ভালোবাসার প্রতারণা !! Part- 08
অনিক অনেক্ষণ যাবৎ তারা আর প্রভাতকে না দেখে খুঁজতে লাগলো। একসময় সেখানে এসে পৌঁছলো যেখানে প্রভাতের নিথর দেহ পড়ে আছে। অনিক চিৎকার করে উঠল প্রভাতকে দেখে তারপর যত দ্রুত সম্ভব সবার সাহায্যের মাধ্যমে প্রভাতকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে হসপিটালের উদ্দেশ্য রওনা হলো অনেক সময় লাগবে যেতে তাই ঐখানেই প্রভাতের কিছু সাময়িক ট্রিটমেন্ট করা হলো। হসপিটালে পৌঁছে প্রভাতকে আইসিউতে পাঠানো হলো আর অনিক তারাকে ফোন দিল। কিন্তু ওর ফোন বন্ধ অনিক চিন্তায় পড়ে গেল। তারার কিছু হলো না তো। এদিকে তারাকে খুজতেও যেতে পারছেনা। কারণ প্রভাতের কন্ডিশন ভালো না।
1 ঘন্টা পর…..
প্রভাতের অপারেশন সফল হলো। এদিকে প্রভাতের জ্ঞান ফিরতেও 2 ঘন্টা লাগবে তাই অনিক প্রভাতের কাছেই ছিল। তবে তারাকে খুঁজার জন্য লোক লাগিয়েছে ওর ধারণা যারা প্রভাতের এই অবস্থা করেছে তারা তারারও ক্ষতি করতে পারে।
অন্যদিকে….
আকাশ তারাকে নিয়ে হোটেলে আসলো। তারাকে রেডী হতে বলল কারণ ওরা একটু পর বের হবে বাংলাদেশের উদ্দেশ্যে। তারা আকাশের দিকে ঘৃনার দৃষ্টিতে তাঁকিয়ে আছে। আকাশ ওকে এভাবে তাঁকিয়ে আছো কেন বললেই তারা আকাশকে কষে এক থাপ্পর মারে। আর বলে
—– তুমি কোনো মানুষের আওতায় পড়ো না আকাশ। ছি আমার ভাবতেই লজ্জা লাগছে আমি তোমার মতো একজন স্বার্থপরকে ভালোবাসলাম। কিভাবে পারলে নিজের ভাইকে মারতে কিভাবে!
—–হ্যাঁ মেরেছি। তোর জন্য মেরেছি আর কিছু শুনতে চাস!
—–আমি তোমার কাছে থাকবো না। আমি এক্ষুণি প্রভাতের কাছে যাবো। আমার মন বলছে ওর কিছু হবে না। ও আমাকে সত্যিই ভালোবাসে আমি আজ তা বুঝতে পারছি। যেই মানুষটা আমার জন্য নিজেকে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দেয় সে আর যাই হোক না কেন প্রতারক না। প্রতারক তো তুমি। আমার সাথে প্রতারণা করেছো। ঐ দিন তুমি সত্যিই অডিশনে গিয়েছিলে আমার মেসেজ দেওয়ার পর তো একবারো বলো নাই যে তুমি যাবে না। তুমি তো এক কথায় হ্যাঁ বলে দিয়েছিলে।
—–ভুল করেছি। এখন তার সাজা পেয়েছি। যেহেতু ভাই নেই এখন আর কেউ আমাদের মাঝে আসবেনা।আর শুন আমরা দেশে ব্যাক করেই বিয়েটা করে ফেলবো।
—- আমি তোমাকে বিয়ে করবোনা। যে নিজের ভাইকে খুন করতে যায় তাকে বিয়ে তো দূরের কথা তার চেহারাও আমি দেখতে চাইনা।
——তারা!!(চিৎকার করে)
——আজ তুমি আমাকে আটকে রাখতে পারবে না। আমি তার কাছেই যাবো যে আমাকে প্রকৃতপক্ষে ভালোবাসে।
—-পারবিনা।
বলেই আকাশ তারা মুখে স্প্রে করলো সাথে সাথে তারা জ্ঞান হারালো।
এদিকে….
প্রভাতের জ্ঞান ফিরেছে। অনিকের অনেক জোরাজোরি করার পর প্রভাত তখন যা হয়েছে সেই সব কিছু খুলে বলল আর অনিক তখন খুব রেগে গেল। প্রভাত ওকে অনেক কষ্টে শান্ত করলো। আর বলল সে দেশে ফিরতে চায়। তারপর সব কিছু জোগাড় করা হয়।
তারার জ্ঞান ফিরলে দেখে সে গাড়িতে পাশেই আকাশ বসে আছে। সামনে তাঁকিয়ে দেখলো ওরা এয়ারপোর্টে এসেছে। তারা খুব রেগে গেল। আকাশকে বলল
—-আমি এখানে কেন ? আর প্রভাত কোথায়! আমি দেশে যাবো না আমি আগে প্রভাতের কাছে যাবো।
—–কুল বেবি। আমি তোমাকে এখানে নিয়ে এসেছি কারণ আমরা দেশে ফিরে যাব। আর ভাইয়ের চিন্তা করো না আমি খবর নিয়েছি ভাই হসপিটালে এডমিট হয়েছে আর এখন ভালোই আছে।
কথাটা শুনে তারা খুব খুশি হলো। কিন্তু বেশিক্ষণ খুশি টিকিয়ে রাখতে পারলো না। আকাশের পরের কথাটা শুনে।
—–তারা এখন যদি বেশি বাড়াবাড়ি করো তাহলে প্রভাতকে কিন্তু জানে মেরে ফেলবো। সো চুপচাপ আমার সাথে চলো।
—-না তুমি এমন কিছুই করবে না।
—–কি করবো আর কি করবো না তা আমি তোমাকে বলব নাকি। প্রভাতের অনেক বড় ক্ষতি করে ফেলবো যদি আমার কথা তুমি না শুনো।
—–‘ না না আমি রাজি তুমি যা বলবে আমি তাই করব।
—-‘That’s like a good girl
প্রভাতের কথা চিন্তা করে তারা আকাশের সাথে চলে গেল। নিজের যা হয় হোক ওর জন্য প্রভাতের যাতে কিছু না হয়।
বাংলাদেশে ফিরে তারা আর আকাশ সোজা আকাশদের বাড়িতে গেল। সেখানে ওদের দুজনকে একসাথে দেখে সবাই অবাক হয়ে গেল। আকাশের বাবা তাদের জিজ্ঞেস করলো
—–একি তোমরা! আর আকাশ তুমি এতদিন কই ছিলে তারার সাথেই বা কোথা থেকে এলে! প্রভাত কোথায় তারা?
——বাবা উনি আসলে ……
—-”কি বল?প্রভাত কোথায় !
—– আমি এখানে ড্যাড!
তারা পেছনে তাঁকিয়ে অবাক কারণ প্রভাত দাঁড়িয়ে আছে। প্রভাতকে দেখে আকাশ তো অবাকের চূড়ায় পৌঁছে গেল। সে তো তখন তারাকে ভয় দেখাতে মিথ্যে বলেছিল তারমানে প্রভাত সত্যিই বেঁচে আছে!
চলবে।