Psycho is Back

Psycho is Back ! Season- 2 ! Part- 22

সকাল থেকে বারিশের সাথে কথা বলার ট্রাই করে যাচ্ছি কিন্তু সে আমাকে পাত্তাই দিচ্ছে না। কি রাগ বাবা গো?তার উপর টিনা ফোনের উপর ফোন করেই যাচ্ছে যাওয়ার জন্য। কি করব ভেবে পাচ্ছি না। তখনি বারিশ রুমে ঢুকে। আমি বিছানায় চুপটি করে বসে তাকে দেখছি। আজ সে অফিস যায়নি,রাতে খুব কাঁপুনি দিয়ে জ্বর এসেছিল তার।সকালে হলকা জ্বর থাকায় দাদু যেতে নিষেধ করে দিয়েছেন।দাদুর কথা বারিশের জন্য পাথরের লাকির স্বরূপ। বারিশ একটা ফাইল নিয়ে বের হতে যাবে তার আগেই দরজা লাগিয়ে তার সামনে দাড়িয়ে পরি।বারিশে ভ্রু কুচঁকে বলতে লাগে,
—-কি সমস্যা?
আমি মাথা নারলাম, মানে সমস্যা নেই..!
—-দরজা থেকে সর, যেতে দেও।
—-না মানে একটা কথা ছিল।
—-কি কথা?
—-আজ টিনার বার্থ ডে..!
—-তো আমি কি করবো?
—-কিছু না। ওই ইনভাইট করেছে।
—-তো যাও আমাকে কেন বলছো?
আমি মিনমিন করে বললাম,
—-আপনাকেও যেতে বলছে।
বারিশ বিরক্তি সুরে বলল,
—-লিসেন, আমার এতো ফালতু সময় নেই যতসব। বলে আমাকে দরজার সামনে থেকে ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দেয়। আরিশ।কষ্ট লাগে খুব কেমন ব্যবহার টাই না করছে আমার সাথে।আমি একাই যাবো।
আমি সুন্দর একট লাল খয়েরী শাড়ি পরে নিচে নামলাম। আরিশ তখন হলে বসে কাজ করছিল। আমাকে দেখে চোখের চশমা খুলে ড্যাবড্যাব করে তাকিয়ে রইল। আমি ভাব দেখিয়ে নিচে নেমে তার সামনে দিয়ে চলে আসলাম তাকালামো না। কেন তাকবো? তাকাবো না। মোটেও না। বলে তাও আড় চোখে তাকালাম। উনি তাকিয়েই আছেন।
বাহিরে বের হয়ে দেখি রিয়ান ভাইয়া গাড়িতে উঠছেন।
—ভাইয়া। টিনার বার্থ ডেতে যাচ্ছেন?
—-হুম..! তুমি?
—-হে।
—-একা যাচ্ছো? ভাইয়া কই..!
আমি মলিন হেসে বললাম,
—-কাজ করছেন।
—-চলো তাহলে এক সাথে যাই।
—-আচ্ছা।
এদিকে বারিশ এখনো হা হয়ে বসে। ইস তার বাবুইপাখিকে কত যে সুন্দর লাগচ্ছিল।
—-কি করছিস বাবা?
বারিশের ভাবনায় ছেদ পরে ফুপির কথায়।
মুচকি হেসে বলল,
—-অফিসের কাজ করছিলাম। কিছু বলবে?
ফুপি আমতা আমতা করে বলল,
—-কি ভাবে যে বলি?
—-টাকা লাগবে ফুপি।
—-না না কি যে বলিস। মাসের শুরুতে যা দিস তাও থেকে যায় আমার কাছে।
—-তাহলে?
—–বউ মার বেপারে বলতাম,
বারিশ এবার কাজ রেখে ফুপির দিক তাকায়।
ফুপি নড়েচড়ে বসে বলে উঠে,
—-ছোট থেকে মানুষ করেছি তোকে, ভাল, মন্দ সুখে, দুঃখে অসুখে বিসুখে তোর সাথেই ছিলাম। রিয়ান থেকে কমট ভালবাসি নি তোকে।
—-ফুপি কি বলতে চাও সোজাসুজি বলতো?
—-বলতাম না তোকে, তুই আমার ছেলের মতো। সব মা তার ছেলের ভালই চায়।বিশ্বাস করবি কিনা জানি না বাপু।
—-এখনো তো বললেই না ফুপি বিশ্বাস তো পরের কথা।
ফুপি এবার আঁচল ভাল করে টেনে বলতে লাগে,
—-মানে, তুই বাসা না থাকলে কুহু রোজ বের হয়ে যায়।
বারিশ এবার ফাইটলে নজর দিয়ে বলতে লাগে,
—যানি সেটা ওই ভার্সিটিতে যায়।
—-তা আমি যানি তা বলি নি মাঝে যখন তুই বাসায় থাকিস না। তখন এবাবেই সেঁজে গুজে বের হয়ে যায় কুহু।
বারিশ ভ্রু দুটো কুঁচকে বলল,
—-ফুপি কি বলতে চাইছো সরাসরি বলোতো..!
ফুপি এবার ভয়ে ভয়ে বলল,
—-মানে প্রায় তুই বাসায় না থাকলে কুহু এভাবে সেজে গুজে বের হয়ে যায়। রাতে একটি ছেলে নামিয়ে দিয়েও যায়। তোকে বলতাম না। হয়তো জানিস সব তুই। কিন্তু আমরা তো সমাজে থাকি বিয়ের পর জামাই ছাড়া রাত বিরাতে কোনো পর পুরুশের সাথে মেলা মেশা ভাল দেখায় না তাই বললাম। তোরা আধুনিক হতে পারিশ।বউকে এক এদিক ওদিক ছাড়তে পারিস, কখন কি করছে বলাতো যায়।আজ যে গেল হতেো পারে অন্য কার সাথে..! যাই হোক তোরা ডিজিটাল যুগের কিন্তু সমাজ এখনো সেকেলেই আছে বাবা।
ফুপি এবার বারিশের দিকে তাকালো। বারিশ হাত মুষ্ঠি বদ্ধ করে আছে। কপালের রগ ফুলে উঠেছে। কিন্তু কিছু বলছেন না। তিনি যে আরো সাহস পেলেন। এবং কুহুর নামে যাতা বলে গেলে উঠে গেলেন তিনি।
বারিশের মনে ফুপির বলা কথা গুলো ঘুরছে। সে কি করবে? সে তো তার বাবইপাখিকে চিনে..! সে তো এমন না..! আর ফুপি? তার কি লাভ মিথ্যা বলে? মাথা ফেটে যাচ্ছে বারিশের। মনের মাঝে না চাইতেও সন্দেহ সৃষ্টি হচ্ছে তার।কি করবে?
বারিশ রেডি হয়ে বের হয়ে যায়। উদ্দেম্য টিনার বার্থ ডে পার্টি।
পার্টিতে এসেছি অনেকক্ষণ। টিনা একটু পর কেক কাটবে। টিনা আর রিয়ান জুটি কি নুন্দর লাগচ্ছে। খুব মিস করছি বারিশকে। ইশ্ এখন আমার পাশে থাকলে কত ভাল হতো। সবাই বলতো মেইড ফর ইচ আদার। এসব বলে নিজেই হেসে দিলাম। তখন পিছন থেকে কেউ বলল,
—-ও মা কুহু যে??
পিছনে ফিরে দেখি আশিক আর শুভ ভাইয়া দাড়িয়ে।আমি তাদের দেখে হেসে বললাম,
—-কেমন আছো শুভ ভাইয়া? আর আশিক তুমি এভাবে মুখ ভার করে কেন আছো।
শুভ ভাইয়া হাসতে হাসতে বলল,
—-মজনুর মন ভেঙ্গেছে তাই।
আমি চুপ করে গেলাম। কারণ আশিক আমাকে লাইক করতো। কতবার প্রপোজ ও করেছে।কিন্তু হে বলতে পারিনি। কারণ মার মনে প্রাণে জুরে শুধু ইউসুফ ওরফ বারিশ ছিল।
আমি আর আশিক একটা টেবিলে বসে আছি,
—-তা কেমন আছো কুহু.!
আমি হেসে বললাম,
—–ভাল তুমি?
—–ভাল থাকার কারণ তো নেই আমার কাছে কেমনে ভাল থাকি?
—–দেখ আশিক হয়তো যেন গেছো আমার বিয়ে হয়ে গেছে। এমন কি আমার বাসায় কাউকে বলিনি এখনো। এখন আর ওয়েট করো না। ইনা তোমাকে অনেক ভালবাসে।তার লাইফে ফিরে যাও।
তখনি আচমকা আশিক আমার হাতে হাত রেখে
বলতে লাগে,,
—-ছেড়ে দেও তোমার হাজবেন্ডকে কুহু। আমি তার থেকে তোমাকে অনেক ভাল বাসবো, আর অনেক সুখে রাখবো।
আশিকের এমন কাজে অবাক হয়ে যায়। সে হাত ছাড়াতে ছাড়াতে বলে উঠে,
—–আশিক পাগলামি করো না। আমি আমার বরকে অনেক ভালবাসি। দুনিয়েতে না শুধু তাকে আমি ইহো কাল পরকাল সব জায়গায় তাকরই চাই। বলে উঠে চলে আসলাম।এ ছেলেটা দিনদিন পাগল হয়ে যাচ্ছে।।
পার্টি শেষের দিকে এবার যাওয়া পালা। কিন্তু বিপত্তি ঘটলো এখানে, টিনা আর রিয়ান আজ একে অপরের সাথে আলাদা টাইম স্পেন্ড করবে।তাই চলে গেল তারা। রাত একটা ছুই ছুই। ড্রাইভার কে কল দিয়ে বলে দিয়েছিল রিয়ান আসার জন্য।কিন্তু গাড়ি অর্ধেক রাস্তায় নষ্ট হয়ে যাওয়াতে আসতে পারছে না।আর বারছে। মোটামোটি সবাই চলে গেছে।তখন আশিক ও বের হচ্ছিল তার বাইক নিয়ে।তখন টিনা বলল,
—-আশিক ওকে একটু পৌছে দেবে?
আশিক কিছু বলার আগেই আমি বললাম,,
—–নারে দোস্ত আমি যেতে পারবো টেক্সি ডেকে দিলেই হবে।
—-পাগল হইসিস এত রাতে তোকে একা ছাড়বো।
তখন রিয়ান বলল,
—-ভাবি ও তো তোমার ছোট বেলার ফ্রেন্ড সমস্যা কি চলে যাও।
সবার জোরা জুরিতে আশিকের বাইকে উঠলাম।
অন্দকার রুমে বসে আছে বারিশ। মাথার মাঝে তখনের সিন ভাসচ্ছে। কুহুকে একটি ছেলে হাত দরে বলছে, ভালবাসি, আর আরিশকে ছবড়ে দিতে।তখন টিনার পার্টিতে গিয়ে এসব দেখে মাথা নষ্ট হয়ে গেছে তার।কুহুকে এতটা ভালবাসা এতটা স্বাধীনতা কি তাকে ছেড়ে যাওয়ার জন্য দিছে নাকি, তাকে ফেলে অন্য কাউকে ভালবাসার জন্য? এই জন্যই কি তাকে কুহু আপন করে নিতে পারে না..!মাথাটা ফাকা ফাকা লাগচ্ছে বারিশের।তাই বেলকনিতে গেল সে।
বাইক এসে গেটের সামনে দার করালো আশিক কুহু সাথে সাথে আসি বলে চলে আসতে নিলো। তখনি আশিক হেচকা টান দিয়ে জড়িয়ে ধরে কুহুকে। এতে কুহু ভয় পেয়ে যায়।সাথে সাথে নিজেকে ছাড়াতে ব্যস্ত হয়ে পরে সে। তখন আশিক বলে,
—-ভাল থেকে কুহু। লাভ ইউ।
বলে ছেড়ে দিল। কুহু আর দারালো না দৌড়ে ভিতের চলে গেল।ভয়ে বুক ধুকধুক করতে সে।
কুহু রুমে ঢুকতেই দেখে আরিশ সোফায় পা তুলে বসে আছে। তার চোখ, মুখে হিংস্রতার ছাপ।এ রূপ সে দেখছিল সেই ১ মাস আগে তাকে যখন বিয়ে করে চিল বারিশ।
বারিশের এই রূপ দেখে মেনের মাঝে ওজানা ভয়ের জানান দিচ্ছে। ভয়ে ঢুক গিলে তার সামনে আসতেই বারিশে গম্ভীর ভাবে প্রশ্ন করলো,
—-রাত কটা বাঁজে??
আমি ভয়ে ভযে বললাম,,
—-সরি। আসলে সব ফ্রেন্ডসদের সাথে অনেক বছর পর দেখা হলো তাই..!!
বারিশ এবার হুংকার ছেড়ে বলল,,
—-আমি জিগ্যেস করছি কটা বাঁজে?
আমি বারিশের এমন হুংকারে কেঁপে উঠি।মিন মিন করে বলি,
—-পনে দুটা।
বারিশ এবার উঠে আমার সামনে এসে দাড়ালো। আমি ভয়ে দু কদম পিছিয়ে যেতেই সে আমার বাহু চেঁপে ধরে তার সামনে এনে বলে লাগে,,
চলবে..!