The Cobra King Mafia Boss- Season 4 !! Part- 30
সেই রাতের পর হয়ত জীবনটা বদলে গেলো ওদের। রোয়েনের ঘুম ভাঙ্গে আটটায়।চোখ খুলে চারদিকে তাকিয়ে নিজেকে নিজ কক্ষে আবিষ্কার করে।কাল রাতে ঘরে আসেনি ও।তাহলে এই রুমে কিভাবে?রোয়েন দুহাতে মাথা চেঁপে ধরে চোখের সামনে যাই ভেসে উঠছে সব ঘোলাটে।হঠাৎ মনে পড়ে কাল রামীনের সাথে বারে যাওয়ার কথা এবং বার থেকে রামীন কিভাবে জড়িয়ে ধরে বাসায় নিয়ে এসেছিলো।কিন্তু এর পর কি হয়েছিলো সব ধোঁয়াশা।শোয়া থেকে উঠে বসতে চায় রোয়েন।কিন্তু হাতের ওপর কিছুর চাপ লাগছে।পাশে তাকায় রোয়েন।তারপর দেখলো রুহী ঘুমিয়ে আছে।কালো চাদর রুহী খোলা কাঁধের থেকে একটু নিচে সরে আছে।রোয়েনের চোখজোড়া বড় হয়ে আসে।এবার নিজের দিকে তাকায় ও।নিজের শরীরে ও শার্ট নেই।রোয়েন।ধড়ফড়িয়ে উঠে বসে।কি হচ্ছে এসব?রুহী এ অবস্থায় এ রুমে????কি হয়েছিলো?রোয়েন এবার ভাবলো রুহীর ঘুমভাঙ্গলে জানা যাবে কি হয়েছিলো।কথা গুলো ভেবে ওয়াশরুমে চলে যায় রোয়েন।
কিছুক্ষন পর ফ্রেশ হয়ে এসে খেয়াল করে রুহী গায়ে চাঁদর জড়িয়ে পেটে হাত চেঁপে নামছে।রোয়েন কিছু বলতে পারেনা।ও কি করেছে রাতে?কোন অন্যায় হয়নি তো?রুহীকে কিছু বলতে যাবে তার আগে টলতে টলতে বেরিয়ে যায় রুহী।
কাপড় পাল্টে রুম থেকে বেরিয়ে আসে রোয়েন।রুহী মাথা নিচু করে কাজ করছে।আবার কখনো পেট চেঁপে ধরছে।
নাস্তার সময় রুহী রোয়েনের প্লেটে সালাদ বেড়ে দিয়ে যেতে নিবে তখন পিছন থেকে ডাকে রোয়েন,
.
.
-কি হয়েছে তোমার?
-পেট ব্যাথা করছে খুুব।
.
.
রোয়েন কিছু না বলে খেতে শুরু করে।ওর বিশ্বাস হচ্ছেনা এমন কিছু হতে পারে ওদের মাঝে।রুহী সেদিন ঘরে নিজের রুমে ছিলো,বের হয়নি। রোয়েন অফিসে চলে যায়।আজ রুহীর সাপ্তাহিক ছুটি।অফিসে গিয়ে চুপচাপ কেবিনে বসে পড়ে রোয়েন।রামীন ওর সামনে এসে বসে।
.
.
-হলো কি?অমন গুমড়ো মুখো হয়ে বসে আছিস?
-এমনি। সর এখান থেকে।
-কেন রে দোস্ত।বল না কি হয়েছে?
-যাবি এখান থেকে?রেগে চিৎকার করে।
-আচ্ছা যাচ্ছি।
.
.
রামীন সরে যায়।সন্ধ্যায় ঘরে আসতেই রুহী রোয়েনকে জড়িয়ে ওর গালে চুমু খায়।রোয়েন সরিয়ে দেয় রুহীকে।
.
.
-সরো ভালো লাগছেনা।
-ওকে।
.
.
সরে আসে রুহী।তারপর বলল,
.
.
-ফ্রেশ হয়ে নিন কফি দিচ্ছি আপনাকে।
.
.
রোয়েন কিছুনা বলে রুমে চলে গেলো।তারপর ফ্রেশ হয়ে এসে দেখে রুহী কফির মগ টিটেবিলে রেখে রোয়েনের খাটে বসে আছে।রোয়েন কফির মগ নিতে গেলে রুহী সেটা হাতে নিয়ে চুমুক দিয়ে রোয়েনের কাছে আসতে চাইলে রোয়েন থামায় ওকে।
.
.
-রুহী যাও পড়তে বসো।
.
.
কফিটা গিলে নেয় রুহী।তারপর বলল,
.
.
-কফি খেলেননা যে?
-আমি এমনি খাবো যাও তুমি।
-ওকে।
.
.
রুহী বেরিয়ে আসে।রোয়েন খাটে বসে কফিটুকু খেতে শুরু করে।রাতে খাবার শেষ করে রোয়েন খাটে শুয়ে পড়তেই রুহী এসে পাশে শুয়ে ওর বুকে মাথা রাখে।
.
.
-রুহী তোমার রুমে গিয়ে ঘুমাও।
-নাহ।এখানেই ঘুমাবো।
-রুহী যাও।
-না বললাম তো যাবোনা।
.
.
আর কিছু বলতে পারেনা রোয়েন।এদিকে পরদিন রুহীর সাথে দেখা করতে আশফিনা আসে কলেজে রুহীর ছুটির পর।ঘড়ি চেক করে রোয়েন চেয়ার ছেড়ে উঠে কালো কোটটা হাতে নিতেই রামীন বলল,
.
.
-রুহীকে আনতে যাচ্ছিস?
-হুম।
-আমি ও যাবো।আমার একটু কাজ আছে।
-ওকে চল।
.
.
দুজনেই বেরিয়ে যায়।রুহী আশফিনার সাথে গল্প করছে।এদিকে রুহীকে বের না হতে দেখে রোয়েন আর রামীন কলেজে ঢুকে দেখে আশফিনা আর রুহী বসে গল্প করছে।রোয়েন রামিনকে দেখে ওরা উঠে দাঁড়ায়।রুহী বলল,
.
.
-আশফিনা ওনি রামীন ভাইয়া ওনার বেস্টফ্রেন্ড।
.
.
রুহীর কথায় আশফিনা রামীনকে দেখে ছোট্ট করে সালাম দেয়।রোয়পন বলল,
.
.
-ভালো আছো আশফিনা?
-এই তো আলহামদুলিল্লাহ ভাইয়া আপনি?
-ভালো।তা কই থাকছো এখন?পরিচিত কে আছে এখানে?
-নেই ভাইয়া।হোটেলে থাকছি।
-এটা কোন কথা?রুহী আছে।আর তুমি হোটেলে থাকছো?
-না ভাইয়া প্রবলেম নেই।
.
.
রুহী বলল,
.
.
-আমাদের সাথে থাক
-নাহ রুহী।লজ্জা পেয়ে বলল আশফিনা।
-রুহীদের বাসায় থাকতে পারো আশফিনা।বলে উঠে রোয়েন।
-আচ্ছা ঠিক আছে ভাইয়া।
.
.
রোয়েন রুহী আর রামীনকে নিয়ে বাসায় চলে যায়।রেজোয়ান মাহবুবকে বলে আশফিনার জন্য রুম ঠিক করে দেয়।সেদিন রাতে আশফিনা চলে আসে রেজোয়ান মাহবুবের ঘরে।রেজোয়ান মাহবুব কন্যা আদরে বরন করে নেন আশফিনাকে।রামীনের প্রথম দেখায় বেশ ভালো লেগেছে আশফিনাকে।আবার দেখা করা যায় কিভাবে ভাবতে থাকে রামীন।এদিকে রোয়েনের কাছে বসেই ওর গলা জড়িয়ে গালে চুমু দেয় রুহী।রোয়েন সরিয়ে দেয় ওকে।
.
.
-সরো রুহী।
-আপনি এখন শুধু সরিয়ে দেন।
.
.
মলিন কন্ঠে বলে রোয়েনের কাঁধে মাথা রেখে দেয় রুহী।রোয়েন আর সরাতে পারেনা ওকে।এদিকে পরদিন রামীন রোয়েনের সামনে বসে কি যেন ভাবছে।তারপর বলল,
.
.
-দোস্ত তোর শালী মানে রুহীর বান্ধুবী আশফিনাকে খুব পছন্দ হয়েছে আমার।
-সর এখান থেকে।
-তোর হয়েছে কি আজকাল।খালি সরে যা সরে যা।
.
.
কথা গুলো বলে রুম থেকে বের হতেই শুলো রেজোয়ান মাহবুব বলছেন,
.
.
-শামীম বাসায় নাস্তা নিয়ে যাও মেয়েটার জন্য।কাজের লোক নেই।
.
.
রামীন বলল,
.
.
-আঙ্কেল আমি যাই।শামীম বেচারা মাত্র অফিসে এলো আবার পাঠাবেন?
-তুমি যাবে?জিজ্ঞাস করেন রেজোয়ান মাহবুব।
-গেলাম।
-তাহলে আশফিনা মেয়েটার জন্য নাস্তা নিয়ে যাও।
-আচ্ছা।
.
.
বেরিয়ে আসে রামীন অফিস থেকে।তারপর রেজোয়ান মাহবুবের বাসায় গিয়ে দেখে আশফিনা শাওয়ার নিয়ে বেরিয়ে চুল মুচ্ছে।রামীনকে দেখে মুচকি হাসে আশফিনা।
.
.
-আপনি?
-আপনার নাস্তা নিয়ে এলাম।
-ওহ থ্যাংকস।
.
.
আশফিনা রামীনের হাত থেকে ব্যাগ নিয়ে বলল,
.
.
-বসুন চা করে দেই।
-আপনি নাস্তা করুন না।
-আরে এতো জলদি নাস্তার অভ্যাস নেই।বরং আপনি বসুন চা দিয়ে নাস্তা করবো।
-ওকে।
.
.
আশফিনা চা বসিয়ে রুমে আসে।রামীন সোফায় বসে একটা ম্যাগাজিন পড়ছে।আশফিনা নাস্তা প্লেটে বেড়ে রামীনকে বলল,
.
.
-আপনি খেয়েছেন?
-জি।আপনি খেয়ে নিন।
-ওকে।
.
.
আশফিনা খেতে আরম্ভ করে।এদিকে রুহীর হাফ ইয়ার্লি পরীক্ষার রুটিন দিয়েছে।সামনের সপ্তাহে পরীক্ষা শুরু।চিন্তায় পড়ে যায় রুহী।নাস্তা শেষ করে আশফিনা রামীনের চা নিয়ে আসে।
.
.
-খেয়ে নিন।
-থ্যাংক ইউ।তা কি করছেন?
-স্টাডিতে আছি আর পার্ট টাইম জব।
-ওহ।তা কয়দিন থাকবেন এখানে?
-দুমাস।
-ওহ।কলেজ কামাই যাচ্ছেনা?
-বন্ধ আমাদের।
.
.
হুম।মন দিয়ে চা খেতে খেতে রামীন বলল,
.
.
-বেশ ভালো চা বানিয়েছেন।এবার থেকে আপনার হাতের চা প্রতিদিন একবার হলে ও খেতে চাই।
-অবশ্যই আসবেন।এর ফাঁকে কথা ও হবে।
-ঠিক বলেছেন।
-আমার কিছু শপিং করতে হবে আর্জেন্ট।
-ওহ।আপনি চিনবেন?
-হা চিনবো।
-আমার ও বাহিরে কাজ আছে।কোম্পানী দিতে পারি।
-ভালো লাগবে আমার।
.
.
কয়েকটা দিন পার হয়ে যায়।রামীন প্রায়ই দেখার ছলে আশফিনার সাথে দেখা করে।চা খায় একসাথে।মাঝে মাঝে বাহিরে ও ঘুরতে চলে যায়।অপরদিকে রোয়েন খেয়াল করছে রুহীর শরীর ভালো না।খাওয়া ও কমে গেছে।এদিকে রাত ভর পড়াশুনা করে।রোয়েন রুহীর কাছে না গেলে ও রুহী ঠিকই রোয়েনের কাছে আসে জড়িয়ে চুমু খায় ওর বুকের ওপর শুয়ে থাকে।রোয়েন নিজের ওপর বিশ্বাস রাখতে পারছেনা আসলে ও কি কাজটা হয়েছিলো ওর দ্বারা।তখনই রোয়েনের সকল বিশ্বাস ভেঙ্গে যায় রুহীর একটা কথায়।
প্রায় বিশদিন হয়ে গেছে সেই দিনটার।রুহীর কলেজ থেকে ফিরে রোয়েনের কাছে আসে।
.
.
-এ এ একটা কথা আছে।
-কি?
-কি ভাবে বলবো?বুঝতে পারছিনা।
-বলো।
-আমি প প প্রেগন্যান্ট!!!!!
চলবে