Psycho is Back

Psycho is Back ! Season- 2 ! Part- 11

এটা কি করলেন মিস?? দিলেন তো আমার শার্টের ১২রটা বাজিয়ে?
—-সরি স্যার।।আমি খেয়াল করি নি!!
—-সরি মাই ফুট।।সরি দিয়ে কি করবো ধুয়ে ধুয়ে পানি খাব??
আমি মাথা নিচু করে দাড়িয়েই রইলাম।।
তখন অফিসে ঢুকতেই স্যারের সাথে ধাক্কা লাগে।। স্যারের হাতে থাকা হট হট কফি স্যারের বুকে পরে যায়।।কি সাংঘাতিক ব্যাপার গরম কফির হালকা ছাট আমার হাতে লেগেছিল, কি গরম বাবা! আর উনি স্টীল দাড়িয়ে বকে যাচ্ছেন।।নিশ্চয়ই তার বুকে জ্বলে যাচ্ছে।।
স্যার আমাকে চুপ থাকতে দেখর নিজের কেবিনে চলে যান।।আমি এখনো দাড়িয়ে।।কি করে ফেলাম আল্লাহ মালুম।।
তখনি পিছন থেকে কেউ ডেকে উঠে,,
—-মিস কুহু!
—-জ্বি।
—- বারিশ স্যার কেবিনে যেতে বলেছেন।।
—–এই বারিশ স্যারটা আবার কে??
আমার কথায় লিনা মুখটা কেমন হয়ে গেল।। যেন আমি এমন কিছু বলেছি যা দুনিয়াতে সবচাইতে অবিশ্বাস্য কথা ।।তখনি লিনা আমার দিক এক ভ্রু উচু করে বলল,
—-আর ইউ কিডিং মি?
—-নো আম নোট কিডিং ইউ?
—-তুমি সত্যি জানো না? বারিশ স্যার কে?
—-জানলে কি আপনাকে জিগেস করতাম নাকি?
—-ওহো! আচ্ছা এই অফিসের বসের নাম কি?
আমি একটু ভাবার চিন্তা করে বললাম,,
—-বলতে পারছি না?
লিনা অবাক হয়ে চেয়েই রইল।। তারপর বলল,,
—-এই প্রথম কোনো এমপ্লয়কে দেখছি যে অফিসে জব করে সেই অফিসের বসের নাম জানে না।।হাউ? বাই দ্যা ওয়ে।।বারিশ স্যার এই অফিসের বস।।যার শরীরে কিছুক্ষণ আগে আপনি গরম গরম কফি ফেলে দিছিলেন।।
আমি অবাক হয়ে তাকিয়ে রইলাম।।তখন লিনা আবার বলল,,
—-অবাক হওয়ার কথা আমার তুমি হচ্ছো কেন? এই নেউ স্যাভলন ক্রিম আর স্যারের কেবিনে যাও কুইক।।আর কি দেখমু।। অফিসের বসের নাম জানে না?বিড়বিড় করতে করতে লিনা চলে গেল।।
আমার এখন লজ্জা লাগতেসে।।সত্যিই তো আমি বসের নাম জানতাম না।।
স্যারের কেবিনে নক করলাম।।কোনো সাড়া শব্দ নেই।।আবার নক করলাম নাহ নেই।।তাই ভিতরে ঢুকে গেলাম।।ওমা কেবিন খালি।।গেল কই স্যার? আচ্ছা স্যার আবার ভুত টুত বা জ্বিন টিন না তো? না হলে তো উধাও হওয়ার কথা না?
তখনি স্যারের কন্ঠ শুন্তে পেলাম।। কিন্তু কন্ঠের উৎস খুঁজে পাচ্ছিনা।।পুরো রুমে চোখ বুলিয়ে নিলাম।।নাহ কেউ নেই।।ওয়াশরুমের দরজা বন্ধ তাহলে হয় তিনি ভিতরে।।তাই বাহিরে দাড়ালাম।।
পর মুহূর্তে আবার তিনি ডাকলেন,,
—-মিস কুহু ভিতরে আসুন?
স্যার কোন ভিতরে যাওয়ার কথা বলছেন? ওয়াশরুমের? ও মাই আল্লাহ্?
বারিশ আবার ডাকলো,
—-কি হলো মিস? এত দেড়ি করছেন কেন? আমি কি সাড়া দিন থাকবো এখানে?
আমি আর কিছু না বলে কাঁপা কাঁপা হাতে ওয়াশরুমের দরজা খুলতে লাগলাম।।আর ভাবতে লাগলাম।।অফিসে এসেছি মাত্র ২ দিন হলো।।তার মাঝেই ওয়াশরুম এ যেতে বলছে? হাউ ইজ পসিবল? কোনো কু মতলব নয় তো?? শুকনো ঢুক গিললাম।।তারপর কাঁপা কাঁপা হাতে আমি দরজা খুললাম।। খুলেই অবাক!! যেটা ওয়াশরুম ভাবচ্ছি! সেটা একটি বেড রুম? হায় আল্লাহ!! বেড রুমে কেন আন লেন?? আমি ধীরে ধীরে রুমে প্রবেশ করলাম।।আর স্যারকে এভাবে দেখে বিষম খেলাম।। স্যার একটা প্যান্ট পড়ে বসে আছে।। শার্ট নেই গায়।।পিছন থেকে শুধু তার ফর্সা পিঠ দেখা যাচ্ছে।।আমি তার পিঠের উপর ক্রাশ খাইছি।।আমার কেমন জানি ভয় মিশ্রিত লজ্জা লাগচ্ছে।।আচ্ছা ছেলেদের এত ফর্সা হওয়ার কি প্রয়োজন? আমার মতে ছেলেদের হালকা ফর্সা বা বাদামী রঙ্গের হওয়া উচিত।।স্যারের গায়ের রং দেখে হিংসে হচ্ছে আমার।।খুব হিংসে হচ্ছে।।কারণ স্যার আমার থেকে ফর্সা।।হটাৎ করে মনে একটি খেয়াল এলে আচ্ছা স্যারের এই সাদা পিঠে একটা কামুড় দিলে কি হবে? স্যার কি রাগ করবে? আমার কেন জানি খুব লোভ হচ্ছে, আর ইচ্ছে করছে কুটুস করে কামুড় দিতে।।হায় আল্লাহ।।কি ভাবচ্ছি আমি?? লুচুগিরি করছি? ছিঃ ছিঃ।।আমি চোখ ফিরিয়ে নিলাম।।
তখন স্যার বললেন,,
—-মিস ওখানেই দাড়িয়ে থাকবেন না এখানেও আসবেন??
আমি মাথায় হালকা চাপর দিলাম কি হচ্ছে আমার সাথে কি ভাবচ্ছি উল্টা পাল্টা আমি..!!যেই আমি কি না এসব থেকে শত গুন দূরে থাকি সেই আমি স্যারের উপর না সরি! স্যারে পিঠের উপর ক্রাশড, যেখানে স্যার চোখ দুটো ছাড়া ভাল ভাবে তার মুখটাও দেখিনি।।এটা কি আদ সম্ভব…!! হুহ।।
আমি স্যার সামনে আসতেই স্যার তার শার্ট আমার দিকে দিয়ে বললেন,,
—-ক্লিন ইট?
—-মানে?
—-আমি কি আরবি ভাষা বলেছি?
—- না মানে!
—-আপনি আমার শার্ট নষ্ট করেছেন এখন আপনি ধুয়ে দিবেন।।ওয়াশরুম ওই দিকে। গো..!!
আমি স্যারের কথা শুনে অবাকরে শেষ চুড়ায়।।
আমাকে দাড়িয়ে থাকতে দেখে স্যার এগিয়ে এলেন।। এবং আমার কিছুটা কাছে এসে কানের কাছে ফিসফিস করে বললেন,,
—-যে নষ্ট করেছে তাকেই তো পরিষ্কার করা উচিৎ মিস কুহু।।সো গো ফাষ্ট।।পরের কথাটি জোরেই বললেন।।
আমি কেঁপে উঠলাম।।কারণ তার এমন ফিসফিস ভাবে কথায় এক ঘোরে চলে গিয়েছিলাম।।আচ্ছা এই লোকে মাঝে কি আছে? আমাকে কেন আকৃষ্ট করছে? তার এভাবে কাছে আসাতে মনে হচ্ছিল আমার খুব আপন কেউ? তার সেই ফিসফিস করে কথা বলার সময় যে নিশ্বাসটা পরছিল আমার কানে, ঘারে, গলায়, মনে হচ্ছিল খুব চিনা সেই নিশ্বাস ।।আমি আর দাড়ালাম না ওয়াশরুমে ঢুকে গেলাম।।মাথা ধরে আসচ্ছে খুব।।এই ব্যাক্তিটির সাথে ২ দিনের পরিচয় কিন্তু মনে হয় যেন বহু বছরের চিনা।।
আমি শার্ট ধুয়ে বের হয়ে আসলাম।।দেখি স্যার সেই ভাবেই জানালার পাশে ঘুড়ে দু পকেট দু হাত গুজে দাড়িয়ে আছেন দৃষ্টি তার বাহিরে।।আবার তার সেই পিঠের দিক আমার চোখ যাওয়া আগেই চোখ ফিরিয়ে নিলাম।।
নিচের দিক তাকিয়ে বলে উঠি,,
—–স্যার শার্ট ধুয়ে দিয়েছি।।
স্যার আমার দিকে ঘুরে দাড়ালেন।।তারপর বললেন,,
—-মিস কুহু! টেবিলের উপরে স্যাভলন ক্রিম রাখা আছে, নিয়ে এদিকে আসুন।।
আমি ক্রিম টা নিয়ে তার কাছে গেলাম।।
তিনি বললেন,,
—–লাগিয়ে দিন।।
আমি অবাক হয়ে তার দিকে তাকালাম তারপর আবার চোখ নিচে নামিয়ে ফেললাম।।সেই চোখ কেমন স্থির দৃষ্টিতে তাকিয়ে আমার দিক।।
আমি বললাম,,
—–আমি??
—–জ্বি আপনি।।ব্যাথা তো যে দিয়েছে ঔষধ তো তাকেই লাগানো উচিত! লাগিয়ে দিন।।
স্যার আমার থেকে অনেক লম্বা প্রায় ৬ ফিঠ হবেন।।তার সাথে তার জিম করা বিশাল দেহী।। আমি তার বুক পর্যন্ত ছুই ছুই।।স্যারের এমন কথায় লজ্জা লাগচ্ছে।।ইউসুফ ভাইয়া ছাড়া লাইফে কখনো কোন ছেলের গায়ে স্পর্শ করিনি।। আর পাইও নি।।
আমি কিছুটা ক্রিম নিয়ে স্যারের বুকে গালাতে লাগলাম কিন্তু চোখ আতার নিচে।।বুকের কই লাগচ্ছি জানা নেই আমার।। আমি ল্জ্জায় তাকাতে পারছি না তার দিক।।তা হয়তো উনি বুঝতে পেরেছেন।।
তাই বললেন,,
—–মিস আপনি কোথায় লাগচ্ছেন ব্যাথা তো এখানে পেয়েছি! বলে আমার হাত ধরে স্যারের ব্যাথায় মলন লাগলেন।।
তার এহেন কাজে চোখ বড় বড় করে দিকে তাকালাম।।এই প্রথম তার চেহারা এত সামনে থেকে দেখছি।।কত মায়া তার মুখে,,মুচকি হাসচ্ছেন আর এক দৃষ্টি মেলে তাকিয়েই রইলেন।।আমি সাথে সাথে চোখ ফিরিয়ে নিলাম।।আমার হাত পা কাঁপছে।।উনার এভাবে ধরাতে আমার হাত।। আমি কোনো রকম তাকে মলম লাগিয়ে দিয়ে দৌড়ে বের হয়ে গেলাম।।নিশ্বাস আটকে আসচ্ছে আমার।।আর কিছুক্ষণ হলে তো মরেই যেতাম।।তার উষ্ণ লোমহীন বুকে দেখে, হাত লাগাতেই কেমন জানি লাগচ্ছিল।।সাথে মনে পরে যাচ্ছিল সেই ইউসুফ ভাইয়ার কথা।। এ কেমন অনুভুতি হচ্ছে আমার।।স্যারের প্রতিটা কাজে আমি কেন ইউসুফ ভাইয়াকে অনুভব করছি।।সে তো নেই..!! সে তো বিদেশে থাকাকালীন কার অ্যাক্সিডেন্টে মারা গেছে।। তাহলে কেন!! এখন খুব কষ্ট লাগচ্ছে।।নাহ এই লোকের ধারে কাছে যাওয়া যাবে না।।দূরে থাকে হবে।।
to be continue…🖤