আমার ক্রাশ বর !! Part- 34
আজ আরিয়ান ভোরে ঘুম থেকে উঠে তাড়াতাড়ি আয়াতের রুমের বাহিরে গিয়ে আয়াত কে ডাকতে থাকে।
আয়াতকে ডাকাডাকি শুনে পাশের রুম থেকে রাজ উঠে এসে বলে,”সাত সকালে এতো জোড়ে জোড়ে ষাঁড়ের মতো চিৎকার করছিস কেনো। ”
আরিয়ান বলে,”আমি মরি আমার জ্বালায় এতো আসছে লবন দিতে। ”
আয়াত এসে দরজা খুলে দিয়ে বলে,”সাত সকালে কি বাড়িতে চোর এসেছে যে এতো ডাকাডাকি?”
আরিয়ান বলে,”চোর আসবে কেনো চোরের থেকে বেশি কিছু অনু। ”
আয়াত আর রাজ বলে,”ভাবী ঠিক আছে, কি হয়েছে ভাবীর আগে বলবি না। ”
আরিয়ান :অনুর কিছু হয়নি।কিন্তু আমার বারোটা সে বাজাবে।
রাজ আরিয়ান কে বলে,”ভাবী তোর বারোটা সারাজীবন বাজাবে এ আবার নতুন কি?অন্য কোনো কথা থাকলে বল আমাদের। ”
আরিয়ান :তোরা কেমন ভাই আমাকে সাহয্য না করে বাঁশ দিচ্ছিস।
আয়াত বলে,”আচ্ছা রুমের ভেতরে আসবি আগে না কি দরজার বাহিরে থাকবি।”
তিন জন রুমের ভেতরে বসে মনে হয় শোক পালন করছে।
তাদের নিরবতা ভেঙ্গে আরিয়ান বলে,”অনু রাতে ঘুমানোর আগে বলছে সকালে ওর ছেলে আর মেয়ের নাম বলতে হবে না হলে খবর আছে আমার। এখন আমি বাচ্চা দের নাম কোথায় পাবো নাম তো ঠিক করে রাখা নেই।”
আয়াত বলে,”তোহহহ আমরা কি করবো। ”
আরিয়ান :কি করবি এখন তোরা চাচা হবার দায়িত্ব পালন করবি।
রাজ আয়াত বলে,”আমরা চাচা হবার দায়িত্ব অবশ্যই পালন করবো।”
তারপর রাজ আয়াত লেপটপ ফোন নিয়ে বসে বাচ্চা দের নাম খুঁজতে থাকে।আর এদিকে আরিয়ান মনের সুখে বিছানাতে শুয়ে থাকে।
রাজের যে নাম ভাল লাগে আয়াতের সে নাম ভাল লাগে না।তারপর দুজন কিছু নামের লিষ্ট করতে থাকে।
এভাবে অনেক সময় পর দু জন মিলে ছেলের জন্য নাম ঠিক করে (আফনান _ মানে গাছের শাখা প্রশাখা)
আর মেয়ের নাম নিয়ে পড়ে বিপদে এতো নাম কি করবে(গল্পের আসল লেখিকা Angel Frozen Nishi) তারপর দুই জন যমজ তাদের নামের মিল তো থাকতে হবে।
অবশেষে আফনানের সাথে মিলিয়ে মেয়ের নাম আনিফা রাখবে ঠিক করে।
রাজ আয়াত চিৎকার করে আরিয়ান কে ডাক দিয়ে উঠিয়ে বলে,”আফনান আর আনিফা।”
আরিয়ান বলে,”এরা কারা। ”
রাজ বলে,”আফনান আমার ছেলে,আনিফা আয়াতের মেয়ে।”
আরিয়ান বলে,”আল্লাহ তোরা ছেলে মেয়ে কই পেয়েছিস,বিয়ের আগে এ অকাজ কি করে করতে পারছিস ভাবা যায় আমরা কেউ কিছু জানি নাহ।”
রাজ আয়াত আরিয়ানকে ধরে কিল ঘুষি দিতে থাকে আর বলতে থাকে শালার ভাইয়ের কিছু কই তোর পোলা মাইয়ার নাম ঠিক করতেছে তুই উল্টা আমাদের দোষ দিস। এই জন্য বলে মানুষের ভাল করতে নাই।
আরিয়ান বলে,”যাক বাবা অবশেষে বাচ্চা নাম পাওয়া গেছে,ওদের দিকে কোনো খেয়াল না করে এবার আমি যায় বলে, “সোজা চলে যাই।”
রাজ বলে,”দেখছিস কি হাল,শালার ভাই ধন্যবাদ না দিয়ে চলে গোলো।”
আয়াত বলে,”বাদ দে ওর কথা আমি আর তুই ঘুম দেই।”
তারপর দুইজন একসাথে আবার ঘুমিয়ে যায়।
‘
‘
‘
এবার আরিয়ান চুপচাপ অনুর পাশে গিয়ে ঘুমিয়ে পড়ে।
একটু পর অনু ঘুম থেকে উঠে ফ্রেশ হয়ে এসে আরিয়ানকে জিজ্ঞেস করে।
আচ্ছা সারারাত কি ঘুমিয়ে ঘুমিয়ে ভেবেছো তোমার ছেলে আর মেয়ের নাম কি রাখবে?
আরিয়ান উঠে বসে বলে, “হুম সারারাত ধরে চিন্তা ভাবনা করে দুজনের নাম ও ঠিক করা হয়ে গেছে আমার।”
অনু বলে,”তাই বুঝি? তা কি নাম ঠিক করলে রাতভর? ”
আরিয়ান বলে,”ছেলে হলে ছেলের নাম রাখবো আফনান আর মেয়ে হলে মেয়ের নাম রাখব আনিফা। ”
অনু বেবিদের নাম শুনে আরিয়ানকে জড়িয়ে ধরে বলে,”আমার তো বেবিদের নাম দুইটা খুব খুব পছন্দ হয়েছে।আমি তো এই নাম রাখবো বেবিদের।”
আরিয়ানা :ঠিক আছে এই নাম আমরা রাখবো। রাখার জন্যই তো এত কষ্ট করে ঠিক করছি সারারাত কতো চিন্তা করে রাখছি।
অনু আরিয়ান দুজনে মিলে এরপর এক সাথে ব্রেকফাস্ট এর জন্য যায়। সেখানে যাবার পর
অনু সবাইকে ধরে ধরে বলে, “জানেন আপনাদের ছেলে বাবুদের জন্য অনেক সুন্দর নাম ঠিক করেছে। ”
রাজ আর আয়াত বলে,”তাই বুঝি সারা রাত ঘুম নষ্ট করে নাম ঠিক করছে আহারে কি কষ্ট না আমাদের ভাইটা করছে আজ।”
ফুপি বলে, “আহা তোরা ছেলেটাকে কেউ এ ভাবে বলিস না কত কষ্ট করে নাম ঠিক করেছে।”
রাজ বলে,” তা কি নাম রাখছে ভাবী? ”
অনু :ছেলের নাম আফনান,আর মেয়ের নাম আনিফা।
আয়াত :তা এই নামের অর্থ কি ভাবী? নামের প্রভাব কিন্তু বাচ্চাদের উপর ও পড়বে।তাই নামের অর্থ ভাল হওয়া দরকার।
অনু আরিয়ানের কাছে গিয়ে বলে,”আয়াত কিন্তু ঠিক কথা বলছে,তা এই নাম দুইটার অর্থ কি?”
আরিয়ান খুব অসহায় ভাবে ওদের দিকে তাকিয়ে থাকে।
এদিকে দুই ভাই শয়তানি হাসি দিতে থাকে।
আরিয়ান বলে,”আমি নাম রাখছি,নামের এতো মানে নিয়ে কি গবেষণা করছি না কি? ”
রাজ বলে,”একদম ডোপ দিতে চেষ্টা করবি না তুই।শালা শয়তান ভাই আমার।”
আয়াত বলে,”সারা সকাল ধরে নাম ঠিক আমরা করে দিয়েছি আর সব ক্রেডিট নিজে একাই নিতে আসছে।”
রাজ বলে,”ভোর বেলা আমাদের কাছে এসে নাম ঠিক করে নিয়ে গেছে একবার ধন্যবাদ ও দেওয়ার প্রয়োজন করে নাই শয়তান।
এবার মজা বোঝো আমাদের কি?”
আয়াত রাজ কাধে হাত রেখে দুজন বাড়িতে ঝড় তুলে দিয়ে চলে যায়।
অনু আরিয়ানের দিকে রাগী ভাবে তাকিয়ে থাকে।
আরিয়ান :দেখো তোমার নামের দরকার ছিলো।
নাম তো বলেছি এখন আর রাগ করে কি করবে বলো তো জান।
‘
‘
‘
এভাবে তিন ভাইয়ে হাসি মজাতে দিন গুলো কাটতে থাকে।
দেখতে দেখতে অনুর সাধের দিন চলে আসে।
ঐ বাড়ি থেকে সবাই চলে আসছে শুধু আবির আসতে পারে নাই কাজ আছে সেই জন্য।
আজ সকাল থেকে সবাই মিলে অনুর জন্য নানা রকম খাবার রান্না করছে।
দুপুরবেলা অনুকে ডাইনিং টেবিলে বসিয়ে ওর সামনে প্রায় আঠারো পদের রান্না হাজির করে।
তা দেখে অনুর তো জ্ঞান হারানোর অবস্থা।
অনু বলে,”আমি এতো খাবার খেতে পারবো না।”
সবাই বলে,”তোমাকে এতো খেতে হবে না।তোমার যে সব ইচ্ছে হয় খাও বাকি খাবার খাওয়ার জন্য তো আমরা আছি।”
এরপর অনু নিজের ইচ্ছে মতো সব খাবার একটু করে টেষ্ট করে।
খাওয়া শেষে রিমা বলে,”থাম অনু আমি তোর জন্য পায়েস রান্না আছে নিয়ে আসি।”
রিমা রান্না ঘরে এসে দেখে পায়েসের গামলা তে বিড়াল মুখ দিয়েছে।
রিমাকে বাহিরে খালি হাতে আসতে দেখে রাজ আয়াত এগিয়ে গিয়ে বলে,”এই তুমি খালি হাতে কেনো আসছো? ”
রিমা :পায়েসের বাটিতে বিড়াল মুখ দিয়েছে তা আর অনুকে দেওয়া যাবে না।
রাজ বলে,”ভাবী মিষ্টি মুখ করবে না তা কি হতে পারে!
আয়াত চল,আমরা দু জন মিলে কিছু বানিয়ে ভাবীকে খাওয়াবো।”
ভাবী আজ আমাদের হাতের খাবার খেয়ে একদম অবাক হয়ে থাকবে।
রিমা বলে,”বেশি করে রান্না করবে কিন্তু পুরা পরিবার তোমাদের খাবার খাওয়ায় জন্য অপেক্ষা করবে।”
রাজ :আমাদের কোনোকিছু তে কম ভাববে না।আজ সবাইকে অবাক করে দিবো হুহ।
এদিকে রিমা এসে সবাইকে বলে,”অনুর জন্য রাজ আয়াত নতুন আইটেম রান্না করতে গেছে।তাদের ভাবীকে না কি সারপ্রাইজ দিবে।”
আরিয়ান বলে,”আমার ভাইয়েরা রান্না করছে, আমি কি করে বউয়ের আঁচলা ধরে বসে থাকি।”
অনু :আমি কি আঁচল ধরে বসে থাকতে বলছি? যাও ভাইদের সাহায্য করো।আজ তিন ভাইয়ের মান সম্মানের প্রশ্ন আছে।
আরিয়ান :হুহ আমরা কারো থেকে কম না।দেখিয়ে দিবো আমরা তিন ভাই কারো থেকে কম নাহ।
(কি মনে হয় কি হবে সমানে 😒)
‘
‘
‘
চলবে…