The Mysterious Man- Mafia Boss- Season-3 (Part-2)

The Mysterious Man- Mafia Boss- Season-3 (Part-2) Part- 69

রুহী বাড়ির দরজার সামনে আসতেই মৃদু শব্দে গান শুনতে পায় রুহী।দরজাটা একটু ভিড়ানো।ভিতরে খুব সুন্দর একটা গান চলছে।
Jo Meri Rooh Ko Chain De Pyaar De Woh Khushi Bangaye Ho Tum Zindagi Ban gaye Ho Tum Zindagi Ban gaye Ho Tum Jo Meri Rooh Ko Chain De Pyaar De Woh Khushi Ban gaye Ho Tum Zindagi Ban gaye Ho Tum Zindagi Ban gaye Ho Tum.
গানটা শুনে রুহি মৃদু হাসলো।গানটা বড্ড রোমান্টিক।রুহী দরজা খুলতেই অনেক গুলো গোলাপের পাপড়ি ওর ওপর পড়তে শুরু করলো। রুহীর চোখে মুখে খুশির ছাপ।ওপরে তাকিয়ে ফুল গুলো দেখছে।
হঠাৎ একটা কথায় রুহীর ঘোর কাঁটে।সামনে তাকায় ও।
-Happy Twenty nine years love anniversary darling.
রুহী এবার রোয়েন কে দেখতে পেলো।রোয়েন ব্লাক কম্পলিট সুট পরে আছে।আজ যেন রুহী তার পুরোনো রোয়েনকে দেখতে পাচ্ছে।লোকটা আজ ঠিক তেমনই আছে যেমনটা ২৯ বছর আগে ছিলো।রোয়েন হেঁটে রুহীর সামনে এলো।রুহীর দিকে একটা হাত বাড়িয়ে বলল,
-আবার চলো নতুন করে ভালোবাসায় জড়িয়ে যাই দুজন।
-রুহী রোয়েনের হাতে হাত রাখলো।এগুলো কখন করলে?
-এখন এসব না জানি আমরা?
-ওকে।আই লাভ ইউ রোয়েন।
-আই লাভ ইউ টু।চলো ভিতরে যাই।
-হুম।
রোয়েন রুহীর হাত ধরে ভিতরে যেতে শুরু করে।গান বাজছে।সেই সাথে লাইটের কালার চেঞ্জ হচ্ছে।সারা ঘরে রেড বেলুন ছড়ানো।ওরা একটা রুমে এলো।এ রুম খুব বেশি সুন্দর করে সাজানো।রুহীর মন মুহূর্তেই খারাপ হয়ে গেলো।কাল যা বলেছিলো সেগুলো ভেবেই ভীষন খারাপ লাগছে ওর।
-সরি। কালকের কথা গুলোর জন্য খুব দুঃখিত আমি।
-রুহীর সামনে দাঁড়ায় রোয়েন।অতীত কে ভুলে বর্তমানটাকে আপন করে নাও।আমি রাগ করিনি।
রুহী স্বামীকে জড়িয়ে ধরলো।রোয়েন রুহীকে শক্ত করে বুকের মাঝে নিয়ে নিলো।
ইয়ারাবী চুপচাপ দাঁড়িয়ে আছে।আরাভ ওর দিকে তাকায়।মেয়েটা আসলেই বড় ভয় পেয়েছে।এখন ও ডুকরে উঠছে।আরাভ ইয়ারাবী কে ধরে উপরে নিয়ে এলো।তারপর ওয়াশরুমে এনে ওর মুখ ধুইয়ে দিলো।এখন যেন ওকে একটু স্বাভাবিক লাগছে।
-আরাভ!!!
-হুম।
-খুব খিদে পেয়েছে আমার।
-ওকে চলো।
ইয়ারাবীকে নিয়ে ডাইনিং রুমে চলে এলো আরাভ।ইয়ারাবী খাচ্ছে। আরাভ ওকে একবার দেখে নিলো।আরাভ খাকয়ার মাঝে বলল,
-জানো আজ বাবাই মায়ের লাইফের খুব স্পেশাল একটা দিন।
-কি দিন আজ?
-ওনাদের লাভ ম্যারেজ হয়েছিলো।সো বাবাই মায়ের আজ রিলেশনশিপের উনত্রিশ বছর পূর্ন হলো।
-ওহ।কাল মাম্মা ঐটাই বলছিলো স্পেশাল দিন।তাহলে আজ আনলেন কেন এখানে?রেগে গেলো ইয়ারাবী।
-কেন কি হলো?
-ওনাদের জন্য কিছু করতে পারতাম।
-বাবাই মাকে নিয়ে ঘুরতে গেছে তাই আমরা ও এলাম।আজ ওনারা ঘরে ফিরবেননা।
-ওহ।
রুহীকে নিয়ে একটা গোলটেবিলের সামনে এলো রোয়েন।টেবিল ভরা বিভিন্ন রকমের খাবার।তারপর রুহীকে বসতে দিয়ে নিজে ও বসে পড়ে রোয়েন।রুহী নিজের পাতে খাবার বাড়লো সাথে রোয়েনের প্লেটে বাড়তে গেলে রোয়েন থামায় রুহীকে।
-উহুম।
-কি? খাবে না?
-খাবো।তবে এক প্লেটে।তুমি খাইয়ে দিবে।
-একটু শব্দ করে হাসে রুহী।ওকে তোমার চেয়ার আমার পাশে নিয়ে এসো।
রোয়েন নিজের চেয়ার রুহীর পাশে এনে বসলো।রুহী রোয়েনকে ও খাওয়ালো নিজে ও খেয়ে নিলো।রোয়েন এবার রুহীকে নিয়ে একজায়গায় এসে দাঁড়ায়।তারপর কাপল ড্যান্সের জন্য রুহীর দিকে হাত বাড়িয়ে দিলো।রোয়েন।দুজনে একে অপরের মাঝে একাকার হয়ে গেলো।খাওয়া শেষে রোয়েন রুহীর হাত ধরে পাশের বেডরুমটিতে নিয়ে এলো।বেড রুমটি সাজানো হয়েছে মোমবাতি দিয়ে।রুহীর রোয়েনের হাত জড়িয়ে ধরে রুমে প্রবেশ করার মুহূর্তে।
রুহীকে নিয়ে বিছানার এগিয়ে আসে রোয়েন।তারপর রুহীকে খাটে বসিয়ে ওর পাশে বসে রোয়েন।রুহী রোয়েনের দিকে এগিয়ে এসে ওর গালে ঠোঁট ছোঁয়ায়।
-রোয়েন আমাদের এদিনটার প্রথম বছরের কথা মনে আছে তোমার?
-হুম।ব্রেকআপ করেছিলাম।পরে তোমার রাগ ভাঙ্গিয়ে ছিলাম এদিন।ঐদিন তুমি বিয়ের কথা বলেছিলে রুহী।
-মনে আছে আমার।সেদিন তোমার স্পর্শগুলো পাগল করে দিচ্ছিলো আমায়।
-আজ কি চাও সে স্পর্শ?
রুহী নীরব।রোয়েন রুহীর ঠোঁটে আলতো করে একবার চুমু দিয়ে আবার ও চুমু দিলো গভীর ভাবে।রুহী রোয়েনের কোট খাঁমচে ধরলো।একটু পর সরে এলো রোয়েন।
-জানো আজ সেই প্রথম চুমুর ফিলিং টা পেলাম রোয়েন।লজ্জামাখা হাসি দিয়ে বলল রুহী।
-আজ ও মনে আছে তোমার?
-মাথা ঝাঁকায় রুহী।সেদিনটা ভুলবার মতো নয়।
রুহীকে বুকে নিয়ে শুয়ে পড়ে রোয়েন।ওরা ওদের অতীতকালের ভালোবাসায় মাখা সময় গুলো কে মনে করতে থাকে।ওদের সুখের আর দুঃখের সময় গুলো মনের মাঝে সতেজ হয়ে উঠছে।
-কুয়াকাটায় আমাদের সময় গুলোর কথা মনে আছে রুহী?
-তা আবার থাকবেনা?তোমার সাথে প্রথম কোথা ঘুরতে যাওয়া।
-ভালবাসতেনা তখন আমায়।
-বড় জোর করে নিয়ে গিয়েছিলে যে।
-যখন মারছিলো আমায়।তখন ঠিকই ভ্যা ভ্যা করে কাঁদছিলে।
-তখন তোমাকে ভালবাসতাম না ঠিকই।কিন্তু মনের কোন একটা জায়গায় তোমার জন্য ভালো লাগা কাজ করতো।
-জীবনে কতো মানুষ দেখলাম।যে আপন হয়ে ও শত্রুর ভুমিকা পালব করেছে।
-আমার মা আর মিতালী।
-ওদের ভুলে যাও রুহী।
-হু।তুমি আসার পর থেকে সব কষ্ট ভুলে যেতে শিখেছি আমি।
-অস্ট্রিয়ায় চলে গিয়েছিলে।তখন জানো নিজেকে খুব অপরাধী মনে হচ্ছিলো।অবশ্য অস্ট্রিয়াই এক করে দিয়েছিলো আমাদের।বলে রুহীর কপালে চুমু দেয় রোয়েন।
-এর পর আরাভ আরাবী হলো।ওদের বেড়ে উঠা।তোমার মনে আছে আরাভ প্যান্ট পরতেই চাইতো না।হেসে বলল রুহী।
-হা।প্রথম জন্মদিনে প্যাম্পার্স ও পরতে চায়নি।পরে তো তুমি থাপড় দিয়ে প্যাম্পার্স পরালে।বাচ্চাটা কি কাঁদছিলো।অবশ্য ওকে মেরে তুমি ও কেঁদে দিয়েছিলে।
-কাঁদবোনা কেন বলো?এতো ছোট ছিলো ওরা।প্রথম মেরেছিলাম ওকে।
-একটা চড় ওকে ১০ বছর দূরে সরিয়ে দিয়েছিলো আমাদের থেকে।
-থাক ওসব কথা মনে করোনা।বড় কষ্ট দেয় সেই দিন গুলো।
-ঠিকই বললে।ওকে মনে করছিনা আর।
-সেকেন্ড টাইম কন্সিভ করার পর কতোটা খুশি ছিলে তুমি।
-হুম।
-কিন্তু ও চলে গেলো আমাদের ছেড়ে।জানো কষ্ট যতোটা ওর জন্য হচ্ছিলো তার চেয়ে দ্বিগুন কষ্ট তোমার জন্য পেয়েছিলাম।
-আমি কষ্ট পেয়েছিলাম ওর জন্য।তবে মনে অন্তত এতোটুকু শান্তি পেয়েছিলাম যে তোমার কিছু হয়নি।
রুহী রোয়েনের বুকে আলতো করে চুমু দিয়ে হাতে রোয়েনের পিঠ জড়িয়ে ধরে।ঘুমিয়ে যায় ওরা।
|
|
|
|
|
সুইমিংপুলের পাশে বসে আছে আরাভ ইয়ারাবী।মেয়েটা বড্ড জেদী।চোখে একরাশ ঘুম তবু ও সে এখানেই সময় কাঁটাতে চাইছে।আরাভ শক্ত মুখ করে বলল,
-ইয়ারাবী তোমার ঘুমানো উচিৎ।
-আরো কিছুসময় বসি?
-নাহ সকালে আবার আসবো।এখন ঘুমোতে আসো।
-এখনই ভালো লাগছে এখানে।
-তুমি মানবেনা এভাবে।
ইয়ারাবী কে কোলে তুলে নিলো আরাভ।তারপর সিড়ির দিকে পা বাঁড়ালো।বেডরুমের সামনে আসতেই দুজনের মুখে একরাশ কালো মেঘ ভর করলো।ইয়ারাবী নিচে নামায় আরাভ।
-এটা সেই রুম না?
-হুম।বলে উঠে আরাভ।
-আগের মতোই আছে এরুমটা।কোন চেঞ্জ নেই।
-চেঞ্জ করতে দেইনি।কারন এ দৃশ্যটা আমায় সেই রাতের কথা মনে করিয়ে দেয় আমায়।আমার জীবনের বেস্ট রাত ছিলো ওটা।শুধু যদি একটাবার নিজের ওপর কন্ট্রোল আনতে পারতাম তাহলে তোমার ভিতরের ছোট্ট হৃদয় টা থাকতোনা।সুস্থ থাকতে তুমি।
আমরা খুশি থাকতাম আরো বেশি।
-এভাবে বলেবেননা।সন্তান আল্লাহর নেয়ামত।ও আমাদের এক হওয়ার চিহ্ন।শুধু শুধু নিজেকে দোষারোপ করবেননা।
-কেন করবো না বলো।আমার জন্য তোমার লাইফ কতোটা রিস্ক হয়ে গেছিলো বলো।এখনো পুরোপুরি রিস্কনেস কাঁটেনি।
-এটা তো বিয়ের পরে ও হতে পারতো আরাভ।
-হুম।চলো শুয়ে পড়ি।
-চলুন।
দুজনে বিছানার দিকে তাকায়।ইয়ারাবীর মুখে লাজরাঙ্গা হাসি।
আরাভ ইয়ারাবীকে প্রায় জড়িয়ে ধরে শুইয়ে দিয়ে ওর পাশে শুয়ে ইয়ারাবীর ওপর কিছুটা উঁবু হলো।তারপর ইয়ারাবীর ঠোঁটজোড়া শুষে নিতে ইয়ারাবীর শাড়ী ভেদ করে ওর ভার হওয়া পেটে হাত রাখে আরাভ।ইয়ারাবী আরাভের শার্ট খাঁমচে ধরছে।এবার আরাভ ইয়ারাবীর গলায় একবার চুমু দিয়ে মাথা উঠায়।
-আচ্ছা সেদিন এতবার ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট পাঠাচ্ছিলে আবার ক্যান্সেল করছিলে কেন?দুষ্টু হেসে জিজ্ঞেস করে আরাভ।
-দ্বিধা বোধ হচ্ছিলো বড়।আবার আপনার দিকে মন টানছিলো।
-তোমার আইডির নাম ইয়ারাভ কেন দিয়েছিলে?
-ইয়ারাবী লজ্জায় এতোটুকু হয়ে বলল আপনার নামের সাথে মিলিয়ে রেখেছিলাম।
-তাই???
-হুম।
-একজন অপরিচিত ছিলাম তোমার জন্য তারপর ও কতো ঘুরতে, কথা বলতে,রোম্যান্সে ও রিসপন্স করছিলে।
-ইয়ারাবী দুহাতে মুখ ঢেকে বলল ধ্যাত কি বলেন।লজ্জা লাগে তো।
-Time flies.সেদিন ফেসবুকে পরিচয়।তুমি চিনতে না আমায়।আর আজ আমার বৌ তুমি।আমার প্রেমিকা তুমি।আর আমার সোনা বাবাটার মা আর আমার মায়াময়ী।
ইয়ারাবী আরাভের হাত নিজের পেটে রাখে।আরাভ ফিল করছে বাচ্চাটার ছোট্ট হৃদকম্পন।আরাভ এবার ইয়ারাবীর পেটে চুমু দিয়ে আবার উঠে ওর দিকে তাকায়।ইয়ারাবীর কপালে চুমু দিয়ে বলল,
-ডোন্ট লিভ মি ইয়ারাবী।
-কেন যাবো আপনাকে ছেড়ে?আমি চলে গেলে আপনাকে জ্বালাবো কি করে?
-জ্বালাবে মাথা খাবে আমার তারপর ও যেওনা সহ্য করতে পারবোনা।
-ওপরওয়ালার ডাক পড়লে কিছুই করার থাকবেনা আরাভ।সাড়া তো দিতেই ওনার ডাকে।
শক্ত করে ইয়ারাবীকে বুকে জড়িয়ে নেয় আরাভ।তারপর বলতে লাগলো,
-প্লিজ ইয়ারাবী এসব বলো না।
-ওকে বলছিনা।এবার আপনি সোজা হয়ে শুয়ে পড়েন।
-ওকে।
আরাভ সোজা হয়ে শুতেই ইয়ারাবী ওর বুকে মাথা রাখে।
-জানেন এভাবে ঘুমোতে খুব ভালো লাগে।
-ঘুমাও।ইয়ারাবীর চুল হাতিয়ে দিতে দিতে বলল আরাভ।
অলিম্পিয়ান জিয়াসের মন্দিরটা বড় সুন্দর জায়গা।তবে এখানে মন্দিরটা নেই রয়েছে এর ধ্বংশাবশেস।সেখানে অনেক সময় পার করে আর্ভিন আরাবী।এসময়টুকুতে আর্ভিন খুব দুষ্টুমি করেছে আরাবীর সাথে।সন্ধ্যায় ঘরে ফিরে এলো ওরা।আরাবী ক্লান্ত হয়ে বিছানায় শরীর এলিয়ে দিলো।আর্ভিন এসে ওর পাশে বসলো।তারপর আরাবীর হাত ধরে বলল,
-ক্লান্ত লাগছে?
-হুম।
-আর্ভিন আরাবীর পাশে শুয়ে বুকে টেনে নিয়ে বলল ঘুমাও কিছুসময়।পরে খেতে যাবো।
-আচ্ছা।
চলবে