অদ্ভুত ভালোবাসা

অদ্ভুত ভালোবাসা ! পর্ব- ১৭

অদ্ভুত ভালোবাসা (১৭)

গল্প_বিলাসী

কিন্তু কিছুতো পরতে হবে কি পরবো এখন?

জেন্স এর ড্রেস নিবো?
কিন্তু ও কি ভাববে?

নীলের গুলো পরবো?
হ্যা
তাই ই করি আর আমার গুলো ধুয়ে দিলে নীল আসার আগেই
শুকিয়ে যাবে

যেই ভাবা সেই কাজ নীলের একটা জিন্স আর একটা টিশার্ট
পরে নিলাম

আর আমার টা ধুয়ে ছাড়িয়ে দিলাম। এসেই শুয়ে পরলাম খাবার
আর কেন যেনো খেতে ইচ্ছে করছেনা

নিশি চলে যাওয়ার পরে অফিসে চলে এলাম

ওহ গড প্রজেক্ট এর ফাইল তো বাসায় ফেলে এলাম কি করবো
এবার?

মাএ তো ১১টা বাজে ২ইইটা বাজার অনেক দেরি আমি বরং
বাসা থেকে নিয়ে আসি

বাসায় গিয়ে দেখি জেন্স বাসায় নেই নিশিটা গেলো কোথায়

রুমে হয়তো গিয়ে যা দেখলাম

এইরে এখন কি হবে?
এখনি আসতে হলো?
এখন কি করবো?

ওনি এইভাবে আমার দিকে তাকিয়ে আছে কেনো? আমাকে কি
বেশি খারাপ লাগছে?

লাগলে লাগুক তাতে আমার কি? ওনি আমার ড্রেস নিয়ে
আসেনি কেনো আর খারাপ লাগলেই ভালো

নিশিকে জিন্স আর টিশার্ট এ পুরাই অন্যরকম লাগছে এই প্রথম
আমি ওকে এইভাবে দেখলাম কিন্তু কিছুতেই বুঝতে দেয়া
যাবেনা যা আমার ভালোলেগেছে

যদি বলি এখনি চেঞ্জ করে নিবে

বাহ ভালোই তো লাভ হলো বিয়ে করে দেখছি অনেক অজানাই
জানা হয়ে যাবে

অবাক হয়ে গেলাম কথা শুনে বলেকি?

বিয়ের পর যে বউ এসে কাপড়ের মধ্যেও ভাগ বসায় আগে জানা
ছিলোনা বলেই ফাইলটা নিয়ে চলে এলাম

নিশির জন্যতো ড্রেস ও কিনা হয়নি কিন্তু আমিতো শাড়ি
দিয়ে এসেছিলাম তাহলে এইগুলা কেনো পরলো?

এখনো শাড়ি পরতে শিখে নি হয়তো।

যাক অফিসে এসে বসলাম লেপটপে মেইল চেক করছি কিন্তু বার
বার নিশির কথা মনে হচ্ছে কি সুন্দর লাগছিলো আজকে আবার
প্রেমে পরে গেলাম

কিন্তু নিশিযে আমার সাথে কথা বলেনা আমি কি করে ওকে
ঠিক করবো?

বেশ হয়েছে ভাগ বসিয়েছি বিয়ের মজা দেখাবো এবার

যাক বাবা এতোক্ষনে সব কাজ শেষ হলো অফিস থেকে বের
হয়ে নিশির জন্য কিছু ড্রেস কিনলাম

বাসায় গিয়ে দেখি নিশি ঘুমিয়ে আছে চেহারা দেখেই বুঝা
যাচ্ছে কেঁদেছে

এই মেয়ের চোখে এতো পানি কোথায় থেকে আসে আল্লাহ ই
ভালো জানে

মাঝেমধ্যে তো মনেহয় চোখের ভিতরে সাগর আছে

স্যার আপনার খাবারটা সার্ভ করেছি

ওকে আমি আসছি নিশি খেয়েছে?

না স্যার সকালেও খেতে ডাকলাম পরে খাবে বলে আর আসেনি
দুপুরে যখন আসলাম দরজা ভিতর থেকে লক ছিলো

তারমানে সারাদিন না খেয়ে আছে? এই মেয়ে আমাকে পাগল
করে ছাড়বে

আচ্ছা তুমি রুমে আমাদের খাবারটা পাঠিয়ে দাও

জ্বি স্যার।

বাবাহ মহারানী তো ভালোই ঘুম দিয়েছে এতো ডাকছি তারপরও
উঠার নাম নেই

নিশিকে টেনে উঠিয়ে বসালাম চলো খাবে

আরে শুতে হবেনা চলো

হাতটা ছাড়িয়ে আবার শুয়ে পরলাম

আবার ওঠালাম
না খেলে কিকরে খাওয়াতে হয় তা আমার জানা আছে বলেই
নিশির দিকে এগিয়ে যেতে লাগলাম

এর কথাতো সুবিধার মনে হচ্ছেনা যা করার আমাকেই করতে হবে
প্লেটটা নিয়ে টেবিলে চলে গেলাম খাওয়াতে গিয়ে আবার
কি করে বসে কে জানে তারচেয়ে ভালো আমি নিজেই খেয়ে
নেই

বাহ ভালোই তো কাজ হলো দেখছি। আমিও খেয়ে নিলাম

খাবার খাওয়া শেষ করে লেপটপ নিয়ে বসলাম আর নিশি
বেলকনিতে গেছে।

কিন্তু কিছুতেই কাজে মন দিতে পারছিলাম না কবে যে
নিশিকে আবার ভালোবাসারর জগতে ফিরিয়ে আনতে পারবো

নাহ আমার যে আর ভালো লাগছেনা নিশি কি আমাকে আদৌ
ক্ষমা করবে?

হে আল্লাহ্ তার বিনিময়ে যা শাস্তি দাও মেনে নিবো নিশি
যেনো আমাকে ক্ষমা করে দেয় এইসব বিরবির করতে করতে
বেলকনিতে গেলাম

একদম আমাকে ছুবেনা বুঝতে পেরেছেন?

যাক বাবা বুঝলো কিভাবে যে আমি জড়িয়ে ধরতে যাচ্ছিলাম

নিশি একবার কি বিশ্বাস করা যায়না একবার ক্ষমা করা
যায়না?


হাতটা ধরে বললাম নিশি একটা বার সুযোগ দাও আমাকে প্লিজ
একটা বার

প্লিজ আমাকে একটা বার বিশ্বাস করো আমি প্রমিজ করছি
আর কোনো ভূল হবেনা

রুমে গেলাম আমার পিছন পিছন নীল ও গেলো

প্লিজ নিশি একটা বার বিশ্বাস করো

সামনে থাকা গ্লাসটা ছুড়ে মারলাম ফ্লোরে পড়ে একদম টুকরা
টুকরা হয়ে গেছে

মি নীল কিছু বুঝতে পেরেছেন?
এই গ্লাসটা যেমন জোড়া লাগানো যায়না তেমনি বিশ্বাস ও
একবার ভেংগে গেলে তা আর করা যায়না

নিশি আমি জানি তোমার খুব কষ্ট হয়ছে আমাকে একবার সুযোগ
দাও

কিছুনা বলেই শুয়ে পরলাম
আমার নীলের সাথে কেনো জানি কথা বলতেই ভালোলাগছে
না

নিশি শুয়ে পরাতে আমি গিয়ে পিছন থেকে জড়িয়ে ধরলাম
আমি জোড় করবো না আর তোমাকে আমাকে ভালোবাসার জন্য
কিন্তু আমাকে ভালোবাসতে বাধা দিওনা

আর আমাকে বাধা দিলেও আমি শুনবো না তা তুমি
ভালোভাবেই জানো
বলেই কপালে একটা চুমু দিয়ে শুয়ে পরলাম

সকালবেলা

ঘুম থেকে ওঠে দেখি নীল আমার সামনে বসে আছে

আবার কি মতলব নিয়ে রেডি হয়ে আছে কে জানে
আমিও ডোন্ট কেয়ার ভাব নিয়ে ফ্রেশ হতে চলে গেলাম

ফ্রেশ হয়ে এসে দেখি নীল তেমন ভাবেই বসে আছে

আজ কি অফিস যাবেনা নাকি

ভাবা শেষ মহারানী এইবার হা করুন

ভ্রু কুঁচকে তাকালাম

এইভাবে তাকিও না জান আমার কষ্ট হয়
বলেই একটা হাসি দিলাম

হুহ বলেই চলে যেতে নিলাম আর হাতটা ধরে ফেললো

মেডাম ৩ঘন্টা যাবৎ বসে আছি আপনার ঘুম থেকে জাগার জন্য
সো এবার নাস্তাটা খেয়ে নিন বলেই মুখে ধরলাম

আমি কোনো প্রতিবন্ধী নই যে নিজের খাবার খেতে পারিনা

হ্যা তাতো কালই বুঝতে পেরেছি কাল সারাদিন আপনার মুখে
হরতাল ছিলো যার জন্য খাবার মুখে যায়নি।

আচ্ছা জান কে এই হরতালটা কি ডেকেছিলো? প্রধানমন্ত্রী
না বিরোধীপক্ষ?

দেখুন আপনার ফালতু কথা শুনার মোড আমার নাই যান এখান
থেকে

তাহলে রোমান্টিক কথা বলি (বলেই মৃদু হাসতে লাগলাম)

আপনাকে আমি আজ মেরেই ফেলবো

ওমা তাহলে আমার বউটা অকালে বিধবা হয়ে যাবে গো বলেই
নেকা কান্না শুরু করলো

আপনি যাবেন এখান থেকে? আপনার অফিস লেট হচ্ছে

তাহলে নাস্তাটা খেয়ে নাও

না আমি খাবোনা

তাহলে আমিও যাবোনা তুমি দাড়াও আমি ড্রেসটা চেঞ্জ করে
আসছি।

( বলেকি সারাদিন বাসায় থাকলেতো আমাকে জ্বালিয়ে
মারবে)

( সন্ধ্যায় দেখা যাবে আমি হসপিটালে না বাবা তারচেয়ে
বেটার খেয়েই নিই)

নাহ আমি নিজে খাবো আপনি যানন

জ্বিনা মেডাম আপনার কোনো কথা আমি শুনছিনা আমার
হাতেই খেতে হবে

( নাহ আর উপায় নাই)

আচ্ছা খাবো

এইতো লক্ষিজান আমার

খাবারটা খেয়ে নিলাম এবার তো যান

যাবো একটা শর্তে

প্রশ্নসূচক ভাবে তাকালাম

গালটা এগিয়ে দিলাম

কোনো লাভ হবেনা বেরিয়ে যান

ওকে ওকে যাচ্ছি মহারানী টেইককেয়ার বলেই কপালে একটা
চুমু দিয়ে চলে আসলাম

যাকবাবা এতোক্ষনে গেলো

জেন্স মেডামের খেয়াল রেখো আর কোনো প্রবলেম হলে
আমাকে সাথে সাথে জানাবে ওকে?

জ্বি স্যার

বাসায় হেটে হেটে সবকিছু দেখছি
সারভেন্ট সবাইকে দেখছি বাট নিন্স টা কোথায়?

ছেড়ে দিলো নাকি?

মেম কিছু খুঁজছেন?

নাহ। তেমন কিছুনা
জেন্স কোথায় বলতো?

এইযে মেডাম হাজির
কি সেবা করতে পারি আপনার জন্য?

বাবাহ যেভাবে বলছো মনেহয় আমি কোনো চিফ গেস্ট?

তার থেকেও বেশি মেম।

হয়েছে হয়েছে আমি কখন থেকে খুজছি তোমাকে?
কোথায় ছিলে তুমি?

তাই বুঝি? তাহলে এতোদিন কিভাবে ছিলে আমাদের ছেরে?
একটু ও মনে হলোনা?

কিছু সময় যে ভাবনা শক্তি টাও হারিয়ে যায়

হ্যা আমি জানি নিশি তোমার কতোটা কষ্ট হয়েছে ঠিক
ততোটা কষ্ট স্যার ও পেয়েছে

তাই নাকি? হ্যা পেয়েছে তো জানি অদিতির ভালোবাসা
পাওয়ার জন্য

না নিশি সেদিন ঠিক কি হয়েছে তুমি জানোনা আর যখন স্যার
জানতে পারলো তখন অনেক দেরি হয়ে গিয়েছিলো

স্যার অনেক খুঁজেছে তোমাকে।
স্যার ঠিক মতো খায়নি ঘুমায়নি জানো আমি সেই ছোট থেকে
স্যার কে চিনি আমার বয়সে স্যারকে কখনো কাঁদতে দেখিনি

কিন্তু তোমাকে হারানোর পর অনেক রাত আমি স্যারকে
কাঁদতে দেখেছি

আচ্ছা জেন্স কি হয়েছিলো সেদিন?

তারপর জেন্স সব কিছু বললো
আমি জানি ভুল তোমাদের কারোর ই নয় সব ঐ অদিতির জন্য
হয়েছে

হুম সব বুঝলাম কিন্তু জেন্স নিন্স কোথায়? ওকে দেখছিনা যে?

ওর জন্যই সব হয়েছে

continue…….
.বিঃ দ্রঃ নিচে Next >> ক্লিক করলে পরবর্তী পর্ব পাবেন..!

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *