The Cobra King Mafia Boss- Season 4

The Cobra King Mafia Boss- Season 4 !! Part- 77

পুরো কলোনি তে মিষ্টি দিচ্ছে রোয়েন চৌধুরী।এমনকি অফিসে ও সবাইকে মিষ্টি খাইয়েছে।সবাই প্রচন্ড খুশি আজ।ওদের কোব্রা কিং বাবা হতে যাচ্ছে।আর রুহীতো সবার বোন সবার আদরের।রামীন মিষ্টি খেতে খেতে বলল,
.
.
-”বেশি দেরি হয়ে গেলো না?”
-”কি?”
.
.
ভ্রু কুঁচকে তাকায় রোয়েন।তারপর বলল,
.
.
-”কি দেরি করলাম?”
-”ভেবেছিলাম তোদের হানিমুন শেষেই গুড নিউজটা শুনবো বাট এটা তো লেটই হয়ে গেলো তাইনা।”
-”তোর যতো কথা।”
-”বাই দা ওয়ে আমি ভীষন খুশি তোদের জন্য।স্পেশালী আমার বোনটার জন্য।”
-”ভালো।যা সামনে থেকে যা।”
-”সামনে থেকে যেতে বলছিসতো।তোর ছেলে হলে আমার পক্ষে করে নিবো দেখিস।”
-”হুহ দেখা যাবে।গিয়ে কাজ কর যা।”
-”যাচ্ছি যাচ্ছি।শালা এতো রগচটা হলে হয়না।রাগ কমা বাচ্চা কাচ্চার বাপ হতে যাচ্ছিস।”
.
.
রোয়েন তীক্ষ্ণ নজর ছুড়ে দিলো রামীনের দিকে।তারপর কাজে মন দিলো চোখ সরিয়ে।রুহী খুব একা বোধ করছে।প্রচন্ড বিরক্ত লাগছে।লোকটা নাকি ওকে বোর হতে দিবে না।আর এখন বদমাশ লোক কাজে গিয়ে বসে আছে ফাজিল বেটা।রুহী পড়ার টেবিলে আসে।ওর সাবজেক্টটায় প্রায় সবই অংক।রুহী অংক একদম পছন্দ করেনা।কিন্তু সে অংকে দক্ষ।কতো সহজে কঠিন অংকটাও সল্ভ করে দেয়।কিন্তু রুহীর ঘুম পায় অংক করতে গেলে।কাজের লোককে ডেকে চা পাঠাতে বলে রুহী।কিছুক্ষন পর চা চলে আসে।অংক করতে করতে চা খেতে থাকে রুহী।কিন্তু ঘুম বাঁধা মানে না।দুটো অংক করেই টেবিলে ঘুমিয়ে পড়লো।বিকেলে গোসল সেড়ে নেয় রুহী।লোকটা বড্ড জ্বালিয়েছে দুপুর থেকে।ভেবেছিলো ঘরে না থাকলে শান্তি পাবে।খাওয়ার জন্য জোর করবেনা।কিন্তু সে তো বড্ড চালাক রুহী কল না রিসিভ করায় কাজের লোকের ফোনে ভিডিও কল দিয়ে রুহী কে এক ঝাঁক ঝাড়ি দিলো।জোর করে খাওয়ালো।ওয়াশরুম থেকে রুহী অনেকের হৈ হুল্লোড় শুনতে পায়।চটজলদি বেরিয়ে আসতেই দেখলো ওদের রুম চকলেট ফুল,বাবুদের কিউট কিউট ছবি দিয়ে ভরা।রুহীর বিস্ময়ের শেষ নেই।কি বলবে ভেবেই পাচ্ছেনা।ওর রুমে সবাই আসছে।রোয়েনের লোকেরা আশফিনা আর ওর মা,আনিলা আর রেজোয়ান।রুহী বাথরুম থেকে বেরিয়ে আসতেই সবাই অভিনন্দন জানায়।রুহী ভীষন খুশিতে হেসে উঠে।আশফিনা এসে ওকে জড়িয়ে ধরে বলে,
.
.
-”কংগ্রাচুলেশনস রুহী!!!”
-”থ্যাংক ইউ।”
.
.
শামীম এসে রুহীর মাথায় হাত রেখে বলল,
.
.
-”খুব ভালো লাগছে আমাদের।কতো বড় একটা উপহার দিতে যাচ্ছো সবাইকে ভাবতে ও পারবেনা।”
-”ভাইয়া আপনারা এত বড় সারপ্রাইজ দিলেন আমার ও ভালো লাগছে অনেক।”
-”রুহী তুমি বসো ওভাবে দাঁড়িয়ে থেকোনা।আমরা আছি।”
.
.
রুহী খাটে বসলো।সবাই ওর সাথে কথা বলছে।আনিলা এসে ওর পাশে বসলো।রুহী কিছুটা বিরক্ত হলে ও প্রকাশ করলোনা।কিন্তু আনিলা সেটা বুঝতে পারেন কিন্তু মন খারাপ করেননা কারন রুহীর খারাপ লাগা স্বাভাবিক।নিজের মায়ের জায়গায় অন্য কাউকে সহ্য করবে কিভাবে ও?আনিলা রুহীর পাশে বসে থাকলেন।রামীন এসে বলল,
.
.
-”তো রুহী মামা হচ্ছি।তাহলে নাম কিন্তু ডিসাইড করবো ও আমরা।আমাদের বাচ্চা ও।”
-”অবশ্যই ভাইয়া এটা আবার বলতে হবে?আপনারা এতো গুলো মামা আছেন।সবই করবেন।”
-”না রুহী ওকে পরিষ্কার করা তোমার কাজ বাকি গুলো আমাদের ওপর ছেড়ে দাও।”
-”আচ্ছা ভাইয়া আগে আসুক।”
-”অবশ্যই একটা সুস্থ সবল বাবু চাই আমরা।অন্তত খাড়ুস যেন না হয় বাবার মতো।”
.
.
কথাটা বলে রোয়েনের দিকে তাকায় রামীন।এদিকে ঘরের কোনায় দাঁড়িয়ে থাকা রোয়েন চোখ রাঙ্গায় রামীনের দিকে।আশফিনা অস্বস্তি বোধ করছে রামীনকে দেখে।ও কথা বলতে চাইছে না লোকটার সাথে।কারন ও খুনি নিজের বাবাকে মেরেছে।রামীন ভালো ছেলে। একজন খুনিকে কিভাবে বিয়ে করবে রামীন?রেজোয়ান মাহবুব মেয়ের সাথে অনেক সময় পর্যন্ত কথা বলেন।রোয়েন সবার নাস্তা আনিয়েছে বাহির থেকে।শামীম এতো নাস্তা দেখে বলল,
.
.
-”স্যার রুহী অসুস্থ এতো ঝামেলা না করলেই হতো।”
-”তোমরা তো বাসায় আসোনা সচরাচর।আর সার্ভেন্ট বাহিরে গেছে ওরা এসে সব ঠিক করবে।চিন্তা করোনা।”
-”জি স্যার।”
.
.
রোয়েন সবাই কে খাওয়ার টেবিলে আসতে বলল।বিশটা চেয়ারের বড় একটা টেবিল রোয়েনের।নির্দ্বিধায় সবাই বসার সুযোগ পেলো।রুহী আশফিনা আর ওর মায়ের মাঝে বসে আছে।আনিলা রুহীর সামনের চেয়ারে।আনিলা একটা বক্স রুহীর দিকে এগিয়ে বলল,
.
.
-”এখানে তেঁতুলের আচার আছে।তোমার এখন খেতে ভালো লাগবে।”
-”থ্যাংক ইউ।”
.
.
কথাটা একটা রুডলি শোনা গেলো।রোয়েন রুহীর কি লাগবে সেটার জন্য একবার রুহীর কাছে আসছে আবার কিচেনে যাচ্ছে।রুহীর ব্যাপারটা মোটেই ভালো লাগছেনা।আনিলা ব্যাপারটা খেয়াল করে উঠে কিচেনে এলো।রোয়েন দুধ জাল দিচ্ছে।আনিলা বললেন,
.
.
-”স্যার আপনি রুহীর কাছে যান।আমি ওর দুধ নিয়ে আসছি।”
-”না আপনি খান গিয়ে।এইতো হয়ে গেছে আমার।”
-”আপনিই তো করবেন সবসময়।আমার তো সেই সুযোগ হবেনা।এসময়ে মেয়েদের মাকে দরকার হয়।রুহীর টা না হয় কিছুটা আমিই পূরন করলাম।”
.
.
রোয়েন কিছু বলতে পারেনা আর।একটু হেসে বেরিয়ে আসে পাকঘর থেকে।আশফিনার মা উঠে গিয়েছেন।সেখানে রোয়েন এসে বসলো।রুহীর মুখ মুছে দিলো টিস্যু দিয়ে তারপর এক গ্লাস পানি ওর মুখের সামনে ধরলো।রেজোয়ান মাহবুব ভীষন খুশি।মেয়েটা ভাগ্য বলেই রোয়েনকে পেয়েছে।কতোটা খেয়াল রাখছে মেয়েটার।ওনি তো রোয়েনকে অফিস থেকে দেখে আসছেন।কতোটা অস্থির হয়ে থাকে রুহীর জন্য।কি খেলো না খেলো কি করছে রুহী?অসুস্থ হয়ে গেলো কিনা?এদিকে কিছুক্ষন পরই আনিলা দুধ নিয়ে এলো রুহীর জন্য।রুহীর সামনে গ্লাসটা রেখে বলল,
.
.
-”খেয়ে নাও রুহী!”
-”আমার ভালো লাগছেনা।”
.
.
রুহী কিছুটা বিরক্ত হয়ে মুখ ঘুরিয়ে নেয়।রোয়েন বলল,
.
.
-”রুহী একদম ত্যাড়ামী করবেনা।খেয়ে নাও।”
.
.
রোয়েনের দিকে অভিমানী চেহারায় তাকায় রুহী তারপর কোন কথা ছাড়া দুধটা খেতে গিয়ে মুুখের সামনে থাকে সরিয়ে নেয়।
.
.
-”গন্ধ লাগছে।”
-”নাক টিপে খেয়ে নাও।”
.
.
বলে উঠে রোয়েন।রুহী কোনমতে খেয়ে নিজেকে আর আটকাতে পারেনা দৌড়ে।বাথরুমে চলে গেলো।বমি করে এসে বিছানায় শুয়ে পড়ে রুহী।রোয়েন সবাইকে বিদায় দিয়ে রুমে আসে।কাজের লোকেরা সব পরিষ্কার করতে থাকে।রুহীর সামনে এসে বসে রোয়েন।রুহী রোয়েনের শার্টের কলার ধরে নিজের দিকে টেনে আনে।তারপর বলল,
.
.
-”আদর দিন। ”
-”এখন?”
-”হ্যা এক্ষুনি।আমি অপেক্ষা করছি আপনার।”
.
.
রোয়েন কোন কথা না বলে মুচকি হেসে রুহীর ঠোঁটে ঠোঁট ডোবায়।এদিকে আশফিনা আর ওর মায়ের সাথে রামীন ও এসে যায়।আশফিনা কিছু না বলে রুমে গিয়ে দরজা লাগিয়ে দেয়।আশফিনার মা বলল,
.
.
-”তুমি রামীন তাইনা”
-”জি আন্টি।আশফিনা একটু ডেকে দিননা।”
-”আচ্ছা তুমি বসো আমি দেখছি।”
.
.
রামীন সোফায় বসে অপেক্ষা করতে থাকে।এদিকে আশফিনা বের হয়না।অনেক্ষন পর আশফিনার মা বলল,
.
.
-”বাবা ও বের হচ্ছেনা।তুমি পরে এসো ওকে বুঝাবো আমি।”
-”আচ্ছা আন্টি।আসি তাহলে।”
.
.
রামীন বেরিয়ে আসে।এদিকে জয় ঘরে আজকাল কথাই বলেনা। বেশিরভাগ সময়ে নিজের রুমেই বন্দী থাকে।বিজলি বেগম।চিন্তায় শেষ।কি করবেন নাতি কে নিয়ে?কি করে বুঝাবেন নাতিকে যে যা হয়েছে ভালোর জন্য হয়েছে।অন্তত আগেই জানতে পারলো রুহীর সম্পর্কে।জয়ের সাথে কথা বলার সুযোগ পাচ্ছেননা ওনি।এদিকে পরদিন সকালে রুহীকে নাস্তা করিয়ে বেরিয়ে যায় রোয়েন কাজের জন্য।রামীন চুপচাপ এক কোনায় বসে আছে।রোয়েন বন্ধুকে দেখে একটু অবাক হয়ে নিজের জায়গায় এসে বসে।রামীনকে দেখে মনে হচ্ছে ও হয়ত খেয়ালই করেনি রোয়েন।রোয়েন হঠাৎ বলল,
.
.
-”কিরে রেডিও বন্ধ কেন?”
.
.
মাথা তুলে তাকায় রামীন রোয়েনের কথায়।ও বলল,
.
.
-”মানে? ”
-”চুপ কেন?শুনলাম আজ নাকি কারোর সাথেই কথা বলিসনি?”
-”ভালো লাগছেনা।”
-”কি ভালো লাগছেনা?কি হয়েছে তোর?”
-”আশফিনা কথা বলছেনা।কল রিসিভ করছেনা।দুতিনবার কল দেয়ার পর সেল অফ করে দিচ্ছে।”
-”সময় দে ওকে।হয়ত কিছু নিয়ে আপসেট।আবার নিজের বাবাকে ও খুন করলো।ব্যাপারটা শোনা যেমন কঠিন মেনে নেয়াও।সময়ের সাথে সাথে সব ঠিক হয়ে যাবে।”
-”হুম দেখি।”
.
.
রোয়েন রামীনকে কিছুক্ষন দেখে কাজে মন দেয়।
চলবে