অবশেষে তুমি আমার

অবশেষে তুমি আমার !! Part- 41

আপনি আপনার তিয়াসের সাথেই থাকেন। আমার কাছে আসবেন না।
– জীবনে যে কয়টা দিন বাঁচি সে কয়টা দিন আনিশা””’
– রাজ প্লিজ স্টপ। আমি আর নিতে পারছি না। আমি তোমাকে ছাড়া বাঁচবো না এটাই জানি। আমাকে একটু বুকে নিবে? বুকের ভেতরটা কেমন যেন করছে। মনে হচ্ছে বুকের ভেতরটা কষ্টে ফেটে যাচ্ছে।হৃদয়ে কেউ মনে হয় ছুরি চালিয়ে দিয়েছে। নাও না একটু বুকে।
– সরি ম্যাডাম গরীব হয়ে আপনার মতো বড়লোককে কিভাবে বুকে নিবো? আমি যে ছোটলোক। আপনি বরং ভালো ছেলে খুঁজে নেন। যে চরিত্রহীন হবে না। হবে না আমারর মতো বেহায়া। যাকে শত অপমান করলেও আমার মতো একটু ভালোবাসা পাওয়ার জন্য বারবার আপনার কাছে বিরক্ত হয়ে ছুঁটে যাবে না।
– রাজ প্লিজ থামবে তুমি। আমি বলছি তো আমি অন্যায় করেছি। তোমাকে ভুলবুঝে কষ্ট দিয়েছি। বিশ্বাস করো রাজ তোমাকে যতটা কষ্ট দিয়েছি তার চেয়ে শতগুণ কষ্ট আমি পেয়েছি। তুমি শুধু বাহিরের টাই দেখেছো। ভেতরের টা দেখনি কখনো? কত রাত নির্ঘুম কাটিয়েছি। আচ্ছা রাজ বলো তো পৃথীবীর কোন মেয়েটা তার স্বামীকে অন্য মেয়ের সাথে সঙ্গম রত অবস্থায় ভিডিয়ো দেখে সহ্য করতে পারবে?
– অধরা আমি জানি চরিত্রহীন। প্লিজ চরিত্রহীনের কাছ থেকে দূরে যাও।

– রাজ চুপ করো আমার কলিজার টুকরা চরিত্রহীন হতে পারে না। আমি ভুল বুঝেছি আমার কলিজার টুকরাকে। আমার কলিজার টুকরা ফুলের মতো নিঃষ্পাপ।
– হাস্যসকর! সেদিন কলিজার টুকরা কোথায় ছিলো? যেদিন ছোট্ট বাচ্চার মতো চোখের পানি মুছতে মুছতে তোমায় বলেছিলাম,’ অধরা বিশ্বাস করো আমি তোমার অধিকার নষ্ট করিনি। তথন তুমি কি বলছিলে? সত্যিই আমি কুকুর তাই না? তোমাকে নিজের থেকেও বেশি ভালোবাসার জন্যই কুকুরের চেয়েও বেশি আমাকে ঘৃণা করতে। আরে একটা পাখিও তো নিজের প্রিয়জনটাকে চিনতে পারে! আর তুমি মানুষ হয়ে আমায় চিনতে পারলে না। ভালোই তো বাসতাম তোমাকে বিনিময়ে পেয়েছি ঘৃণা, অপমান। যাই হোক এখন চাইলেও কিছু করা সম্ভব না। আমার জীবনটা অন্যের সাথে মিশে গেছে। এখন আর তোমাকে ভালোবাসি না অধরা।
– রাজ প্লিজ এভাবে বলো না। তার চেয়ে বরং নিজ হাতে আমাকে মেরে ফেলো তবুও এতটা কষ্ট হবে না। তোমার মুখে অন্য কারো নাম শুনলে খুব কষ্ট হয়।
-অধরা প্লিজ তুমি বাসা থেকে চলে যাও। অনুত্রির মা দেখলে বিপদ হয়ে যাবে। আর অনুত্রি জেগে গেলে এখন ঘুম পাড়ানো যাবে না।
– অধরা রাজের মুখে এসব শুনে ধপ করে বসে পড়লো। তার রাজ পারলো তাকে রেখে বিয়ে করে নিতে। না রাজ তুমি এটা পারো না। তুমি কাউকে বিয়ে করতে পারো না। তুমি শুধু আমার। ওই কলিজার টুকরা দেখো তোমার মেয়েটা দেখতে ঠিক তোমার মতো হয়েছে। জানে ও যখন বলে সবার বাবাই আছে মম আমার বাবাই কোথায়? তখন আমার বুক ফেটে কান্না আসে। আমার জন্য না হলেও রাইমার জন্য হলেও তুমি ফিরে আসো। তুমি না রাইমাকে ভালোবাসো। রাইমার জন্মের পর তুমিই তো কুলে নিয়েছিলে আমার আগে।

– রাজ রাইমার দিকে তাকিয়ে আছে। রাইমার গাল বেয়ে পানি পড়ছে। রাজের হৃদয়টা যেন ক্ষতবিক্ষত হয়ে যাচ্ছে। কিন্তু কিছু করার নেই।
– রাইমা রাজের হাতটা ধরে বলতে লাগল,’ বাবাই চলো না আমাদের সাথে। খুব মজা হবে। মম আর তোমাকে বকবে না। জানো বাবাই মম তোমার জন্য কান্না করে।
-রাজ প্লিজ রাইমার জন্য হলেও চলো। আমি আর কোনদিন তোমাকে কষ্ট দিবো না। তোমার পায়ের নিচে পড়ে থাকবো। তবুও আমাকে ছেড়ে যেয়ো না। এতগুলো বছর কিভাবে কেঁটেছে সেটা আমি আর আল্লাহই ভালো জানে।
-অধরা প্লিজ তুমি চলে যাও। আমি চাইলেও আর পারবো না। আমি যে অনুত্রির বাবা। এটাই আমার এখন পরিচয়। তুমি আমাকে ক্ষমা করে দিয়ো। আমি অনুত্রি আর আনিশাকে আঁকড়ে ধরে বাঁচতে চাই।
– রাজ পারলে তুমি আমাকে রেখে আনিসার সাথে নতুন সংসার করতে? একটাবারো আমার কথা মনে পড়লো না তোমার? পারলে তুমি ছোট বেলার কথা ভুলে যেতে? সেই পুতুল খেলা থেকে আমাদের ভালোবাসা। আর তুমি সে ভালোবাসাকে জলাঞ্জলি দিলে? একটাবার রাইমাে কথা মনে হলো না? মনে হলো না মেয়েটার জন্য হলেও নতুন সংসার না পাততে।

– বাহ! অধরা এখন এসব বলছো? যখন তুমি সবার সামনে বলেছিলে তিয়াসকে বিয়ে করবে। তখন আমার কেমন লেগেছিল জানো? আরে তুমি ছোট্টবেলার ভালোবাসা ভুলে তিয়াসকে বিয়ে করতে পারলে আমার বেলায় কেন এতো প্রবলেম? যার কাছে আমি মৃত। যার কাছে ফকিরের মতো ভালোবাসা ভিক্ষা চেয়েও অপমানিত হয়ে এসেছি। যে আমার মুখটা পর্যন্তও দেখতে চায়নি। কত অনুনয় – বিনয় করেছি। বলেছি আমি তোমার অধিকার নষ্ট করিনি। তবুও আমার চরিত্রে চরিত্রহীনের ট্যাগ। সকলের সামনে কুকুরের মতো ব্যবহার করে বের করে দেওয়া। কি অপরাধ ছিল আমার। তোমাকে ভালোবাসতাম বলে? তোমাকে বলেছিলাম না সত্যিটা একদিন প্রকাশ পাবে। পাগলের মতো একনজর দেখার জন্য আমাকে খুঁজবে। কিন্তু পাবে না। তুমি আর আমাকে জীবনেও পাবে না। কষ্ট পেতে পেতে আমি পাথর হয়ে গিয়েছিলাম। কতটা কষ্ট নিয়ে দেশে ফিরেছিলাম আমি। পারিনি সারারাত ঘুমাতে। একে তো জ্বর তার উপর তোমার কথাগুলো খুব বেশি কষ্ট দিয়েছে আমায়। মনে হচ্ছিল মরে যাবো। কিন্তু মরিনি আল্লাহ হয়তো আনিশার ডাক শুনেছিল। আরেকটা কথা শুনে নাও ভালোবাসার জন্য হলেও একটা মন দরকার সেটা তোমার নেই। তুমি শুধু আমার অপরাধগুলোই দেখেছো। আর আনিশা সবকিছুর উর্ধ্বে আমায় ভালোবেসেছে। প্রকাশ করেনি যদি আমি কষ্ট পায়। নিজের শত ব্যস্ততার মাঝেও আমার সাথে পড়েছিল। কিসের জন্য জানো ভালোবাসার জন্য। জানো অধরা যেদিন লন্ডন থেকে দেশে ফিরি। তার সপ্তাহ খানেক পর আমার দু’টি ফ্যাক্টররিতেই আগুন লাগে। আমার শত শত কোটি টাকার লোকসান হয়ে যায়। একদম পথে বসে পড়ি। ব্যাংকের টাকার জন্য বাড়িটাও চলে যায়। ত্রিযামিনী আর তার মা। যাকে নিজের খালা বলে চিনতাম বিপদের দিনে তারাও আমাকে ছেড়ে চলে যায়। তবে সেদিন আমার পাশে আনিসা ছিল। সে তার সাথে করে এ দেশে নিয়ে আসে । আমেরিকায় আশার বেশ কিছুদিন পর আনিশার বাবা অসুস্থ হয়ে যায়। আর আনিশার বাবার শেষ ইচ্ছা ছিল আনিশার বিয়ে দেখে যাবে। সেই জন্য বিয়ের দিনক্ষণ ঠিক হয়ে যায়। আমি সেদিন না করতে পারিনি,
চলবে””””’