তোমাকে খোঁজে

তোমাকে খোঁজে !! part- 04

বাড়িতে একটাও কাজের লোক নেয়। সবাইকে নেহাল ছুটিতে পাঠিয়ে দিয়েছে। আর নিজের হাতে আদিবার জন্য সেই সব পদের আইটেম রান্না করেছে যেগুলো আদিবা খেতে পছন্দ করে। একে একে ১৬/১৭ পদের আইটেম রান্না করে টেবিলে সাজিয়ে রেখে তারপর রুমে আসে আদিবাকে ডাকার জন্য।কিন্তু আদিবা খাবে না বলে মুখ গোমড়া করে বসে থাকে।যেটা দেখে নেহালের রাগ এবার উচ্চ পর্যায়ে উঠে যায়। নেহাল আদিবাকে টেনে সিঁড়ি থেকে ঘেঁষতে ঘেঁষতে নিচে নিয়ে আসে।সিঁড়ি থেকে টানার সময় আদিবার শরীরের বিভিন্ন জায়গায় চোর্ট লাগে।শাড়া শরীরে ক্ষত হয়ে রক্ত ঝরতে থাকে। কিন্তু নেহালের সে দিকে খেয়াল নেই।আদিবাকে এনে খাবার টেবিলে বসায়।তারপর জোড় করে আদিবার মুখে খাবার ঠেসে ঠেসে ভরে। যার জন্য আদিবার সারা মুখে খাবারগুলো লেগে যায়। মুখ থেকে বেয়ে কাপড়েও পরে কাপড়টা নস্ট হয়ে যায়। আদিবার এবার খুব কস্ট হচ্ছে। কস্টে দুচোখে সবকিছু অন্ধকার দেখছে।গাল বেয়ে অশ্রু গড়িয়ে পরছে।আর শরীরের ক্ষত, ব্যাথা ও বাবা-মায়ের চিন্তায় মাথা ঘুরে পরে যায় আদিবা।

নেহাল আদিবাকে ডাকে। দেখে কোনো সাড়া শব্দ নেয়।তারপর তাকিয়ে দেখে আদিবার শরীরের ক্ষতগুলো।আর কাপড়ে ও মুখে খাবারের দাগ।যা দেখে নেহালের হুঁশ ফেরে।ভাবে কি করলাম এটা আমি।নেহাল পাগলের মতোন আদিবাকে বারবার ডেকে যায়। তারপরও আদিবা ওঠে না। আদিবা না উঠলে নেহাল আদিবাকে কোলে তুলে নিয়ে রুমে গিয়ে শুইয়ে দেয়।তারপর আদিবার মুখ মুছিয়ে দিয়ে শরীরের ক্ষতগুলোতে ওষুধ লাগিয়ে দেয়।কাপড়ের দিকে তাকিয়ে ভাবে দাগগুলো কিভাবে তুলবে। তারপর ভেবে নিজের একটা শার্ট নিয়ে এসে আদিবাকে পরিয়ে দিয়ে পরনের কাপড়গুলো খুলে ধূয়ে দেয়।

কিছুক্ষণ পর আদিবার জ্ঞান ফেরে।চোখ মেলে চেয়ে দেখে তার পড়নে একটা শার্ট ছাড়া আর কিছুই নেয়।পাশ ফিরলে নেহালকে দেখতে পায়।লজ্জায়, রাগে আদিবা বিছানার চাদরটা দিয়ে নিজেকে ঢেকে নেয়। আর নেহালকে প্রশ্ন করে এমনটা কেন করলেন আপনি?

জান আমার কথাটা শোনো? বলে আদিবাকে ধরতে যায় নেহাল। আর আদিবা ধাক্কা দিয়ে নেহালকে দূরে সরিয়ে দেয়।

ভালোবাসেন না আপনি? এই আপনার ভালোবাসার নমুনা? একটা মেয়েকে তার পরিবার, পরিজনের থেকে দূরে সরিয়ে রেখেছেন।তার সাথে যেভাবে ইচ্ছা সেভাবে ব্যাবহার করছেন।এতো অপমান, এতো অত্যাচার করেও আপনার শান্তি হয় নি? তাকে সমাজ কি বলছে তাতে তো আপনার কিছু যায় আসে না।কিন্তু এখন? এখন তো তার শরীরটাও আপনার পাওয়া হয়ে গেছে। একটা কাজ করুন নেহাল।মেরে ফেলুন আমাকে। বেঁচে থাকলে না আমি আপনাকে ক্ষমা করতে পারবো আর না আমি আমার বাবা-মায়ের সামনে গিয়ে দাড়াতে পারবো।তারচেয়ে বরং আপনি আমাকে মেরে ফেলুন!

আদিবার মুখে কথাগুলো শুনে নেহাল উঠে এসে আদিবার দুইগালে ঠাসসস! ঠাসসস! করে
দুইটা চর মারে।তারপর বলে, তুমি ভাবলে কিভাবে তোমাকে আমি মেরে ফেলবো? নিজের থেকেও বেশি ভালোবাসি তোমাকে আমি।কারও কথায় নয় এমন কি তুমি আমায় ভালোবাসলে কি বাসলে না তাতেও আমার কিচ্ছু যায় আসে না।আমি শুধু তোমাকে চাই।যে কোনো মূল্যে।যে কোনো পরিস্থিতিতে।তুমি শুধুই আমার।ভুলে যেও না জান আমাকে ভালোবাসতে তুমিই একদিন বাধ্য করেছিলে।তাই আমার অধিকার আছে।আর হ্যাঁ তোমার শরীর, মন সবকিছু জুড়ে একদিন শুধু আমিই থাকবো দেখে নিও।কথাগুলো বলে আদিবার চুলের ভাজে নেহাল নিজের হাত ডুবিয়ে দেয়।নিজের ঠোঁটটা আদিবার ঠোঁটের কাছে আনতেই আদিবা বলে ওঠে,

আমি অন্য কাউকে ভালোবাসি নেহাল।আমি চাইলেও আপনাকে কখনো ভালোবাসতে পারবো না।আর না পারবো তার কাছে ফিরে যেতে।আপনি হয় আমায় মেরে ফেলুন নয় আমাকে মরতে দিন।বলেই নেহালকে ধাক্কা দিয়ে দূরে সরিয়ে পাশের ফল কাটা ছুড়িটা উঠিয়ে নিজের পেটে ঢুকিয়ে দেয় আদিবা।

চলবে,,,,

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *