The villain lover

The villain lover ।। পার্ট : ১৪

– আজকের ব্যাপারটা খুব খটকা লাগছে ছোয়ার, রুদ্রের এমন ব্যবহারের কারনটা ছোয়া কিছুতেই বুঝতে পারছেনা।
কি হলো এতোটুকু সময়ে যে রুদ্র এমন হয়ে গেলো!!! সময়ের ব্যবধানে মানুষ বদলায় ছোয়া তা জানে,কিন্তু রুদ্র কি বদলে গেলো এতো তাড়াতাড়ি, কোনো উত্তরি খুঁজে পাচ্ছেনা ছোয়া।
চুপচাপ দোহার কাছে যেয়ে শুয়ে পড়লো, সারাটাদিন এতো ভালো কাটিয়ে এখন এমন কেনো লাগছে বুঝতে পারছেনা ছোয়া।
দোহাকে জড়িয়ে ধরেই ঘুমিয়ে পড়লো ছোয়া।

সকালে ঘুম ভাঙলো পাখির কিচিরমিচির ডাকে, বিছানা থেকে উঠে কিছুক্ষন ঘুম,ঘুম চোখে বিছানায় বসে থাকে ছোয়া,তার মনে হয় ঘুম থেকে উঠেই যদি সে সাথে,সাথে পূরোটা ঘুম কাটিয়ে ওঠে তবে তার ঘুমটা পূর্নতা পায় না।
বাগানে কারো কথার আওয়াজ শুনল ছোয়া, দোহার গলার আওয়াজ।
পাশে তাকাতেই দেখলো দোহা বিছানায় নেই, তার মানে দোহাই কথা বলছে কিন্তু কার সাথে, তা দেখার জন্য ছোয়া বাগানের দিকে গেলো।
– ভাইয়া আমাকে এই কালো গোলাপ গাছটা দিবে?
– না,তোমাকে একটা লাল গোলাপ গাছ দেবো।
– কেনো ভাইয়া,আমার এটা চাই।
– নাহ, কালো গোলাপ রাতের আধারে দেখা যায় না। আর লাল গোলাপ তুমি আধারেও দেখতে পাবে।
– তাহলে তুমিও লাল গোলাপ গাছ লাগাও ভাইয়া,
– না, আমার কালো গোলাপই ভালো লাগে।
– তার মানে কালো গোলাপ বেশি সুন্দর তাইনা? ( কাঁদো, কাঁদো হয়ে বললো দোহা)
– ধুর বোকা মেয়ে, লাল গোলাপ সুন্দর তোমার মতো( রুদ্র দোহার গাল টিপে বললো।
দোহা, কখন উঠেছো আপুনি? আমাকে ডাকোনি কেনো?
পেছন থেকে ছোয়া বললো,
ছোয়া কন্ঠ পেয়ে রুদ্র আবার গাছে পানি দেয়ায় মনোনিবেশ করলো।
– আপুনি ভাইয়ার গাছগুলো দেখছিলাম,তুমি কাল অনেক রাতে ঘুমিয়েছো তো তাই ডাকিনি তোমাকে।
– তুমি কিভাবে বুঝলে? আমি অনেক রাতে ঘুমিয়েছি? তুমিতো ঘুমাচ্ছিলে।
– ভাইয়া বলেছে,
– হুম আর কি বলেছে ভাইয়া?
– ভাইয়া বলেছে আমি লাল গোলাপের মতো সুন্দর,( খুশি হয়ে)
– হুম চলো ব্রাশ করিয়ে দেই,নাস্তা করতে হবে।
– ওকে আপুনি।

দোহা কিছু একটা ভেবে রুদ্রের কাছে গেলো,-ভাইয়া চলো,
– কোথায়???
– ওইযে ব্রাশ করতে,আপু ডাকছে তো।
– তোমার আপু তোমাকে ডাকছে,আমাকে না। তুমি যাও লাল গোলাপ ব্রাশ করে নাও।
– ( ঠোট উলটে দোহা প্রশ্ন করলো)
ভাইয়া আমার নাম তো দোহা? আমাকে তুমি লাল গোলাপ কেনো বললা।
– কারন তুমি ছোট্ট আর মিষ্টি একটা লাল গোলাপ( দোহার গাল টিপে বললো রুদ্র) এবার আপুর সাথে যাও।
তারপর দোহা ছোয়ার সাথে চলে গেলো,
রুদ্র খেয়াল করলো দোহার কিছু বিষয় ছোয়ার সাথে খুব মিল, ঠোট বাকিয়ে কথা,আর কিছু দুষ্টুমি।

দোহাকে ফ্রেস করিয়ে ড্রয়িং রুমে বসিয়ে কার্টুন ছেড়ে দিলো ছোয়া,
আর বাথরুমে চলে গেলো ফ্রেস হতে।
রুদ্র গাছে পানি দিয়েছে নতুন গাছ লাগিয়েছে শরীরে ময়লা পানি আর কাদাও লেগেছে।
রুদ্র রুমে এসেই বাথরুমে চলে গেলো, ছোয়া বেখেয়ালিতে তে দরজা লাগাতে ভুলে গেছে আর রুদ্র নিজের দিকে তাকাতে,তাকাতে ওয়াসরুমে ঢুকেই দেখে ছোয়া গোসল করছে।
ছোয়া রুদ্রকে দেখেই অন্যদিকে ঘুরতে যাবে তখনি পা পিছলে পরে যেতেই রুদ্র ধরে ফেলে ছোয়াকে।
আর ছোয়া রুদ্রের বাহুতে যেয়ে পরে।
রুদ্রে শার্ট খামছে ধরে চোখ বন্ধ করে আছে ছোয়া, রুদ্র চেয়ে আছে ছোয়ার দিকে, প্রতিবারের মতো এবারো রুদ্রের মাতাল হতে খুব ইচ্ছা করছে, কিন্তু রুদ্র তো বুঝেই গিয়েছে এই মাতলামোর কোনো মূল্য ছোয়া দেবেনা।
ছোয়াকে সামনে রুদ্র চলে যাবে তখনি ছোয়া রুদ্রকে চেপে ধরলো,
– আচ্ছা দোহা যদি লাল গোলাপের মতো দেখতে হয় তবে আমি কোন গলাপের মতো দেখতে?
চোখ বুজেই ছোয়া এমন প্রশ্ন করলো,রুদ্র অবাক হয়ে আছে,ছোয়া তাকে নিজে থেকে ধরে আছে আবার এই প্রশ্ন করছে এটা রুদ্রের কাছে অনেকটা স্বপ্নের মতোই লাগছে।
– কি হলো উত্তর দিন?
– তুমি হচ্ছো সেই গোলাপ যে আমি না স্পর্শ করেও চোখ বন্ধ করে অনুভব করতে পারি। আমার সবচেয়ে প্রিয় কালো গোলাপ তুমি।
– রুদ্রের কথা শুনে ছোয়া তাকালো রুদ্রের দিকে,
– কি আমি কালো গোলাপ? তার মানে আমি দেখতে সুন্দর না?
– আমি তাই বললাম?
– একি আমাকে কালো গোলাপ বললেন, ডায়রেক্ট হয়তো আমাকে অসুন্দর বলেননি কিন্তু কালো গোলাপ তো কালো, তার মানে আমিও কালো দেখতে খারাপ তাইনা?
– আচ্ছা ছোয়া, ধরো। সব ধরনের গোলাপ একটা তোমার সামনে রাখা হলো। তার মাঝে একটা কালো গোলাপ। এখন হাজার রঙের মাঝে কালো গোলাপটা তোমার কাছে খুব বেমানান তবে তুমি কি করবে?
– আমি কালো গোলাপটাকে ফেলে দেবো!
– কেনো তুমি সব গোলাপগুলো ফেলেও তো দিতে পারতে তাইনা?
– একটা বেমানান গোলাপের জন্য সব সুন্দর গোলাপ ফেলে দেয়ার কোনো মানেই হয়না।
– আর আমি কি করতাম জানো?
– কি করতেন?
– সব গোলাপগুলো ফেলে শুধু কালো গোলাপটা রাখতাম!
– কেনো???
– কারন কালো গোলাপটা সব থেকে আলাদা,অন্য সব গোলাপের সাথে তাকে গুলিয়ে ফেলার ভয় নেই,কারন কালো গোলাপ তো একটাই। ১০ টা ফুলকে নিজের ভালোবাসা, ভালোলাগা দিলে তো তা ভাগ করতে হবে। তার থেকে ভালো আমি একটা কালো গোলাপকেই নিজের সব ভালোলাগা,ভালোবাসা দিলাম। এতে ভাগাভাগিও করতে হবে না।
-তাই তো ( ঠোট বাকিয়ে বললো ছোয়া) রুদ্রের দিকে তাকিয়ে অনেক কিছু বোঝার চেষ্টা করছে ছোয়া। যে এতো সুন্দর করে একটা ব্যাখ্যা দিতে পারে, সে কি আদৌ বিনা অপরাধে কাউকে শাস্তি দিতে পারে।
– এই জন্য আমি তোমাকে কালো গোলাপের সাথে তুলনা করলাম।কারন আমার সব ভালোবাসা আর ভালোলাগা জুরে শুধুই তুমি।
এখন এভাবে তাকিয়ে না থেকে আমাকে ছাড়ো, তা না হলে এর পর আমি যদি উলটা পালটা করতে চাই। তখন নিজেই আমাকে চরিত্রহীন প্রমানে উঠে পরে লাগবে।
রুদ্রের মুখে এমন কথা শুনেই ছোয়া রুদ্রকে ছেড়ে দিলো।
আর রুদ্র ছোয়ার কাছ থেকে ছাড়া পেতেই চলে গেলো।
ছোয়া ফ্রেস হয়ে বের হয়ে,দোহার কাছে গেলো।
– দোহা এদিকে এসো খাইয়ে দেই তোমাকে,
– ভাইয়া কোথায় আপু? আগে ভাইয়া আসুক।
– নাহ দোহা অনেক সময় হয়েছে তুমি এসে খেয়ে নাই ভাইয়া পরে খাবে।
– না আমি ভাইয়ার সাথে খাবো।
– দোহা জেদ করবেনা।
– আমি ভাইয়ার সাথে খাবো বলেছি ভাইয়ার সাথেই খাবো,
দোহার এমন জেদ দেখে মাথা গরম হয়ে গেলো ছোয়ার।
-( চিৎকার করে বলতে লাগলো ছোয়া) আমার কথার থেকে ভাইয়ার সাথে খাওয়াটা বেশি জরুরী তোমার? কতোক্ষন ধরে ডাকছি আমি? এতো জেদ কেনো করছো তুমি।
ছোয়ার রাগ দেখে দোহা খুব ভয় পেয়ে গেলো,
রুদ্র ছোয়ার চেঁচামেচি শুনে নিচে আসতেই দোহা রুদ্রকে দেখেই কেঁদে দিলো।
– এই কি হয়েছে এতো সুন্দর লাল গোলাপের? এই পচা মেয়ে তুমি ওকে বোকা দিচ্ছ কেনো?
-ভাইয়া,আপুনি আমাকে বোকা দিয়েছে, আ- আমি আরো জোরে কেদে দিলো দোহা।
– তোমাকে বোকা দিয়েছি? চলো তোমাকে খাইয়ে দুজন মিলে আপুনিকে বোকা দিবো।
– আপনি ওকে ছাড়ুন, অনেক জেদ হয়েছে ওর। কোনো কথা শোনে না।
– রুদ্র ছোয়ার দিকে তাকিয়ে বললো,
কার বোন দেখতে হবেনা? বড় বোন যেমন ছোট বোন তেমন হওয়াই তো স্বাভাবিক তাইনা?
– ছোয়া অগ্নিদৃষ্টিতে তাকালো রুদ্রের দিকে, রুদ্র ছোয়াকে চোখ টিপ মেরে দোহাকে নিয়ে টেবিকে বসলো।
ছোয়া দাঁড়িয়ে আছে আগের যায়গায়,
– কি হলো তোমাকেও কি কোলে করে আনতে হবে নাকি?
– ছোয়া রেগে মুখ বাকিয়ে টেবিলে যেয়ে বসলো।
রুদ্র দোহাকে খাইয়ে দিচ্ছে আর রুদ্রের হাসির,হাসির কথা শুনে কতোক্ষন পর পর দোহা খিল,খিল করে হাসছে।
রুদ্র ও দোহার সাথে মেতে উঠেছে হাসিতে,
আর এদিকে একজন না খেয়ে ওদের দিকে তাকিয়ে আছে।
– ভাইয়া আর খাবো না,
– ওকে, যাও কার্টুন দেখো।
– ভাইয়া আপু রাগ করেছে!
– কেনো,
– এইযে তুমি আমাকে খাইয়ে দিলে আপুকে দিলে না, তাই। আর সেইজন্য আপু এখনো খায়নি। ছোয়া দোহার দিকে রাগি ভাবে তাকালো,
– বেশি পাকা কথা বললে এবার মার দিবো।
– ইশ আমার ভাইয়া আছে ভাইয়া তোমাকে মেরে দিবে!
– কি বললি তোর ভাইয়া আমাকে মারবে? আমি তোর ভাইয়াকে মেতে তক্তা বানাবো।
– এটা কি হলো? তোমাদের বোনের ঝগড়ার মাঝে আমাকে কেনো টানছো,শেষ মেশ কি আমাকে বলি দিবে নাকি তোমরা, তোমরা ঝগড়া করে?
– আপনি চুপ করবে, আমি আপনাকে
ছোয়া আর কিছু বলার আগেই রুদ্র ছোয়ার গালে খাবার দিয়ে দিলো,
যার কারনে ছোয়া আর কথা বলতে পারলো না, রুদ্রের এমন কান্ড দেখে দোহার হাসি কয়েকগুণ বেড়ে গেলো।
– ইয়ে ভাইয়া আপুর মুখ বন্ধ করে দিয়েছে,আপু আর কথা বলতে পারবেনা কি মজা।
ছোয়া রাগি চোখে রুদ্রের দিকে তাকিয়ে আছে, আর খাচ্ছে।
রুদ্র ছোয়ার খুব কাছে এসে বলতে লাগলো,
– তোমাকে খাইয়ে দিতে হবে বললেই তো পারতে, এতো নাটক করার কি ছিলো( চোখ মেরে)
-ছোয়ার মুখে খাবার শেষ করে কিছু বলবে তার আগেই রুদ্র আবার ছোয়া মুখে খাবার পুরে দিলো।
এইবার ছোয়ার রাগ কয়েকগুণ বেড়ে গেলো,চাইলেও ছোয়া চিৎকার করতে পারবে না, বিষয়টা রুদ্রকে খুব মজা দিচ্ছে।
– ছোয়াকে খাওয়ানো শেষ করেই রুদ্র উঠে গেলো।
ছোয়া দোহার দিকে একবার তাকিয়েই রাগে গজগজ করতে রুমে গেলো।
– কি পেয়েছে ওরা আমাকে,আমাকে নিয়ে মজা তোদের তেলাপোকায় কামড়াবে।( এসব ভাবতে,ভাবতে বসে আছে)
রুদ্র আবার বেড়িয়ে গেলো, আগের দিনের মতো আজও রাত করে ফিরলো, দোহা রুদ্রের কাছে ঘুমানোর জন্য অনেক বায়না করছে কারন রুদ্র দোহাকে অনেক গল্প শোনায়,রাতে রুদ্র দোহা আর ছোয়া একসাথে বিছানায় শুয়ে আছে,আর রুদ দোহাকে গল্প শুনাচ্ছে।
– এক রাজপুত্রের গল্প যে অনেক দুখি ছিলো, রাজকন্যাকে রাজপুত্র অনেক ভালোবাসতো কিন্তু রাজকন্যা রাজপুত্রকে ভালোবাসতো না, উলটে রাজপুত্রকে রাক্ষস ভাবতো, কিন্তু রাজকন্যা জানতো না যে রাজপুত্র আসলে ভালো আর রাজকন্যাকে রাক্ষসের থেকে মুক্ত করার জন্যই রাজপুত্র কতোটা লড়াই করছে।

মন দিয়ে গল্প শুনছে দোহা, আর একটার পর একটা প্রশ্ন করে যাচ্ছে,
– আচ্ছা ভাইয়া? রাজকন্যা কি তাহলে কি কখনো বুঝবে না যে রাজপুত্র ভালো?
– হ্যা বুঝবে, খুব তাড়াতাড়ি বুঝবে।ছোয়ার দিকে ছোলছোল নয়নে তাকিয়ে বললো রুদ্র।
– দোহা ঘুমাও অনেক রাত হয়েছে,( ছোয়া)
– রুদ্র ছোয়ার দিকে তাকিয়েই আছে, যেন সে আজ নিজের গল্প ছোট্ট দোহাকে বলে নিজের কষ্টটা একটু কমাতে চাইছে।
– ছোয়ার কেনো জানো সাহস হলোনা রুদ্রের দিকে তাকানোর, ছোয়া পাস ফিরে চোখ বন্ধ করে ঘুমানোর চেষ্টা করছে।
হঠাৎ রুদ্র ছোয়াকে ডেকে বললো,
– ছোয়া, কাল কিন্তু তোমার সারপ্রাইজ পাবার দিন, রেডি থেকো। রুদ্রের কথা শুনে আগের মতোই চোখ বন্ধ করে নিলো ছোয়া,
আর ভাবছে কাল কি হবে।

– আর রুদ্র ভাবছে,কাল সে সব কিছু নতুন করে শুরু করবে, যেখানে থাকবেনা কোনো রাগ,কোনো পিছুটান।

পরেরদিন,,
সকালে ঘুম থেকে উঠে ছোয়া দেখলো রুদ্র ঘুমাচ্ছে, আশেপাশে দোহাকে খুজতে লাগলো ছোয়া,কিন্তু রুমে পেলো না ছোয়াকে,
– এতো সকালে মেয়েটা গেলো কোথায়? বাহিরে যেয়ে দেখি, বলেই ছোয়া বের হলো রুম থেকে।
রুমে বাহিরে এসেই আশেপাশে খুজতে লাগলো দোহাকে,
কোথাও খুজে না পেয়ে বাগানে গেলো ছোয়া সেখানেও যখন পেলো না তখনি ছোয়ার অন্তরটা যেন কেপে উঠলো,
মাথা হাত দিয়ে বসে পড়লো, তাহলে কি রুদ্র দোহার সাথে কিছু! না এটা হতে পারেনা, কারন কাল তো রুদ্র দোহাকে কতো আদর করলো।
আবার যে আমার বাবাকে মেড়েছে সে তো আমার বোনকেও মাড়তে পারে, এসব উলটা পালটা ভাবতে, ভাবতে ছোয়া রুমে এসে পড়লো।
– এই উঠুন, উঠুন বলছি?
– ছোয়ার এমন করে ডাক শুনে রুদ্র লাফ দিয়ে উঠলো,
– ক,কি হয়েছে?
– ছোয়া রুদ্রের কর্লার ধরে জোরে জোরে জিজ্ঞেস করতে লাগলো,
-আমার বোন কোথায়? আপনি কি করেছেন ওর সাথে?
– মানে? কি বলছো দোহা তো আমাদের সাথে বলেই রুদ্র বিছানায় তাকায় কিন্তু রুদ্র দেখতে পেলো দোহা বিছানায় নেই।
– নাটক করছেন আমার সাথে?
রুদ্র আর কিছু না বলে সোজা রুম থেকে বের হয়ে যায়,
সব গার্ডদের জিজ্ঞেস করে কিন্তু কেও বলতে পারেনা যে দোহা কোথায়। সবাই বলেছে একবার তাকে বাগানে দেখেছে কিন্তু বাহিরে যেতে দেখেনি।
রুদ্রের মাথায় রক্ত উঠে গিয়েছে সবাইকে রাগারাগি করে,নিজেই গাড়ি নিয়ে বেড়িয়ে পরেছে রুদ্র আর তার লোকজন ও দোহাকে খুজতে বেড়িয়ে পড়েছে।
আর এদিকে ছোয়া কান্নাকাটি করে শেষ হয়ে যাচ্ছে সে ভাবছে এসব রুদ্র করেছে,,,,
রুদ্রের রুমের ল্যান্ড লাইনে ফোন আসতেই ছোয়া যেয়ে ফোন ধরলো,
অপরপাশ থেকে,
– আজ রুদ্র আপনার বোনকে কিডন্যাপ করেছে,আপনার বোনের অনেক বড় ক্ষতি হয়ে যেতে পারে।আপনি জলদি এই ঠিকানায় চলে আসুন।
ছোয়ার মাথায় যেন কিছুই কাজ করছিলো না, তাই ছোয়া আর কিছু না ভেবেই বেড়িয়ে পড়লো।
লোকটার দেয়া ঠিকানায় পৌছাতেই ছোয়া ৭ বছর আগের দেখা বাবার রক্তমাখা লাশের কথা মনে পরে গেলো, আর শুদ্ধ হয়ে দাঁড়িয়ে আছে রইলো ছোয়া,
ছোয়া চিৎকার করে,- রুদ্রদ্রদ্রদ্রদ্রদ্রদ্রদ্রদ্রদ্রদ্রদ্র
( কি এমন দেখলো ছোয়া?)
চলবে,,,The villain lover
লেখিকা : নিলাশা ইরা,
পার্ট : ১৪

– আজকের ব্যাপারটা খুব খটকা লাগছে ছোয়ার, রুদ্রের এমন ব্যবহারের কারনটা ছোয়া কিছুতেই বুঝতে পারছেনা।
কি হলো এতোটুকু সময়ে যে রুদ্র এমন হয়ে গেলো!!! সময়ের ব্যবধানে মানুষ বদলায় ছোয়া তা জানে,কিন্তু রুদ্র কি বদলে গেলো এতো তাড়াতাড়ি, কোনো উত্তরি খুঁজে পাচ্ছেনা ছোয়া।
চুপচাপ দোহার কাছে যেয়ে শুয়ে পড়লো, সারাটাদিন এতো ভালো কাটিয়ে এখন এমন কেনো লাগছে বুঝতে পারছেনা ছোয়া।
দোহাকে জড়িয়ে ধরেই ঘুমিয়ে পড়লো ছোয়া।

সকালে ঘুম ভাঙলো পাখির কিচিরমিচির ডাকে, বিছানা থেকে উঠে কিছুক্ষন ঘুম,ঘুম চোখে বিছানায় বসে থাকে ছোয়া,তার মনে হয় ঘুম থেকে উঠেই যদি সে সাথে,সাথে পূরোটা ঘুম কাটিয়ে ওঠে তবে তার ঘুমটা পূর্নতা পায় না।
বাগানে কারো কথার আওয়াজ শুনল ছোয়া, দোহার গলার আওয়াজ।
পাশে তাকাতেই দেখলো দোহা বিছানায় নেই, তার মানে দোহাই কথা বলছে কিন্তু কার সাথে, তা দেখার জন্য ছোয়া বাগানের দিকে গেলো।
– ভাইয়া আমাকে এই কালো গোলাপ গাছটা দিবে?
– না,তোমাকে একটা লাল গোলাপ গাছ দেবো।
– কেনো ভাইয়া,আমার এটা চাই।
– নাহ, কালো গোলাপ রাতের আধারে দেখা যায় না। আর লাল গোলাপ তুমি আধারেও দেখতে পাবে।
– তাহলে তুমিও লাল গোলাপ গাছ লাগাও ভাইয়া,
– না, আমার কালো গোলাপই ভালো লাগে।
– তার মানে কালো গোলাপ বেশি সুন্দর তাইনা? ( কাঁদো, কাঁদো হয়ে বললো দোহা)
– ধুর বোকা মেয়ে, লাল গোলাপ সুন্দর তোমার মতো( রুদ্র দোহার গাল টিপে বললো।
দোহা, কখন উঠেছো আপুনি? আমাকে ডাকোনি কেনো?
পেছন থেকে ছোয়া বললো,
ছোয়া কন্ঠ পেয়ে রুদ্র আবার গাছে পানি দেয়ায় মনোনিবেশ করলো।
– আপুনি ভাইয়ার গাছগুলো দেখছিলাম,তুমি কাল অনেক রাতে ঘুমিয়েছো তো তাই ডাকিনি তোমাকে।
– তুমি কিভাবে বুঝলে? আমি অনেক রাতে ঘুমিয়েছি? তুমিতো ঘুমাচ্ছিলে।
– ভাইয়া বলেছে,
– হুম আর কি বলেছে ভাইয়া?
– ভাইয়া বলেছে আমি লাল গোলাপের মতো সুন্দর,( খুশি হয়ে)
– হুম চলো ব্রাশ করিয়ে দেই,নাস্তা করতে হবে।
– ওকে আপুনি।

দোহা কিছু একটা ভেবে রুদ্রের কাছে গেলো,-ভাইয়া চলো,
– কোথায়???
– ওইযে ব্রাশ করতে,আপু ডাকছে তো।
– তোমার আপু তোমাকে ডাকছে,আমাকে না। তুমি যাও লাল গোলাপ ব্রাশ করে নাও।
– ( ঠোট উলটে দোহা প্রশ্ন করলো)
ভাইয়া আমার নাম তো দোহা? আমাকে তুমি লাল গোলাপ কেনো বললা।
– কারন তুমি ছোট্ট আর মিষ্টি একটা লাল গোলাপ( দোহার গাল টিপে বললো রুদ্র) এবার আপুর সাথে যাও।
তারপর দোহা ছোয়ার সাথে চলে গেলো,
রুদ্র খেয়াল করলো দোহার কিছু বিষয় ছোয়ার সাথে খুব মিল, ঠোট বাকিয়ে কথা,আর কিছু দুষ্টুমি।

দোহাকে ফ্রেস করিয়ে ড্রয়িং রুমে বসিয়ে কার্টুন ছেড়ে দিলো ছোয়া,
আর বাথরুমে চলে গেলো ফ্রেস হতে।
রুদ্র গাছে পানি দিয়েছে নতুন গাছ লাগিয়েছে শরীরে ময়লা পানি আর কাদাও লেগেছে।
রুদ্র রুমে এসেই বাথরুমে চলে গেলো, ছোয়া বেখেয়ালিতে তে দরজা লাগাতে ভুলে গেছে আর রুদ্র নিজের দিকে তাকাতে,তাকাতে ওয়াসরুমে ঢুকেই দেখে ছোয়া গোসল করছে।
ছোয়া রুদ্রকে দেখেই অন্যদিকে ঘুরতে যাবে তখনি পা পিছলে পরে যেতেই রুদ্র ধরে ফেলে ছোয়াকে।
আর ছোয়া রুদ্রের বাহুতে যেয়ে পরে।
রুদ্রে শার্ট খামছে ধরে চোখ বন্ধ করে আছে ছোয়া, রুদ্র চেয়ে আছে ছোয়ার দিকে, প্রতিবারের মতো এবারো রুদ্রের মাতাল হতে খুব ইচ্ছা করছে, কিন্তু রুদ্র তো বুঝেই গিয়েছে এই মাতলামোর কোনো মূল্য ছোয়া দেবেনা।
ছোয়াকে সামনে রুদ্র চলে যাবে তখনি ছোয়া রুদ্রকে চেপে ধরলো,
– আচ্ছা দোহা যদি লাল গোলাপের মতো দেখতে হয় তবে আমি কোন গলাপের মতো দেখতে?
চোখ বুজেই ছোয়া এমন প্রশ্ন করলো,রুদ্র অবাক হয়ে আছে,ছোয়া তাকে নিজে থেকে ধরে আছে আবার এই প্রশ্ন করছে এটা রুদ্রের কাছে অনেকটা স্বপ্নের মতোই লাগছে।
– কি হলো উত্তর দিন?
– তুমি হচ্ছো সেই গোলাপ যে আমি না স্পর্শ করেও চোখ বন্ধ করে অনুভব করতে পারি। আমার সবচেয়ে প্রিয় কালো গোলাপ তুমি।
– রুদ্রের কথা শুনে ছোয়া তাকালো রুদ্রের দিকে,
– কি আমি কালো গোলাপ? তার মানে আমি দেখতে সুন্দর না?
– আমি তাই বললাম?
– একি আমাকে কালো গোলাপ বললেন, ডায়রেক্ট হয়তো আমাকে অসুন্দর বলেননি কিন্তু কালো গোলাপ তো কালো, তার মানে আমিও কালো দেখতে খারাপ তাইনা?
– আচ্ছা ছোয়া, ধরো। সব ধরনের গোলাপ একটা তোমার সামনে রাখা হলো। তার মাঝে একটা কালো গোলাপ। এখন হাজার রঙের মাঝে কালো গোলাপটা তোমার কাছে খুব বেমানান তবে তুমি কি করবে?
– আমি কালো গোলাপটাকে ফেলে দেবো!
– কেনো তুমি সব গোলাপগুলো ফেলেও তো দিতে পারতে তাইনা?
– একটা বেমানান গোলাপের জন্য সব সুন্দর গোলাপ ফেলে দেয়ার কোনো মানেই হয়না।
– আর আমি কি করতাম জানো?
– কি করতেন?
– সব গোলাপগুলো ফেলে শুধু কালো গোলাপটা রাখতাম!
– কেনো???
– কারন কালো গোলাপটা সব থেকে আলাদা,অন্য সব গোলাপের সাথে তাকে গুলিয়ে ফেলার ভয় নেই,কারন কালো গোলাপ তো একটাই। ১০ টা ফুলকে নিজের ভালোবাসা, ভালোলাগা দিলে তো তা ভাগ করতে হবে। তার থেকে ভালো আমি একটা কালো গোলাপকেই নিজের সব ভালোলাগা,ভালোবাসা দিলাম। এতে ভাগাভাগিও করতে হবে না।
-তাই তো ( ঠোট বাকিয়ে বললো ছোয়া) রুদ্রের দিকে তাকিয়ে অনেক কিছু বোঝার চেষ্টা করছে ছোয়া। যে এতো সুন্দর করে একটা ব্যাখ্যা দিতে পারে, সে কি আদৌ বিনা অপরাধে কাউকে শাস্তি দিতে পারে।
– এই জন্য আমি তোমাকে কালো গোলাপের সাথে তুলনা করলাম।কারন আমার সব ভালোবাসা আর ভালোলাগা জুরে শুধুই তুমি।
এখন এভাবে তাকিয়ে না থেকে আমাকে ছাড়ো, তা না হলে এর পর আমি যদি উলটা পালটা করতে চাই। তখন নিজেই আমাকে চরিত্রহীন প্রমানে উঠে পরে লাগবে।
রুদ্রের মুখে এমন কথা শুনেই ছোয়া রুদ্রকে ছেড়ে দিলো।
আর রুদ্র ছোয়ার কাছ থেকে ছাড়া পেতেই চলে গেলো।
ছোয়া ফ্রেস হয়ে বের হয়ে,দোহার কাছে গেলো।
– দোহা এদিকে এসো খাইয়ে দেই তোমাকে,
– ভাইয়া কোথায় আপু? আগে ভাইয়া আসুক।
– নাহ দোহা অনেক সময় হয়েছে তুমি এসে খেয়ে নাই ভাইয়া পরে খাবে।
– না আমি ভাইয়ার সাথে খাবো।
– দোহা জেদ করবেনা।
– আমি ভাইয়ার সাথে খাবো বলেছি ভাইয়ার সাথেই খাবো,
দোহার এমন জেদ দেখে মাথা গরম হয়ে গেলো ছোয়ার।
-( চিৎকার করে বলতে লাগলো ছোয়া) আমার কথার থেকে ভাইয়ার সাথে খাওয়াটা বেশি জরুরী তোমার? কতোক্ষন ধরে ডাকছি আমি? এতো জেদ কেনো করছো তুমি।
ছোয়ার রাগ দেখে দোহা খুব ভয় পেয়ে গেলো,
রুদ্র ছোয়ার চেঁচামেচি শুনে নিচে আসতেই দোহা রুদ্রকে দেখেই কেঁদে দিলো।
– এই কি হয়েছে এতো সুন্দর লাল গোলাপের? এই পচা মেয়ে তুমি ওকে বোকা দিচ্ছ কেনো?
-ভাইয়া,আপুনি আমাকে বোকা দিয়েছে, আ- আমি আরো জোরে কেদে দিলো দোহা।
– তোমাকে বোকা দিয়েছি? চলো তোমাকে খাইয়ে দুজন মিলে আপুনিকে বোকা দিবো।
– আপনি ওকে ছাড়ুন, অনেক জেদ হয়েছে ওর। কোনো কথা শোনে না।
– রুদ্র ছোয়ার দিকে তাকিয়ে বললো,
কার বোন দেখতে হবেনা? বড় বোন যেমন ছোট বোন তেমন হওয়াই তো স্বাভাবিক তাইনা?
– ছোয়া অগ্নিদৃষ্টিতে তাকালো রুদ্রের দিকে, রুদ্র ছোয়াকে চোখ টিপ মেরে দোহাকে নিয়ে টেবিকে বসলো।
ছোয়া দাঁড়িয়ে আছে আগের যায়গায়,
– কি হলো তোমাকেও কি কোলে করে আনতে হবে নাকি?
– ছোয়া রেগে মুখ বাকিয়ে টেবিলে যেয়ে বসলো।
রুদ্র দোহাকে খাইয়ে দিচ্ছে আর রুদ্রের হাসির,হাসির কথা শুনে কতোক্ষন পর পর দোহা খিল,খিল করে হাসছে।
রুদ্র ও দোহার সাথে মেতে উঠেছে হাসিতে,
আর এদিকে একজন না খেয়ে ওদের দিকে তাকিয়ে আছে।
– ভাইয়া আর খাবো না,
– ওকে, যাও কার্টুন দেখো।
– ভাইয়া আপু রাগ করেছে!
– কেনো,
– এইযে তুমি আমাকে খাইয়ে দিলে আপুকে দিলে না, তাই। আর সেইজন্য আপু এখনো খায়নি। ছোয়া দোহার দিকে রাগি ভাবে তাকালো,
– বেশি পাকা কথা বললে এবার মার দিবো।
– ইশ আমার ভাইয়া আছে ভাইয়া তোমাকে মেরে দিবে!
– কি বললি তোর ভাইয়া আমাকে মারবে? আমি তোর ভাইয়াকে মেতে তক্তা বানাবো।
– এটা কি হলো? তোমাদের বোনের ঝগড়ার মাঝে আমাকে কেনো টানছো,শেষ মেশ কি আমাকে বলি দিবে নাকি তোমরা, তোমরা ঝগড়া করে?
– আপনি চুপ করবে, আমি আপনাকে
ছোয়া আর কিছু বলার আগেই রুদ্র ছোয়ার গালে খাবার দিয়ে দিলো,
যার কারনে ছোয়া আর কথা বলতে পারলো না, রুদ্রের এমন কান্ড দেখে দোহার হাসি কয়েকগুণ বেড়ে গেলো।
– ইয়ে ভাইয়া আপুর মুখ বন্ধ করে দিয়েছে,আপু আর কথা বলতে পারবেনা কি মজা।
ছোয়া রাগি চোখে রুদ্রের দিকে তাকিয়ে আছে, আর খাচ্ছে।
রুদ্র ছোয়ার খুব কাছে এসে বলতে লাগলো,
– তোমাকে খাইয়ে দিতে হবে বললেই তো পারতে, এতো নাটক করার কি ছিলো( চোখ মেরে)
-ছোয়ার মুখে খাবার শেষ করে কিছু বলবে তার আগেই রুদ্র আবার ছোয়া মুখে খাবার পুরে দিলো।
এইবার ছোয়ার রাগ কয়েকগুণ বেড়ে গেলো,চাইলেও ছোয়া চিৎকার করতে পারবে না, বিষয়টা রুদ্রকে খুব মজা দিচ্ছে।
– ছোয়াকে খাওয়ানো শেষ করেই রুদ্র উঠে গেলো।
ছোয়া দোহার দিকে একবার তাকিয়েই রাগে গজগজ করতে রুমে গেলো।
– কি পেয়েছে ওরা আমাকে,আমাকে নিয়ে মজা তোদের তেলাপোকায় কামড়াবে।( এসব ভাবতে,ভাবতে বসে আছে)
রুদ্র আবার বেড়িয়ে গেলো, আগের দিনের মতো আজও রাত করে ফিরলো, দোহা রুদ্রের কাছে ঘুমানোর জন্য অনেক বায়না করছে কারন রুদ্র দোহাকে অনেক গল্প শোনায়,রাতে রুদ্র দোহা আর ছোয়া একসাথে বিছানায় শুয়ে আছে,আর রুদ দোহাকে গল্প শুনাচ্ছে।
– এক রাজপুত্রের গল্প যে অনেক দুখি ছিলো, রাজকন্যাকে রাজপুত্র অনেক ভালোবাসতো কিন্তু রাজকন্যা রাজপুত্রকে ভালোবাসতো না, উলটে রাজপুত্রকে রাক্ষস ভাবতো, কিন্তু রাজকন্যা জানতো না যে রাজপুত্র আসলে ভালো আর রাজকন্যাকে রাক্ষসের থেকে মুক্ত করার জন্যই রাজপুত্র কতোটা লড়াই করছে।

মন দিয়ে গল্প শুনছে দোহা, আর একটার পর একটা প্রশ্ন করে যাচ্ছে,
– আচ্ছা ভাইয়া? রাজকন্যা কি তাহলে কি কখনো বুঝবে না যে রাজপুত্র ভালো?
– হ্যা বুঝবে, খুব তাড়াতাড়ি বুঝবে।ছোয়ার দিকে ছোলছোল নয়নে তাকিয়ে বললো রুদ্র।
– দোহা ঘুমাও অনেক রাত হয়েছে,( ছোয়া)
– রুদ্র ছোয়ার দিকে তাকিয়েই আছে, যেন সে আজ নিজের গল্প ছোট্ট দোহাকে বলে নিজের কষ্টটা একটু কমাতে চাইছে।
– ছোয়ার কেনো জানো সাহস হলোনা রুদ্রের দিকে তাকানোর, ছোয়া পাস ফিরে চোখ বন্ধ করে ঘুমানোর চেষ্টা করছে।
হঠাৎ রুদ্র ছোয়াকে ডেকে বললো,
– ছোয়া, কাল কিন্তু তোমার সারপ্রাইজ পাবার দিন, রেডি থেকো। রুদ্রের কথা শুনে আগের মতোই চোখ বন্ধ করে নিলো ছোয়া,
আর ভাবছে কাল কি হবে।

– আর রুদ্র ভাবছে,কাল সে সব কিছু নতুন করে শুরু করবে, যেখানে থাকবেনা কোনো রাগ,কোনো পিছুটান।

পরেরদিন,,
সকালে ঘুম থেকে উঠে ছোয়া দেখলো রুদ্র ঘুমাচ্ছে, আশেপাশে দোহাকে খুজতে লাগলো ছোয়া,কিন্তু রুমে পেলো না ছোয়াকে,
– এতো সকালে মেয়েটা গেলো কোথায়? বাহিরে যেয়ে দেখি, বলেই ছোয়া বের হলো রুম থেকে।
রুমে বাহিরে এসেই আশেপাশে খুজতে লাগলো দোহাকে,
কোথাও খুজে না পেয়ে বাগানে গেলো ছোয়া সেখানেও যখন পেলো না তখনি ছোয়ার অন্তরটা যেন কেপে উঠলো,
মাথা হাত দিয়ে বসে পড়লো, তাহলে কি রুদ্র দোহার সাথে কিছু! না এটা হতে পারেনা, কারন কাল তো রুদ্র দোহাকে কতো আদর করলো।
আবার যে আমার বাবাকে মেড়েছে সে তো আমার বোনকেও মাড়তে পারে, এসব উলটা পালটা ভাবতে, ভাবতে ছোয়া রুমে এসে পড়লো।
– এই উঠুন, উঠুন বলছি?
– ছোয়ার এমন করে ডাক শুনে রুদ্র লাফ দিয়ে উঠলো,
– ক,কি হয়েছে?
– ছোয়া রুদ্রের কর্লার ধরে জোরে জোরে জিজ্ঞেস করতে লাগলো,
-আমার বোন কোথায়? আপনি কি করেছেন ওর সাথে?
– মানে? কি বলছো দোহা তো আমাদের সাথে বলেই রুদ্র বিছানায় তাকায় কিন্তু রুদ্র দেখতে পেলো দোহা বিছানায় নেই।
– নাটক করছেন আমার সাথে?
রুদ্র আর কিছু না বলে সোজা রুম থেকে বের হয়ে যায়,
সব গার্ডদের জিজ্ঞেস করে কিন্তু কেও বলতে পারেনা যে দোহা কোথায়। সবাই বলেছে একবার তাকে বাগানে দেখেছে কিন্তু বাহিরে যেতে দেখেনি।
রুদ্রের মাথায় রক্ত উঠে গিয়েছে সবাইকে রাগারাগি করে,নিজেই গাড়ি নিয়ে বেড়িয়ে পরেছে রুদ্র আর তার লোকজন ও দোহাকে খুজতে বেড়িয়ে পড়েছে।
আর এদিকে ছোয়া কান্নাকাটি করে শেষ হয়ে যাচ্ছে সে ভাবছে এসব রুদ্র করেছে,,,,
রুদ্রের রুমের ল্যান্ড লাইনে ফোন আসতেই ছোয়া যেয়ে ফোন ধরলো,
অপরপাশ থেকে,
– আজ রুদ্র আপনার বোনকে কিডন্যাপ করেছে,আপনার বোনের অনেক বড় ক্ষতি হয়ে যেতে পারে।আপনি জলদি এই ঠিকানায় চলে আসুন।
ছোয়ার মাথায় যেন কিছুই কাজ করছিলো না, তাই ছোয়া আর কিছু না ভেবেই বেড়িয়ে পড়লো।
লোকটার দেয়া ঠিকানায় পৌছাতেই ছোয়া ৭ বছর আগের দেখা বাবার রক্তমাখা লাশের কথা মনে পরে গেলো, আর শুদ্ধ হয়ে দাঁড়িয়ে আছে রইলো ছোয়া,
ছোয়া চিৎকার করে,- রুদ্রদ্রদ্রদ্রদ্রদ্রদ্রদ্রদ্রদ্রদ্রদ্র
( কি এমন দেখলো ছোয়া?)
চলবে,,,

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *