বজ্জাত বস রোমান্টিক হাজবেন্ড

বজ্জাত বস রোমান্টিক হাজবেন্ড !! Season -3 !! Part- 51

তিথি আবিরের বুকে মাথা রাখে অজানা এক শান্তি পায় সে আবিরের বুকে,,, আবির যে বড্ড বেশি ভালোবাসে তার তোতা পাখিকে,,, আবির তিথিকে জড়িয়ে ধরে চোখ বন্ধ করে,, তিথিও তার আবিরের বুকে অনেক শান্তিতে ঘুমিয়ে যায়,,
সকালে,,,,,,
রোদের আলোতে আবিরের ঘুমটা ভাঙ্গে,,চারপাশে আলো হয়ে গেছে,,,আবিরের বুকে ঘুমিয়ে আছে তিথি,,,তিথির কপালে আলতো করে চুমু দেয়
আবিরঃ পাগলী একটা,,,
আবিরের ইচ্ছে করছে তিথিকে জড়িয়ে ধরে ঘুমাতে কিন্তু তারা যে ছাদে তাই আর কি করার আবির উঠে তিথিকে কোলে করে আসতে আসতে নিচে নামে আশেপাশে তাকিয়ে দেখে কেউ আছে কি না,,,কাউকে দেখতে না পেয়ে নিজের রুমে চলে যায়,,তিথিকে বিছানায় শুয়ে দিয়ে ফ্রেশ হয়ে বাহিরে আসে,,দেখে সবাই ব্যাগ রেডি করে হল রুমে এনে রাখে আর সবাই রেডিও
আবিরঃ কি ব্যাপার সবাই রেডি এতো সকাল
বড় বাবাঃ কাল বলেছিলাম যে তাড়াতাড়ি রেডি হতে ভুলে গেলে?? আর তিথি কই?
আবিরঃ তিথি ঘুমাচ্ছে
বড় মাঃ বাড়ির বউ কোথায় তাড়াতাড়ি উঠবে তা না লেট করে ঘুমাতে হয় আর লেট করে উঠে
মাঃ ভাবি আসলে ওর শরীর তো অসুস্থ তাই না হলে অনেক তাড়াতাড়ি উঠে
আবিরঃ বড় মা তিথি কখন উঠে এই নিয়ে তুমি কেন পড়লে বুজলাম না,,,সবাই রেডি বের তো হয় নাই,,,আমি ডেকে আনতেছি ওকে
আবির রাগী ফেস করে অই খান থেকে চলে যায়,,,এই দিকে বড় মা হনহন করে বলে
বড় মাঃ বিয়ে হয়েছে কয়দিন এখন থেকেই বউয়ের জন্য গলা উঁচু করে কথা বলছে হু
আমানঃ মা আবির ছোট থেকে এমন তা জানো অযথা তিথির দোষ দিয়ো না,,,আবিরের রাগ সম্পর্কে সবার ধারণা আছে এখানে তিথি কিছু করে নাই,,,
বড় মাঃ হ্যাঁ এখন তো আমি কিছু বলতে ও পারবো না বললে আমি দোষী
মা আমানকে চুপ করতে বলে ইশারা দিয়ে

মাঃ আচ্ছা সবাই নাস্তা করে নাও আবির আর তিথি ওরা এসে পরে খেয়ে নিবে না হয় গাড়িতে খাবে,,
এইদিকে আবির নিজের রুমে গিয়ে দেখে তিথি ঘুম,,তিথির পাশে গিয়ে বসে কপালে আসা ছোট ছোট চুল গুলো খুব যত্নে সরিয়ে দেয়,,,আবিরের যত রাগ ছিলো সব উদাও তিথির মুখখানি দেখে,,,তিথির ঘুমান্ত চেহারা যে আবিরের কাছে অনেক প্রিয়,,,তিথির কপালে আলতো করে চুমু দিয়ে ডাকে
আবিরঃ তোতাপাখি উঠো আমাদের বের হতে হবে সবাই রেডি অলরেডি
তিথিঃ হুম
আবিরঃ তিথি হুম না উঠতে বলছি,,,
তিথি আবিরকে টান দেয় আবিরের গলা ধরে আবিরের বুকে মুখ গুজে বলে
তিথিঃ উফফ ঘুমাতে দেন তো আর আপনি ও ঘুমান,,আর আমাকে কিস করুন(গালে ইশারা করে হাতের আঙ্গুল দিয়ে)
আবিরের হাসি পাচ্ছে,,,তিথির গালে কামড় দেয় আর না পেরে তিথি লাফিয়ে উঠে গালে হাত দিয়ে বলে
তিথিঃ আপনি রাক্ষস নাকি মানুষ (রেগে)
আবিরঃ আরে বাবা তুমি তো বললে যে কামড় দিতে তাই দিলাম (জিভে কামড় দিয়ে)
তিথিঃ আমি কখন বলেছি হু
আবিরঃ এই তো এখন ঘুমে,,,
তিথিঃ মিথ্যা কথা আমি বলি নাই হু
আবিরঃ ওহ আচ্ছা তাই নাকি তাহলে হয়তো তোমার ভুঁত বলছে তাই আমি দিলাম
তিথিঃ আপনি অনেক খারাপ হু
আবিরঃ হুম এখন রেডি হন ম্যাম আমাদের যেতে হবে
তিথিঃ কোথায়?
আবিরঃ ভুলে যাওয়ার রোগ কবে থেকে হইছে আবার
তিথিঃ হু বলবেন কি না তা বলেন কথা ঘুরাবেন না
আবিরঃ বড় বাবা কাল কি বলেছে আর কাল যে লাফালা ভুলে গেলে
তিথিঃ ওহ হ্যাঁ আমি তো ভুলেই গেলাম কাল আমার বিয়ের কথা বলছে ইশ একটা ভালো জামাই পাইলে হবে আচ্ছা অনলাইনে অর্ডার করলে কেমন হয় নতুন জামাই
আবিরঃ অনলাইনে জামাই মানি??কানের নিচে চড় লাগাবো বেশি ফালতু কথা কইলে,,,
তিথিঃ আমি তো ঠিক বলছি যেহেতু আমার বিয়ে তাহলে আমার তো পছন্দ আছে আর অনলাইনে তো ভালো জা,,,,
আবির আর না পেরে ধমক দেয় তিথির কথা না শুনে
আবিরঃ চুপ একদম সব সময় ফালতু বকবক,,, জামাই থাকতে আবার কিসের জামাই লাগবে হ্যাঁ পায়ের নলা কেটে ফেলবো আমাকে ছাড়া অন্য কারো কথা ভাবলে হুম
তিথি কেঁদে দেয় আবিরের কথা শুনে,,, আর কান্না করে বলে
তিথিঃ নতুন জামাই না হলে আমি বিয়েতে কি পড়বো,,আমি জি পুরান কাপড় পড়ে বিয়ে করবো নাকি
আবিরঃ জামাই বিয়েতে পড়বে মানে কি বলছো নিজে জানো?
তিথিঃ আরে অই যে বিয়েতে পড়ে না সুন্দর সুন্দর শাড়ি গ্রাউন লেহেঙ্গা
আবিরঃ এই সব এর সাথে জামাই শব্দ কোন দিকে মিল বলবে আমায়?
তিথিঃ আমার কাছে তো মিল জামা জামাই মিল তাই বলছি হু,,বুজলে বুজ পাতা না বুজলে তেজপাতা
আবির তো নিজের কপালে থাপ্পড় মারতেছে,,
আবিরঃ এই পাগল কে আমার কপালে পড়ার ছিলো (আসতে করে বলে)
তিথিঃ কিছু বললেন?
আবিরঃ জ্বি না ম্যাম,,,,আপনি তাড়াতাড়ি রেডি হয়ে আসেন সবাই অপেক্ষা করছে
আবির রুম থেকে বের হয়ে যায় জানে এখানে এক মিনিট থাকলে তার মাথা পুরো নিয়ে যাবে এই মেয়ে,,,যে মেয়ে কি বলে নিজে জানে না,,,
রিতুঃ আবির তিথি?
আবিরঃ রেডি হচ্ছে আসছে,
আবির চেয়ার টেনে বসে রিতুর দিকে হালকা ঝুকে জিজ্ঞেস করে
আবিরঃ আচ্ছা রিতু তিথি কি ছোট থেকে পাগল
রিতুঃ কিই?
আবিরঃ না মানে এই যে আজগুবি টাইপের কথা আর জামা কে জামাই বলা এই
রিতু হেসে দেয়,,,,আর বলে
রিতুঃ হুম পুরো,, যে ওর পাল্লায় পড়ে তাকে ও পাগল করে ছাড়ে,,আর আমার আব্বুর মাথায় একদিন ময়লা পানি ঢেলে বলে আব্বুর মাথায় নাকি কি লেগেছে তাই পরিষ্কার করছে
আবিরঃ কিই? পরিষ্কার করতে ময়লা পানি ঢালে?
রিতুঃ আব্বু আমাকে পিকনিক যেতে দেয় নাই আর আমার জন্য তিথিও যায় নাই,,,সে যেতে পারে নাই তাই রেগে এমন করছে
আবির গালে হাত দিয়ে ভাবছে এই মেয়ে আসলে কি,,,,বাচ্চামি তো আছেই কিন্তু দুনিয়ার ফাজিল
মাঃ কিরে তুই নাস্তা না করে কি ভাবছিস
আবিরঃ ভাবছি পাবনাতে টিকেট কবে কাটবো
মাঃ কি বলছিস পাগল হলি নাকি
আমান আর রিতু হেসে দেয়,,,,অই সময় তিথি আসে
তিথিঃ কোনো মজার কিছু ঘটলো যে রিতু তুই হাসছিস,,,
আমান আরো জোরে হেসে দেয়,,আবির আপেল একটা নিয়ে আমানকে ছুড়ে মারে আর বলে
আবিরঃ চুপ তুই হারামি না হলে দেখবি
আমানঃ আমি কি করলাম ভাই,,,দেখ তোর বউ না বলছে,,

আবিরঃ কিছু না ম্যাডাম আপনি নাস্তা করে নেন,,
তিথিঃ আজিব তো কিছু বলি নাই আর তারা দাঁত দেখিয়ে হাসছে মনে হয় হারপিক দিয়ে আজ দাঁত ব্রাশ করছে,,,
আবিরঃ তিথি চুপ
তিথি ভেংচি কেটে মায়ের পাশে বসে,,,নাস্তা খেতে থাকে বাবা বড় বাবা ওরা উঠে যায় মা ও বড় মা খাবার কিছু প্যাকেট করছে গাড়িতে খাওয়ার জন্য,,
রিতু তিথির গালের দিকে তাকিয়ে বলে
রিতুঃ কিরে তোর গালে দাগ কিসের?
তিথি তাড়াতাড়ি গালে হাত দিয়ে ফেলে আর আবির্র দিকে তাকায়,,,আবির কিছু বলতে যাবে তখন মামানি বলে
মামানিঃ দেখি কি হইছে গালে?
তিথিঃ আয়া মা,,মানি কিছু না মশা কামড় দিয়েছে তাই হয়তো
রিতু হেসে দেয়,,,আমান আবিরকে গুতা দিয়ে বলে
আমানঃ মশা টা কি তুই? (আসতে করে)
আবিরঃ আমি কেন মশা হবো হাট
আমানঃ অই শুন আমাও বউ আছে আমিও জানি ওকে,,আর নাটক করিস না আমার সামনে
আবিরঃ বেশি কথা বলবি তোর বউকে বলবো তুই তিয়াকে ও এমন মশার দাগ করেছিস গালে
আমানঃ হারামি আমি কবে করলাম? সে না আমাকে সবার সামনে করছে
আবিরঃ দেখ তুই করেছিস নাকি সে কথা তো একটাই,,,হাহা
আমানঃ তুই ভাই না শত্রু একটা,,
আবিরঃ হুম এখন বাচা যা
আমানঃ মামানি আবিরের রুমে অনেক মশা হয়তো কামড় দিচ্ছে তাই বাদ দাও আমরা বের হবো তো আবার রিতুর ফ্যামিলি কে ও মাঝ পথ থেকে গাড়িতে নিতে হবে,,
মামানিঃ আচ্ছা আমি যাই ওদের সাহায্য করতে তিথি তাড়াতাড়ি নাস্তা শেষ করে আয়
তিথি নাক ফুলিয়ে আবিরের দিকে তাকায়,,
আবিরঃ আমান চল দেখি গাড়িতে সব ব্যাগ জিনিস পত্র তুলেছে কি না,,,
আমানঃ হ্যাঁ বাঁচার জন্য তো এখন ভাগতে হবে
আবিরঃ কি বললি?
আমানঃ আরে দূর কিছু না চল
রিতুঃ আমান রিমানকে ও সাথে নিয়ে যাও আর শুনো ওর ব্যাগে একটা বক্স আছে যেখানে আমার কানের দুল রাখছি অইটা বের করে নিয়ো
আমানঃ ওর ব্যাগে আপনার কানের দুল কেন ম্যাডাম
রিতুঃ ভুলে রাখছি বাজি এতো প্রশ্ন কেন করো যা বলছি করো যাও
আবিরঃ আপনাদের ঝগড়া শেষ হলে আসিয়েন,,,,
তিথিঃ অই বজ্জাত ওদের মধ্যে নাক কেন গলাছেন?
আবিরঃ আসছে ম্যাডাম আফ্রিকা
তিথিঃ কিইইই?আমি আফ্রিকা???

আবিরঃ উফস সরি আফ্রিকার জঙ্গলি
আমান আর রিতু হেসে দেয়,,
তিথিঃ হারামি তোর সাহস হয় কি করে আমাকে এই বামে ডাকার,,তোর চৌদ্দ গুষ্টি আফ্রিকার জঙ্গলি,,,
আবিরঃ ইয়া রাইট আমার চৌদ্দ গুষ্টি এর মধ্যে আপনিও পড়েন ম্যাম সো আপনি নিজে শিকার করলেন আপনি
তিথিঃ হারামি একটা
আবিরঃ যেমন হই আপনার জামাই হু
তিথিঃ বজ্জাত হারামি
রিতুঃ ঝগড়া উফ করো চলো সবাই
সবাই বাহিরে গিয়ে দেখে মিনি বাস একটা দাঁড়ানো
আবিরঃ গাড়ি নেওয়া হবে না বাবা
বাবাঃ না আমরা সবাই এই গাড়ি করে যাবো আর গাড়ি গুলো ড্রাইভাররা নিয়ে আসবে,,,
তিথিঃ হুররেএএএএ কি না মজা হবে সবাই এক সাথে যাবো আর গান বাজনা আমি গান গাইবো কি মজা
আবিরঃ হইছে ম্যাডাম যে গান গাইবে আর আজ থাকা হবে না,,এই পাগল মেয়ে সব সময় বকবক করেই যাবে,,
চলবে,,,,,,