ঘৃণার মেরিন

ঘৃণার মেরিন Season 3 !! Part- 12

কনিকা : এখন ভালোমতো বলো বাবা কোথায় ?
মেরিন : আমার কাছে এই প্রশ্ন করার কারন জানতে পারি কি?
কনিকা : কারন তুমিই খান বাড়ি থেকে বাবাকে নিয়ে এসেছো । আপু বলেছে ।
মেরিন : সেতু বলেছে? সেতু যেটা বলে সেটা automatically চিরন্তন সত্য হয়ে যায় ।
কনিকা : বাবা কোথায়?
মেরিন : গুম করেছি…
কনিকা : লজ্জা করেনা এই কথা বলতে ? যেই দাদুভাই এতো ভালোবাসা দিলো সেই দাদুভাইয়ের সাথে এমন করতে ?
মেরিন : না। লজ্জা করবে কেন? আমি কি চুরি করেছি? আর মেরিন বন্যা কাউকে জবাব দেয়না… কারো যোগ্যতা নেই মেরিন বন্যার কাছে জবাব চাওয়ার…
কনিকা : নিজেকে নিয়ে অতো গর্ব করা ঠিক না। ঝড়ে পরে যাবে।
মেরিন : ঝড় বন্যাকে শক্তিশালী করে । এখন আপনি কি সম্মানে বের হবেন নাকি আপনাকে অসম্মানে বের করবো?
নীলিমা : বন্যা… ভুলে যাসনা এটা খান বাড়ি নয় চৌধুরী বাড়ি । এখানে তোর কথাই শেষ কথা নয়। বসো ভাবি…
কনিকা : না গো ননদিনী। এখন বসার সময় নেই । জানিনা আমার পেট থেকে এই কাল সাপ কিভাবে জন্মালো। বাবাকে খুজতে হবে।
কনিকা চলে গেলো।

মেরিন : such a irritating person … ঘুমটা ভাঙিয়ে দিলো ।
নীলিমা : বাবা কোথায় বন্যা?
মেরিন : oh come on শাশুড়িফুপ্পি don’t be silly … আমরা মাহমুদ বাড়ির মেয়ে না । খান বাড়ির মেয়ে। এমন typical 3rd class question আমাদের করা সাজেনা।
নিহাল : মামনি… বাবা কোথায়?
নীড় : নানাভাই কোথায় ?
মেরিন : আমি কাউকে জবাব দেইনা।
বলেই মেরিন রুমে চলে গেলো।
নিহাল : মামনি… মামনি… মা…
নীড় : চলে গেলো তো? শুনলো তোমার কথা? বাবা she is totally out of control …ও সবকিছু করতে পারে।
নীলিমা ধপ করে বসে পরলো।
নীলিমা : বাবাহ… নিহাল তুমি কিছু ১টা করো। বন্যার হাত থেকে বাচাও আমার বাবাকে। 😭।
নীড় : মামনি কান্না করোনা প্লিজ। আমি নানাভাইকে বের করবোই?
নিহাল : কিছুই করতে হবেনা । মেরিনই বলবে…
নীলিমা : মানে…?

বিকালে…
নিহাল : আসবো মামনি?
মেরিন : আরে বাবা আসো। বসো ।
নিহাল গিয়ে বসলো। মেরিনের ২হাত ধরলো ।
নিহাল : আমি তোমার বাবা হলেও আছি ফুপ্পা হলেও আছি… তোমার কাছে জবাব চাইতে আসিনি। শুধু এতোটুকু জানতে এসেছি বাবা যেখানেই আছে ঠিক আছে কিনা? বাবা হিসেবে এই ছোট্ট অধিকার তো আমার আছে? তাইনা? আমি জানি আমার মামনি কখনো দাদুভাইকে কোনো আঘাত দিবেনা । বলা যাবে?
মেরিন মুচকি হাসলো।
মেরিন : এই যে শাশুড়িফুপ্পি & my dear জান… ভেতরে আসেন আপনারা। জানি বাহিরেই দারিয়ে আছেন…
২জন ভেতরে ঢুকলো ।
নীলিমা :বলনা মা।
মেরিন : দাদুভাই বিন্দাস আছে। সুস্থ আছে । তোমাদের সামনে ১টা মহাচমক নিয়ে হাজির হবে… পছন্দ হবে তোমাদের surprise টা… i swear …
নীলিমা : বাবার সাথে একটু ভিডিও কলে কথা বলানারে মা…
মেরিন : ok…
মেরিন দাদুভাইকে নিজের mobile থেকেই call করলো। কথা বলল। সবাই চিন্তুমুক্ত হলো ।

৭দিনপর…
রাত ৩টা…
মেরিন নীড়ের বুকে মাথা রেখে ঘুমিয়ে আছে । হঠাৎ ১টা দুঃস্বপ্ন দেখলো। জোরে “বাবা” বলে চিল্লিয়ে উঠলো …
মেরিন উঠে বসলো । নীড়েরও ঘুম ভেঙে গেলো উঠে বসলো । দেখে মেরিন জোরে জোরে নিঃশ্বাস নিচ্ছে । আর ওর প্রচুর ঘাম ঝরছে । চোখ বন্ধ করে আছে ।
নীড় : ঠিক আছো তুমি?
মেরিন চোখ বন্ধ করে আরো বড় বড় ৩টা নিশ্বাস নিয়ে নিজেকে শান্ত করলো।
নীড় : r u ok?
মেরিন : হামম। আপনি ঘুমিয়ে পরুন…
বলেই মেরিন washroom এ গেলো। আয়নার সামনে দারিয়ে নিজেকে
বলল : মেরিন be strong …ভুলে যাসনা তুই মেরিন। বাবা আর দাদুভাই ঠিক আছে । ওদের কিছু হবেনা । নিজেকে শক্ত রাখতে হবে। ভুলে যাসনা জীবনের শেষ মুহুর্ত পর্যন্ত তোকে ভাগ্যের সাথে যুদ্ধ করতে হবে। calm down…
মেরিন হাতে-মুখে-মাথায় পানি দিয়ে বেরিয়ে এলো ।দেখে নীড় বসে আছে ।
মেরিন : একি বসে আছেন যে না ঘুমিয়ে? ঘুমিয়ে পরুন…
নীড় : এখানে আসো ।
মেরিন : কেন ?
নীড় : আসোই না ।
মেরিন : পারবোনা ।
নীড় উঠে মেরিনকে কোলে তুলে এনে বেডে বসালো । মেরিনের bp মাপলো।
নীড় : তোমার bp তো দেখি অনেক high …এই pressure নিয়ে বসে আছো কিভাবে?
মেরিন : এই যে এভাবে ।
নীড় : 😒। মেডিসিন… বাবার কাছে তো থাকে । বসো আমি নিয়ে আসি …
মেরিন : আরে পাগল নাকি ? এতো রাতে কেন ওদের কষ্ট দিবেন?
নীড় : what a joke !!! যে সবাইকে কষ্ট ছারা আর কিছুই দেয়না তার মুখে এই কথ নিশ্চয়ই সাজেনা।
জবাবে মেরিন কেবল ১টা হাসি দিলো।
নীড় : বসো আমি নিয়ে আসি ।
মেরিন : আপনার কি মনে হয় যে আপনি আনলেই আমি খাবো?
নীড় : …
মেরিন : শুয়ে পরুন । no worry আমার জন্য আর রাত জাগতে হবেনা …
বলেই মেরিন বারান্দায় চলে গেলো। গিয়ে রকিং চেয়ারে বসলো । চোখ বন্ধ কিছু ভাবতে লাগলো ।
.
পরদিন…
আজকে শুক্রবার । সবাই বাসায় । মেরিন আর নীলিমা রান্না করছে । তখন মেরিনের ফোনটা বেজে উঠলো ।
মেরিন : হ্যালো রকি…
রকি : জজজী ম্যাম।
মেরিন : সবাই ঠিক আছে ?
রকি : মমম্যাম কককবির স্যারকে পাওয়া যযযাচ্ছেনা ।
মেরিন : কি…
বলেই মেরিন অজ্ঞান হয়ে নিচে পরে গেলো।
নীলিমা : বন্যা …
নীড় দৌড়ে এলো ।
নীড় : মেরিন…মেরিন… বাবা ডক্টর ডাকো । তারাতারি …
নীড় মেরিনকে কোলে তুলে রুমে নিয়ে গেলো । নীড় পানি ছিটিয়ে জ্ঞান ফিরানোর চেষ্টা করলো। কিন্তু কাজ হলোনা ।
নীড় : মেরিন …মেরিন…
তখন ডক্টর তপু এলো। তপু check up করতে লাগলো ।
তপু : oh no…
মেরিন : কি হয়েছে?
তপু : please quit … immediately hospitalized করতে হবে মেরিনকে । minor brain stroke করেছে ।
মেরিনকে hospital এ admit করা হলো।
নিহাল : এখন কেমন আছে ? ঠিক আছে তো ?
তপু : আমি জানিনা বারবার কেন আমি ওর treatment করি? প্রতিবার ঠিক করি যে আমি মেরিনের treatment করবোনা । কিন্তু… শুকরিয়া করুন যে brain stroke টা minor ছিলো mejor নয় । tension free রাখা যায়না ওকে ? কিন্তু অনেকের কাছে তো নিজেদের জেদটাই বড় হয়। সম্পর্কের থেকে …
নীড় ভালোমতোই বুঝতে পারলো যে তপু ওকেই বলেছে ।
তপু : excuse me …

পরদিন …
মেরিনের জ্ঞান ফিরলো । উঠে বসলো ।
নীড় : উঠলে কেন?
নীড়ের আওয়াজ পেয়ে মেরিন পাশ ফিরলো । দেখলো নীড় বসে আছে ।
মেরিন ভাঙা গলায় বলল : আমমমার ফোনটা…
নীড় : আছে । now forget mobile & keep rest…
মেরিন : দিন না । emergency …
নীড় : আপাদত তুমি emergency তে আছো। risk এ আছো ।
মেরিন : দদিন না প্লিজ…
নীড় মনে মনে : আপাদত একে stress দেয়া যাবেনা । দিয়েই দেই mobile …
নীড় : এই নাও ।
মেরিন : hello… রকি…
রকি : পেয়েছি ম্যাম স্যারকে। আপনাকে call করেছিলাম । স্যার receive করেছিলেন । কিছু বলিনি ।
মেরিন : good …
মেরিন relax হলো ।
নীড় : কার সাথে কথা বলছিলে ?
মেরিন : bf ..
বলেই মেরিন আবার শুয়ে পরলো। তখন তপু এলো।
তপু : নীড় বাইরে যাও ।
নীড় : কেন ?
তপু : আমি বলেছি তাই । go…
নীড় রাগে গজগজ করতে বেরিয়ে গেলো।
মেরিন : তোমার সাহস কি করে হয় নীড় বের করে দেয়ার ?
তপু : কেমন লাগছে এখন?
মেরিন : কিছু জিজ্ঞেস করেছি?
তপু : কিছু personal কথা বলার আছে তোমার সাথে ।
মেরিন : মানে?
তপু : দেখো আমি জানি কাল পরশু থেকে তুমি আবার কাজ করতে শুরু করবে । তাও এই অসুস্থ শরীর নিয়ে । যেটা তোমার ক্ষতিকর। তোমার care তোমাকেই করতে হবে । তোমার কিছু হলে কারো কিছুই হবেনা । বরং অনেকের লাভ হবে । তোমার মৃত্যু অনেকের কাছে লটারির টিকিটের সমান । আর সেটা তুমি জানো। তাই যদি নিজে মরে অন্যের লাভ না করতে চাও তাহলে নিজের care করো। at least ১মাস bed restএ থাকো ।
মেরিন : আমি bed rest এ থাকলে আমার কাজ গুলো কে করবে?
তপু : জন করবে । আর আমার মনে হয় যে জন তোমাকে নিরাস করবে ।
মেরিন : কেউ কাউকে বিনামুল্যে কিছু দেয়না …তো আজকে বিনামূল্যে এমন জ্ঞান বিতরন করার কারন জানতে পারি ?
তপু :কারন তখনও যা ছিলো আজও তাই আছে । তোমাকে ভালোবাসি … please take bed rest… just for yourself …
বলেই তপু চলে গেলো । তপু বের হতেই নীড় ঢুকলো ।
নীড় :কি বলছিলো তপু?
মেরিন : married proposal দিয়ে গেলো ।
নীড় : 😤।
৩দিন পর মেরিনকে বাসায় নেয়া হলো । শরীরর কাছে হার মেনে মেরিন হসপিটাল থেকে বের হয়নি । নীড় মেরিনের গাড়ির চাবি , mobile সব বাজেয়াপ্ত করলো ।

নীড় : যতোদিন সুস্থ না হচ্ছো একদম rest এ থাকবে । তোমার জন্য অন্য মানুষের কাছে কথা শুনতে আমি পারবোনা ।
মেরিন মুচকি হেসে
বলল : মেরিনের জন্য কখনোই আপনাকে আর কথা শুনতে হবেনা । কিন্তু আমি বসে থাকতে পারবোনা । আমার পক্ষে অসম্ভব ।
নীড় : ১লাইন বেশি বোঝা কি তোমার রোগ?
মেরিন : য…
জন : ম্যাম আসবো?
মেরিন : আরে জন? আসো । কবে ফিরলে ?
জন : ম্যাম আপনি ঠিক আছেন ? 😢😥।
মেরিন : হামম। তোমাকে তপুদা ফোন করেছে না ?
জন : হামম। ম্যাম আপনি একদম bed rest এ থাকবেন । আমি সব সামলে নিবো । আপনাকে অভিযোগ করার সুযোগ দিবোনা । যখন একদম আমার সাধ্যের বাইরে চলে যাবে আমি নিজে আসবো । আর যদি আপনি rest না করেন তবে কিন্তু আমি দাদুভাইকে বলে দিবো …
মেরিন : জন তুমি আমাকে হুমকি দিচ্ছো? সাহস দেখে অবাক হচ্ছি ।
জন : sorry mam.. but i m helpless… দাদুভাই আমাকে আপনার জন্য রেখেছে । তাই আপনার safety সবার আগে…
মেরিন : 😒।
জন : আসছি ম্যাম…
জন চলে গেলো ।
.
একটুপর…
মেরিন চোখ বন্ধ করে cubeটা ঘোরাচ্ছে ।
নীলিমা : কিরে কি ভাবছিস ?
মেরিন তাকিয়ে দেখে নীলিমা খাবার নিয়ে দারিয়ে আছে ।
মেরিন : আরে শাশুড়িফুপ্পি আসো আসো…
নীলিমা বসলো।
নীলিমা : উঠে বস। খেয়ে নে…
মেরিন : বাহ অসুস্থ হলে ভালোই শাশুড়ির আদর পাওয়া যায়।
নীলিমা: পাজি। নে হা কর।
মেরিন : শাশুড়িফুপ্পি… আমি ঠিক আছি । হাত দিয়ে খেতে পারবো।
নীলিমা : হামম। হাত নারাতে কষ্ট হচ্ছে , কথা কতো কষ্ট করে বলছে ।তিনি নাকি সুস্থ। হা কর।
নীলিমা মেরিনকে খাইয়ে দিতে লাগলো।
নীলিমা : কি এতো ভাবিস বলতো? এতো কিসের চিন্তা তোর … এই বয়স এতো চিন্তা করলে হয়… একটু normal ভাবে জীবন কাটা। সব চিন্তা বাদ দে এবার…
মেরিন : নরমাল life spend করার সৌভাগ্য আমার নেই… nothing is normal in my life … এখন আমার জীবন ১টা game হয়ে গেছে। যেখানে আমার প্রতিপক্ষ আমার ভাগ্য । প্রতিবার আমার লড়াই করতে হয় । ১টা বার লড়াই না করলে পরের পলকে আমি নিজে বেচেই থাকবোনা । আমার জীবন নষ্ট হয়ে গেছে। আমি নষ্ট হয়ে গেছি । আমার নাম নষ্ট হয়ে গেছে।
নীলিমা : তোর ছোটবেলার অবুঝতাই তোর সব কেরে নিয়েছেরে… তবুও যদি বেরিয়ে নিজের ভুল বুঝে ক্ষমা চেয়ে নিতি… যাগগে… বাদদে… নতুন করে সব শুরু কর…
মেরিন : কোনো cricket match যখন বৃষ্টির কারনে ড্র করা হয় তখন সেটা আর নতুন করে শুরু হয়না। পরের ম্যাচ খেলা হয় । আমার life টাও game… কিন্ত আমি ড্র করতে রাজী নই । জিততে শিখেছি । জিতবোই । হ্যা কোনো game ই তো আর অনন্তকাল চলেনা । final তো আছেই । আমার life game এরও final time চলে এসেছে । এখন কেবল অপেক্ষা … আর বেশিদিন জ্বালাবোনা। কথা দিলাম…
নীলিমা : হয়েছে এবার মেডিসিন খেয়েনে আরাম কর…
নীলিমা চলে গেলো ।

মেরিন washroom এ যাচ্ছে। পরে যেতে নিলো । নীড় এসে ধরে ফেলল ।
নীড় : একটু ডাক দিলে কি হতো …?
মেরিন কোনো কথা বলল না। নীড় মেরিনকে ধরে ধরে washroom এ নিয়ে গেলো । এরপর দরজার বাইরে দারিয়ে রইলো । একটুপর মেরিন বেরিয়ে এলো । নীড় আবার মেরিনকে ধরে ধরে বেড এ বসালো।
নীড় : সবাইকেই সবার প্রয়োজন… মেরিন বন্যারও…
.
চলবে…