অদ্ভুদ সেই মেয়ে টি ! র্পব-০৮ এবং ৯
আচ্ছা।
( এতো সময় যে ভাবে আমার সাথে কথা বলছিল
যেন আমি
তার কতো দিনের চেনা।পারেও বটে।)
সন্ধ্যায় ছাঁদে আসলাম, এসে দেখলাম মেঘা দাঁড়িয়ে
আছে।
আমাকে দেখেই মেঘা বলে উঠল…
এতো দেরি হলো কেনো? আমি সেই কখন
থেকে ওয়েট করছি।
একটু হয়ে গেল।বাদ দেন, আপনি কেমন
আছেন?
আমি ভালো…আবার আপনি করে? তুমাকে না বলছি
আমাকে
তুমি করে বলবা।
হ্যাঁ হ্যাঁ তুমি তুমি। বলো কি জন্য ডেকেছো?
তুমি তো খুব বেরিং মানুষ।কোথায় পাশে একটা
সুন্দরী বসে
আছে তাকে কিনা ইমপ্রেজ করার চেষ্টা করবে তা
না।
আমি ওসব পারি না।
জানি তো। তা পারবে কেন? পারো তো শুধু আমার
ঘুম কেড়ে
নিতে….
আমার আর বুঝতে বাকি রইল না কি হতে চলেছে।
তাই আমি ওকে
থামিয়ে বললাম… কি বলছো এসব উল্টা পাল্টা কথা?
আমি কেন
তোমার ঘুম কেড়ে নিবো? আর তুমি কি এগুলা বলার
জন্য আমাকে
এখানে ডেকেছো? সরি আর এসব বলার জন্য
আমাকে না ডাকলে
খুশি হবো।
মেঘা আমাকে কিছু বলার আগেই চলে আসলাম ছাঁদ
থেকে।রুমে
এসেই ধপাসস্ করে শুয়ে পড়লাম।
এটা দেখে হাফিজ বলল কি হলো তোর? এভাবে
শুয়ে পড়লি?
শরীর খারাপ? আজ তো মাসের শেষ দিন চল ভাড়ার
টাকাটা
দিয়ে আসি।
তুই যা। আমি যাবো না।
আচ্ছা আমি গেলাম….
কিছু সময় পর হাফিজ আসল, এসেই বলল…
কি করেছিস তুই? সবাই তোর কথা বলছিলো।আরও
দেখলাম
মেঘার খুব মন খারাপ
সবাই আমার কথা,কি বলছিলো? বলতো…
আচ্ছা শোন তাহলে, আমি যেই আঙ্কেল এর
সামনে গেলাম তখন
আঙ্কেল বলল…জয় কই,ও আসেনি কেন,ও কি
অসুস্থ?।।
তো আমি বললাম…. না আঙ্কেল ও সুস্থ আছে।।
তখন আন্টি বলে
উঠল…এমন তো কোনো দিন হয়নি যে
তোমাদের দুজনের কেউ
একজন এসেছো, সব সময় তো তোমরা দুজনি
একসাথে এসেছো।
তবে আজ কেন ও আসেনি।।
আঙ্কেল দিঘাকে বলল…দিঘা তুমি
জয়কে কিছু বলেছো?।।
না বাবা, কই কি বলব? দিঘা বলল।।
আচ্ছা
মেঘা মা তুমি কি কিছু বলেছো? আন্টি মেঘাকে
জিঞ্জাসা
করল….।।
কিন্তু মেঘা কিছু না বলে মন ভার করে চলে গেল।
আমি
বুঝলাম না জয় যে তোর সাথে কি হচ্ছে?
আমিও কিছু বুঝতে পারছি না হাফিজ যে আমার সাথে এ
কি
হচ্ছে? সব কেমন যেন তালগোল পাকিয়ে
যাচ্ছে।
পরদিন সকালে দিঘা ও মেঘা এলো।এসে দিঘা বলল…
দিদি
তোমার সাথে কিছু কথা বলবে।
আমি জানি তো যে কি কথা বলবে।তাই আর নতুন
করে জানতে
চাই না।
তখন মেঘা বলল…
না জানো না।কিছুই জানো না তুমি।তুমি জানো না আমি
তোমাকে কতটা ভালবাসি?সত্যি আমি তোমাকে খুব
ভালোবাসি।বিশ্বাষ করো আমায় প্লিজ।
হি হি হি ভালোবাসা।ভালই বলেছো।তা এ পযন্ত এই
কথাটা কয়
জনকে বলেছো? তোমার সাথে আমার পরিচয়
কত দিনের? দুই-
একদিন দুজন দুজনের সাথে একটু কথা বললেই
ভালবাসা হয়ে যায়?
তোমরা ধনী মানুষদের এই একটাই সমস্যা, একটু
কাউকে ভাল
লাগলেই খুব সহজেই বলে ফেলো ভালবাসি।
তারপর আর ভালো
না লাগলে বলবা ব্রেকআপ।কি তাই না?
দেখলাম মেঘা কাঁদছে।আর আমার দিকে এক
দৃষ্টিতে তাকিয়ে
আছে।এভাবে কিছু সময় তাকিয়ে থেকে দৌড়ে
চলে গেল।।
এরপর
দিঘা আমার দিকে এগিয়ে আসল আর বলতে শুরু
করল… কাজটা
তুমি ঠিক করলে না জয় দাদা।জানো দিদি এ পযন্ত
কতগুলো
প্রোপোজ পাইছে।কিন্তু একটাতেও রাজি হয়নি।
এমনকি এ পযন্ত
কাউকে দিদি প্রোপোজও করেনি।আর তুমি
বলছো না, যে দিদি
তোমাকে কত দিন ধরে চেনে? তুমি হয়তো
দিদিকে বেশি দিন
চিনো না কিন্তু দিদি তোমাকে চিনে ও জানে
অনেক দিন
থেকে।তুমি যেদিন প্রথম আমাদের বাড়ি
এসেছিলে সেদিনই
আমি দিদিকে তোমার কথা বলি তারপর দিন দিদি
তোমাকে
দেখে এবং ভালোও লেগে যায়।আমাকে বলে
তোমার পরীক্ষা
নিতে।সেই কারণে আমি তোমাকে প্রোপোজ
করেছিলাম আর
তুমি না করে দিয়েছিলে।তাই তোমাকে দিদির আরও
ভালো
লেগে যায়।তাইতো দিদি আমাদের বাড়ি এসে থাকা
শুরু করল
শুধুমাত্র তোমার জন্য।
,পর্ব—৯
পরের ঘটনা তুমি তো সব জানো।মানছি দিদি একটু রাগি
তাই বলে নিজকে নিয়ে অহংকার করে না কোনো
দিনও।
সত্যি দিদি তোমাকে খুব ভালোবাসে।।বলেই দিঘা
চলে গেল।
আর আমি দিঘার কথা গুলা শুনে মেঘার প্রতি একটু
দুর্বলও হলাম
বটে কিন্তু পরে ভাবলাম ও একটা ধনীর মেয়ে,
আর আমি? আমি
তো একটা সাধারন মধ্যবিত্ত ঘরের ছেলে মাত্র।
আমাদের এ
সম্পর্ক কোনো দিনও সম্ভব হবে না।তাই আবারও
এ থেকে দুরে
সরে আসলাম।।
হঠাৎ কে যেন খবর দিল মেঘা হাসপাতালে।তাই আমিও
দেরি না
করে হাসপাতালে গেলাম।গিয়ে দেখলাম কাকা, কাকি
ও দিঘা
বসে আছে।দিঘা আমাকে দেখতেই বলে উঠল…
তুমি খুশি হয়েছো
তো এবার? তোমার জন্য আজ দিদি হাত কেটে
মরতে বসেছে।আর
এখানে কি মজা দেখতে এসেছো? মজা দেখা
তো শেষ না
তোমার? এখন তুমি আসতে পারো।
কি বলছো এসব তুমি?
তোমার জন্য দিদি মরতে বসেছে।আমি চাইনা তুমি
এখানে
থাকো।প্লিজ চলে যাও।।কাঁন্না করতে করতে দিঘা
আমাকে
বলল এ কথা গুলো আমাকে বলল।
দেখলাম কাকা কাকিও কাঁদছে।
তাই আমি সেখান থেকে চলে আসলাম।বাসায়
এসেও ঘুমাতে
পারলাম না।
হাফিজকে হাসপাতালে পাঠালাম খবর নেওয়ার জন্য।
হাফিজ
গিয়েই বলল চিন্তার কোনো কারন নেই।মেঘার
জ্ঞান
ফিরেছে।ও এখন সুস্থ কালই বাড়ি ফিরবে।
ও আচ্ছা।
ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখি রাত ২:৩০ বাজে।তাই একটু
ঘুমানোর
চেষ্টা করলাম কিন্তু ঘুম আসছে না।
এরপর কখন যে ঘুমিয়ে
পড়লাম।
ঘুম ভাঙলো ঠাসস্ এই শব্দে।আমি কানে হাত দিয়ে
বসে রইলাম।
কিছুই বলতে পারলাম না।কিন্তু এ লোকটা কে? আর
আমাকে কি
কারনে মারলো? লোকটাকে তো আমি চিনি না।
এখনোও
লোকটা আমার দিকে রাগি দৃষ্টিতে তাকাই আছে
কেনো? কি
করেছি আমি?
এমন সময় লোকটি আর একটা চড় দিয়ে বলল…
তোর সাহস কি করে হয় আমার মেয়েকে কষ্ট
দিস? যাকে কিনা
আমি আজ পযন্ত একটা আঙ্গুলের টোকা দেই নাই
আর তাকে কি
না… বলেই একটা ঘুসি দিতে গেল
আমাকে,..ততোক্ষনে কাকা
এসে লোকটাকে ঠেকালো।এমনিতেই চড়
খেয়ে, দাঁতে ঠোট
লেগে কিছুটা কেটে গেছে, রক্তও পড়ছে
খুব।আমার আর বুঝতে
বাকি রইল না কে এই লোক? কাকা বলল…
কি পাগলামি করছো।ওকে তুমি এভাবে মারছো
কেন?
জামাই বাবু তুমি জানো না এর জন্য আজ আমার
মেয়ের এই
অবস্থা।এ আমার মেয়ে ফাঁসিয়েছে।এর জন্য আজ
আমার মেয়ে…
না না তুমি ভুল শুনেছো।তুমি প্লিজ শান্ত হও।আর
আমার কথা
গুলো শোনো… ওর কোনো দোষ নেই।
গতকাল আমি দিঘার কাছ
থেকে সব শুনেছি।মেঘা জয়কে খুব
ভালোবাসে।আর তাই তো
মেঘা আমার বাসায় থাকে জয়কে সব সময় চোখে
চোখে রাখার
জন্য।
মেঘাই তো প্রথম জয়কে তার ভালবাসার কথা জানায়।
কিন্তু জয়
ওকে ফিরিয়ে দেয় আর তাই তো মেঘা এসব
করেছে।আর জয় যদি
মেঘাকে ফাঁসানোর চেষ্টা করত তাহলে তো
আর মেঘাকে
ফিরিয়ে দিত না?
আমি দেখলাম লোকটার মানে মেঘার বাবার রাগ
অনেকটা
কমে গেছে।আর আমার দিকে তাকাই আছে।
অনেকটা দুর্বলও হয়ে
পড়েছে কাকা কথা শুনে।
কাকা চলে গেলেন রুম থেকে।
এখন রুমে
শুধু আমি আর মেঘার বাবা।কেউই কোনো কথা
বলছে না।এভাবে
কিছু সময় চলার পর মেঘার বাবা আমাকে জড়িয়ে
ধরে বলল…
আমি অনেক বড় ভুল করেছি।তুমাকে আমি না বুঝেই
অনেক
মেরেছি।আমাকে ক্ষমা করে দিও।আসলে
মেঘাকে আমি খুব
ভালবাসি তো তাই ওর ওই অবস্থা দেখে আমার মাথায়
কাজ
করছিলো না।সে জন্যই তোমাকে মেরে
বসেছি।
না না আঙ্কেল আপনি ক্ষমা চাচ্ছেন কেন? ক্ষমা যদি
চাইবার
হয়, তো আমি চাইবো কারন শুধুমাত্র আমার জন্য
মেঘার আজ এই
অবস্থা।আর এ কারনে আপনি আমাকে মারতেই
পারেন।।দেখলাম
আঙ্কেল আমার দিকে তাকাই আছে এক দৃষ্টিতে।
কিছু সময় পর
আঙ্কেল বলল…
জয় তুমি আমার মেয়েকে একটু দেখে রাখবা?
যেন ও কোনো দিন
কষ্ট পায়।প্লিজ না বলো না।
আমি কি উত্তর দেবো বুঝতে পারলাম না।শুধু ঘাড়টা
একটু কাত
করলাম।
আঙ্কেল আবার আমাকে জড়িয়ে ধরে বলল…
থ্যাকিংউ জয়।থ্যাকিংউ।
,,,,,
চলবে
বিঃ দ্রঃ নিচে Next >> ক্লিক করলে পরবর্তী পর্ব পাবেন..!