Psycho is Back

Psycho is Back !! Part- 13

ঘড়িতে ১২ টা ছুই ছুই।।
ইউসুফ কনফারেন্সরুমে মিটিং এ ব্যস্ত।।
ইউসুফের ফোনটা কখন থেকে বেজে চলছে।।ফোনটি সাইলেন্ট আওয়াজ হচ্ছে না,, কিন্তু বারবার আলো জ্বলছে আর নিভছে।।ইউসুফ তখন আরব দেশ থেকে আসা তার ক্লায়েন্টদের সাথে নিউ প্রেজেন্টেশন নিয়ে কথা বলছিল।। বার বার কল আসাতে বিরক্তি নিয়ে উঠালো।।কাজের সময় আর যাই হোক বিরক্তি তার পছন্দ না।।
ফোনটা তুলল এবার না পেরেই।।
ফোনটা তুলতেই তার মাথার রগ ফুলে উঠলো।।চোখ গিলো তার রক্তিম ধারণ করলো।।সাথে সাথে তার টেবিলের উপর থাকা কাচের গ্লাসটি চেপে ধরে।।যা মুহুর্তেই ভেঙ্গে তার হাতে গিথে যায়।।উপস্তিত সকলেই তার এই অবস্থা দেখে দাড়িয়ে যায়।।ইউসুফ কাচেঁর গ্লাসটি ফ্লোরে ছুরে বের হয়ে যায়।।হাত থেকে তার রক্ত পড়চ্ছে।।সে দিকে যেন তার খেয়াল নেই।।
—–কি সমস্যা তোর হুম,,?? বিয়ে যখন আমাকে করবি না! তো সবার সামনে আমার প্রপোজাল একসেপ্ট করলি কেন তুই??এখন সবার সামনে আমাকে ছোট করতে চাচ্ছিস?? কুহুর গাল চেপে ধরে চেচিয়ে বলল রিয়ান।।
রিয়ানের হঠাৎ এমন ব্যবহার কেন করছে বুঝে উঠতে পারছি না।।আমি রিয়ানের হাত ছাড়াতে চেষ্টা করছি নিচের সর্ব শক্তি দিয়ে তাকে ধাক্কা দিলাম সাথে ছিটকে দূরে পরে গেল সে।।
আর তখনি আমি বলতে লাগে,,,
—–কি উল্টোপাল্টা বকছেন??
তখনি সে উঠে এসে আমার পিছনের দিক থেকে চুল টেন ধরে বলল,,,
—-বুঝতে পারছিস না, না!! কেন এমন ডং করছি হুম??
—–কি হয়েছে বলবেন তো? আর এমন কেন করছেন আমার সাথে চুল ছাড়েন আমার ব্যাধা করছে খুব।।
—-ও হো….!!! মেডাম এখন বুঝতেই পারছে না,, হুম।।তারপর আমার হাত ধরে উচু করে বলে আমার পড়িয়ে দেয়া রিং কই?? বলল…!! কি হলে চুপসে গেলে কেন??
আমি আমতা আমতা করে বললাম,,
—-ইয়ে কই আর বাসায় রেখে এসেছি।।
কি বলবো বুঝতে পারছি না।।তাই মিথ্যা বলে দিলাম।।
তখনি সে আমাকে আরো শক্ত করে চুলের মুঠি ধরে বলতে লাগে,,
—-মিথ্যা কথা সব সব সব মিথ্যা কথা।।রিং তো আমার কাছে।।তো তোমার কাছে কেমনে থাকে??
রিয়ান সাথে সাথে রিং টা বের করে।। রিয়ানের হাত রিং দেখে আমার চোখ বের হয়ে যাওয়ার উপক্রম।। সাথে সাথে বললাম,,,
—-আপনার কাছে রিং কিভাবে…!! এটাতো!!
—-আর একটা মিথ্যা বলবা না তুমি?? এটি তুমিই পাঠিয়েছো।।তোমাদের বাসার ড্রাইভার ধারা।।
—-কিন্তু আমি…
—-শিসসসস!! আর একটা কথাও না।।তুমি বললেই পারতে তোমার সাথে ইউসুফ ভাইয়ার রিলেশেন চলছে?? কেন আমাকে ধোকা দিলে??
রিয়ান এসব কি বলছে আমার সাথে ইউসুফ ভাইয়ার রিলেশেন??
—–আপনি কি বলে যাচ্ছো এসব??এমন কিছুই না???
—-আচ্ছা আমি যাতা বলছি তখনি রিয়ান তার পকেট থেকে ফোন বের করে,, ইউসুফে সকালে যাওয়ার আগে মাথায় চুমু খায়।।তার পিক দেখায়।।সাথে সাথে শক্টড।।আমি মাথা নত করে আছি।।তখন তিনি বলে উঠে,,,
—-এখন বলো….!!
—-এমন কিছুই না। আমতা আমতা করে বললাম।।
—-ওহো সত্যি তাহলে চলো আজ আর এখনি আমরা বিয়ে করবো।।চলো।।
বলেই হাত ধরে টানতে টানতে বাহিরে নিয়ে আসলো।।রিয়ানের কথা শুনে আমার কান গরম হয়ে গেল।।যেন ধোয়া বের হবে এখনি।।আমি সাথে সাথে হাত ছুটিয়ে দাড়িয়ে পড়লাম।।তখনি রিয়ান বলতে লাগে,,,
—-কি হলো দাড়িয়ে পরলে কেন?? চলো।।আজ আর এই মুহুর্তে আমরা বিয়ে করবো।।
—–কেন করবে না??আমার ভালোবাসার দাম নেই না??এই যে এতো গুলো দিন কুকুরের মতো খেটেছি,, এসব কি বৃথা যাবে?? তা তো হতে দিচ্ছি না আমি…!!!
আমার এখন কান্না আসচ্ছে।।
কি করবো? কি বলব বুঝে উঠতে পারছি না।।।মুখে যেন তালা মেরে দিসে কেউ।।
তাও অনেক কষ্টে বললাম,,
—-আমি আপনাকে বিয়ে করবো না।।
—-কেন?? পালটা প্রশ্ন ছুড়লেন তিনি।।
আমি আমতা আমতা করে বললাম,,,
—-আমার ফ্যামিলি ছাড়া আমি বিয়ে করবো না।।
তখনি রিয়ান হাসতে লাগলো অদ্ভুত ভাবে।।তার হাসির শব্দে যেন আমার আত্না কেঁপে উঠছে।।তখনি সে আমার হাত ধরে টানতে টানতে গাড়িতে ফেলে দিলেন।।এদিকে আমি চিল্লাতে লাগলাম,,ভার্সিটিতে সবাই আমাদের দেখছে কিন্তু এগিয়ে আসচ্ছেনা।।রিয়ান আমাকে গাড়িতে ফেলে দরজা লকড করে দেয়।।আর আমি চেঁচাতে লাগে।।সাথে লকড খুলার ট্রাই করি না কাজ হচ্ছে না।।রিয়ান অন্যপাশে গিয়ে গাড়ি স্টার্ট করে।।গাড়ি চলতে লাগে।।
কিছুক্ষন পর গাড়ি এসে থামে একটি কাজি অফিসে।।রিয়ান নেমে আমাকে নামাতে নেয়।।আমি এদিকে কাঁদতে কাঁদতে শেষ।।আমি গাড়ির সিট ধরে বসে আছি।। রিয়ান তখনি আমাকে হেচকা টান মারে তার দিক ঘুড়িয়ে থাপড় মেরে দেয়।।তাও অনেক জুড়ে।।আমি ব্যথায় আরো কাঁদতে লাগলাম।।
আজ ইউসুফের কথা বার বার মনে পড়ছে।।
সাদা পাঞ্জাবী ওয়ালা একটি লোকের সামনে বসে আছি।।লোকটি কি কি যানি বলছে সেদিকে যেন আমার খেয়াল নেই।।আমি মাথা নত করে কাঁদছি।।তখনি লোকটি আমার দিকে কাগজ কলম এগিয়ে দেয়, সাইন করতে…!! আমি দু হাত বেঁধে বসে আছি।।তকনি রিয়ান আমার চুলের মুঠি ধরে বলে,,
—–সাইন কর?? আর আমার খারাপ রূপটা সামনে আনতে বাধ্য করিস না।। দাঁতে দাঁতে চপে বলল কথা গুলো।।
একদিনে যে মার খাইছি রিয়ানের সাথে বিয়ে হলে না জানি আরো কত মার খেতে হয়।।মনে দোয়া করছি সাইকো টা চলে আসতো।।তখনি রিয়ান আমার গাল চেপে ধরে আর বলতে লাগে,,,
—–কি হলো সাইন করছিস কেন?? হুম তোর নাগরের জন্য ওয়েট করছিস?? তোর সাথে না ওর কোনো সম্পর্ক নাই তো??
আমি আজ রিয়ানের কাজ কর্মে মুগ্ধ।।এতো সুন্দর ব্যবহার আমি আর নিতে পারছি না।।
—-আপনি এতটা খারাপ আগে জানতাম না।।আমি এই বিয়ে করবো না।।
তখনি সাথে আরেকটা চড় পরে গালে।।এবার টা সব থেকে জোড়ে।।মনে হচ্ছে শরীরের সব শক্তি দিয়ে মেরেছে সাথে সাথে আমার ঠোঁট কেঁটে গেছে।।আমি ফুঁপিয়ে কাঁদতে লাগলাম।।তখনি রিয়ান বলতে লাগে,,,
—–বিয়ে তো তোকে আজ করতেই হবে তাও আমাকে।।যদি আর মার না খেতে চাস সাইন কর।।
আমি আমার কাঁপা হাত দিয়ে কলম তুলে সাইন করতে নিলাম তখনি কেউ আমাকে পিছন দিকে ঘুড়িয়ে আরো জোড়ে থাপর মারলো।।এবারের টা আর নিতে পারলাম না সামনের ব্যাক্তিটির বুকে ঢলে পরলাম।।আর বন্ধ হয়ে আসার শেষ মুহুর্তে শুধু সাইকোর ফেস দেখতে পারলাম।।চোখ মুখ শক্ত করে দাড়িয়ে আছে।। এর পর আর কিছু মনে নেই।।
মুখের উপর পানির ঝাঁপটা পরতেই চোখ মেলে তাকাই।।তাকতেই সামনের ব্যাক্তিটি দেখে আত্মা শুকুয়ে গেল।।তখনি তিনি আমার গাল চেঁপে ধরে বলতে লাগে,,
—–খুব শক বিয়ে করার হুম।।মানা করে ছিলাম তোকে!!!কেন আমার কথার খেলাপে গেলি।।
বলে বাসার ভিতরে নিয়ে গেলেন টানতে টানতে,, আর আমি ফুঁপিয়ে কাঁদতে লাগলাম।।
আমাকে এভাবে টেনে ভিতরে আসলেন।।তখন হল রুমে সবাই উপস্তিত ছিল।।তিনি আমাকে নিয়ে সবার সামনে ছুড়ে মারে।।আমি তখন মাথা নিচু কনে কাঁদতে লাগলাম।।
——কি হয়েছে ইউসুফ?? নানুমা দৌড়ে এসে বলতে লাগেন।।আন্টি মাও ইউসুফের দিক তাকিয়ে।।
তখনি ইউসুফ চিল্লিয়ে বলে উঠে,,
—-তোমার নাতনী বিয়ে করতে গেছিল।।আমি না গেলে এতক্ষণে…..!!
নানু মা সাথে মাথায় হাত দিয়ে বসে পড়েন।।আর বলতে লাগলেন,,,
—-এই দিন দেখার আগে আমি মরলাম না কেন।।তিনি যেন কথাটি মানতে পারেন নি।।সাথে জ্ঞান হাড়ায়।।আমি তার কাছে যেতে নেই কিন্তু ইউসুফ যেতে দেয় না।।আন্টি মা আর মামা দুজন মিলে তাকে নিয়ে রুমে চলে যায়।।আর আমি ইউসুফের হাত থেকে হাত ছাড়িয়ে নানুমার কাছে যেতে চাইছি।।কিন্তু সে যেতে দিচ্ছে না।।আমি কাঁদতে কাঁদতেই বললাম,,,
—-প্লিজ যেতে দিন।।
—-নাহহহহহ!! তুই দাদুর ধারে কাছে যাবি না।।বলে টানতে টানতে আমার রুমে নিয়ে ভিতরে ফেলে বাহির থেকে দরজা লাগিয়ে দেন।।আর আমি ধাক্কাতে লাগি।।নাহ কেউ খুলছে না।।আমি দরজার সাথে ঘেষে বসে পরে ওখানেি হাটুতে মুখ গুজে কাদঁতে লাগলাম।।
চলবে,,,