
.
.
সকালে রেডি হচ্ছিল মিশ্মি। তখন নুয়াজ কি যেন কাজ করছিল। মিশ্মিকে বলল,
“কলম আছে তোমার কাছে?”
“আমার কাছে তো নেই। মোহুর কাছে আছে। আমি নিয়ে আসছি।”

মিশ্মি মোহনার রুমে গিয়ে দেখল দরজা লক করা। কয়েকবার নক করার পরও কোনো সাড়াশব্দ পেল না। মনে হয় মেইন দরজা না খুলেই বাথরুমে গোসল করছে।
তাই মিশ্মি আলভীর কাছে গেল। রুমে গিয়ে দেখল আলভী নেই। টেবিলে অনেক খোঁজাখুঁজির পর ডায়েরীর ভেতর কলম পেল। কলমটা নিতে গিয়ে চোখ আটকে গেল একটা লাইন দেখে। অসংখ্য কৌতুহল নিয়ে ডায়েরীর পাতা উল্টাতে থাকল মিশ্মি।
.
মিশ্মির গলার আওয়াজ শুনেছিল মোহনা। গোসল করার জন্য বের হতে পারেনি তখন। তাই গোসল সেরে মিশ্মির রুমে যায়। নুয়াজকে দেখে বলে,
“আপু কোথায় ভাইয়া?”
“তোমার কাছেই তো গেল কলম আনতে। কলম আনতে গিয়ে তোমার আপু নিজেই কলম হয়ে গিয়েছে নাকি!”
মোহনা হেসে বলল,
“আচ্ছা আমি এনে দিচ্ছি।”

মিশ্মি ডায়েরীর পাতা উল্টাচ্ছে আর অবাক হচ্ছে। অনেকটা শুরু থেকে পড়া শুরু করেছে মিশ্মি।
এক পৃষ্ঠায় লেখা,
“আজ এক পিচ্চি মেয়ে আমায় বিয়ের কথা বলেছে হাহা। ভারী মিষ্টি দেখতে এই কিসমিস।”
আরেক পাতায় লেখা,
“মাঝে মাঝেই দেখি খেলতে বের হয়। কিন্তু কখনো তাকায় না আবার কাছেও আসেনা। এভাবে দেখতে দেখতে কতগুলো সময় কেটে গেল। একদিন হুট করেই দেখলাম কিসমিসকে আর দেখতে পাচ্ছি না। হারিয়ে ফেললাম।”
এরপর অনেকগুলো পৃষ্ঠা বাদ দিয়ে লিখা,
“আজ কতগুলো বছর পর আমার কিসমিসকে দেখতে পেলাম। আগের চেয়ে কত সুন্দর হয়েছে মেয়েটা। কতবড় হয়ে গিয়েছে। কিন্তু ওকে দেখে মনে হলো খুব দুঃখী দুঃখী।”
চারটা পেজ বাদ দিয়ে লেখা,
“ওর পরিবারের অবস্থা শুনে খুব কষ্ট হচ্ছে। কত কষ্ট পাচ্ছে আমার কিসমিস। ওকে আমি এই নরক থেকে আমার কাছে নিয়ে আসবো। ভালোবাসায় রাঙিয়ে দিবো ওর প্রতিটা মুহুর্ত।”

এরপর অনেক পৃষ্ঠা খালি। উল্টাতে উল্টাতে কিছু লিখা পেল।
“আল্লাহ্ বোধ হয় মিশ্মিকে আমার ভাগ্য রাখেনি। যাকে ভালোবেসে নিজের করতে চেয়েছি তার মুখেই শুনি অন্যজনকে ভালোবাসার কথা। এটা কি হওয়া খুব দরকার ছিল? থাক! সব ভালোবাসা পূর্ণতা পেতে নেই। কিসমিস যাকে ভালোবেসে সুখে থাকবে আজ তার হাতেই ওকে তুলে দিয়ে আসলাম। তুমি ওকে সবসময় ভালো রেখো আল্লাহ্। ওর জীবনে যেন আর দুঃখের ছায়া না পড়ে। মেয়েটাকে যে খুব সহজ সরল। ওকে আত্মনির্ভরশীল আর প্রতিবাদ করার সাহস যুগিয়ে দিয়ো।”

মিশ্মির চোখ ঝাপসা হয়ে আসছিল। আবার অনেকগুলো পেজ বাদ। শেষের পৃষ্ঠায় লিখা,
“সময়গুলো নদীর স্রোতের মতই বহমান। খুব ইচ্ছে করছিল বলতে, মিশ্মি তুমি যেয়ো না। এখানেই থাকো। অন্তত চোখের দেখাটা তো দেখতে পারবো। কিন্তু ওকে আটকানোর সাধ্যি যে আমার নেই। কিন্তু আমি তবুও খুশি। আমি আমার ভালোবাসার মানুষকে নাই’বা পেলাম মিশ্মি তো পেয়েছে। ওর ঠোঁটের কোণে এক ফোঁটা হাসিই আমার ভালোবাসাকে ওর মাঝে বাঁচিয়ে রাখবে যেটা মিশ্মি নিজেও জানবেনা। ভালোই হয়েছে মিশ্মি জানেনা। জানলে হয়ত আমাকে অন্যদৃষ্টিতে দেখত। সবসময় কাঙ্ক্ষিত মানুষটিকে নিজের করে পেতে নেই। কিছু মানুষ কাঙ্ক্ষিত থেকেও হয় অনাকাঙ্ক্ষিত। আমিও না হয় সেই অনাকাঙ্ক্ষিতই হলাম। মিশ্মির আকাঙ্ক্ষায় না থেকেও অদৃশ্যভাবে হয়ে রইলাম অনাকাঙ্ক্ষিত ‘সে’ হয়ে। যাকে মিশ্মি কখনো সেভাবে উপলব্ধিই করতে পারবেনা। স্যাক্রিফাইজের মধ্যেও রয়েছে অনন্য সুখ। আল্লাহ্ তুমি আমার ভালোবাসার মানুষটিকে ভালো রেখো সবসময়। ওর হাসিমুখে কখনো বর্ষার কালো মেঘ জমতে দিয়ো না। আমি যেন সবসময় অদৃশ্য অধরা ভালোবাসায় ওকে আগলে রাখতে পারি।”

মিশ্মি ডায়েরীটা বন্ধ করে চেয়ারে বসে পড়ল। কোথায় যেন একটা খুব কষ্ট হচ্ছে। কিন্তু কেন হচ্ছে? নুয়াজের ডাকে মিশ্মি নিজেকে স্বাভাবিক করে নেয়।
“তুমি রেডি?”
মিশ্মি মাথা নেড়ে বলে,
“হুম।”
“চলো তাহলে। বের হতে হবে।”
নিচে নেমে সবাইকে গাড়ির কাছে পেলেও আলভীকে দেখতে পেল না। মিশ্মির চোখদুটো এখন আলভীকেই খুঁজছে। একটাবার এই মানুষটার চোখের গভীরতা দেখতে চায় মিশ্মি। যেটা আগে ওর চোখে পড়েনি। মিশ্মি আয়েশা বেগমকে জিজ্ঞেস করলেন,
“আলভী ভাই কোথায় আন্টি?”
“ওর একটা কি কাজে যেন ভোরেই বের হয়ে গেছে। বলেছে কাজ শেষ করে সোজা এয়ারপোর্টে যাবে।”

এয়ারপোর্টে পৌঁছে অনেকক্ষণ ধরে বসে আছে। তবুও আলভী আসছেনা। এবার আর অপেক্ষা করার সময় নেই। যাওয়ার জন্য এনাউসমেন্টে বলা হচ্ছে। মিশ্মি কেঁদেই ফেললো বাবাকে জড়িয়ে ধরে। সবার সাথে কথা বলে এগিয়ে যাচ্ছে। চোখদুটো আলভীকে খুঁজলেও দেখার ভাগ্য হলো না। কিছুদূর এগিয়ে যেতেই শুনতে পেল কারো কণ্ঠে,
“কিসমিস।”
মিশ্মি দাঁড়িয়ে গেল। পিছনে ঘুরে আলভীকে দেখে চোখের কোণে পানি চিকচিক করে উঠছে। আলভী নুয়াজকে বলল,
“সাবধানে যেয়ো ভাই। আর পৌঁছে আমাদের জানিয়ো।”
“তোমরা সবাই ভালো থেকো।”
আলভী স্বাভাবিকভাবে হেসেই মিশ্মিকে বলল,
“ওখানে গিয়ে আবার ভুলে যেয়ো না আমাদের। ভালো থেকো কিসমিস।”
মিশ্মি স্মিত হেসে বলল,
“আপনিও ভালো থাকবেন।”
প্রতিউত্তরে আলভী হালকা হাসলো। নুয়াজ মিশ্মিকে তাড়া দিয়ে বলল,
“চলো দেড়ি হয়ে যাচ্ছে।”
সবার উদ্দেশ্যে হাত নাড়িয়ে নুয়াজ মিশ্মির হাতটা শক্ত করে ধরলো। ইমিগ্রেশনের কাছে গিয়ে মিশ্মি পিছনে ঘুরে থমকে দাঁড়ালো। মিশ্মি স্পষ্ট দেখতে পাচ্ছে আলভী কাঁদছে। সাথে ঠোঁটের কোণেও হাসি। হাত নাড়িয়ে মিশ্মিকে বিদায় দিচ্ছে। মিশ্মি মনে মনে বলল,
“আপনি বড্ড বোকা আলভী ভাই। আপনার হাসি আজ চোখের পানিগুলো আড়াল করতে পারছেনা সেটা কি আপনি জানেন? এত কাছের মানুষটি অনাকাঙ্ক্ষিত হবে বুঝিনি আমি। সবার আকাঙ্ক্ষা কি আর সত্যি হয়। আপনি আমার জীবনে সত্যিই ‘অনাকাঙ্ক্ষিত সে’।”
মিশ্মিও ঠোঁটের কোণে হালকা হাসি ফুঁটিয়ে আলভীকে বিদায় জানালো। নুয়াজের হাত ধরে পার হয়ে গেল এয়ারপোর্টের ইমিগ্রেশন। সাথে এক বুক অজানা অনুভূতি। সব অনুভূতির যে নাম থাকতে নেই।

(সমাপ্ত)

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *