The villain lover

The villain lover ।। পার্ট : ১৫

রুদ্র পেছনে তাকাতেই দেখলো, ছোয়া।
আর মাটিতে পরে আছে দোহার রক্তাক্ত দেহটা,
ছোয়া দোহার কাছে দৌড়ে গেলো, দোহার পাশে বসেই চিৎকার করে কাঁদতে শুরু করলো।
– এই দোহা কি হয়েছে তোর দোহা প্লিজ কথা বল এই দোহা প্লিজ কথা বল ,
ছোয়া একরাশ রাগ নিয়ে রুদ্রের দিকে তাকালো।
– এই ছিলো তোর মনে? এতোটা হিংস্র পশু তুই। আমি তোকে বাচতে দেবোনা,দেবোনা তোকে বাচতে।
– ছোয়া আমার কথা শোনো, ছোয়া তোমার ভুল হচ্ছে ছোয়া প্লিজ, রুদ্র কিছু বলার ছোয়া পাশে থাকা ছুড়ি নিয়ে রুদ্রের পেটে ঢুকিয়ে দিলো।
– রুদ্র ছলছল চোকে তাকিয়ে আছে ছোয়ার দিকে,
– নে আজ শেষ করলাম তোর মতো খুনিকে, নিজেও খুনি হলাম তোর মতো একটা পশুকে খুন করতে।
পেটে হাত রুদ্র ছোয়া অনেক করে কাছে ডাকছে,
– ছোয়া আমাকে ভুল বুঝছো, ছোয়া প্লিজ আমার কাছে এসো একবার। কথা বেধে আসছে রুদ্রর চোখগুলো ছোট হয়ে আসছে আস্তে আস্তে।
– আমি আর কখনো তোর কাছে যাবোনা। কখনো না।
বলেই ছোয়া আবার দোহার কাছে গেলো,
দোহার শ্বাস তখনো চলছে, ছোয়া আর দেরি না করে চলদি দোহাকে কোলে করে বেড়িয়ে গেলো।
কারন দোহাকে আজ তার বাচাতেই হবে,বাবার মতো দোহাকে সে হারাতে পাড়বে না।

– আর রুদ্র তার শেষ আকুতি নিয়েই চোখ বুজে ফেললো, প্রেয়সীকে একবার শেষবারের মতো ছুয়ে দেখার আকুতি। তার এই শেষ আকুতি যেন মৃত্যু থেকেও বেশি যন্ত্রণার মনে হচ্ছে রুদ্রের কাছে।
আস্তে,আস্তে রুদ্রের দু- চোখে নেমে আসলো অন্ধকার।

ছোয়া দোহাকে নিয়ে হাসপাতাকে পৌছালো, দোহাকে নিয়ে যাওয়া হলো অপারেশন থিয়েটারে।
আর ছোয়া বাহিরে বসে অঝোরে কাঁদছে , আরো একবার সে ঠকে গেলো। জীবন আরো একবার তাকে নিয়ে এক চরম তামাশা করলো। সারারাত কাঁদতে, কাঁদতে পার হয়ে গেলো ছোয়ার।
ভোরের দিকে একটু চোখ লেগে আসলেও, সকালের আলো ফুটতেই নার্সের ডাকে ঘুম ভেঙে গেলো ছোয়ার।
– ম্যাম!
– হ্যা বলুন? আমার বোন কেমন আছে।
– চিন্তার কোনো কারন নেই ম্যাম সে এখন ভালো আছে,আর কিছু দিনের ভেতরে একদম সুস্থ হয়ে যাবে,
– ছোয়া যেন আরেকবার নতুন করে তার প্রান ফিরে পেলো, আজ নিজেকে খুব খুশি লাগছে কারন বাবার মতো সে তার বোনকে হারিয়ে ফেলেনি। সেই পশুটার হাত থেকে বাঁচাতে পেরেছে নিজের বোনকে।
ছোয়া দোহাকে দেখার জন্য দোহার কেবিনে পা বাড়ালো, দোহার জ্ঞান ফেরেনি। ছোয়া যেয়ে দোহার পাশে বসলো।
– দোহা ঠিক হলেই আম্মু আর দোহাকে নিয়ে অনেক দূরে যাবো। একসাথে বাকি জীবনটা খুব সাধারণ ভাবেই কাটাবো। যেখানে থাকবে না রুদ্র নামক কোনো কালো ছায়া।
এসব ভাবতে, ভাবতে দোহার পাশে আবার ঘুমিয়ে পড়লো ছোয়া।
২ ঘন্টা পর ছোট,ছোট দুটো হাতের স্পর্শ পেলো ছোয়া,
মাথ তুলে তাকাতেই দেখলো, দোহার জ্ঞান ফিরেছে।
ছোয়া খুশিতে কান্না করে দিলো।
আর ছোয়ার হাত দুটো নিয়ে চুমু অঝোরে চুমু দিতে লাগলো ছোয়াকে।
দোহা হাসছে,
– আপুনি তুমি কাঁদছ কেন?আমিতো ঠিক আছি।
– ছোয়া কেঁদেই যাচ্ছে।
– আপুনি তুমি তো বলো ভালো মেয়েরা কাঁদেনা তাহলে তুমি কেনো কাঁদছ? তাহলে তুমি ভালো মেয়ে না,খুব পচা মেয়ে।
জানো রুদ্র ভাইয়া বলেছে পচা মেয়েদের নাক আস্তে,আস্তে লম্বা হয়ে যায়।
এতোক্ষন পর দোহার কথায় দোহার দিকে তাকিয়ে রইলো ছোয়া,
– আপু ভাইয়া কোথায়? জানো ওই পচা লোকগুলো যখন আমাকে মারছিল তখন ভাইয়া আমাকে কোলে করে পালাতে চেয়েছিলো, কিন্তু পচা লোকগুলো ভাইয়াকে চেপে ধরে আমার পেটে এতো বড় ছুড়ি ঢুকিয়ে দিয়েছে।
– দোহার কথা ছোয়া কিছুই বুঝতে পারছে না, কিন্তু এতোটুকু বুঝতে পারছে যে রুদ্র দোহাকে বাঁচাতে চেয়েছিলো, তার মানে রুদ্র দোহাকে মারেনি। এসব ভাবতে, ভাবতে শুদ্ধ হয়ে আসছে ছোয়ার সারা শরীর, তাহলে রুদ্রকে সে কিসের শাস্তি দিয়ে এলো, তার মানে রুদ্র ঠিক বলছিলো
রুদ্র এই কথা বলার জন্যই চেষ্টা করছিলো।
ছোয়ার মাথায় যেন কিছু ঢুকছে না, চারপাশটা খুব অন্ধকার হয়ে আসছে।
সে কি করলো নিজেই বুঝতে পারছে না,
ছোয়া এক মিনিট ও দাড়ালো না আর,
শুধু দোহাকে এতোটুকু বলে গেলো,
– দোহা আমি রুদ্র ভাইয়াকে নিয়ে আসছি,তুমি ভালো মেয়ের মতো থাকবে এখানে।
বলেই ছোয়া বেড়িয়ে গেলো,সেই যায়গায় যাচ্ছে ছোয়া যেখানে রুদ্রকে নিজের হাতে সে ছুড়ি মেরেছিলো।
ছোয়া সেখানে যেতেই দেখলো, সেখানে কেও নেই শুধু পরে আছে শুকিয়ে যাওয়া কিছু রক্তের ফোটা।

– তার মানে কি রুদ্র! রুদ্রের সাথে এতোবড় অন্যায় সে কিভাবে করলো নিজেও বুঝতে পারছে না ছোয়া। রুদ্র অপরাধি হলে তাকে আইন শাস্তি দিতো, যে কারনে রুদ্রকে মেনে নিতে পারেনি ছোয়া আজ সে, একি কারনে নিজেকে ঘৃনা করতে ইচ্ছা করছে ছোয়ার। রুদ্র তার বাবার খুনি হয়ে থাকলে ছোয়াও তো রুদ্রের খুনি। আজ ছোয়ার নিজেকে শেষ করে দিতে ইচ্ছা করছে, কাল দোহাকে যে এতো যত্ন করলো সে দোহাকে কিভাবে মাড়তে পারে,এমন চিন্তা কেনো ছোয়ার মাথায় এসেছিলো, আজ ছোয়ার এই সন্দেহের জন্য যদি রুদ্রের কিছু হয়ে যায় তবে নিজেকে কখনো ক্ষমা করতে পারবেনা ছোয়া।
এসব ভাবতে, ভাবতে ছোয়া আবার হাসপাতালের দিকে পা বাড়ালো।
আজ ছোয়া চোখেরজল যেন বাদ মানতে চাইছে না।এই প্রথম রুদ্রের না থাকার জন্য কাঁদছে নাকি নিজের অন্যায়ের জন্য কাঁদছে। তা বুঝতে পারছে না ছোয়া।
হাসপাতালে যেতেই
– আপনি কি মিস মেহেক ছোয়া?( অফিসার)
– হ্যা কেনো?
– রুদ্র চৌধুরীকে খুন করার চেষ্টার অপরাধে আপনাকে গ্রেফতার করা হলো, আপনাকে আমার সাথে থানায় যেতে হবে।
– ছোয়া শুদ্ধ দাঁড়িয়ে আছে,
দুজন মহিলা পুলিশ এসে ছোয়াকে নিয়ে যাচ্ছে,
– এ মিনিট অফিসার(ছোয়া)
আমার বোন অসুস্থ আপনারা আমার নানু বাসায় ইনফর্ম করে কাওকে আসতে বলুন।
– আচ্ছা সেই বিষয়টা আমরা দেখছি আপনি চলুন।
– ছোয়া দোহাকে বললো, আপুনি আমি রুদ্র ভাইয়াকে খুজে আনবো,কিন্তু তুমি কিন্তু ভালো মেয়ে হয়ে থাকবে ওকে?
– ওকে আপুনি তাড়াতাড়ি চলে আসবা কিন্তু।
ছোয়া দোহার কপালে একটা চুমু দিয়ে বেড়িয়ে গেলো অফিসারদের সাথে।
ছি ছি টিভি ফুটেজ থেকে পাওয়া গিয়েছে যে ছোয়া রুদ্রের পেটে ছুড়ি দিয়ে আঘাত করেছে,
ছোয়াকে নিয়ে লোকাবে বন্দি করে দেয়া হলো,
অন্ধকার বড় ভয় পায় ছোয়া, ছোটবেলা মা বাবাকে লাইট অফ করতে দিতো না ঘুমানোর সময়।
আজ সেই অন্ধকার তাকে ভয় পাওয়াচ্ছে না,আজ শুধু একবার রুদ্রকে দেখার চোখ যেন ছোটফোট করছে।
রুদ্র একদিন বলেছিলো তাকে মানুষ যখন কাওকে অনেক ভালোবাসে, তখন সে সেই মানুষটার জন্য অকারনে কাদে আবার কখনো বা কারনে।
যখন অন্ধকার নেমে আসে তখন ভালোবাসার মানুষটার কথা মনে পড়লে চারিদিক আলোকিত লাগে, হাজারো অন্ধকার তখন ভয় পাওয়াতে পারে না,
ছোয়ার চোখে আজ বাদ ভাঙা জল, আজ তার জেলের কালো আধারে ভয় লাগছে না, তার বার,বার মনে পড়ছে রুদ্রের সে আকুতি ভরা চাহনির কথা। একবার তাকে কাছে পাবার জন্য শেষবারের মতো রুদ্র তাকে ডেকেছিলো। কিন্তু সে যায়নি উলটে তাকে একরাশ ঘৃনা ভরা কথা শুনিয়ে এসেছিলো।
একটু বিশ্বাস করলে আজ হয়তো এমন চাপা কষ্ট তাকে ঘিরে ধরতো না।
-দুইদিন ধরে একেবারে না খাওয়া ছোয়া,ক্লান্ত আর খুধার জালায় জেলের এ কোনেই জ্ঞান হারিয়ে ফেলেছে সে।

জ্ঞান ফিরতেই নিজেকে হালকা লাগছে, সে নিজেকে আবিষ্কার করলো একটা বিছানায়। কিন্তু এখানে সে কিভাবে এলো সে তো ছিলো জেলে, ভাবতে ভাবতে বিছানা থেকে উঠে পা বাড়াতেই।
চলবে,
( আমি অনেক অসুস্থ তাই পার্ট টা বড় করতে পারলাম না,আর অতোটা ভালো ও হয়নি😞। নেক্সট টাইম থেকে এমন হবে না। গল্পটা কেমন লাগছে জানালে খুশি হবো। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ)

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *