The Mysterious Man- Mafia Boss- Season-3 (Part-2) Part- 67
আরাভ রুমে ঢুকতেই ইয়ারাবী কিছুটা দৌড়ে এসেই আরাভকে জড়িয়ে ধরে খিলখিলিয়ে হাসতে লাগে।আরাভ ইয়ারাবীর মাথা হাতিয়ে দিলো।আরাভের দিকে তাকিয়ে ওকে মাথা নামাতে ইশারা করলো ইয়ারাবী।আরাভ একটু মাথা নামাতেই ইয়ারাবী আরাভের গালে চুমু দিয়ে বলল,
-আজকের দিনটার জন্য।
আরাভ হেসে ইয়ারাবীর কপালে চুমু দিয়ে ওকে কোলে তুলে এনে খাটে শুইয়ে দিলো।তারপর ওকে বুকে নিয়ে ঘুমিয়ে পড়লো।
-হুহ কেউ কেউ বলে আমাকে বয়স ধরেছে।হাহ আসলে বয়স যে কারে ধরছে সেটা তো বুঝাই যায়।বেশ অভিমান নিয়ে বলল রুহী।
বই পড়ছিলো রোয়েন।হঠাৎ রুহীর এমন কথায় ঘোর কাঁটে।তারপর চশমার ফাঁকে রুহীর দিকে তাকায় রোয়েন।একমনে চুল আঁচড়াচ্ছে আর বিড়বিড় করছে।
একটু হাসে রোয়েন।তারপর মুখে গাম্ভীর্য ভাব এনে বলল,
-কিছু বললে?
-নাহ কি বলবো?কিছু বলিনি।একটু সময় তো দেয়ই না।প্রতিদিন হাসপাতাল নয়তো বই খাতা।
এবার ঠোঁট প্রশ্বস্ত করে হাসে রোয়েন।
-কি হলো পাগল টাগল হয়ে গেলে বুঝি?অতো বিড়বিড় করছো কেন?
-পাগল হইনি?পাগল হবো কেন বলো তো?গলায় ঝাঁঝ রুহীর।
-না ঐ একটু বিড়বিড় শুনছিলাম তো তোমার।তাই মনে হলো।গলায় রসিকতার সুর এনে বলল রোয়েন।
-ধুর তোমার খালি রসিকতা।এগুলো ভালো লাগেনা।সবসময় ঘরে থাকি।একদম বন্দী জীবন হয়ে গেছে।
চুলে খোঁপা বেঁধে চিরুনীর চুল গুলো টেনে খুলে সেগুলো একটা প্যাকেটে ভরে রাখলো রুহী।তবে কাজ গুলোয় ছিল তীব্র রাগের ছাঁপ।রোয়েন থেকে বেশ দুরত্ব বজিয়ে শুয়ে পড়ে রুহী।তারপর ও বিড় বিড় করে নিজের রাগ নিয়ন্ত্রন করার চেষ্টা করছে।আসলে আজ ওদের অস্ট্রিয়ার একটা ছবির দিকে চোখ পড়ে যায় রুহীর।দুজনকে কতো খুশি লাগছিলো।নতুন বিয়ে হয়েছিলো তখন।আর সেটা দেখেই মেজাজ প্রচন্ড বিগড়ে গেছে ওর।রোয়েন মুচকি হেসে রুহীর অফহোয়াইট শাড়ীর আঁচল পাড় করে পেটে আঙ্গুলের হালকা পরশ বুলাতেই রুহী রোয়েনের হাত ঝাড়ি দিয়ে সরায়।রোয়েন রুহীর পাশে শুয়ে ওর কাঁধে থুতনি রেখে কিছু বলতে গেলে রুহী বলল,
-অতো ঢং দেখাবানা সরো।
-রোয়েন সরে বেশ দুরত্ব রেখে শুয়ে পড়ে।
রুহীর কিছুটা খারাপ লাগতে শুরু করে।কেন বলল ও এতোগুলো কথা?ওকে তো কম সুখে রাখেনি সে।আশার থেকে ও বেশি ভালোবাসা দিয়েছে লোকটা।তবু ও এতো গুলো কথা কেন বলল রুহী?রুহী অপর পাশে মাথা ঘুরিয়ে তাকায়।রোয়েন চোখ বুঁজে রয়েছে।
এদিকে রাগে নিজের চুল টেনে ছিড়ছে আরাবী।খুব রাগ হচ্ছে ওর।এদিকে আর্ভিন ফোনে কথা বলেই চলেছে।খাটের ওপর লাগেজে কিছু কাপড় ঢুকানো আর কিছু বাহিরে। সব দলা হয়ে আছে।আরাবী রেগে গিয়ে সেখান থেকে চলে আসে। আর্ভিন ওর পিছু দৌড়ে আসতে থাকে।আরাবী গাড়িতে বসে কাকে যেন ফোন দিয়ে বলছিলো একটা টিকিটের ব্যাবস্থা করতে। আজই ব্যাক করবে ও।আর্ভিন গাড়ির কাছে আসতেই আরাবী কথা শেষ করে ফোন কেঁটে দিলো।
-কি হলো ওখান থেকে চলে এলে যে?দুষ্টু হাসি দিয়ে বলল আর্ভিন।
-আরাবী রাগে কটমট করছে।
-কিহলো কিছু বলো।
-চুপ একদম চুপ।কিছু শুনতে চাইনা।ধমক দিয়ে বলল আরাবী।
-ওকে
রুমে এসে আরাবী লাগেজ গুছাতে আরম্ভ করে।আর্ভিন ওকে আটকাতে চেষ্টা করতে শুরু করে।আরাবী থামবার মতো পাত্রী নয়।রেগে মেগে দুতিনটে কাপড় টেনে ছিড়ে ফেললো।আরাবীর ফোন আসতেই আর্ভিন ফোন টা কেড়ে নিয়ে বারান্দায় চলে যায়।আরাবী রেগে খাটে বসে পড়লো।
আর্ভিন কি কথা বলছিলো এর সবই শুনেছে ও।টিকিট কনফার্ম হয়ে গেছিলো।সেটা ক্যান্সেল করালো আর্ভিন।
আর্ভিন লাগেজের কাপড় গুছিয়ে আরাবীর পাশে বসে।
আরাবী সরতেই আর্ভিন ওর আরেকটু কাছে এগিয়ে এলো।
-কি হলো কি?রেগে চিৎকার।
-কই কি হলো?কিছু না জানার ভান করে।
-কাছে ঘেঁষার চেষ্টা করবেন না একদম।
-বৌয়ের কাছে ঘেঁষছি তোমার কি?
-যাদের কোমড় স্পর্শ করে নাচছিলেন তাদের কাছে যান।
-ফায়ার ব্রিগেডে কল দেই।কি যেন পুড়ছে।
আরাবী এবার রেগে আর্ভিনের শার্টের কলার চেঁপে একদম কাছে নিয়ে এলো ওর।
-জ্বলছে আমার খুব জ্বলছে কেন নাচলি ওদের সাথে।
-আর আরাব আরাবী কি হলো?ছাড়ো মেরে ফেলবে নাকি?
-একদম।তোর এই হাত দুটো কেঁটে ফেলবো।
-তোমাকে বুকে জড়াবো কি দিয়ে?
মানুষ যখন অতি রেগে যায় তখন কান্না করে।ঠিক তাই হলো আরাবী কেঁদে দিলো।আর্ভিন ওকে বুকে জড়িয়ে বলল,
-এ জন্য আবার কাঁদতে ও হয়?আর নাচবোনা কারোর সাথে না।
-তুমি খারাপ।
-ওকে।
-তুমি লুচু।
-আচ্ছা।
-আমাকে ভালোবাসো না।
-আচ্ছা।
-কি বললা?সরে এসে চিৎকার করে আরাবী।
-মুখ ফঁসকে বেরিয়ে গেছে।
-তোর মুখ ফঁসকে বেরিয়ে যাওয়া বাইর করছি।
আর্ভিনকে বালিশ দিয়ে মারতে লাগে আরাবী।আর্ভিন কোনরকমে ওকে জাপটে ধরে শুইয়ে দিয়ে ওর ওপর নিজের ভর ছেড়ে দিলো।
|
|
|
|
সকালে রুহী রোয়েনের কোন কথা হয়নি সারাদিন।রুহী খুব চেষ্টা করেছে তবে সুযোগ দেয়নি রোয়েন।নাস্তা সেড়ে হাসপাতালের জন্য বেরিয়ে গেছে ও।আরাভ ও ইয়ারাবী ফ্রেশ করিয়ে নাস্তা খেয়ে বেরিয়ে গেছে।ইয়ারাবী রুহীর রুমের সামনে এসে দেখলো রুহী মন খারাপ করে বসে আছে খাটে।ইয়ারাবী এসে খাটে বসে গলা জড়িয়ে ধরে রুহীর।
-খালামনি কি হয়েছে তেমার?
-কিছু না মা।মলিন হেসে বলল রুহী।
-কিছু তো হয়েছে অবশ্যই।আমার গুলুমুলু খালামনির মন এমনিতেই তো খারাপ হয়না।
রুহীকে চুপ থাকতে দেখে ইয়ারাবী সরে এলো।তার ন্যাকা গলায় বলল,
-খালামনি ফুঁচকা খেতে মন চাইছে।
-দাঁড়া আনিয়ে দিচ্ছি।
-না যেয়ে খাবো।
-ওকে চল।
রুহী উঠে শাড়ী চেঞ্জ করে নিলো।দুজন বেরিয়ে পড়লো।রাস্তায় ইয়ারাবী রুহীকে হাসানোর চেষ্টা করে কিন্তু হাসেনা রুহী।ইয়ারাবীর মনটা খুব খারাপ হয়ে গেলো।ফুচকা খেয়ে ঘরে ফিরে এলো ওরা।বিকেলে রোয়েন আর আরাভ ঘরে ফিরে আসে।রোয়েন ছেলে কে ডেকে বলল,
-আমার রুমে আয় কথা আছে।
-ওকে বাবাই।ফ্রেশ হয়ে আসছি।
-হুম।
আরাভ রুমে আসতেই ইয়ারাবী সামনে দাঁড়িয়ে দুহাত ছড়িয়ে দিলো।আরাভ বুকে জড়িয়ে ওর কপালে চুমু দিলো।ইয়ারাবী এখন ওর আঙ্গুল দিয়ে নিজের ঠোঁটের দিকে ইশারা করলো।
-হাসলো আরাভ।ফ্রেশ হয়ে আসছি।
-না এক্ষুনি।
-গায়ে জীবানু আছে।
-কিছু হবে না।এক্ষুনি দিন।নয়তো লাফালাফি করবো আমি।
-তোমার কি মনে হচ্ছেনা ব্ল্যাকমেইল করছো আমাকে।
-আপনার যা ইচ্ছা মনে হোক এক্ষুনি দিন।
দীর্ঘ নিশ্বাস টেনে নিয়ে আরাভ ইয়ারাবীর ঠোঁট জোড়ায় ঠোঁট ডোবালো।গভীর চুমু দিতে শুরু করে ইয়ারাবীকে।শেষপর্যায়ে ইয়ারাবী আরাভের ঠোঁটে জোরে কামড় দিলো।
-আহ সরে এলো আরাভ।কি করলে এটা?
ইয়ারাবী দুষ্টু হেসে দৌড়াতে যাবে তখনই আরাভ ওকে জড়িয়ে ধরে পিছন থেকে,
-একদম দৌড়া দৌড়ি হবেনা।
-ছাড়েন।
-কামড় দিলে কেন?
-সরি।
সরে এলো আরাভ।তারপর কাপড় নিতে নিতে বলল
-বাবাইয়ের সাথে কথা বলে এসে তোমাকে দেখে নিবো।
-আচ্ছা দেখে নিয়েন।দুষ্টু হেসে বলল ইয়ারাবী।
আরাভ ফ্রেশ হয়ে রোয়েনের কাছে এলো।রোয়েন ওর রুমের বারান্দায় বসে আছে।
আরাভ রোয়েনের পাশে এসে বসে,
-জি বাবাই বলো।
-শোন তোর মাকে নিয়ে রাতে বের হবো।ইয়ারাবীকে নিয়ে তুই কোথা থেকে ঘুরে আয়।
-কই যাবে বাবাই বলেছো মাকে?
-ওর জন্য সারপ্রাইজ।
-এনিথিং স্পেশাল বাবাই?
-আজ আমাদের সম্পর্কের ২৯ বছর হলো। এ দিন টায় তোর মা আমার লাইফে এসে সব পাল্টে দিলো।
-অনেক স্পেশাল ডে।তাইনা বাবাই?
-হুম।
-কখন বের হবে ভেবেছো?
-১০ টায় বের হবো।
-ওকে।আরাভ উঠে দাঁড়ায়।
চলবে