বজ্জাত বস রোমান্টিক হাজবেন্ড

বজ্জাত বস রোমান্টিক হাজবেন্ড !! Season -3 !! Part- 21

আবিরঃ কাল তুমি কি না করেছো তা জিজ্ঞেস করো,,আমার ইজ্জতের উপর আক্রমণ করেছো তুমি (অসহায় ভাব নিয়ে) কাল একা একটা ছেলে পেয়ে তুমি আমার ইজ্জত (অসহায় ভাব এর সাথে কান্না কান্না ভাব নিয়ে)
আবিরের খুব মজা লাগছে এমন ফাজলামি করতে একটু তিথির সাথে,,,,,
তিথি তার চোখ দুটো বড় করে লাফ দিয়ে খাট থেকে উঠে বলে
তিথিঃ কিইই আমি কখনো না হুম
আবিরঃ জানতাম এখন যে এই ভাবে উলটে যাবে,,,লজ্জা শরম নাই একটা অসহায় ছেলের ইজ্জতের উপর এই ভাবে হামলা করতে ছি(বুকে দুই হাত দিতে আর কান্না কান্না ভাব করে)
তিথিঃ আপনি মিথ্যা বলছেন আমি কখনো এমন করবো না
তিথি প্রায় কেঁদে দেয়,,, আবির বুজতে পারে নাই যে তিথি এই ভাবে কেঁদে দিবে,,,,তিথি কান্না করে করে বলে
তিথিঃ আ,,,মার কি,,,ছু মনে নাই(নাক টেনে টেনে)
আবিরঃ থাকবে কেমনে,আপনি যে এতো খাদক পানি আর নেশা জাতীয় পানি এর মধ্যে পার্থক্য ও বুজেন না,,,,
তিথিঃ আম্মুউউউউ আমার কি হবে৷ এখন আমায় কে বিয়ে করবে,,,, আমার বিয়ে (এই বার তো প্রচুর কেঁদে দেয়)
আবিরঃ (এই রকম এলিয়েন জীবনে দেখি নাই,,,,)তোমায় কেন বিয়ে করবে না হুম,,এই ভাবো যে আমায় কে বিয়ে করবে,,,আমার ইজ্জতের উপর হামলা হয়ছে তোমার তো হয় নাই,,আমি পুলিশ কেস করবো তোমার নামে হুম
তিথিঃ কিইই,,,আ,,,পনি আমার না,,মে কেস করবেন😭
আবিরঃ হুম আমার ইজ্জতের উপর হামলা হয়ছে কি মনে করছো হুম ছেড়ে দিবো নো নেভার
তিথিঃ প্লিজ পুলিশে বলবেন না,,,আমি তো হুশে ছিলাম না,,আমার কিছু মনে নাই প্লিজ
আবিরঃ একটা শর্ত আছে রাজি?
তিথিঃ রাজি রাজি (এক নিশ্বাসে)

আবিরঃ আমি যা যা বলবো চুপচাপ তা তা শুনবে যদি আমার কথার এলো মেলো হয় না তাহলে দেখবে পুলিশ এসে তোমায় নিয়ে যাবে,,,তোমার স্বপ্ন বিয়ে তাও জেলে হবে,,,
তিথিঃ আমি রাজি,,,প্লিজ তবুও পুলিশ কে বলবেন না😭
আবিরঃ হুম গুড,,এখন চুপচাপ এই শরবত খেয়ে নাও,,
তিথি সুন্দর করে বাচ্চাদের মত চুপচাপ খেয়ে নেয়,
আবির মুচকি হেসে বাহিরে চলে যায়,,,,কিছু ক্ষন পর আসে এসে দেখে তিথি মাথায় হাত দিয়ে বসে আছে
আবিরঃ মাথা ব্যাথা কমে নাই??
তিথিঃ হু
আবিরঃ কি হু,,, যাই হোক আমাদের বের হতে হবো কারণ এখন বের হলে সন্ধ্যার মধ্যে আমরা পৌঁছে যাবো,,, আর সবাই হয়তো চলে ও গেছে,,,
তিথিঃ ওকে
আবির আর তিথি মিলে সবার থেকে বিদায় নিয়ে বের হয়ে যায়,,,,পাহাড়ি এলাকা যত দেখে তো মুগ্ধ হয়ে যায় দুইজন,,,,এতো সুন্দর যে পাহাড়ি এলাকা বলার বাহিরর,,,তারা দুইজন একটা কাঁচা রাস্তায় আসে,,কোনো গাড়ি পর্যন্ত ছিলো না,,,,,আবির চারপাশে তাকিয়ে দেখে একটা গাড়ি পর্যন্ত নাই,,আর আকাশ টা ও মেঘলা হয়ে আছে,,,মনে হচ্ছে এখন বৃষ্টি পড়বে,,,,,,
তিথিঃ আচ্ছা আমরা কিসে যাবো
আবিরঃ প্লেনে করে(বিরক্তি ভাব নিয়ে)
তিথিঃ রেলিইইই
আবিরঃ চুপ একদম,,, আর একটা ফালতু কথা বললে কষে চড় লাগামু,,,,
তিথি ভয়ে চুপ হয়ে যায়,,,কিছু ক্ষনঅপেক্ষা করার পর একটা বাস আসে,,বাসে প্রচুর ভিড়,,,বাসের ছাদে বসতে হবে,, তিথি ভয়ে মরে যাচ্ছে,,,আর আবির এই নিয়ে ভয় পাচ্ছে পাহাড়ি এলাকা একটা মেয়ে সাথে যদি আবার বিপদ হয় তাহলে,,,আর কিছু না ভেবে তিথিকে নিয়ে বাসের ছাদে উঠে পড়ে,,,
তিথি ভয়ে শেষ কারণ কখনও উঠে নাই তার মধ্যে তার পাশে একজন লোক বাদর আর হাঁস মুরগী নিয়ে বসছে,,ভয়ে তো তিথি শেষ,,,,, আবিরের পাশে এসে আবিরকে একটু ধরে রাখে যদি পড়ে যায় এই ভয়ে,,,হঠাৎ ঝমঝমিয়ে বৃষ্টি শুরু হয়ে যায়,,,সবাই তাড়াতাড়ি পলিথিন নিয়ে মাথার উপর রাখে,,,আবির আর তিথি ও পলিথিন এর ভিতরে ডুকে যায়,,,
ঠান্ডায় তিথি কাঁপতে থাকে,,,বৃষ্টিতে অনেক টা ভিজে যায়,,আবির তিথিকে একটু জড়িয়ে ধরে যাতে কিছু টা হলে ও কাঁপানি বন্ধ হয়,,,,
অই দিন তিথির মনে আবিরের জন্য অনেক বেশি সম্মান বাড়ে,,,আবিরকে আরো বেশি ভালোবাসে,,,আবির তিথিকে ধমক দিলে ও তিথির অনেক খেয়াল রাখে,,,,ভালোবাসার মানুষ কে সব সময় রক্ষা করতে চায় ভালোবাসার মানুষ গুলো,,, আবির নিজে পিছন থেকে ভিজছে,,,কিন্তু তিথিকে সে ভিজতে দিচ্ছে না যদি জ্বর উঠে সে ভয়ে,,,,তিথি আবিরের দিকে তাকিয়ে আছে,,,, আবিরের সে মুখে আসা পানি গুলো টপ করে পড়া দেখছে,,,,,,
৩ বছর পর,,,,
গরম কফি নিয়ে একটা থাই গ্লাসের সামনে দাঁড়িয়ে আছে আবির,,,,আগে থেকে দেখতে অনেক টা সুন্দর লাগে,,,,,দাঁড়ি গুলো যে আরো বেশি খোচা খোচা,,চুল গুলো যেন আরো একটু বড়,,,,, মেজাজ টা পুরো গরম,,,,তিন বছর আগের কথা গুলো মনে করর মুচকি হাসে
হাসানঃ স্যার মে আই কামিন?

আবিরঃ হুম
হাসানঃ স্যার মিটিং এর জন্য মিটিং রুমে যেতে হবে,,সব কিছু রেডি শুধু আপনি আসলে মিটিং শুরু হবে,,,,
আবিরঃ ওকে আমি আসছি যাও(পিছনে তাকিয়ে)
চোখের পানি মুছে বাহিরের দিকে তাকিয়ে নিজে নিজে বলে
আবিরঃ কোথায় আছো তোতাপাখি??এতো খুজেছি কই আছো???প্লিজ ফিরে আসো প্লিজ তোতাপাখি😢আজ তিনটি বছর ধরে খুজছি কোথায় লুকিয়ে আছো,,,
এই দিকে,,,চট্টগ্রামে
ডান্স ক্লাসে নাচের তালে মেতে ওঠে তিথি,,,,সাদা কামিজ এর সাথে লাল ওড়না,,, আগে থেকে অনেক টা কিউট লাগে,,,গাল গুলো একটু ফুলা,,,চুল গুলো অনেক লম্বা আগে থেকে,,
সবাই তো তিথিকে খুব ভালোবাসে,,,পড়ালেখা মাঝ পথে রেখে ডান্স ক্লাসে যোগদেয় ছয় মাস আগে,,,এতে ও সংসার টা চলে না,,,অনেক গুলো জব দেখে কিন্তু একটা ও হয় না,,,,কাল সকালে একটা অফিসে জব তো হয়েছে কিন্তু জয়েন ডেট কাল থেকে,,,,,
তিথি বাসায় এসে দেখে মামানি বসে আছে চুপচাপ,,,
তিথিঃ কি হলো মামানি এই ভাবে বসে আছো যে কিছু খেয়েছো?
মামানিঃ তিথি আসলে বাসায় চাল নাই,,,,যা ছিলো দুপুরে রান্না করছি আর তোর মামাকে জোর করে খাইয়ে দিলাম, রাতে কি রান্না করবো তা ভাবছি?
তিথিঃ মামানি এই নিয়ে এতো টেনশন উফফ,,একটা ফোন করতে আমি নিয়ে আসতাম,,,আচ্ছা আমি আনতেছি
তিথি নিচে চলে যায়,,১ বছর ধরে অভাবের সংসার,,,মামা হার্ট এ্যাটাক করার পর থেকে দুঃখ যেন নেমে আসে তাদের উপর,,, তিথি ডান্স শিখিয়ে যা টাকা পায় এতে টেনে টুনে চলে,,,জব টা তার জন্য খুব দরকার,,,
রাতে তিথি বারান্দায় চোখের পানি ফেলে আকাশের দিকে তাকিয়ে,,, আর নিজে নিজে বলে
তিথিঃ আই হেট ইউ আবির আই জাস্ট হেট ইউ,,,সব কিছু তোমার জন্য হয়েছে,,,কখনো তোমায় আমি মাফ করবো না কখনো না,,,,,
চোখের পানি টা মুছে রুমে চলে যায়,,,,,গিয়ে মায়ের ছবি নিয়ে শুয়ে পড়ে সকালে নতুন অফিসে জব,,,জবটা যে খুব দরকার তার জন্য,, মামার ওষুধ সংসার এর খরচ সব কিছু মিলিয়ে অনেক চাপ তিথির উপর,, সব সময় হাসি মুখ করে থাকে যাতে মামানি কষ্ট না পায়,,,,
এই দিকে অনেক রাত করে ফিরে আবির,,,,আবিরের মা খাবার নিয়ে বসে আছে,,,আবির উপরে উঠতে লাগে তখন
মাঃ আবির খেতে আয় বাবা
আবিরঃ ক্ষেধে নাই মা
মাঃ এই তিন বছরে প্রত্যেক দিন তুই এমন করিস,,ঠিক করে খাস না আর না ঘুমাস,,,সব সময় ওই মেয়েটা কে খুজিস,,,,,
আবির তার মায়ের কাছে এসে বলে
আবিরঃ তিথিকে আমি খুজে পাবো মা,,,জানি না সে কেন আমায় ছেড়ে গেছে জই গেছে কিছু জানি না,,শুধু জানি ওকে ছাড়া আমি থাকতে পারবো না মা
মাঃ এই ভাবে আর কত দিন,,তিনটি বছর ধরে পাগলের মত খুজছি কোথায় ও পাইলি না তিথিকে
আবিরঃ মা আমার মন বলছে সে আনার আশেপাশে আছে,,তাকে পাবো দেখো,,,,আর শুনো কাল আমাকে চট্টগ্রামে যেতে হবে অই খানে কিছু দিন থাকবো একটা মিটিং আছে,,,

আবির নিজের রুমে গিয়ে শুয়ে পড়ে,,
মাঃ হে আল্লাহ প্লিজ তিথিকে মিলিয়ে দাও আমার আবিরের কাছে,,ছেলে টা যে তিল তিল করে মরছে,,,,
আবিরের আজও ঘুম আসছে না,,,,ফোন টা হাতে নিয়ে ভিডিও টা দেখে,,যেখানে তিথি আবিরকে বলে সে তাকে খুব ভালোবাসে,,ভিডিও টা দেখে পুরানো কথা গুলো মনে পড়ে আর হেসে দেয়,,,আবার মুহূর্তে মুখটা মলিন হয়ে যায়,,
আবিরঃ কেন চলে গেলে তোতাপাখি,,,,,তুমি তো আমায় ভালোবাসতে তাহলে কেন দূরে চলে গেলে কেন? খুব কষ্ট হচ্ছে যে আমার প্লিজ ফিরে আসো,,,,
আকাশ টা ও হয়তো এখন কেঁদে দিবে,,আকাশ টা যে মেঘলা,,,হালকা বৃষ্টি পড়ছে পুরানো কথা গুলো আজ তাড়া দিচ্ছে আবিরের মনে,,,,
তিন বছর আগে এমন ঘটনা ঘটে যে তিথি ঢাকা ছেড়ে চট্টগ্রামে এসে যায়,,,,সব কিছু কে পিছনে ফেলে আসে,,,,আর আবির প্রত্যেক দিন পাগলের মত খুজে তার তিথিকে,,,পুরো ঢাকা শহর খুজে কোথায় ও পায় নাই, অনেক চেস্টা করে তিথিকে খুজার প্রত্যেক বার ব্যত,,আর রিতু ও জানতো না তিথি কোথায়,,,
কিছু কিছু মুহূর্তে আপন মানুষ গুলো ছেড়ে চলে আসতে হয়,,,হয়তো কষ্টে হয়তো অন্যের ভালোর জন্য,,,,, সব কিছু ছেড়ে চলে যেতে হয় যখন কষ্ট টা বেশি বেরে যায়,,
আবির তিথি আজ দুইজনে কষ্ট পাচ্ছে,,, কেউ কারো সাথে নাই কিন্তু আছে পুরানো সৃতি,,,যা ঘুরে বেড়ায় আবির তিথির মনে,,,
চলবে,,,,,,
(দুঃখিত আমি,, আমি কিছু দিন গ্রাম ঘুরতে গেয়েছিলাম আর ওই খানে নেটওয়ার্ক একটু ও ছিলো না,,তাই গল্প দিতে পারি নাই,,)