ভালোবেসে তারে !! Part- 18
আমার সামনে খালি গায়ে একটা তোয়ালে পেচিয়ে কোনোরকমে পায়ে ভর দিয়ে দেয়ালে ধরে দাড়িয়ে আছে রাফিত।মাত্রই গোসল করে বেরিয়েছে সে।আর আমি ওকে ওয়াশরুমে দিয়ে আসার পর খাটে হেলান দিয়ে বসে ছিলাম।কিন্তুু তাকে দেখে অটোমেটিকালি আমার মুখ হা হয়ে যায়।সে আমাকে যে কিছু বলছে সেটাও আমার কান অবধি পৌছাচ্ছেনা।পৌছাবে কি করে চোখের সামনে এতো হ্যান্ডসাম একটা ছেলের সিক্স পেক বডি দেখলে কি আর হুশ থাকে?তাও মানুষটা যদি হয় আপনার নিজের স্বামী।রাফিত এবার একটু জোরেই বলে,
“আরে দিশা আমাকে তুমি পরেও দেখার সুযোগ পাবে।আমি কোথাও পালাচ্ছি না।এখন আমাকে কাইন্ডলি একটু হেল্প করো প্লিজ।”
তার কথা শুনে আমি কিছুটা লজ্জা পেলাম।তারপর তার কাছে চলে গেলাম তাকে হেল্প করতে।কিন্তুু এখন হয়েছে আরেক ঝামেলা।তার এই অবস্থায় আমার হাত কিছুতেই তার শরীরে রাখতে পারছিনা।একবার ধরতে যাচ্ছি তো আবার হাত পিছিয়ে নিয়ে আসছি।এভাবে কি কাউকে ধরা যায়? ওফফ!
সে আবারও বলল,
“আমি কি সারাজীবন এভাবেই দাড়িয়ে থাকবো?আরে এতো লজ্জা পাওয়ার কি আছে শুনি।আমাকে যেমন এইভাবে আজ প্রথম দেখছো মনে হয়।(বিরক্তি নিয়ে)”
“তো থাকুন না এইভাবে।কেউ মানা করছে আপনাকে?(ডাবল বিরক্তি নিয়ে) ”
এবার লজ্জা-সরমের মাথা খেয়ে তাকে ধরে খাটে নিয়ে বসালাম।তারপর লাগেজ থেকে ওর একটা নেবি ব্লু কালার টি-শার্ট ও একটা টাউজার বের করে তার সামনে রেখে বললাম,
“নিন আমার কাজ শেষ।আমি আর কিছু করতে পারবোনা।”
সে বলল,
“আর একটু কষ্ট করো প্লিজ সোনা।যখন এতোখানি করলে জামাটাও একটু পরিয়ে দাও😐।”
“কিইই জাস্ট ইম্পসিবল।”
“এই দেখো আমি কিন্তুু তোমাকে ঐদিন শাড়ি পরিয়ে দিয়েছিলাম মনে আছে।তো আজকে তার শোধবোধ করো😉।”
“খোটা দিচ্ছেন😒।”
“এমা কিযে বলোনা আমি কি তোমাকে খোটা দিতে পারি বলো😇।”
“হাহ আমি পারবোনা।আমি জানি এটা আপনি নিজেই করে নিতে পারবেন।”
বলে যেই আমি পেছন ফিরে আসতে যাবো ওমনি সে আমার এক হাত ধরে আচমকা টান মারলো।টাল সামলাতে না পেরে আমি সোজা রাফিতকে নিয়ে খাটে তার উপর পরে গেলাম।সে আমার কোমর জড়িয়ে ধরে একদৃষ্টিতে আমার দিকে তাকিয়ে আছে।আর আমি তার থেকে নিজেকে ছাড়াললনোর ক্রমাগত চেষ্টা করে যাচ্ছি।আমি বোঝিনা এই জখম হওয়া হাত-পা নিয়ে এই ব্যাটার এতো তেজ কোথা থেকে আসে।ছোটতেই পারছিনা।তার দিকে ভালো করে খেয়াল করে দেখি তার নজর আমার ঠোঁটের দিকে।আমি রেগে বললাম,
“রাফিত ছাড়ুন আমাকে।আপনার সাথে একটু ভালো করে কথা বলছি দেখে ভাববেন না আমি আপনাকে ক্ষমা করে দিয়েছি।আপনাকে আমি…………”
আর কিছু বলার আগেই আমার ঠোঁটে আমি নরম কিছুর ছোয়া অনুভব করলাম।হ্যা রাফিত আমার চুলের ভিতর তার এক হাত ঢুকিয়ে শক্ত করে ধরে উন্মাদের মতো কিস করে চলেছে।আমার এদিকে আমি তাকে বার বার নিজের থেকে ছোটানোর চেষ্টা করেও ব্যার্থ।মাথাটা পর্যন্ত নাড়াতে পারছিনা আমি।
আগে নাহয় তার এসব মেনে নিতাম।তখনতো আমার প্রতি তার রাগ ছিলো।তাই আমার ইচ্ছা-অনিচ্ছার কোনো মূল্য ছিলোনা তার কাছে।তাই বলে কি এখনও আমাকে এসব মেনে নিতে হবে?আমার ফিলিংস এর কোনো মূল্য নেই তার কাছে।ভেবেই চোখজোড়া বন্ধ করে জল ফেলতে লাগলাম।চোখের জলের কয়েকফোটা আমার গাল বেয়ে গড়িয়ে রাফিতের মুখে পড়তেই সে চট করে আমার ঠোঁটজোড়া ছেড়ে দিলো।আমি তখনো চোখ বন্ধ করে আছি।সে ব্যাস্ত ভঙ্গিতে বলল,
“এই দিশা এই প্লিজ এভাবে কেদোনা।দেখো আম সরি।”
“নিশ্চুপ…….”
“সরি আমি নিজেকে কন্ট্রোল করতে পারিনি।আর কখনো এমন হবেনা বিশ্বাস করো।তাও এভাবে কেদোনা প্লিজ।”
আমি এবার রাফিতকে ছেড়ে উঠে সোজা বেলকনিতে চ গিয়ে রেলিং ধরে চোখ বন্ধ করে কাদতে লাগলাম।সে কেনো এমন করে বারবার আমার সাথে।আমার ক্ষতগুলোকে সে আবারও তাজা করে দিলো।না এভাবে আর চলতে পারেনা।এর একটা বিহিত তো আমাকে করতেই হবে।
এভাবে কিছু সময় অতিবাহিত হওয়ার পর কাধে কারো হাতের স্পর্শ পেলাম।ঘাড়টা হালকা ফিরিয়ে দেখি রাফিত।তাকে দেখে আমি সাথে সাথে আমার চোখের পানি মুছে নেই।সে আমার পাশে এসে দাড়ালো।দুজনের নজরই সামনের দিকে।সে ওভাবে থেকেই শান্ত কন্ঠে বলল,
“আমার থেকে চোখের পানি আড়াল করছো দিশা?তুমি হয়তো জানোনা আমি তোমাকে তোমার থেকেও বেশি বুঝি।”
“আপনার না পায়ে ব্যাথা? হাটতে পারেন না?(ধীর কন্ঠে)”
“ওটাতো তোমার কাছে আসার একটা বাহানা মাত্র।ওতোটাও মচকায়নি পা যে হাটতে পারবোনা।(জোরপূর্বক একটা মুচকি হাসি দিয়ে)”
আমি সামনের দিকে তাকানো অবস্থায়ই তাকে শান্ত গলায় বললাম,
“আমার ডিবোর্স চাই রাফিত।”
আমার কথাটা শুনে সে ততক্ষণাৎ আমার দিকে ফিরে তাকালো।হয়তো খুব বড়সড় একটা ধাক্কা খেয়েছে সে।আমার কাছ থেকে এমন কিছু হয়তো সে আশা করেনি।কিন্তুু আমিও এবার নিজেকে নিয়ে ভাবতে চাই।অনেক হয়েছে অন্যকে নিয়ে ভাবা।……………………..
to be continued…………….