The villain lover ।। পার্ট : ১৭
ছোয়া আজ নিজের করা ভুলগুলো বুঝতে পারছে, কিন্তু সে ভাবতে পারেনি রুদ্র এতোটা কড়া ভাবে কথা গুলো তাকে বলতে পাড়বে।
– কি হলো আমার মুখের দিকে তাকিয়ে কি ভাবছো?
– রুদ্র প্লিজ আমার কথা শুনন, আপনি অসুস্থ,
– অসুস্থ মাই ফুট, তাতে তোমার কি? আমার এ অবস্থার কারন কে বলো, নিজেই আমার এ অবস্থার কারন আবার এখন আমাকে দয়া দেখাচ্ছো?
কেনো??
রুদ্র হেলতে দুলতে কথাগুলো বলছে, দাড়ানোর শক্তিটুকু যেন হারিয়ে ফেলেছে।
ছোয়াকে আজ কথাগুলো বলতে, রুদ্রের অন্তরটা যেন ক্ষতবিক্ষত করে দিচ্ছে। খুব কষ্ট হচ্ছে রুদ্রর কিন্তু ছোয়া যে কষ্ট তাকে দিয়েছে তার কাছে এতো খুব সামান্য।
– আপনার যতো খারাপ ভাবে আমাকে অপমান করতে ইচ্ছা করে আপনি করুন কিন্তু প্লিজ, আগে সুস্থ হয়ে নিন।
এতোক্ষনে রুদ্রের চেঁচামেচিতে রোজা জেগে গিয়েছি।
– আরে রুদ্র কি হয়েছে,তুমি এখানে কেনো।
– আমার রুমে পানি ছিলোনা রোজা তাই নিতে এসেছিলাম, তারপর পরে গিয়েছি।(রুদ্র)
– আচ্ছা চলো তোমাকে রুমে দিয়ে আসি!
– হ্যা চলো।
– না আপু, আপনাকে নিয়ে যেতে হবেনা, আমি ওনার ওয়াইফ আমি ওনাকে রুমে নিয়ে যাচ্ছি আপনি আপনার রুমে যান ( নিজেকে শক্ত করেই কথাগুলো বললো ছোয়া)
– আমি বলেছি,,
আপনি চুপ করুন আপনার মতামত শুনতে চাইনি কেউ( রুদ্র কিছু বলতে যাবে তখনি বলে উঠলো ছোয়া)
আপু আপনি প্লিজ যান,
রোজা চলে গেলো,
ছোয়া জোর করে রুদ্রকে নিয়ে রুমে গেলো, বার বার রুদ্র বাধা দিচ্ছিলো। কিন্তু ছোয়া তার বাধার কোনো তোয়াক্কা করলো না,
রুদ্র তাকিয়ে আছে ছোয়ার দিকে,দুদিন আগেও যে তাকে দু- চোখে দেখতে পারতো না আজ সেই তার ওপরে জোর করে অধিকার খাটাচ্ছে, আসলে মনে মনে এটাই তো চেয়েছিলো রুদ্র। নিজের মাঝে এক আলাদা ভালোলাগা কাজ করছে রুদ্রর। ভুলে যেতে ইচ্ছা করছে ছোয়ার দেয়া ক্ষতের কথা।
রুদ্রকে শুইয়ে,,,
– হুম,কি জানো বলছিলেন আমি আমার শরীর দেখিয়ে আপনাকে গোলাতে চাচ্ছি তাইনা? স্বামীকে ছাড়া কাকে দেখাবো হুম?? আপনি কি চান আমি পরপুরুষ কে যেয়ে শরীর দেখাই?
রুদ্রের মুখের কাছে মুখ নিয়ে কথাগুলো বললো ছোয়া।
– স্বামী? দুদিন আগে তো আমার থেকে দূরে যেতে চেয়েছিলে?
– হ্যা চেয়েছিলাম, ভুল করেছি।এখন ভুল বুঝতে পেরেছি।
– হ্যা ভুল বুঝতে পেরেছো ঠিক দুদিন পর আবার কেও এসে আমার নামে কিছু বললে ঠিকই আবার ভুল বুঝে আমাকে মাড়তে চাইবে,
ছোয়া মুখে বিষণ্ণতার ছাপ পরে গেলো,
নিজেকে সামলাতে চাইলো ছোয়া কিন্তু পারলো না।
আপনি অসুস্থ ঘুমান, সুস্থ হয়ে যেই শাস্তি দিবেন তা আমি মাথা পেতে নিবো।
ছোয়া চলে যাবে ঠিক তখনি রুদ্র ছোয়ার হাত চেপে ধরলো,
– যদি অসুস্থতার সময় কোনো শাস্তি দিতে চাই?
– হ্যা দিন আমি সব শাস্তি নিতে প্রস্তুত তবে আপনার থেকে দূরে সরে কোনো শাস্তি নিতে আমি পারবোনা।
– কেনো? এতোদিন আমার থেকে দূরে যাওয়ার ইচ্ছাই তোমার ছিলো!
– ছিলো এখন নেই, আপনি ঘুমান তো,বলেই ছোয়া চলে যাবে ঠিক তখনি রুদ্র ছোয়ার হাত টেনে ছোয়াতে রুদ্রের ওপরে ফেলে দিলো,
ছোয়ার চোখ তো ছানাবড়া,
– কি করছেন? আপনার পেটে ব্যান্ডের,
– শাস্তি দিচ্ছি জান,
– এটা আবার কেমন শাস্তি??
– এটা হচ্ছে মধুময় শাস্তি,
– হুম হয়েছে, এখন আমাকে ছেড়ে ঘুমান আপনার ঘুম দরকার।
– একা ঘুমাবো? রাতে আবার যদি পরে যাই?
আপনার মতলব টা কি বলুনতো, একটু আগে তো আমাকে দেখতে পারছিলেন না? আর এখন এমন সব কথা বলছেন?
– জান তোমাকে একটু কষ্ট দিতে চেয়েছিলাম, কিন্তু আমার জানটা তো আমার দেয়া কষ্ট সইতেই পারেনা, বিছানায় বসে অঝোরে চোখের পানি ঝরায়, তাই আর ইচ্ছা করছেনা আমার জানের চোখে পানি ঝরাতে।
কারন আমার জান কান্না করলে তার চোখেই শুধু পানি থাকেনা, রক্তক্ষরণ হয় আমার এই বুকে।
– আপনি এতো ভালো কেনো?
– ধুর আমি কই ভালো, শোনো আমি কিন্তু এমনি এমনি ভালো ব্যাবহার করছি না, আমাকে অনেক ভালোবাসতে হবে। আর খুব বিশ্বাস করতে হবে।
– হুম এর পর থেকে অনেক বিশ্বাস করবো আর!
– আর????
– আর কিছুনা,( লজ্জা পেয়ে), আচ্ছা আগেন বলেন তো আমাকে এখানে কিভাবে আনলেন?? আর আপনাকে বাঁচালোই বা কে?
তারপর রুদ্র বলতে শুরু করলো,,
আমার জান তুমি, তুমি আমাকে সেদিন ফেলে আসার ১০ মিনিট পরে আমার হালকা জ্ঞান আসে হয়তো আমার ভালোবাসাকে আল্লাহ আমার থেকে এতো তাড়াতাড়ি আলাদা করতে চাইনি,আমার শেষ ইচ্ছা আল্লাহ রেখেছে,
আমার যখন হালকা জ্ঞান আসে তখন আমি পকেট থেকে ফোন বের করে রোজাকে ফোন দেই কারন রোজা ওই এলাকাতেই থাকে, ও এসে আমাকে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যায়,,
অবস্থা বেশি খারাপ হবার আগেই,আমার ট্রিটমেন্ট করা হয়। যার ফলে বেচে যাই আমি।
কিন্তু জ্ঞান ফিরতেই জানতে পারি তোমাকে পুলিশ নিয়ে গিয়েছে, তখন আমার ভেতরটা দুমরে,মুচরে যাচ্ছিলো, আমার বউ কে এভাবে নিয়ে যাবে আমি মানতে পারছিলাম না, তাই আমি আমার লোকজন কে বলি যে করেই হোক না কেনো তোমাকে যেন নিয়ে আসা হয়।
তারপর সবাই মিলে সেখানে যাই, আমাকে ডাক্তার ছাড়তে চাইনি তবুও আমি জোর করেই যাই,
যেয়ে দেখি তুমি এক কোনে জ্ঞান হারিয়ে পরে আছো। তখন নিজেকে কন্ট্রোল করতে পারছিলাম না, তাই আমি পুলিশ কে জানিয়ে দেই তোমার বিরুদ্ধে আমার কোনো অভিযোগ নেই।
তারপর জ্ঞান হারানো অবস্থায় তোমায় কোলে করে এই বাসায় নিয়ে আসি, আর এটা রোজার বাসা। ছোয়া তোমাদের অনেক বড় কোনো শত্রু আছে, তাই আমি তোমাকে নিয়ে বাড়ি ফিরিনি। হয়তো সেখানে ফিরলে ওরা এবার তোমার ওপরে হামলা করতে পারে,
আর তোমাকে কোলে করে গাড়িতে বসাতেই আমিও জ্ঞান হারিয়ে ফেলি।
রোজা তোমাকে বাসায় রেখে আমাকে হাসপাতালে নিয়ে যায়।
আজকেও আমাকে ছাড়তে চাইনি আমি জোর করে বাসায় ট্রিটমেন্ট এ ব্যাবস্থা করেছি। কারন তোমার থেকে দূরে থাকলে আমি ভালো থাকতে পারবো না।
ছোয়া চুপ করে রুদ্রের কথা শুনছে,
– এতোকিছুর পরেও নিজের চিন্তা না করে আমার কথা ভাবছিলেন?
– কি করবো বলো? অনেক বছর তোমার থেকে আলাদা ছিলাম তবে এতোটা কষ্ট হয়নি। আজ তোমাকে পেয়ে তোমাকে ভালোবেসে যদি হারিয়ে ফেলি তবে নিজেও যে বাচতে পাড়তাম না।
– ছোয়া আর কিছু না বলে রুদ্রের বুকে মাথা রাখলো, চোখ দিয়ে পড়ছে অনবরত জল।
আজ রুদ্রের বুক ভিজে যাচ্ছে ছোয়ার চোখের পানিতে।
আর রুদ্র যেন পূর্নতা অনুভব করছে তার বুকে,
চলবে,
( প্রথম রমজান রোজা থেকে ইচ্ছা করছিলোনা লিখতে, তারপর ও লিখলাম।জানি আজ লেখাটা বেশি ভালো হবেনা। আর আমি কিছুদিন যাবত অসুস্থ, আজকের পার্টটা বেশি ছোট হয়ে গেলো। কাল থেকে আর এমন হবে না।)