তোমাকে খোঁজে !! Part- 07
নেহাল চোখ রাঙিয়ে উঠে আদিবার সামনে থেকে চলে যেতে লাগে।আর আদিবা নেহালের হাতটা ধরে বসে।আর বলে, আমি সত্যিই ভুল করেছি নেহাল।প্লিজ আমায় ক্ষমা করে দিন।আমাকে আপনি আরেকটা সুযোগ দিন আমার ভুলগুলোকে শুধরে নেওয়ার জন্য। নেহাল মুহূর্তের মাঝেই আদিবার এমন পরিবর্তন দেখে অবাক হয়। আদিবার চোখ মুখের দিকে তাকিয়ে দেখে যেখানে সত্যের কোনো ছাপ নেয়।নেহাল বুঝতে পারে আদিবা আবার তার সাথে অভিনয় করছে।তাই নেহাল মনে মনে বলতে থাকে, আদিবা আবার ছলনা করছো আমার সাথে? এতোটাও বোকা আমি নই।যে তোমার এসব ছলনা আমি বুঝবো না।
আদিবার ঝাঁকানিতে নেহাল নরে ওঠে।বলুন আমাকে আপনি ক্ষমা করে দিয়েছেন? আদিবার প্রশ্নের জবাবে নেহাল কি উত্তর দেবে তা বুঝে উঠতে পারে না।একদিক থেকে আদিবাকে বিশ্বাস না হলেও ভালোবাসার টানে নেহাল আদিবাকে কস্ট দিতে চাই না।তাই আদিবার গালে হাত রেখে বলে, ঠিক আছে তোমাকে আমি বিশ্বাস করলাম।এবার অন্তত আমাকে ঠকিও না।কথাটা বলেই নেহাল রুম থেকে বেড়িয়ে যায়। আর নেহাল চলে যাওয়ার পর আদিবা ঠোঁটে বাঁকা হাসি হাসে।মনে মনে ভাবে নেহাল সত্যিই বড্ড বোকা।কত্ত সহজেই কিছু বলে ওকে বিশ্বাস করানো যায়।
ওদিকে সায়ান ও তার বাবা-মা ঘটকের সাথে নেহালের বাড়িতে আসে।যেই ছবিটা সায়ানের পছন্দ হয়েছিল বলে উঠিয়েছিলো সেটা মিতির ছিলো।তাই বিয়ের ব্যাপারেই তারা এসেছে।বেল বাজতেই মিতি গিয়ে মেন ডোরটা খুলে দেয়। আর আদিবা রুমে বসে বেল বাজার শব্দ শুনে বুঝতে পারে মেন ডোর খোলা হয়েছে।আদিবা ভাবে, চাবিটা এখন কোথায় রাখবে সেটা দেখা দরকার।তাই আস্তে আস্তে আদিবা বিছানা ছেড়ে উঠে সিঁড়ির কাছে হেটে আসে।দেখে তিন-চারজন মেহমান অপজিট দিকে মুখ ঘুরানো বসে আছে।তাদের কন্ঠস্বর অনেকটা চেনা চেনা লাগছে আদিবার কাছে।তাহলে কি তারা আমার পরিচিত? কথাটা ভাবতেই নেহাল এসে পিছনের থেকে আদিবার কাঁধে হাত রাখে।আর আদিবা ভয় পেয়ে কেঁপে ওঠে।
ভয় ভয় চোখে পেছনের দিকে ঘুরে তাকাতেই নেহাল আদিবাকে কোলে তুলে নেয়। তারপর রুমে নিয়ে গিয়ে বিছানায় বসিয়ে দিয়ে বলে, বাইরে কেন গিয়েছিলে? ডাক্তার কি বলেছে যানো? বলেছে তোমার পেটের এই ক্ষত না শুকানো পর্যন্ত হাঁটা-চলা, ব্যায়াম কিছুই তুমি করতে পারবে না।এমনকি আমার অবাধ্যও হতে পারবে না।তাই এখানেই বসে থাকো।বাড়িতে কিছু মেহমান আসছে আমি কথা বলে আসি।
তারপর নেহাল দরজাটা বাইরে থেকে বন্ধ করে দিয়ে চলে যায়।
সায়ানের বাবা-মায়ের সাথে কথা বলে নেহাল।তাদের মিতিকে খুব পছন্দ হয়েছে।ছেলের বউ করতে চাই।নেহালও খুব খুশি হয়।সায়ানদের সাথে কথা বলতে পেরে। নেহালের ভালো লাগে তাদের কথাবার্তা।আর সায়ানকে পছন্দও হয়।তাই তাদের প্রস্তাবে না করতে পারে না।পরসু শুক্রবার সায়ান আর মিতির বিয়ে।
ওদিকে চৌধুরী মহলে,
আবির চৌধুরীর মেয়েকে নিয়ে এখনো আত্নীয়-স্বজন, পাড়া-প্রতিবেশীদের কানাঘুঁষা চলছে। সকলের মুখে এক কথা আবির চৌধুরীর মতো বিজনেসম্যানের মেয়ে বিয়ের দিন বাড়ি ছেড়ে পালিয়েছে।টিভিতে, নিউজে এই খবর এখনো চলছে।সারাদেশে পুলিশ লেগে পরেছে আদিবার সন্ধানে।পেপারেও আদিবার ছবি ছাপা হয়েছে।যদি কেউ সন্ধান দিতে পারে তাহলে তাকে ২৫লক্ষ টাকা পুরষ্কার দেওয়া হবে।পুলিশ আদিবার ক্লোজ ফ্রেন্ডদের সাথে কথা বলতে চায়।পুলিশ স্টেশনে নিয়ে আসে তাদেরকে। তারপর তাদের কাছে জানতে চায় আদিবার কারও সাথে সম্পর্ক ছিলো কিনা।আর তারা পুলিশের ভয়ে সব বলে দেয়-
নেহালের সাথে আদিবার সর্ম্পকের কথা। সম্পর্কটা যদিও ছিলো এক তরফা।কারণ শুধু নেহালই আদিবাকে ভালোবেসে এসেছে। আর আদিবা,,?? ও,, বন্ধুদের সাথে বাজি ধরে নেহালের সাথে অভিনয় করে ভালোবাসার।যার জন্য ছলে বলে কৌশলে আদিবাকে অনেক কিছু করতে হয়।নেহালের বাড়িতে গিয়ে ওর বোনকে খুশি করা।নেহালের পছন্দ অনুরূপ রান্না করা।এমনকি সাংসারিক যে কোনো কাজই আদিবা করে।শুধু একটা কারণে,,,বাজিতে জিতবে বলে।আর তাই হয়তো এমনো হতে পারে আদিবা নেহালের কাছে।হতে পারে অভিনয় করতে করতে নেহালকে ভালোবেসে ফেলেছে।তাই পালিয়েছে।
আদিবার ফ্রেন্ডদের কথাগুলো শুনে পুলিশ এবার নেহালের বাড়িতে আসে।
চলবে,,,,