The Mysterious Man- Mafia Boss- Season-3 (Part-2) Part- 82
-কি বলছো ভাই এসব?কি করে ফেন্সিকে বিশ্বাস করতে পারো?
-দেখ ও চেঞ্জ হয়ে গেছে।যা হয়েছে এর কিছুই ও জানতোনা।ও তোকে সত্যিই ভালোবাসে।
-ইম্পসিবল ভাই।ওর মতো মেয়ে কখনোই চেঞ্জ হয়না।আর আমাকে ভালবাসে ও?সিরিয়াসলি ভাই!!!!তুমি বলছো এটা?
-দেখ ফেন্সি ভালো নেই।তোর উচিৎ ওকে সাপোর্ট করা।
-ওকে সাপোর্ট করা দুরে থাক ওর চেহারাটাও সহ্য হয়না আমার।
-দেখ অর্পন আমার কাজ ছিলো তোকে বুঝানো।বাট তুই তোর কথায় পড়ে আছিস।একবার ভেবে দেখিস মেয়েটার কথা।
.
.
.
কথা গুলো বলে উঠে বেরিয়ে গেলো আরাভ।অর্পন চিন্তায় পড়ে যায়।আরাভ অফিসে চলে আসে।আরাভ মেয়ের সাথেকথা বলার দিনই ঠিক করে নিয়েছিলো ওদের ঘরে ফিরিয়ে আনবে।পরদিন ইয়ারাবী অফিসে চলে যায়।ওর বস ফিরেনি এখনো।বসের কিছু কাজ শেষ করে ঘরে আসতেই আয়রানার হাসি শুনতে পায়।কি শব্দ করে হাসছে মেয়েটা।ঠোঁটের কোনে হাসি ফুঁটে উঠে ইয়ারাবীর।এমন টা এ প্রথম হচ্ছে।কারন ঘরে আসলেই মেয়ের কান্না শুনতে হতো ওকে।কিন্তু আজ মেয়ে হাসছে এতো শব্দ করে।ভীষন ভালো লাগছে ইয়ারাবীর।রুমের ভিতর ঢুকতেই অবাক হয়ে যায় ইয়ারাবী।আরাভ মেয়ের সামনে উঁবু হয়ে ওর পেটে নাক দিয়ে সুঁড়সুঁড়ি দিচ্ছে আর মেয়েটা হাসছে।
.
.
.
-এখানে কেন আপনি?কেন আসলেন এখানে?চলে যান।আমার মেয়ের কাছে থাকবেননা।
.
.
.
আরাভ উঠে দাঁড়িয়ে ইয়ারাবীর কাছে এসে ওর হাত হ্যাঁচকা টেনে কাছে নিয়ে এলো।তারপর বলতে শুরু করলো,
.
.
.
-মেয়েটা শুধু তোমার নয় আমার ও।আমি আমার মেয়ের কাছে।তুমি যদি পারো কিছু করতে করো।
.
.
.
কথাটা বলে আরাভ আয়রানা কে কোলে নিয়ে ইয়ারাবী একটু সরিয়ে নিচে চলে যায়।ইয়ারাবীর মুচকি হাসে আরাভ যাওয়ার পরপরই।মেয়েটা আজ কতো খুশি বাবাকে দেখতে পেয়ে।ওর ও তো ভালো লাগছে এতোদিন পর আরাভকে দেখতে পেয়ে।লোকটাকে খুব মনে পড়ছিলো ওর।ইয়ারাবী ফ্রেশ হয়ে নিচে আসতেই খেয়াল করলো।টেবিলে খাবার সাজানো। আয়রানা বেবি কারে শুয়ে আছে।আরাভ ইয়ারাবীর দিকে একবার তাকায়।তারপর বলল,
.
.
.
-এগুলো আমি করেছি।খেয়ে নাও।
-এতো নাটক করছেন কেন?কেন চলে যাননা।আপনাকে আমার সহ্য হচ্ছেনা।
-দেখো সহ্য করতে হবে।এটাই নিয়ম।তোমার হাসবেন্ড আমি।সো আমার কথার বাহিরে কোন কথা বলতে পারবেনা।
.
.
.
ইয়ারাবী রেগে সিড়ির দিকে যেতে নিলে আরাভ ওর হাত টেনে টেবিলের কাছে এনে নিজের কোলে বসিয়ে দিলো।ইয়ারাবী নিজেকে ছাড়াতে চাইছে।আরাভ একহাতে ইয়ারাবীর কোমড় চেঁপে ধরে ওর মুখে ভাত তুলে দিলো।ইয়ারাবী অনিচ্ছাস্বত্তেও খেয়ে আয়রানা কে নিয়ে উপরে চলে এলো।
বাবুকে কোলে নিয়ে দুষ্টুমি করছে ইয়ারাবী।হঠাৎ ক্যামেরার শব্দে দরজার দিকে তাকায় ইয়ারাবী।আরাভ ছবি তুলছে ওদের।ইয়ারাবী রেগে গেলো।
.
.
.
-এসব কি? আপনি ছবি তুলছেন কেন আমাদের?
-আমি আমার বৌ বাচ্চার ছবি তুলছি। তোমার কি?
.
.
ইয়ারাবী কিছু বলতে পারলোনা।দিন গুলো পার হয়ে যেতে থাকে আরাভের।বাবুর সাথে কিংবা রুপন্তী রেহানের সাথে গল্পে মেতে থেকে আবার কখনো ইয়ারাবীকে বিরক্ত করে।এখন অফিস থেকে জলদি ফিরে আসে আরাভ।আরাভ খেয়াল করলো ইয়ারাবী অফিস করছে।সেদিন আরাভ ইয়ারাবীকে জিজ্ঞেস করে,
.
.
.
-দেখো ইয়ারাবী চাচ্চুর টাকা পয়সার অভাব নেই আমি ও মোটামুটি ভালো পজিশনে আছি।তোমার চাকরি করতে হচ্ছে কেন?
-শুনেন কারোর ওপর বোঝা হতে চাইনা।পড়াশুনা করেছি তাই জব করছি।আপনার থেকে টাকা নেয়ার কোন ইচ্ছে নেই আমার।আমার পাপার ও দরকার নেই আমাকে টাকা দেয়ার।
.
.
.
আরাভ বেশ চিন্তিত হয়ে পড়ে। ইয়ারাবী এইচএসসি পরীক্ষা দেইনি তাহলে জব হলো কি করে?রেহানের সাথে বসে কফি খাচ্ছিলো আরাভ।
.
.
.
-চাচ্চু ইয়ারাবী কোন কোম্পানীতে জব করছে?
-ব্রাদার্স কোম্পানী লিমিটেড।
-পোস্ট কি ওর?
-এমডির পিএ
-ও এখনো ইন্টার পাশ করে নি জব হলো কি করে?
-বাবা আমি ও বুঝতে পারছিনা।ইয়ারাবী খুশি আছে তাই কিছু বলিনি।ওরা ও হয়ত নতুন ক্যান্ডিডেট খুঁজছে।
.
.
.
এদিকে ফারহান আয়মান খান চলে এলো দেশে।আসার পরদিনই অফিসে জয়েন করে।আর সেদিনই নেট ঘেঁটে আরাভ জানতে পারলো কোম্পানীটা হানিফ খানের আর এমডি হলো ফারহান আয়মান খান।
ইয়ারাবী অফিসে এসে বসের কেবিনে ফারহানকে দেখে ভয় পেয়ে গেলো।এ লোকটাকে ভালো লাগেনা ওর।সেদিন ওর দিকে যেভাবে তাকিয়েছিলো ওর একদম ভালো লাগেনি।আর এ লোকের পিএ ও?আজ ও এ লোক কেমন বাজে ভাবে ওকে দেখছে।ইয়ারাবীকে দেখে ফারহান হাসলো।
.
.
.
-মিসেস আরাভ চৌধুরী দাঁড়িয়ে আছেন কেন ওখানে?
-জি স্যার এক্চুয়ালি!!!!
-লেট ইট গো।আমি খেয়াল করেছি আপনি বেশ ভালো কাজ করেছেন একয়দিন।
.
.
.
কথা গুলো বলতে বলতে ফারহান ইয়ারাবীর একদম কাছ ঘেঁষে দাঁড়ায়।ইয়ারাবী সরে দাঁড়ায়।
.
.
.
-থ্যাংকস স্যার।
-ওয়েলকাম।ফারহান নিজের সিটে এসে বসলো।আমার জন্য এক কাপ কফি করে আনো।
-জি স্যার!!!!
.
.
.
ইয়ারাবী বেরিয়ে গেলো।কিছুসময় পর এলো কফি হাতে।ইয়ারাবী টেবিলে কফি রাখতে যেতেই ফারহান ওর হাত থেকে কফি নিলো।তবে ইয়ারাবীর হাতে হাত ছুঁইয়ে। ইয়ারাবী হাত সরিয়ে নিলো।ফারহান শয়তানি হাসি দিলো।ইয়ারাবী স্থির করলো জব ছেড়ে দেবে ও।
ঘরে ফিরে আসে ইয়ারাবী।মনটা ভালো নেই।ভয় হচ্ছে ওর।তবে আয়রানা কে দেখে মনটা একটু হলে ও ভালো হলো ওর।মেয়ের পাশে শুয়ে ওর গালে চুমু খেলো ইয়ারাবী,
.
.
.
-আমার আম্মুটা মাকে মিস করেনি?আম্মুতো মেয়েটাকে মিস করছিলাম খুব।
.
.
.
বাবু পা নেড়ে মুখ দিয়ে শব্দ করছে।আবার দুহাত জোড় করে মুখে পুরে দিলো।ইয়ারাবর হাত সরাতেই আবার ও হাতজোড়া মুঠ করে মুখে পুরলো আয়রানা।
.
.
.
-আয়ু মা এটা পচা মা।হাত মুখে দেয়না।
.
.
.
ইয়ারাবী আবার ও হাত বের করতেই আয়রানা এবার পা ঝেঁড়ে কাঁদতে লাগে।ইয়ারাবী এবার উঠে মেয়েকে কোলে নিলো।
.
.
.
-কাঁদেনা আম্মু।মাটার কি খিদে পেয়েছে?
.
.
.
আয়রানা কাঁদছে।ইয়ারাবী মেয়েকে খাইয়ে দিয়ে ঘুম পাড়িয়ে দিলো।তারপর সন্ধ্যায় ল্যাপটপের সামনে বসলো।একটা রেসিগনেশন লেটার টাইপ করতে শুরু করে।হঠাৎ আয়রানার কান্নার শব্দে ইয়ারাবীর কাজে ব্যাঘাত ঘটে। মেয়েকে দেখার জন্য রুমে চলে যায় ইয়ারাবী।এদিকে আরাভ ইয়ারাবীকে খুঁজতে এসে রেসিগনেশন লেটার দেখে বেশ অবাক হলো।চাকরি নিতে না নিতেই রেসিগনেশন লেটার।কোন সমস্যা হলো না তো?কোন কিছুতো শেয়ার ও করেনা।আরাভ পড়তে যেতেই ওর ফোন বেজে উঠে।ফোন কানে রেখে বেরিয়ে গেলো আরাভ।ইয়ারাবী আয়রানাকে খাইয়ে এসে লেটার কমপ্লিট করে নিলো।পরদিন ফারহানের ইমেলে রেসিগনেশন লেটার পাঠায় ইয়ারাবী।অফিসে কিছু সময় চলে যাওয়ার পর ফারহান ইয়ারাবী কে ডেকে পাঠায়।
.
.
.
-জি স্যার!!!
-রিজাইন করছেন আপনি?
-জি স্যার?
-এখানে জব করছেন কতোদিন হলো?
-২মাস।
-জব নেয়ার সময় ফাইল সাইন করেছিলেন।সেটা ভালো মতো পড়েননি আপনি?
-না স্যার।
-আমি বলছি ঐখানে কিছু শর্তাদি ছিলো।সেগুলোর মধ্যে একটি হলো আপনি দুই তিন বছর আগে জব ছাড়তে পারবেননা।আর ছাড়লে আপনাকে দশকোটি টাকা জরিমানা করতে হবে।
.
.
.
ভয় পেয়ে যায় ইয়ারাবী।কিছু বলতে পারেনি ও।ফারহান এর পর থেকে বিভিন্ন সুযোগে ওর গায়ে হাত দিতো।ওর কাছে ঘেঁষার চেষ্টা করতো।প্রচুর খারাপ লাগতে শুরু করে ইয়ারাবীর।প্রতিনিয়ত মন খারাপ থাকে ওর।আরাভ সেটা খেয়াল করেছে।ইয়ারাবীকে জিজ্ঞেস করে ও তো লাভ নেই।মেয়েটা কিছুই বলেনা।
(শরীর ভালো নেই।হাতে ও অনেক পেইন তাই অল্প করে লিখে দিলাম।)
চলবে