The villain lover ।। পার্ট : ০৩
কে অপলক তাকিয়ে আছে হঠাৎ ঘোর কাটলো কারো হাতের স্পর্শে।
পেছনে ফিরতেই,
– ভাইয়া কেমন আছো।
– রোদেলা, বলেই বোনাকে জড়িয়ে ধরলো রুদ্র। কতো বড় হয়ে গেছে আমার ছোট্ট বোনটা।
– ভাইয়া জানো তোমাকে ছাড়া আমি আর মাএকটুও ভালো নেই ভাইয়া।
– আর বাবা?
মন খারাপ করে রোদেলা বললো,
– বাবার সামনে তো তোমার নামই নেয়া যায়না।
– তাই নাকি? চিন্তা করিস না খুব তাড়াতাড়ি বাবার ভুল ভাঙবে আর বাবা আমাকে কাছে টেনে নিবে দেখিস।
– হুম,আচ্ছা ভাইয়া চলো অডিটোরিয়ামের দিকে ফাংশন শুরু হবে এখুনি।
তারপর রোদেলা আর রুদ্র অডিটোরিয়ামে গিয়ে, সিটে বসে পড়লো।
অডিটোরিয়ামের পর্দা সরতেই রুদ্রের চোখ আটকে গেলো, তার দেখা সে চেনা চোখে।
ছোয়া নাচছে,,,,
নি সা রে মা পা গা মা পা রে রে সা,
নি সা রে মা পা গা মা পা।
যাও বলো তারে মেঘের ও পাড়ে,
বৃস্টির বন্দনা, জুরে ধরোনেতল।
যাও বলো তারে শ্রাবন, আষাঢ়ে,
মেঘের শতোদলে ছুঁয়েছে ভেজা জল।
মাতাল হাওয়ার এ ধনী বৃস্টি কি শোনেনা,
ময়ূর পেখম তোলে ধিম তানা বাজে ধিম তানা,ধেরে না।
কিছুক্ষন নাচ হওয়ার পরেই ছোয়া তার মুখ থেকে ওরনা সরিয়ে ফেললো, আর রুদ্র হা হয়ে তাকিয়ে আছে ছোয়ার দিকে।
পুড়োটা নাচ অবাক হয়ে দেখছিলো রুদ্র,কেনো জানো চোখ ফেরাতেই ইচ্ছা করছিলো না তার,
রুদ্রের ঘোর কাটলো সবার হাত তালিতে,মানে নাচ শেষ।
– এই ভাইয়া? এই ভাইয়া
– ও হ্যা কি বল??
– কে নাচলো বল তো??
– আমি কি করে জানবো,আমিকি কাওকে চিনি নাকি?
– ভাইয়া তোর মনে নেই?
– কি??? মনে থাকবে?
– এতোক্ষন তোর বউ সরি ছোয়া আপু নাচলো। আমার একবছরের সিনিয়র।
– মানে? ( অবাক রুদ্র) এটা ছোয়া ছিলো?
– হুম ভাইয়া,এটা ছোয়া আপু ছিলো।
ছোয়ার নাচ শেষ হতেই ড্রেস বদলাতে চলে গেলো।
– রোদেলা তুই একটি দাড়া আমি আসছি বলেই রুদ্র ও ছোয়া পেছন, পেছন গেলো।
গ্রিন রুমে ঢুকে ছোয়া তার পিঠের চেইন খোলার চেষ্টা করছে,গ্রিন রুমের ডোর স্লাইডার সিস্টেম হওয়াতে ছোয়া দরজা বন্ধ করেছি ঠিক কিন্তু লোক করেনি।
আর রুদ্র এসেই দরজা খুলে দেখে ছোয়া দাড়িয়ে পিঠের চেইন খোলার চেষ্টা করছে,,
কারো দরজা খোলার আওয়াজ পেয়ে,,
– এই মিম এদিকে আয় চেইনটা খুলতে পারছিনা,হাত ব্যাথা হয়ে গেলো খুলে দে।
– রুদ্র কি করবে বুঝতে পারছে না,
ছোয়া ডেকেই যাচ্ছে,
রুদ্র কি করবে বুঝতে পারছেনা তাই সে তার পকেট থেকে রুমাল বের করে চোখ বেধে নিলো, আর ছোয়ার কাছে যেয়ে তার জামার হুক খুলে দিলো, যখন রুদ্র ছোয়ার এতো কাছে গেলো তার মাঝে বয়ে যাচ্ছিলো এক আলাদা অনুভূতি, ছোয়ার কিছু চুল এসে পরছিলো তার মুখে। ছোয়ার চুলের ঘ্রান যেন তাকে মাতাল করে দিচ্ছিলো।
– উফ বাচালি মিম বলেই পিছে তাকাতেই ছোয়া অবাক। আপনি? আপনি কে? আর এই মেয়েদের রুমে কি,
– আসলে আমি গেস্ট, কলেজের কোথায় কি জানি না। ওয়াসরুম খুজতে এসে দেখলাম আপনার হেল্প লাগবে তাই,
– তাই চলে আসলেন তাইনা,আমি মিমকে ডেকেছি আপনাকে না।
– দেখুন আমাকে ভুল বুঝবেন না, আমি চোখে রুমাল বেধে এসেছি।
ছোয়া দেখলো সত্য লোকটা চোখে রুলাম বেধে আছে,তার মানে যতোটা খারাপ ভেবেছে ততোটা খারাপ লোকটা না।
– আচ্ছা,আচ্ছা বুঝতে পেড়েছি এখন যান এখান থেকে।
রুদ্র মুচকি হেসে চলে গেলো,,,
– এই ভাইয়া কই গিয়েছিলে আমি কতো খুজছিলাম!
– তোর ভাবির কাছে গিয়েছিলাম রে,
– মানি????? ছোয়া আপু? তোমাকে আস্ত রাখলো?
– আরে তোর ভাবি তো আমাকে চিনতেই পারেনি সে কবে দেখা হয়েছিলো মনে আছে নাকি ওর।
– তাইলে দেখা কিভাবে হলো??
তারপর রুদ্র রোদেলাকে সব খুলে বললো,
– ভাইয়া তোমার ভাগ্য ভালো ছোয়া আপু তোমাকে চিনতে পারেনি, চিনতে পাড়লে খবর ছিলো তোমার।
– কেনো কি করতো আমাকে?
– খুন করে ফেলতো, তুমি চলে যাওয়ার পর মা একদিন ছোয়া আপুকে বোঝাতে চেয়েছিলো যে তুমি কোনো অপরাধ করোনি। কিন্তু ছোয়া আপু বলেছিলো,তার বাবাকে যে খুন করেছে তাকে সামনে পেলে সে তাকে খুন করবে।
– আমিতো খুন হয়ে গেছি( আনমনে বললো রুদ্র)
– কি? কি বললা ভাইয়া!
– কিছু না, তবে শুনে রাখ আমি তোর ভাবিকে আমার কাছে খুব তাড়াতাড়ি নিয়ে আসবো।
– মানে? তুমি কেনো ছোয়া আপুকে ভাবি,ভাবি বলছো তুমিতো এই বিয়েটা মানতে না আএ ছোয়া আপুও মানে না,তবে??
– ছোয়া তোর ভাবি,আপাতত এতোটুকু মাথায় ঢুকিয়ে নে,আর ছোয়া তোর সাথে কথা বলে??
– হুম বলেতো,
– ভালো,শোন ছোয়া যেন না জানে আমি তোর ভাই বুঝতে পেরেছিস?.
– আচ্ছা ভাইয়া। তুমি কি করতে চাচ্ছো বুঝতে পারছি না,তবে আমার বিশ্বাস আমার ভাই ভুল কিছু করবে না।
– আমার লক্ষি বোন,আমার ওপরে এই বিশ্বাসটা রাখিস। আজ আসি আমি আবার আসবো।
– আচ্ছা ভাইয়া।
বর্তমান,,,,,
– ছোয়া এসে গিয়েছি নামো,
ছোয়া রুদ্রের দিকে একবার তাকিয়েই গাড়ি থেকে নামলো।
ভেতরে ঢুকতেই,,,,,
দোহা দৌড়ে এসে ছোয়াকে জড়িয়ে ধরলো,,
– আপু, ( কান্না করতে করতে)
– কি হয়েছে আমার আপুটার? এইতো আপু এসে গিয়েছি আমরা এখনি বাড়ি যাবো দোহা।
– আপু তুমি কোথায় ছিলে,তোমাকে গুন্ডারা কেনো ধরে নিয়ে গিয়েছিলো,আর রুদ্র ভাইয়া ওদের কিছু বলেনি কেনো?
– আসলে দোহা আমরা তো একটা খেলা খেলেছি, ওইযে তুমি গেম খেলোনা,সবাইকে কিডন্যাপ করে আর হিরো এসে বাচায় সেইটা।
– ও তাই আমিতো জানতামই না।
– বোকা মেয়ে এবার কান্না মোছো।( ছোয়া)
– আচ্ছা আপু এই গেমের হিরো কি রুদ্র ভাইয়া?
ছোয়া একপলক রুদ্রের দিকে তাকালো,
আর রুদ্র ছোয়ার দিকে, দোহার উত্তর না দিয়ে,
– আচ্ছা দোহা তুমি কিছু খেয়েছো?
– আসলে ম্যাম আমরা খাওয়ানোর চেষ্টা করেছিলাম কিন্তু খাইনি।
– হুম, এখন কিছু খাবার নিয়ে আসুন আমি খাইয়ে দিচ্ছি। তারপর একটা মেয়ে খাবার এনে ছোয়ার হাতে দিলো, আর ছোয়া দোহাকে গল্প করতে,করতে খাইয়ে দিলো।
ছোয়া আর দোহা হাসাহাসি করছে,দুষ্টুমি করছে রুদ্রের ছোয়ার এই রুপ টা খুব ভালোলাগে সে যে ছোয়াকে এমনি হাসিখুশি দেখতে চায়,
রুদ্রের খুব ইচ্ছা করে ছোয়া রুদ্রের সাথে হাসবে,দুষ্টুমি করবে,কিন্তু কবে যে রুদ্রের এ ইচ্ছাটা সত্যি হবে রুদ্র নিজেও জানে না।
দোহাকে খাওয়ানো শেষ করে,,,
– আপনার সাথে কিছু কথা আছে!
– হুম বলো,
-এখানে না একটু আলাদা চলুন।
– হায় আল্লাহ আমার বউটা দেখি
এখন আমাকে ছাড়া থাকতেইপাড়ছে না,এখন না জান তুমি যাচাইবা তা রাতে দিবো। এখন দোহা আছে তোহ( মজা করে)
– আপনার ফাও কথা বন্ধ করুন প্লিজ,
আচ্ছা চলো,
ছোয়া আর রুদ্র আলাদা একটা রুমে গেলো,
– প্লিজ দোহাকে ছেড়ে দিন!
– কেনো??
– ওহ কি কোনো অপরাধ করেছে, আমাদের ঝামেলার মাঝে ওকে কেনো আনছেন।
আপনার আমাকে দরকার ছিলো, আমার সব কিছুই তো পেয়ে গেছেন তাহলে কেনো আমার পড়িবারের পেছনে পড়ে আছেন??
– ভুল বললা,আমি তোমাকে পেয়েছি কিন্তু তোমার সবকিছু না।
– যেটা চেয়েছেন সেটাতো পেয়েছেন। তাইনা?
– মানে!!!
– মানে আমার শরীর,এইটাই তো চেয়েছিলেন সেটা পেয়েছেন।
ছোয়ার এই কথা শুনে রুদ্রের রাগ এতোটাই বেড়ে গেলো রুদ্র ছোয়াকে জোরে থাপ্পড় দিলো।
ছোয়া গালে হাত দিয়ে নিচে বসে পড়লো আর বলতে লাগলো, আমাকে মেড়ে ফেলেন যা ইচ্ছা করেন প্লিজ আমার ফ্যামিলিকে ছেড়ে দিন। আপনি যা চান
এর পর থেকে যখন চাইবেন তখনি তো পাবেন তবে আমার ফ্যামিলি কে কেনো কষ্ট দিচ্ছেন( কাঁদতে, কাঁদতে বললো ছোয়া) রুদ্রের পা ধরে ছোয়া বলতে লাগলো,
প্লিজ ওদের মুক্তি দিন,আমি সারাজীবন আপনার পায়ে পরে থাকবো।
এবার রুদ্র ছোয়া উঠিয়ে ছোয়ার দু- গালে হাত দিয়ে বলতে লাগলো,
– আমি তোমাকে ভালোবাসি তোমার যায়গা পায়ে নয় আমার বুকে আর সারাজীবন সেখানেই থাকবে।
-ছেড়ে দিন ওদের প্লিজ,
– রুদ্র ছোয়াকে আর কিছু বলতে না দিয়ে ছোয়াকে কোলে তুলে সোজা গাড়িতে বসিয়ে দিলো,আর ডোর লক করে দিলো,
ছোয়া চেঁচামেচি করছে,
-প্লিজ রুদ্র ছেড়ে দিন আমি দোহার কাছে যাবো প্লিজ।
সারা রাস্তা ছোয়া একই কথা বললো, রুদ্র শুনেও না শোনার ভান করছে, বাসায় গিয়ে গাড়ি থেকে ছোয়াকে নামিয়ে টানতে,টানতে বাসায় নিয়ে গেলো, তারপর বিছানায় ছুড়ে মারলো ছোয়াকে,,,,
চলবে,,,,,