Psycho is Back

Psycho is Back ! Season- 2 ! Part- 09

দেখতে দেখতে সাতটা বছর কেঁটে গেছে।।এই সাতটা বছরে উল্টেপাল্টে গেছে গোটা একটি পরিবার।। হারিয়ে গেছে কতগুলো ভালোলাগার মানুষ।। ভাবতেই চোখে জল এসে পরে আমার।। ভাবতেই অবাক লাগে এত গুলো বছর কেঁটে গেল, কিন্তু কিছু মানুষের শোক এখন কাটেনি।।এমন ভয়ানক স্মৃতিগুলো ভোলা বড় দায়।। বাহিরের ঝিরিঝিরি বৃষ্টি হচ্ছে।। বৃষ্টির পানিতে ধুয়ে যাচ্ছে ধুলাবালি।। ইসস! এই বৃষ্টি যদি আমার কষ্ট গুলো ধুয়ে দিত।।যখন নিজের ভাবান্তরে ডুবে আমি চোখের জল ফেলছি তখনি পিছন থেকে কেউ কাঁধে হাত রাখে বলতে লাগে,,
—–কুহু আজ ও কাঁদবি?
আমি চোখের জল মুছে বললাম,,
—–এটা তো খুশির পানি আপি..!!
—–আমাকে মিথ্যে বলছিস??
আমি এবার আর পারলাম না হাউমাউ করে কেঁদতে লাগলাম আপিকে ধরে।।আপি আমার মাথায় হাত বুলিয়ে দিতে দিতে বলল,,
—–কুহু সব ঠিক হয়ে যাবে।।কিন্তু তার জন্য তোকে সব ভুলে এগিয়ে যেতে হবে বাবু।।
—–আপি চাইলেও কি ভুলা যায়।।
—–শুন চাইলেই সব করা যায়।।ভুলব যাওয়া জিনিসটা তো আরো আগে করা যায়।।
—–আমি পারি না আপি, পারি না..!! কিভাবে পরবো বল?? আমার জন্য গোটা পরিবার ধংস হয়ে গেল যে?? হাসি খুশি আমাদের সংসারটা কেমন ভেঙ্গে গেল।।
বলে ফুপাতে লাগলাম আপিকে ধরে।
আপি আমার মাথা উঁচু করে তুলে চোখ মুছে বলতে লাগে,,
—- কাঁদিস নারে আপুই।। আচ্ছা এই দেখে মেহেদী লাগিয়েছি কেমন হয়েছে বল তো??
আমি হালকা হেসে বললাম,,
—-বাহ্ আপু তোর মেহেদী রং কত গাড় হয়েছেরে নিশ্চয়ই জিজু তোকে অনেক লাভ করে।।
মুন্তানিছা লজ্জায় লাল হয়ে বলতে লাগে,,
—–যাহ কি যে বলিস তুই।।
—–আল্লাহ জিবনে লজ্জা না পাওয়া আপি আমার লজ্জা পাচ্ছে দেখি?? কি আশ্চর্য??
—–যখন তোর বিয়ে হবে তখন বুঝবি।।
—–আমার বয়েই গেছে বিয়ে করতে!
—–দেখা যাবে সময় হোক।।তখা দেখবি আমাদের ভুলে তাকে নিয়ে মেতে আছিস।।
—–যেমনটি তুই করেছিস তাই না??
—–যাহ কি বলিস।।
—–সত্যই বলছি আমি দেখেছি বাসার পবছনে কি চলছিল।।
মুন্তানিছা বিস্ময়ের সুরে বলল,,
—–কি দেখেছিস??
—–যা জিজু করছিল তোর সাথে।। বলে মিটমিট করে হাসতে লাগলাম।।
আর আপি কাচুমাচু হয়ে বলতে লাগে,,
—–কি করেছে??
আমি বললাম,,
—-তোর গলার নিচে লাল লাল কিসের দাগরে??
বলতেই আপু দাড়িয়ে গেল আর বলতে লাগে,,
—– এই রে মা বুঝি ডাকচ্ছে।। আসিরে তুই রেডি হয়ে নিচে আয় বলে তাড়াতাড়ি নিচে চলে গেল আপি।। আর আমি হাসতে হাসতে শেষ।।
মুন্তানিছা আপির দুদিন পর বিয়ে তাই বাড়িতে তোড়জোড়সে অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হচ্ছে।।পুরো ময়মনসিংহ মানুষকে দাওয়াত দেয়া হয়েছে যেহেতু বড় মামা এখন মেয়র সে সুবাদে।।বড় ভাইয়া বিয়ে করে ফেলছেন।।তার লাল টুকটুকে বউ দিয়া ভাবি ময়মনসিংহ মেডিকেলে পড়াশোনা করেন।।সব মিলিয়ে ভালই চলছে আমাদের কিন্তু কিছু মানুষের জন্য বুকটা হাহাকার থেকেই যায়।।আজ খুব বেশী মিস করছি নানুমাকে, তার কতই না শক ছিল নিজ হাতে তার বড় নাতনীকে সাজিয়ে দেবার।।মনে পড়ছে ছোট মামীকে, ছোট মামাকে আর ইউসুফ ভাইয়াকে।।তারা আজ বেঁচে থাকলে কতই না খুশি হতো।আনন্দটা আরো দিগুন হয়ে যেত।।নিজের অজানতেই দীর্ঘ শ্বাস বের হয়ে আসলো।। সাথে দু ফোঁটা জল গড়িয়ে পরলো চোখের কোনা দিয়ে।।
দেখতে দেখতে আপির বিয়ে হয়ে গেল।।ছেলে ইঞ্জিনিয়ার।। লাভ ম্যারেজ তাদের।। ৩ বছর ভালবাসার পর বিয়ে হয়েছে তাদের।।সবাই সব ভুলে নতুন জিবন শুরু করে দিয়েছে থমকে গেছি শুধু আমি।।
বিয়ের কার্য সমপন্নর পরে দিন চলে আসি ঢাকা।।এখানেই দু বান্ধবি মিলে ভাড়া থাকি একটি ফ্লেট নিয়ে।।কাল থেকে ক্লাস শুরু তাই চলে যাচ্ছি আজ।।
ব্যাগপত্র নিয়ে বের হয়ে গেলাম মাসকান্দা এনা বাস কাউন্টারে।। টিকেট করে রওনা হলাম আবার নিজের গন্তব্য।। ৪ ঘন্টা পর এসে পৌছাই ঢাকা।।
নিজের রুমে ঢুকে গা এলিয়ে দেই বিছানায়।।কত আশ্চর্য! যে আমি কখনো কিছু নিজ থেকে করতে পারতাম না সেই আমি আজ কিনা একা চলতে শিক্ষে গেছি।।হাহ্!!
—–দোস্ত তুই কখন এলি?? রুমে ঢুকতে ঢুকতে বলল,,টিনা!
—–যখন তুই সোফায় কাপড় চোপর ছাড়া শুয়েছিল।।
টিনা লজ্জা পেয়ে গেল।।
আমি বুঝে বললাম,,
—–এ আর নতুন কি? লজ্জা পাচ্ছিস কেন??
টিনা কাচুমাচু হয়ে বলল,,
—–রাতে রিয়ান কল করেছিল তো।। ওই এডাল্ট কথা বার্তা বলছিল তাই সইতেরনা পেরে আরকি..!!
আমি কথা থামিয়ে দিয়ে বললাম,,
—–ইসস চুপ যা..!! আমি জানতে চাইনি।। আমি জানি তোমার অভ্যাস।। খনে খনে হট হয়ে যাও।।
টিনা দু হাত পা মেলে বিছানায় শুয়ে বলতে লাগে,,
—–তুইকি বুঝবি দোস্ত সেই অনুভুতি কেমন!! কতটা মধুর।।আহ্।।একটা প্রেন এখনো করলি না।।তোর যখন বয়ফ্রেন্ড হবে তখন ঠিকি বুঝবি।।
—-হইছে উঠ বুঝতে হবে না আমার।।
টিনা যেতে যেতে বলল,,
—-তোর লেটার এসেছে টিভির সামনে রাখা দেখে নিস।।
আমি দৌড়ে যেতে যেতে বললাম,,
—-নিশ্চয়ই যব ইন্টার্ভিউর।।
—-তোর মামা এতো বড় লোক টাকার উপর রাখে তোরে আর তুই করবি জব? বাট হোয়াই??
আমি চিঠি খুলতে খুলতে বললাম,,
—–self-dependent হওয়ার জন্য।।
—–তো এখন কি কম আছিস নাকি?
—–তা না দোস্ত দেখ,, আমার মা-বাবা নেই।। মামাদের ঘারে বসে সারা জিবন পড়ে থাকলে চলবে? যতই হোক তারা বড়োলোক।। আ্ আমার ক্যারিয়ারের চিন্তাও তো করতেই হবে?
—-বুঝলাম আম্মা।।
আমি হেসে চিঠি খুলে দেখি SUR কোম্পানিতে পার্সোনাল সেক্রেটারির জব পেয়েছি।।এই কোম্পানির আয়ু চার বছর।। এই চার বছরে অনেক উন্নত করেছে।। দেশের বাহিরে নাকি এর মেইন অফিস বাংলাদেশে ঢাকা সহ আরো কিছু শাখা ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে এর।।
যাই হোক চাকরী পাওয়ার খুশিতে লাফিয়ে চিৎকার করে উঠলাম।।
টিনা পানি খাচ্ছিল আমার এহেন কাজে তার নাকে মুখে পানি উঠে পরে।।
আমি তাড়াতাড়ি করে মাথায় থাবা দিতে দিতে বলি,,
—সরি সরি দোস্ত।।
—-কি যে করিস? আমি ভয় পাইছিলাম।।এখন বল কি হইছে?
—-আমার জব কনফার্ম দোস্ত।।বলে জড়িয়ে ধরলাম টিনাকে।।
টিনা বলল,,
—ট্রীট চাই দোস্ত।।
—চল তাহলে..!! রেডি হয়ে নে।।আজ সেলিব্রেট করবো।।
তার রেডি হয়ে বের হয়ে গেলাম আমরা।। তারপর চলেরগেলাম রেস্টুরেন্টে।।সেখানে গিয়ে চিজ বার্গার, পিজা,আর কোলড্রিংস অর্ডার করে নিলাম।।২০ মিনিটের মধ্য আসবে।।
—–দোস্ত তুই বস আমি ওয়াশরুম থেকে আসচ্ছি।।
—–ওকে!!
আমি ওয়াশরুমে ঢুকে গেলাম।। কিছুক্ষণ পর বের হয়ে বেসিন হাত ধুয়ে চুল গুলো সেট করে নিলাম।।আমার চুল গুলো এখন কোমর ছুই ছুই।।আমিতো ভেবেছিলাম চুল আর গজাবেই না।।এর পর থেকে আর কার্লার করিনি চুলে।।ভাল ভাবে সব কিছু চেক করে বের হতে নিব তখনি হুট করেই ওয়াশরুমের লাইট ওফ হয়ে যায়।।হটাৎ এমন হওয়ায় ভয় পেয়ে যাই আমি।।নর্মাল বিষয় ভেবে পা বাড়াই বাহিরে যাওয়ার জন্য।।তখনি কেউ আমার চুলে টাচ করে।।আমি প্রথমে মনের ভুল ভেবে সামনে এক কদম আগাই তখন কেউ আমার কোমরে ছুয়ে দেয়।।এবার ভয় লাগতে থাকে।। এতটা আন্ধকার যে নিজেকেই দেখতে পাচ্ছিলাম।।কিন্তু কারো উপস্থিতি টের পাচ্ছি।। আমি এবার ডানে বামে না দেখে এক দৌড় দিতে লাগলাম তখনি কেউ হেচকা টান মেরে দেয়ালের সাথে লাগিয়ে ফেলে।।আমার আমার গলার কাছে এসে ঘ্রান নিতে থাকে।। তার নিশ্বাস আমার গলায় পরার সাথে সাথে কেমন অসস্থি লাগছে।।আমি তার থেকে নিজেকে ছাড়ানোর ট্রাই করছি কবন্তু পারছি না।।সে আর এক হাতে আমার মুখ চেপে ধরেছ আরেক হাতে আমার দুহাত ধরে আছে।।তখনি কানের কাছে সে ফিসফিস করে বলতে লাগে,,
—–ইউ লুকিং সো হট।।ইউ কিল মি বেবস।।
তার আমার গলায় সে গাড় চুমু দিল।।
আমি শক্ড হয়ে দাড়িয়ে রইলাম।।কিছুক্ষণ পর সে আমাকে ছেড়ে দিলেন।।আমি ভয়ে ঘেমে একাকার।।তার ছাড়ার পর পরই লাইট জ্বলে উঠে।। আমি তখনি ভয়ে আশেপাশে তাকিয়ে দেখি কেউ নেই।।তখনি বাহির থেকে টিনার গলার আওয়াজ পাই।।সাথে সাথে বের হয়ে যাই সেখানে থেকে।।
চলবে,,

Comments
Write a comment…