বজ্জাত বস রোমান্টিক হাজবেন্ড !! Season -3 !! Part- 41
রিতু সবার কাছে আবার যায় গল্প করতে থাকে এই দিকে তিথি তো মহা হেপ্পি রিমানকে পেয়ে,,রিমানকে চুমু দিচ্ছে বারবার,, ওর গালে হাত দিয়ে টানছে, আবির তাকিয়ে আছে তিথির কান্ড গুলো,,,আবিরের বাবা-মা সবাই তিথির মুখে এই হাসি দেখে অনেক খুশি,
আমানঃ আবির
আবিরঃ হুম বল
আমানঃ জানি তুই কি ভাবছিস এই তো যে রিতুর সাথে আমার বিয়ে কি ভাবে এই সব?
আবিরাঃ এতো দিন অপেক্ষা করেছি কয়েক ঘন্টা না হয় আর একটু করবো সত্যি টা শুনার জন্য,,,,
আমানঃ জানি ভাই তুই অনেক কষ্ট পেয়েছিস,,সব কিছু অনেক আগে ঠিক হয়ে যেতো শুধু সামান্য ভুলের কারণে,,,
আবিরঃ আমান বাদ দে এখন এই সব,,আমি আমার তিথিকে তো পেয়েছি শুধু একটু ভুল আছে যা তাড়াতাড়ি ঠিক হবে,,,
আমান আর আবির তাদের কথা বলতে থাকে কাজের ব্যাপারে,,এই দিকে রিতু তাকিয়ে আছে তিথির দিকে পুরো বাচ্চাদের মত করছে,,,তিথির মুখে যে হাসি তা দেখার জন্য যে রিতু অনেক অপেক্ষা করছে,,,
মামানিঃ জানিস রিতু তুই যখন ওকে ছেড়ে গেছিলি তখন আমার মেয়েটা হারিয়ে গেছে,,,ওর মুখের হাসি যেন হারিয়ে গেছে,,তেমন কারো সাথে কথা পর্যন্ত বলতো না,,চুপচাপ রুমে পড়ে থাকতো
রিতুর চোখ বেয়ে পানি গড়িয়ে পড়ে,,,রিতু মামানিকে জড়িয়ে ধরে বলে
রিতুঃ সব আমার জন্য মামানি,আমি দায়ী ছিলাম তিথির সব কেড়ে নিতে,,,
মামানিঃ একবার গিয়েছিলি আর গেলে কষে চড় দিবো বুজলি,,,,,
রিতু মামানিকে জড়িয়ে ধরে,,
রিতুঃ আর যাবো না মামানি,,
কিছু ক্ষন পর সব মেহমান যেতে লাগে,,,সবাই হাসি মুখে বিদায় দেয় সবাই কে,,রিতু আবিরের দিকে তাকায় আবির বুজতে পারে কেন,,আবির তিথিকে ডেকে রুমে নেয়
তিথিঃ উফফফ আমি রিমান এর সাথে খেলছি আর আপনি দিচ্ছেন না কি হিংসেটু আপনি
আবিরঃ পরে খেলিও আমার কিছু কাজ আছে তোমার সাথে,,সো আসো
তিথিঃ হু
তিথি রুমে গিয়ে দেখেই আমান আর রিতু অলরেডি সেখানে,,
তিথিঃ ওরা এখানে?
রিতু উঠে দাঁড়ায়,,আবির দরজা টা লাগাই দেয়,,
রিতুঃ তিথি তোর সাথে আমার কিছু আছে আসলে শুধু তোর সাথে না আবিরের সাথে ও,,আমি যা বলতে চাই তা তোদের দুইজন জানা খুব প্রয়োজন,,,
তিথিঃ কি এমন কথা যে খুব প্রয়োজন?,,,
রিতুঃ তিন বছর আগে আসলে কি হয়েছে তা?
তিথিঃ যা হয়েছে তা আর আমি শুনতে চাই না,,,ওই দিন গুলো আমি মনে করতে চাই না প্লিজ রিতু
রিতুঃ তুই যা জানিস দেখেছিস সব কিছু একটা সাজানো নাটক ছিলো অই দিন,,,
তিথিঃ মানে?
রিতুঃ মনে আছে আমি তোকে যাওয়ার আগে বলেছিলাম যে আমরা যা কিছু দেখি তাও অনেক সময় সত্যি নাও হতে পারে আর আমরা যা কিছু করি তার জন্য আমাদের দুর্বলতা থাকতে পারে,,
তিথিঃ হ্যাঁ তো?
রিতুঃ ভার্সিটির প্রথম দিন থেকেই আমি একজনকে পছন্দ করা শুরু করেছিলাম,,তাকে আস্তে আস্তে ভালোবেসে ফেলছিলাম,,,
তিথিঃ কাকে?
রিতুঃশিহাব কে,,,,যখন আমরা সবাই ভার্সিটির টুরে গেছিলাম তখন আমার আমি শিহাবকে আমি পছন্দ করি তা সে জানে,,,টুর থেকে আসার পর আমাদের মধ্যে কথা হতো,,,শিহাব আমাকে প্রোপজ ও করে আমি সাথে সাথে হ্যাঁ বলি,,শিহাব এর শর্ত একটাই এই রিলেশন এর ব্যাপারে যাতে কেউ না জানে তুই ও না, আমি শিহাবের কথায় রাজি হয়ে যাই,,,শিহাবের প্রতি আমি দুর্বল হয়ে পড়ি একদিন শিহাব আমাকে প্রস্তাব দেয় একটা
শিহাবঃ রিতু তুমি আমায় ভালোবাসো তাই তো?
রিতুঃ হ্যাঁ শিহাব আমি তোমায় অনেক ভালোবাসি অনেকটা,,,
শিহাবঃ প্রমাণ করতে পারবে?
রিতুঃ ভালোবাসা আবার প্রমাণ করা যায় নাকি,,,ওকে বলো তুমি যদি চাও আমার ভালোবাসার প্রমাণ দিতে তাহলে আমি দিবো
শিহাবঃ আমার সাথে একদিন থাকতে হবে,,মানে রুম ডেটিং করতে হবে তোমায়
রিতুঃ মানে কি?শিহাব মাথা ঠিক আছে তোমার?কি সব বলছো?বিয়ের আগে এই সব একদম ঠিক না
শিহাবঃ আমি জানতাম তুমি পারবে না,,রিতু তুমি যদি আমায় ভালোবাসতে তাহলে তুমি রাজি হতে,,কিন্তু তুমি আমায় ভালোবাসো না,,
অই দিন শিহাব চলে যায়,,,আমি অনেক বার কল করেছিলাম সে ধরে নাই,,,মেসেজ এর রিপ্লাই নাই,,এই ভাবে দুই দিন কেটে যায় ওকে ছাড়া আমি থাকতে পারছিলাম না,,ভালোবাসি ছিলাম যে,,ওর শর্তে আমি রাজি হয়ে যাই তিথি,,এই বিশ্বাসে অই দিন আমি ওকে নিজেকে দিয়েছিলাম ওই ভেবে যে সে আমাকে ভালোবাসে,,কিন্তু আমি ভুল ছিলাম তিথু আমি ভুল ছিলাম,,ওই দিন শিহাব আমার ভিডিও বানিয়ে ফেলে যার সুযোগ নেয় শিহাব আর নিয়া ও
তিথিঃ নিয়া?
রিতুঃ হ্যাঁ তিথি নিয়া আর শিহাব মিলে আমাকে তাদের পাদে ফেলে,,,,তারা দুইজন প্লেন করে সব,,,আমাকে ওই ভিডিও এর ব্লাকমেইল করে যদি আমি তাদের কথা মত কাজ না করি তাহলে সে অই ভিডিও পাবলিক করে দিবে, আমার পরিবার বাবা-মা সবার মাথা হিট হবে,, ভুল আমি করেছি পাপ আমি করেছি তার শাস্তি আমার বাবা-মা পাক তা আমি চাই না,,তাই বাধ্য হয়ে ওদের কথা মত আমি অই দিন অই পিক গুলো আমি ওদের কথা মত দিয়েছিলাম
তিথি রিতুর হাত ধরে বলে
তিথিঃ কিসের পিক?রিতু কিসের পিক বল
রিতুঃ ওই দিন তোকে যে পিক দিয়েছিলাম আবির আর নিয়ার পিক তা নিয়া কম্পিউটারে করেছে আর আমাকে দিয়েছে যাতে তোকে দেই,,আবিরের সম্পর্কে প্রত্যেক টা কথা সব মিথ্যা ছিলো আমি ওই দিন নিয়া আর শিহাবের কথায় অই সব আমি বলি,,,অই দিন সব ছিলো মিথ্যা আবির আর নিয়ার মধ্যে কিছুই ছিলো না,,
তিথি পিছনে যায়,,আমতা আমতা করে বলে
তিথিঃ তা,,হলে ওই দিন আবির নিয়াকে যে বললো সে তাকে ভালোবাসে তাহলে
রিতুঃ সব মিথ্যা ছিলো তিথি,,,আমি যখন তোকে অই সব বলছিলাম তখন কলে নিয়া আর শিহাব ছিলো তারা বুজে গেছে যে তুই পিক অই সব কথায় বিশ্বাস করিস নাই,,তুই আবিরের উপর বিশ্বাস হারাস নাই তাই নিয়া অই জায়গায় যায় যেখানে আবির আছে,,
আবিরঃ হ্যাঁ ওই ফিন নিয়া আমায় বলে যে সে একটা কাজে এসেছে আর যখন জানে যে আমি তোমায় প্রোপজ করবো তখন সে আমায় বলে কি কি বলবো,, সে বলে আমি তাকে তিথি মানে তুমি ভেবে বলতাম তাই আনি বলেছিলাম
রিতুঃ এই কিছু নিয়া আর শিহাবের প্লেনে হয় তিথি আবিরের কোনো দোষ ছিলো না,,সব কিছু আমার জন্য হয়েছে,,অই দিন আমি সব কিছু হারিয়ে ফেলি তিথি সব,,,,তোকে তার পরের দিন আমি অনেক খুজি কিন্তু তুই ছিলি না,,,নিজের কাছে নিজেই ছোট হয়ে যাই,,,অনেক খুজেছি তোকে অনেক পাই না,,,আমি এতো টা ডিপ্রেশনে ভলে গেছিলাম যে রুম থেকে বের হতাম না,,,,প্রায় ২ মাস পর আমি জানতে পারি আমি প্রেগন্যান্ট,,,,তখন আমি আরো শেষ হয়ে গেছিলাম তিথি আরো বেশি,,
রিতু নিচে বসে পড়ে,,আমান রিতুকে আকড়ে ধরে রাখে,,
রিতুঃ যখন পরিবারের জানে আমায় প্রচুর মারে ভাইয়া আব্বু,,আপু অনেক কথা শুনায় আমায় আম্মু ও রাগে আমায় মারে,,,সবার নাক কেটে দিচ্ছি এই ভেবে তারা আমায় খুব মারে,,,আমার বাচ্চাকে মেরে ফেলতে চায়,,,আমি বিয়ের আগে প্রেগন্যান্ট তা যাতে কেউ না জানে অই দিন রাতে আমাকে বাসা থেকে বের করে দেয়,,,অই সময় আমি খুব একা ছিলাম তিথি খুব
তিথি রিতুর পাশে এসে বসে,,রিতু কান্নায় কিছু বলতে ও পারছে না,,,
রিতুঃ পথ দেখছিলাম না কি করবো,, আমার পরিবার আমাকে তাদের কাছে রাখে নাই তাদের সম্মান নষ্ট হবে তাই,,,আর শিহাবের কাছে যাই নাই কারণ সে এই বাচ্চা কে মেনে নিবে না,,কারণ সে তোকে ভালোবাসে,তোকে পাওয়ার জন্য এই সব করেছে,,,,যে ছেলে আমায় ভালোবাসে না সে আমার বাচ্চা কে নিজের নাম কখনো দিবে না,,পথ না পেয়ে আমি আত্নহত্যা করতে গেছিলাম
তিথিঃ পাগল তুই?
রিতুঃ তিথি অই সময় এমন ছিলো যে এই ছাড়া আমার কাছে কিছু ঠিক মনে হয় নাই,,কিন্তু পারি নাই কারণ আমান আমায় বাঁচায়,,,আমি আমানের কথা না শুনায় সে আমায় থাপ্পড় মারে,,আমি তাকে জড়িয়ে ধরে অই দিন প্রচুর কান্না করি,,সব বলার পর আমান আমার হাত ধরে কাজি অফিসে নিয়ে যায় আর তখন বিয়ে অই খানে বিয়ে করে আমি বিয়ে করতে চাই নাই,,কিন্তু জানতে পারি আমান আমাকে ভালোবাসে যখন আমাদের প্রথম দেখা হয় তখন থেকে,, আমার বাচ্চাকে নিজের নাম দেয়,,আমাকে নিয়ে আমেরিকা চলে যায় যাতে কেউ জানতে না পারে যে রিমান আমানের নয় শিহাবের ছেলে,,,
আবির হাতের পাশে একটা ভাস ছিলো সেটা ফেলে দেয়
আবিরঃ আমি শিহাব আর নিয়াকে ছাড়বো না,,আমাদের প্রত্যেক এর লাইফ সে তিন বছর কেড়ে নিয়েছে,,
আমানঃ আবির মাথা গরম করে লাভ নেই,,ঠান্ডা মাথায় সব করতে হবে,,,কিন্তু একটা রিকুয়েস্ট তোদের কাছে
আবিরঃ কি?
আমানঃ রিমানের আসল পরিচয় যাতে কেউ না জানে,,স্পেশাল তো শিহাব তো হয়,,রিমান আমার সন্তান ব্যস এই টুকু,,,আমি চাই না কেউ জানুক সত্তিটা তোদের বলা হয়েছে কারণ তোদের জীবনের সাথে জড়িতো,,
আবির আমাকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে
আবিরঃ তোর জন্য আজ আমার মনে অনেক সম্মান নিয়েছে,,তুই একজন ভালো মানুষ তা আনি জানতাম কিন্তু এতো দয়ালু তা জানা ছিলো না,,ভাই তুই যা করেছিস তার তুলনা হয় না,,
আমানঃ আমরা যাকে ভালোবাসি তার সব কিছুকে ভালোবাসতে হয়,,আমি রিতুকে প্রথম দেখা থেকে ভালোবেসে ছিলাম তোকে বলি নাই কারণ তখন তুই আর তিথি একে অপরে কে সহ্য পর্যন্ত করতে পারতি না,,আর যখন বলতে যাবো তখন জানি রিতু প্রেগন্যান্ট অই সময় আমার যা ঠিক মনে হয়েছে আমি তাই করেছি,,
তিথি রিতুকে জড়িয়ে ধরে কেঁদে দেয়
তিথিঃ আম সরি রিতু সব কিছু আমার জন্য হয়েছে,,ওরা আমার উপর প্রতিশোধ নিতে তোর সাথে এমন করেছে আমাকে মাফ করে দে,,,
রিতুঃ মাফ চাওয়ার থাকলে আবিরের কাছে চা,,আমার কাছে নয় এই সব কিছুতে আবির কষ্ট পেয়েছে যেখানে তার কোনো দোষ ছিলো না,,
তিথি আবিরের দিকে তাকায়,,,আবির কিছু বলে না,,
আমানঃ আবির সব কিছুর জন্য দায়ী শিহাব আর নিয়া,,এখন আমাদের এমন ভাবে ওদের কে ওদের মত শাস্তি দিতে হবে,,,আর রিমান এর সত্তিটা ও যাতে না জানে,,,
আবিরঃ হুম
আমানঃ এখন আমাকে আর রিতুর যাওয়া উচিত তুই আর তিথি নিজেদের মধ্যে সব ঠিক করে নে,,,
রিতুঃ তিথু অযথা তুই আর আবির কষ্ট পেয়েছিস,,প্লিজ নিজেদের মধ্যে এখন সব ঠিক করে নে,,তুই আর আবির নিজেদের সম্পর্ক টা আবার নতুন করে শুরু কর,,,সত্যিকারের ভালোবাসা কেউ সহজে পায় না তিথি,,,প্লিজ আর কষ্ট দিস না ওকে
আমান রিতুকে নিয়ে চলে যায়,,,তিথি কান্না করতে থাকে তার সামান্য ভুকে এতো কষ্ট পেতে হয় দুইজনকে,,আবির তিথির পাশে এসে তিথির হাতটা শক্ত করে ধরে রাখে,,তিথি আবিরকে জড়িয়ে ধরে কেঁদে দেয়,,
চলবে,,,,,,