বজ্জাত বস রোমান্টিক হাজবেন্ড !! Season -4 !! Part- 05
আবির খাটের উপর শুয়ে আছে আর নিজে নিজে হাসছে কি না মজা দেখাইছে তিথিকে,,,,আর বেচারি যা ভয় পাইছে ভয়ে তো পালিয়েছে,,,
তিথি ভাবতে থাকে কি করবে রুমের বাহিরে বসে আছে আর ভাবছে কি করা যায়,,,চিন্তায় শেষ যে সত্যি বললে যদি বাড়ি থেকে বের করে দেয় আর যদি সত্যি না বলে তাহলে তো আবিরের রুমে থাকতে হবে যদি সত্যি সত্যি আবির কিছু করে ভয়ে তো কলিজা শুকাচ্ছে,,
আবির রুম থেকে বের হয়ে দেখে তিথি দাঁড়িয়ে আছে আর মনযোগ দিয়ে কি যেন ভাবছে,,,
আবিরঃ ওহ মিস বকবক সারারাত কি এখানে দাঁড়িয়ে কাটাবে নাকি বাসর করবে
তিথিঃ ছি আপনি এমন কেন?একটা অসহায় মেয়ের সুযোগ নিচ্ছেন লজ্জা করে না,,,
আবিরঃ তাও কথা কিন্তু এই অসহায় মেয়েকে সাহায্য করার নমুনা আমি দেখেছি উল্টো কেস খাওয়াই দিচ্ছে তো
তিথিঃ দেখুন আমি যা করেছি তা ভেবে করি নাই,,(আবিরের দিকে এসে)
আবিরঃ তো এখন যা সত্যি তা বলে দাও,,
তিথিঃ অই আপনি আমাকে এক লাফে আপনি থেকে তুমি তে কেন গেলেন হ্যাঁ আমি তো বড় ইজ্জতদার মানুষ ভাবতাম আর আপনি কি না৷
আবিরঃ মাথায় কি আসলে প্রবলেম আছে হ্যাঁ,,,আপনি থেকে তুমি তে গেলে ইজ্জতদার হয় না অহ রেলি তাহলে আপনি যে ম্যাম সোজা তুই তে গেছেন তাহলে তা কি হ্যাঁ বলুন এইবার
তিথিঃ দেখুন আমি অনেক ইজ্জতদার মানুষ ওকে তাই তো আপনার সাথে সুন্দর করে কথা বলছি,,,
আবিরঃ আপনি নিজে জানেন আপনি আসলে কি বলেন হ্যাঁ
তিথিঃ যাই হোক এতো বকবক আমার পছন্দ না,,কাজের কথা আসি
আবির রাগী লুক দিয়ে তাকায়,,
তিথিঃ আপনি এইভাবে রেগে আছেন কেন?আমি তো ভালো কথা বলেছি আর আপনি কি না হু৷ ।
আবিরঃ আস্তা পাগল
তিথিঃ আচ্ছা শুনেন আমি সব সত্যি বলে দিবো কিন্তু একটা শর্ত আছে
আবিরঃ কি শর্ত?
তিথিঃ আমাকে কিছু দিন এখানে থাকতে দিতে হবে আসলে আমি যে প্রবলেমে আছি তা থেকে বের হতে কিছু টা সময় লাগবে তো যদি রাজি থাকেন তাহলে আর কি,,
আবিরঃ ওকে ফাইন কিন্তু সব সত্যি বলে দিবেন ওকে
তিথিঃ ওকে ওকে আপনি ও কি মনে রাখবেন তিথি ইজ দ্যা গ্রেট,,,
আবিরঃ চুপ একদম এখন আম্মুর কাছে যাবেন আর বলবেন সব ওকে
তিথি নক কামড়াতে থাকে আর ভাবতে থাকে বলবে নাকি,,,
আবিরঃ এই যে কি ভাবছেন?
তিথিঃ না কিছু না আসলে আমি ভাবছি কি জানেন
আবিরঃ না বললে কেমনে জানবো আজিব মেয়ে তো
তিথিঃ তাও কথা গাঁধা গুলোর মাথায় তো আর ভালো কথা যাবে না যাই হোক শুনেন
আবিরঃ ইয়েস বলুন
তিথিঃ যদি আমাকে কেউ বকা দেয় তখন কি করবেন হ্যাঁ
আবিরঃ আপনাকে বকা দিলে আমি কি করতাম আজিব তো
তিথিঃ ওকে তাহলে আর কি বলবো না,,,
আবিরঃ ওকে বলিয়েন না তাহলে আর কি বাসর করবো আসুন
তিথিঃ নাউজুবিল্লাহ নাউজুবিল্লাহ কি সব বলেন,,,
আবিরঃ আপনি জানেন এখন কি করবেন,,আমি তো হেপ্পি বিয়ের টাকা বেঁচে গেছে বউ ও এসে গেছে ঘরে না চাইতে বাহা বাহা
তিথিঃ (লুচ্চা হারামি একটা)
আবিরঃ কি হলো?
তিথিঃ কিছু না চলুন,,
আবির আর তিথি আবিরের বাবা-মায়ের রুমের সামনে যায়,,,দরজায় নক করায় বাবা মা খুলে দেখে তো অবাক
মাঃ কিরে এতো রাতে তোরা সমস্যা হয়েছে কোনো?
আবিরঃ না মা তিথি নাকি কিছু বলবে তোমাদের,,
বাবাঃ সকালে তো বলতে পারতো এতো রাতে কি আছে বলার,,
তিথি ভয়ে মাথা নিচু করে আছে,,,
আবিরঃ বাবা জরুরি ছিলো তাই,,,তিথি বলো কি বলবে,,
মাঃ কি হলো তিথি কিছু বলবে কি?
তিথিঃ আমাকে মাফ করবেন আপনারা প্লিজ
মাঃ কিসের জন্য মাফ চাইছে আবির,,,
তিথিঃ আমি বলতেছি
মাঃ হুম বলো
তিথিঃ আমাকে মাফ করবেন আন্টি,,,আসলে আমার ভুল ছিলো সব আর উনার কোনো দোষ ছিলো না,,,
মাঃ হ্যাঁ বুজছি আমরা আবিরকে মাফ করে দিয়েছি,,,আর আন্টি কি হ্যাঁ আমি তোমার শাশুড়ি মা তো আম্মু ডাকবে কেমন
তিথিঃ আসলে আমাদের বিয়ে হয় নাই,,,আর না আমরা একে উপর কে জানতাম,,,,
মাঃ কি??
তিথি সব কাহিনী খুলে বলে,,,বাবা আর মা শুনে তো থ,,, আর আবির তো তার বাবা মায়ের দিকে একটু অভিমান কুকে তাকায়,,
তিথিঃ আমার কাছে উপায় ছিলো না,,আসলে আমি খুব বিপদে ছিলাম তাই,,
মাঃ তাহলে তোমার বিয়ের সাজ তা,,,
তিথিঃ আমার বাবা স্কুল মাস্টার,,আমরা এই শহরে নতুন আমি বাবা মা আর আমার ছোট ভাই,,কাউকে আমরা জানি না,,কিন্তু এলাকার এক বড় ভাই নামে পরিচিত গুন্ডা লোক চাঁদা তুলে আরো কত কি,,,আমরা আসার পর থেকে আমাদের অনেক বিরক্তি করে,,,বাবা কিছু বলতে ও পারে না আর আমি একদিন রাস্তায় তাকে ধুলাই করছিলাম তাই সে আমার থেকে প্রতিশোধ নিতে আমাকে বিয়ে করতে চেয়েছে,,
আবিরঃ এর মত গুন্ডিকে তো একটা গুন্ডা ছাড়া আর কেউ বিয়ে করতে চাইবে ও না,,
মাঃ আবির চুপ একদম,,,তিথি বলো
তিথিঃ জোর করে বিয়ের প্রস্তাব আনে,,বলে আমি যদি বিয়ে না করি তাহলে আমার বাবা মাকে মেরে ফেলবে ভয়ে আমি রাজি হই পুলিশ কেউ সাহায্য করে না,,,কিন্তু বাবা মা চায় নাই আমার জীবন এইভাবে নষ্ট হোক তাই তারা আমাকে পালাতে সাহায্য করে,,আর বাকিটা তো জানেন
মাঃ আহারে বেচারি মেয়েটা,,
মা তিথিকে জড়িয়ে ধরে শান্তনা দেয়,,
আবিরঃ মা এই মেয়ে মিথ্যা বলেছে যে আমি ওকে বিয়ে করেছি আরো কত কি আর তুমি কি না ওকে,,,
বাবাঃ চুপ আবির মেয়েটা ভয়ে আছে সাহস করে সত্যি বলতে এসেছে আর তুই কিনা,,
আবিরঃ বাহা সত্যি বলেও হাত করে নিচ্ছে,,,
মাঃ আজ থেকে তুমি এখানে থাকবে আমার মেয়ে হয়ে,,,আর হ্যাঁ আবির ওকে একদম খোচা দিবি না ওকে,,
আবিরঃ তোমরা আমাকে বিশ্বাস কেমনে করো নাই তা বলো আগে
বাবাঃ ঝড়ের রাতে একটা মেয়েকে নিয়ে হাজির তাও বধু সাজে তো আমরা ভাববো না,,,
আবিরঃ ইয়া
মাঃ যাও তিথি ঘুমিয়ে যাও
তিথিঃ আমি কই ঘুমাবো?
মাঃ আরু তো শুয়ে গেছে আর বাকি রুমে মেহমান,,,তুমি আবিরের রুমে ঘুমিয়ে যাও আর আবির তুই আজ ড্রইংরুমে ঘুমিয়ে যা
আবিরঃ হোয়াট?মা আর ইউ সিরিয়াস?
মাঃ কেন সমস্যা কই?
আবিরঃ গেস্ট রুম খালি আছে অইখানে পাঠাও আমি আমার রুম কাউকে দিবো না
আবির নিজের রুমে চলে যায় এই দিকে তিথি অসহায় এর মত আছে,,,মা আরিশাকে ডেকে সব বলে আর তার সাথে থাকতে দেয়,,,আজ রাতটার জন্য
আরিশাঃ তুমি আমার ভাবি না?(অসহায় ভাব নিয়ে)
তিথিঃ না
আরিশাঃ আমি কত হেপ্পি ছিলাম দূর,,যাই হোক আমার ফ্রেন্ড হবে এখন ইয়াহুউ
তিথিঃ হুম তা খারাপ না,,কিন্তু তোমার অই সাদা বজ্জাত এর বউ হওয়ার চেয়ে তো ফ্রেন্ড টা হাজার গুনে বেটার,,,
আরিশাঃ হাহা তুমি ও পারো,,,জানো ভাইকে কেউ কখনো এইভাবে কথা বলে নাই তুমি ছাড়া
তিথিঃ তাই তো আস্তা একটা তাল গাছ হইছে যার মাথায় কিছু নাই,,,
আরিশাঃ ভাগ্যিস ভাই নাই না হলে খবর ছিলো
তিথিঃ আমি কাউকে ভয় পাই না হু,,
আরিশাঃ আচ্ছা শুয়ে পড়ো সকালে জমিয়ে আড্ডা দিবো,,,
তিথি শাড়ি টা খুলে ফ্রেশ হয়ে নেয়,,,ঘুমানোর অনেক চেস্টা করে কিন্তু ঘুম আসে না,,,বারান্দায় গিয়ে ঠান্ডা বাতাসে বসে থাকে,,
এই দিকে আবিরের চোখে ও আজ ঘুম নাই,,তার পুরো রুমে ফুল আর ফুল এই সব দেখে অনেক বিরক্তি লাগছে,,
আবিরঃ এই মেয়ে পুরো ড্রামাবাজ,,,একদিন আমার বাসায় থেকে এমন হাল করছে আর থাকলে তো আল্লাহ তাড়াতাড়ি এই মেয়েকে বাড়ি থেকে তাড়া করতে হবে না হলে কাহিনী করে রাখবে আরো
আবির ঘুমিয়ে পড়ে এই দিকে তিথি অনেক রাত পর্যন্ত বারান্দায় বসে আছে ঘুম আসছেই না,,বেশি ঠান্ডা লাগায় সে রুমে গিয়ে শুয়ে পড়ে আর শুতে না শুতেই ঘুম,,,
সকালে তিথি তাড়াতাড়ি উঠে যায়,,,মায়ের সাথে নাস্তা বানাতে লাগে,,,
মাঃ তুমি অনেক ভালো নাস্তা বানাও
তিথিঃ আরে আন্টি আপনি জানেন না আমাদের প্রতিবেশীরা তো আমার নাস্তা খেয়ে যা তারিফ,,,
মাঃ আন্টি কে?
তিথিঃ কেন আপনি,,না মানে আমি তো আপনার ছেলের বউ না অইটা তো মিথ্যা ছিলো তাই আর কি,,,
মাঃ তো কি হইছে আমি তো তোমাকে আমার মেয়ে বলেছি,,আমাকে তুমি ও মা ডাকবে কেমন,,
তিথিঃওকে ডাকবো এখন চলুন খেয়ে নেই আমার পেটে তো ইঁদুর দৌড়াচ্ছে,,
মাঃ পাগলি,,আচ্ছা যাও আবিরকে ডেকে নিয়ে আসো
তিথিঃ আমি???
মাঃ হ্যাঁ তুমি কেন সমস্যা আছে?
তিথিঃ না মানে আমি কিভাবে
মাঃ কিছু হবে না যাও ডেকে নিয়ে আসো বলবে যে সবাই অপেক্ষা করছে তাড়াতাড়ি আসতে
তিথি খুব ভয়ে ভয়ে সিড়ি দিয়ে উঠছে আর ভাবছে আবির যদি তাকে বকে,,
তিথিঃ তিথিরে তুই ভয় পাচ্ছিস ছি ছি মান সম্মান কি সব খাবি,,তিথি দ্যা গ্রেট ভয় পাচ্ছে তাও আবার অই সাদা বজ্জাতকে নো নেভার এইটা করে নাক কাটাবি,,,যা বাচ্চা যা সাহস নিয়ে যা
তিথি নিজেকে সাহস দিচ্ছে আর হাঁটছে,,রুমের দরজা খুলে দেখে আবির নাই,,চারপাশ টা ভালো করে ঘুরে দেখে,,বেডের পাশে আবিরের একটা ছবি,,চুল গুলো কপালে আসা পকেটে হাত আর গাড়ির সাথে হেলান দেওয়া,,ছবিটা নিয়ে তিথি খুব ভাব নিয়ে বলে
তিথিঃ দেখে তো মনে হয় না ভাজা মাছ টা খেতে পারে কিন্তু কে জানে পুরো মাছের কাটা ক চিবিয়ে খেয়ে ফেলে হু,,
আবির ওয়াশরুম থেকে বের হয়,,চুল গুলো মুছছে আর আর নজর পড়ে তিথির দিকে তার ছবি নিয়ে বকবক করে,
তিথি; ইচ্ছে তো করে কাঁচা শুটকি দিয়ে ভুনা করে খাই,,,
আবিরঃ তারপর?
তিথিঃ তারপর আর কি এই বজ্জাত কে দেখলে তো মাসুম তেলাপোকারা ও ভয়ে পালাবে,,মাসুম মাসুম তেলাপোকা তারা ও মানুষ চিনে হু,,
আবিরঃ হুম তারপর?
তিথিঃ হুম তারপর আর কি,,,এই বাড়ির সবাই কত ভালো আর এই বজ্জাত আস্তা তিতকরলা
আবিরঃ আমি তিতকরলা কোন দিক দিয়ে লাগি,,,
তিথিঃ কোন দিকে লাগেন না তা বলেন,,
কথাটা বলে তিথি অবাক হয়ে যায় সে এতো ক্ষন কার সাথে কথা বলছে,,,,ভয়ে ভয়ে পিছনে তাকিয়ে দেখে আবির রাগী লুকে তাকিয়ে আছে,,,
তিথিঃ আ,,,পনি?
আবিরঃ হুম আমি,,,তো কি বলছিলে যেনো?
আবির তিথির দিকে এগিয়ে আসছে আর তিথি পিছনে যাচ্ছে,,,আবির পুরো খালি গায়ে শুধু তাওয়াল পেছানো,,,,আবিরের চুল বেয়ে পানি পড়ছে ভালো করে মুছে ও নাই,,,
আবিরকে এমন দেখে তো তিথির চোখ কপালে,,,,,
চোখ দুটো বন্ধ করে দেয় চিৎকার
তিথিঃ আয়ায়ায়ায়ায়া
তিথির এমন চিৎকার শুনে আবির তিথির মুখ চেপে ধরে,,,,
আবিরঃ ইসসস কি করছেন কি চুপ,
তিথি চোখ খুলে চোখ গুলো বড় বড় করে কিছু বলতে ও পারছে না আবির তার মুখ চেপে ধরে আছে,,,,আবির তিথির অনেক টা কাছে এসে যায়,,,আবিরের চুল বেয়ে পানি গুলো তিথির মুখে পড়ছে,,,আর তিথি তো সে কখন থেকে ছুটার চেস্টা করছে,,,
চলবে,,,,,,,,,