Psycho is Back

Psycho is Back ! Season- 2 ! Part- 03

ঘুমিয়ে আছে কুহু!
চুপিচুপি রুমে ঢুকে ইউসুফ।।হাতে তার একটি গিফট বক্স।।
ইউসুফ পা টিপে টিপে কুহুর বেডের কাছে বসল আর মাথা হাত বুলিয়ে দিতে লাগল।।
কুহু গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন।।
ইউসুফ মুচকি হেসে বলতে লাগে,,
—-আমার ঘুম কাতর বাবুইপাখি!!
কঁপালে চুমু এঁঁকে দিল সে!!
আবার বলতে লাগে,,
—ছোট থেকেই তোর প্রতি দুর্বল ছিলাম।।তুই জানিস তোর বাচ্চামো গুলো কতটা ভালবাসি!! আমার পিচ্চি কুহু কবে বড় হবি তুই?? তাড়াতড়ি হয়ে যা।। তোর জন্য ওয়েট করছি যে আমি।। দেখ আজ ও প্রতিবারের মত সবার প্রথম তোর বার্থডে উইশ করছি।। হেপি বার্থ ডে কুহু।।
বলে আবার কপালে চুমু একে বের হয়ে যায় ইউসুফ রুম থেকে।।
নিজের রুমের বেলকনিতে চলে আসে সে।।
দূর আকাশের এক চিলতে চাঁদ দেখা যাচ্ছে।।
ইউসুফের কাছে মনে হচ্ছে চাঁদ তাকে দেখে হাসচ্ছে আর বলছে,,
—–কিরে পাগল ১৩ বছর বয়সী বাচ্চা মেয়ের মাঝে কি পেলি? যে এমন পাগল পাগল হয়ে উঠেছিস??
ইউসুফ হাসলো!!
কখন ভালবাসা হয়ে যায় বুঝার উপায় নেই।।কখন কার চোখে কে আঁটকে পড়ে সে কি কারো জানা..!! তেমনি তার হয়েছে…!!
তেমনি আটকে গেছিল তার মনে তার আট বছর বয়সে, ১ বছরের বাচ্চার উপর।।
ইউসুফ মৃদু কন্ঠে বলে উঠে,,
—– যে পাগল দিন দিন তুমি আমায় করে চলেছ বাবুই পাখি…এ পাগলের সুস্থ হওয়ার মেডিসিন ও তুমি।।
_____________♣
খাবার টেবিলে বসে আছে সবাই কুহু বাদে।।কারণ কুহু ঘুম…..!!!!
তখন ইউসুফের দাদু বলে উঠেন,,
——কদিন থাকবি??
ইউসুফ মুখে খাবার পুরে বলতে লাগে,,
——এইতো আর কিছুদিন দাদু।।
——তোর পড়াশুনা কত দূর বাকি?
——-এইতো তিন বছর।।
——-আরো তিন বছর দূর থাকতে হবে তোকে আমাদের থেকে?
——হে দাদু! তোত দিন আমার বাবুইপাখিকে দেখে রেখ!!নেক্সট যখন দেখে ফিরবো ওকে আমি বিয়ে করে নিজের করে নিব!!
তখন ইউসুফ বাবা বলতে লাগে,,
——আগে তুমি বড় হও!!
ইউসুফ বলল,,
—–আমি যথেষ্ট বড় বাবা,, ২১ বছর চলছে আমার।।আর তিন বছর পর আমি ওল রেডি ২৪ হবো।।এবং বিয়ের বয়সও হয়ে যাবে তখন।।
ইউসুফের মা বলল,,
—–তোর মতো বুড় ছেলের কাছে আমার মেয়েকে বিয়ে দেব না।।আর ও বড় হতে এখন অনেক দেড়ি!! তার উপর তার পছন্দর একটা বেপার সেপার আছে তো নাকি??
মায়ের কথায়, ইউসুফ কপাট রাগ দেখিয়ে হাতের সামনের গ্লাস চেপে ধরে ভেঙ্গে ফেলে সাথে সাথে ফিনকি দিয়ে রক্ত বের হতে লাগে যা দেখে সবাই ভয় পেয়ে যায়।।
তখন চিল্লিয়ে বলতে লাগে,,
—–কুহু শুধু আমার!! কেউ চাইলেও না চাইলেও।।সে কুহু নিজেই হোক না কেন।।
বলে সেখান থেকে চলে যায়।।
উপস্থিত সবাই হতভম্ব হয়ে গেল।।
আর তারা বুঝেও গেল আর যাই হোক ইউসুফ কুহুকে ছাড়বে না।।
ইউসুফের বাবা হতাশ দৃষ্টিতে চেয়ে বলে উঠেন তার স্ত্রীকে,
—–কেন এমন বলতে গেলে!!
ইউসুফের মা মিলা বললেন,,
—–আমিতো মজার ছলে বলে ছিলাম।।
____________
ঘুম থেকে চোখ ঢলতে ঢলতে উঠে বসি।।
মাথার কাছে গিফট দেখে খুশিতে লাফাতে লাগি।।
আজও ঘুম থেকে উঠে গিফট পেলাম।।প্রতিবার আমার বার্থডে তে এমন একটি গিফট পাই।।
গিফটি খুলে আমি হা হয়ে গেলাম।।সাথে সাথে দিলাম এক চিৎকার।।আমার চিৎকারে নানুমা, আর মামী দৌড়ে রুমে আসলেন আর বলতে লাগেন এক সাথে,,
——কি হয়েছে কুহু?
আমি খুশিতে নানুমা আর মামীকে জড়িয়ে ধরে থ্যাংকস বলতে লাগলাম একনাগাড়ে।।
মামী বলল,,
——থ্যাংকস কেন?? আর এত জোরে চিৎকার করলি কেন তুই??
মামী আর নানুমাকে গিফট বক্স দেখিয়ে বলতে লাগি,,
——আমাকে সিনড্রেলা ড্রেস গিফট করার জন্য।।
মামী আর নানুমা একে ওপরকে কিছু ইশারা করলেন।।
পরে মামী বলতে লাগেন,,
—–ওয়েলকাম বাচ্চা!! এখন রেডি হয়ে জলদি নিচে আসো।।শুভ জন্মদিন বাচ্চা।।
——-ধন্যবাদ মামী।।
——-হে রে বুড়ি ড্রেসটি আমাদের পরে দেখাবি না।। যা যা জলদি পরে নিচে।।
আমি খুশিতে গদগদ হয়ে ওয়াশরুমে দৌড় লাগাই।।
রেডি হয়ে নিচে নামতেই আমার ফ্রেন্ড ইনা, মিনা, টিনা, রিনাকে দেখে এক চিৎকারে গ্রুপ হাগ করলাম সবাই।।
তারা এক সাথে বলল,,
——হ্যাপি বার্থ ডে কুহু!!!!
সন্ধ্যায় বড় করে পার্টির আয়োজন করা হয়।।বড় একটি কেক আনা হয়।।তেকের মাঝে ১৪ টা মম দিয়ে সাজানো হয়।।মানে আজকে কুহুর ১৪ বছরে পা দিল।।
কুহুকে তার মামী সুন্দর করে সাজিয়ে দিয়েছেন।।তার বড় চুল গুলো খুব সুন্দর সেট করে দিয়েছেন।।
দেখতে দেখতে কেক কাটার সময় হয়ে যায়।।
সবাইকে কেক খাওয়াই দিছি ইউসুফ ও সামনে হাজির হা করে বলল,,
——আমাকে ভুলে গেলি?? দে খাইয়ে দে….!!
আমি কোনো কিছু না ভেবে খাইয়ে দিতে নিলাম।।আর উনি হুট করে কেক সহ আমার আঙ্গুল তার মুখে পুরে নিল।।তার ঠোঁটে আমার আঙ্গুল স্পর্শ করতেই কারেন্টের শক্ড খেলাম মনে হল।।আমি সাথে সাথে বের করতে নিতেই তিনি আমার হালকা কামুড় বসিয়ে দিল।।আমি তো চোখ বড় বড় করে তার দিক তাকিয়ে।।তিনি আমার হাত ছেড়ে দিয়ে, তার সামনের চুল গুলো পিছে ঠেলে দিয়ে বললতে লাগে,,
—–নাইস টেষ্ট।।বলে মুচকি হাসতে হাসতে চলে গেলেন।।
কি হলো বুঝলামি হাত ধরে বসে রইলাম।।
_________
পরেরদিন বিকেলে গাছে পানি দিচ্ছিলাম।।
তখন পাশের ছাদ থেকে কেউ ডাকে।।
—–হাই কুহু!! হেপি বার্থ ডে!!
আমি পিছনে ফিরে দেখি রিয়াজ ভাইয়া।।উনি আমাদের স্কুলের ১০ শ্রেনীতে পরে।।এবং আমাদের স্কুলে ক্রাশ।।আমি হাসি মুখে বললাম,,
——ধন্যবাদ ভাইয়া।।
ভাইয়া ডাক কেন জানি রিয়াজ ভাইয়া শুনতে চান না।।কিছুটা অপ্রস্তুত হয়ে পরেন তিনি।।তখন তাকে দেখতে সেই লাগে।।তাই আমি বার বার এমন করি,, হি হি।।
রিয়াজ বলল,,
—–কুহু আমাকে ভাইয়া না বললে হয় না??
——ভাইয়া না বললে কি বলব??
——নাম ধরে ডাকতে পার?
——না না ভাইয়া বড়দের নাম ধরে ডাকতে নেই।।ভাইয়া ডাক পছন্দ না হলে আমি আপনাকে চাচা ডাকতে পারি, মামা ডাকতে পারি??কোনটা ডাকবো??
রিয়াজ ছোট একটি শ্বাস ফেলে হতাশ ভঙ্গিতে বলতে লাগে,,
—–থাক কুহু ভাইয়াই ডেকো!!
বলে চলে গেলেন।।আর আমি হাসতে হাসতে শেষ।।বরাবরই তিনি এমন করেন।।তার কথাতে বুঝাতে চান।।
হি লাইকস মি!!! বাট আমি এত জলদি কারো কাছে ধরা দিচ্ছি না।।
হাসতে হাসতে যেই না পিছনে ফিরলাম,,,
—-ঠাসসসসসসসসসসসস!!!!!
চলবে!!
(ভুলত্রুটি ক্ষমার চোখে দেখবেন!!)